Dhaka ০৯:০৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কুষ্টিয়ার সহকারী শিক্ষা প্রকৌশলী সাহেব আলীর বিরুদ্ধে ঘুষ ও দুর্নীতির অভিযোগ!

  • Reporter Name
  • Update Time : ১২:৩৭:১৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৫ নভেম্বর ২০২৪
  • ৯০ Time View

নিজস্ব প্রতিবেদক :কুষ্টিয়া শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের সহকারী প্রকৌশলী সাহেব আলীর বিরুদ্ধে ঘুষ বানিজ্য, টেন্ডারবাজী, চাঁদাবাজী সহ নানা অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে গত কয়েক বছরে নামে-বেনামে অবৈধ সম্পদের পাহাড় গড়েছেন তিনি। তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের ঠিকাদাররা।
প্রকৌশলী সাহেব আলীকে অপসারণসহ তার অনিময় ও দুর্নীতি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য দুদক চেয়ারম্যান, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব, শিক্ষা অধিদপ্তরের ডিজি, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান, কুষ্টিয়া ও পাবনার দুদকের উপপরিচালক বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন ঠিকাদাররা। গত ২২ জুলাই এ অভিযোগ দেন শিক্ষা প্রকৌশল বিভাগের ঠিকাদাররা। ঠিকাদাররা লিখিত অভিযোগে জানান, সাহেব আলী একজন দুর্নীতিবাজ ব্যক্তি। কারণ টেন্ডারবাজদের সাথে মিলে সরকারী অর্থ অপচয়সহ রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে অবৈধভাবে অর্থ উপার্জন করর।
অনৈতিক সুবিধার মাধ্যমে সরাসরি দূর্নীতিবাজদের সাথে যোগসাজশের মাধ্যমে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের সকল কাজ ভাগ-বাটোয়ারা করেন এবং আর্থিক সুবিধা নেন। তিনি বিভিন্ন অনিয়ম দুর্নীতি ও অপকর্ম করে। ফলে ঠিকাদাররা টেন্ডার বিমুখ হয়ে পড়েছেন।টেন্ডারের কাজে যেন খুব কম সংখ্যক ঠিকাদার অংশগ্রহন করিতে পারেন এজন্য টেন্ডারের শর্তসমূহ কঠিন থেকে কঠিনতর করেন। ফলে সরকার রাজস্ব হারাচ্ছে, সরকারী অর্থ অপচয় হচ্ছে।
এছাড়াও ঠিকাদারদের কাছ থেকে ৫ থেকে ৭ শতাংশ হারে ঘুষ নিয়ে থাকেন। সাধারন ঠিকাদাররা তার কাছে সেবা নিতে গেলে তাদেরকে টেন্ডারবাজদের দেখিয়ে দিয়ে থাকেন এবং তাদের মাধ্যমে আসতে বলেন। ফলে সাধারণ ঠিকাদাররা অসহায় অবস্থায় দিনযাপন করছে। এমন ঘৃণীত কাজে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত সাহেব আলী। কারণ সে টেন্ডার কমিটির সদস্য সচিব। সে ফাইল আটকিয়ে বিভিন্ন কৌশলে ঘুষ-দুর্নীতি ও চাঁদাবাজীর মাধ্যমে সম্পদের পাহাড় তৈরি করেছে। সে তার নিজ জেলা পাবনার বিভিন্ন স্থানে জমি, সম্পত্তিসহ নামে বেনামে ব্যাংক ব্যালেন্স ও টাকার পাহাড় গড়ে তুলেছেন।
ফলে অনুসন্ধান ও নিরপেক্ষ তদন্ত প্রয়োজন। ঠিকাদাররা লিখিত অভিযোগে আরও জানান, সাহেব আলীকে চাকুরী থেকে অব্যাহতিসহ শাস্তির আওতায় না আনলে সরকারী অর্থ অপচয়সহ রাজস্ব আয় করা সম্ভব নয়। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে নানা সংকটের মধ্যে পড়বে। তিনি প্রাইভেট গাড়ীতে করে প্রায় প্রতিদিনই সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের কুষ্টিয়া জেলার বিভিন্ন প্রকল্পের সাইট হইতে প্রতিদিন প্রায় ৩৫ হাজার থেকে ৪০ হাজার টাকা চাঁদাবাজীর মাধ্যমে উপার্জন করে থাকেন। প্রতিটি স্কুলের জানালা-দরজা ও ফার্নিচার তৈরির কারখানা, কাঠ সরবরাহকারীসহ আসবাবপত্র সরবরাহকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নিকট হতে অর্থের বিনিময়ে ভাল-মন্দ বিচার করে থাকেন। কাজ অনুযায়ী ১০ হাজার থেকে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত ঘুষ নিয়ে থাকেন।
টাকা দিলেই ভাল, না দিলেই মালামাল খারাপ হিসাবে গণ্য করে থাকেন। এছাড়া বিভিন্ন প্রকল্পের রাজমিস্ত্রি, টাইলস মিস্ত্রি, মুজাইক মিস্ত্রি, প্লাম্বার মিস্ত্রিদের কাছ থেকেও কাজ অনুযায়ী ৫ থেকে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত ঘুষ নিয়ে থাকেন। এতে একদিকে যেমন ঠিকাদাররা কাজের গুনগতমান ঠিক রাখছেন না। তেমনি ঠিকাদার ও সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলো ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে থাকেন। ভয়ে কোন ঠিকাদার বা অন্য কেউ তার দুর্নীতির বিরুদ্ধে মুখ খুলতে সাহস পায় না।
কারন তিনি কুষ্টিয়া জেলার শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের একমাত্র দাপুটে সহকারী প্রকৌশলী। তার কর্মকান্ডে সকল ঠিকাদারই অতিষ্ট ও জিম্মি অবস্থায় দিনাতিপাত করছে। সহকারী প্রকৌশলী হিসাবে কুষ্টিয়ায় প্রায় ৬ বছর কর্মরত আছেন। তাই তার দুর্নীতি, ঘুষ-বানিজ্য, চাঁদাবাজী ও টেন্ডারবাজী করা খুবই সহজলভ্য ডাল-ভাতের ন্যায় স্বভাবে পরিণত হয়েছে। এ ধরনের কাজের পরও তার পৃষ্ঠপোষক ও খুঁটির জোর কোথায় ঠিকাদাররা তা জানতে চাই। তাই অনুসন্ধান ও নিরপেক্ষ তদন্ত প্রয়োজন। প্রকৌশলী সাহেব আলীকে অপসারণসহ তার অনিময় ও দুর্নীতি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন ঠিকাদাররা।

এ বিষয়ে কথা বলার জন্য কুষ্টিয়া শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের সহকারী প্রকৌশলী সাহেব আলীর মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হয়। অনিয়ম ও দূর্নীতির বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

আলোচিত

বোয়ালমারীতে চার বছর কর্মস্থলে না গিয়েও বেতন ভাতা নিচ্ছে উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ঝুমা !

কুষ্টিয়ার সহকারী শিক্ষা প্রকৌশলী সাহেব আলীর বিরুদ্ধে ঘুষ ও দুর্নীতির অভিযোগ!

Update Time : ১২:৩৭:১৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৫ নভেম্বর ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক :কুষ্টিয়া শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের সহকারী প্রকৌশলী সাহেব আলীর বিরুদ্ধে ঘুষ বানিজ্য, টেন্ডারবাজী, চাঁদাবাজী সহ নানা অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে গত কয়েক বছরে নামে-বেনামে অবৈধ সম্পদের পাহাড় গড়েছেন তিনি। তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের ঠিকাদাররা।
প্রকৌশলী সাহেব আলীকে অপসারণসহ তার অনিময় ও দুর্নীতি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য দুদক চেয়ারম্যান, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব, শিক্ষা অধিদপ্তরের ডিজি, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান, কুষ্টিয়া ও পাবনার দুদকের উপপরিচালক বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন ঠিকাদাররা। গত ২২ জুলাই এ অভিযোগ দেন শিক্ষা প্রকৌশল বিভাগের ঠিকাদাররা। ঠিকাদাররা লিখিত অভিযোগে জানান, সাহেব আলী একজন দুর্নীতিবাজ ব্যক্তি। কারণ টেন্ডারবাজদের সাথে মিলে সরকারী অর্থ অপচয়সহ রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে অবৈধভাবে অর্থ উপার্জন করর।
অনৈতিক সুবিধার মাধ্যমে সরাসরি দূর্নীতিবাজদের সাথে যোগসাজশের মাধ্যমে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের সকল কাজ ভাগ-বাটোয়ারা করেন এবং আর্থিক সুবিধা নেন। তিনি বিভিন্ন অনিয়ম দুর্নীতি ও অপকর্ম করে। ফলে ঠিকাদাররা টেন্ডার বিমুখ হয়ে পড়েছেন।টেন্ডারের কাজে যেন খুব কম সংখ্যক ঠিকাদার অংশগ্রহন করিতে পারেন এজন্য টেন্ডারের শর্তসমূহ কঠিন থেকে কঠিনতর করেন। ফলে সরকার রাজস্ব হারাচ্ছে, সরকারী অর্থ অপচয় হচ্ছে।
এছাড়াও ঠিকাদারদের কাছ থেকে ৫ থেকে ৭ শতাংশ হারে ঘুষ নিয়ে থাকেন। সাধারন ঠিকাদাররা তার কাছে সেবা নিতে গেলে তাদেরকে টেন্ডারবাজদের দেখিয়ে দিয়ে থাকেন এবং তাদের মাধ্যমে আসতে বলেন। ফলে সাধারণ ঠিকাদাররা অসহায় অবস্থায় দিনযাপন করছে। এমন ঘৃণীত কাজে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত সাহেব আলী। কারণ সে টেন্ডার কমিটির সদস্য সচিব। সে ফাইল আটকিয়ে বিভিন্ন কৌশলে ঘুষ-দুর্নীতি ও চাঁদাবাজীর মাধ্যমে সম্পদের পাহাড় তৈরি করেছে। সে তার নিজ জেলা পাবনার বিভিন্ন স্থানে জমি, সম্পত্তিসহ নামে বেনামে ব্যাংক ব্যালেন্স ও টাকার পাহাড় গড়ে তুলেছেন।
ফলে অনুসন্ধান ও নিরপেক্ষ তদন্ত প্রয়োজন। ঠিকাদাররা লিখিত অভিযোগে আরও জানান, সাহেব আলীকে চাকুরী থেকে অব্যাহতিসহ শাস্তির আওতায় না আনলে সরকারী অর্থ অপচয়সহ রাজস্ব আয় করা সম্ভব নয়। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে নানা সংকটের মধ্যে পড়বে। তিনি প্রাইভেট গাড়ীতে করে প্রায় প্রতিদিনই সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের কুষ্টিয়া জেলার বিভিন্ন প্রকল্পের সাইট হইতে প্রতিদিন প্রায় ৩৫ হাজার থেকে ৪০ হাজার টাকা চাঁদাবাজীর মাধ্যমে উপার্জন করে থাকেন। প্রতিটি স্কুলের জানালা-দরজা ও ফার্নিচার তৈরির কারখানা, কাঠ সরবরাহকারীসহ আসবাবপত্র সরবরাহকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নিকট হতে অর্থের বিনিময়ে ভাল-মন্দ বিচার করে থাকেন। কাজ অনুযায়ী ১০ হাজার থেকে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত ঘুষ নিয়ে থাকেন।
টাকা দিলেই ভাল, না দিলেই মালামাল খারাপ হিসাবে গণ্য করে থাকেন। এছাড়া বিভিন্ন প্রকল্পের রাজমিস্ত্রি, টাইলস মিস্ত্রি, মুজাইক মিস্ত্রি, প্লাম্বার মিস্ত্রিদের কাছ থেকেও কাজ অনুযায়ী ৫ থেকে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত ঘুষ নিয়ে থাকেন। এতে একদিকে যেমন ঠিকাদাররা কাজের গুনগতমান ঠিক রাখছেন না। তেমনি ঠিকাদার ও সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলো ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে থাকেন। ভয়ে কোন ঠিকাদার বা অন্য কেউ তার দুর্নীতির বিরুদ্ধে মুখ খুলতে সাহস পায় না।
কারন তিনি কুষ্টিয়া জেলার শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের একমাত্র দাপুটে সহকারী প্রকৌশলী। তার কর্মকান্ডে সকল ঠিকাদারই অতিষ্ট ও জিম্মি অবস্থায় দিনাতিপাত করছে। সহকারী প্রকৌশলী হিসাবে কুষ্টিয়ায় প্রায় ৬ বছর কর্মরত আছেন। তাই তার দুর্নীতি, ঘুষ-বানিজ্য, চাঁদাবাজী ও টেন্ডারবাজী করা খুবই সহজলভ্য ডাল-ভাতের ন্যায় স্বভাবে পরিণত হয়েছে। এ ধরনের কাজের পরও তার পৃষ্ঠপোষক ও খুঁটির জোর কোথায় ঠিকাদাররা তা জানতে চাই। তাই অনুসন্ধান ও নিরপেক্ষ তদন্ত প্রয়োজন। প্রকৌশলী সাহেব আলীকে অপসারণসহ তার অনিময় ও দুর্নীতি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন ঠিকাদাররা।

এ বিষয়ে কথা বলার জন্য কুষ্টিয়া শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের সহকারী প্রকৌশলী সাহেব আলীর মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হয়। অনিয়ম ও দূর্নীতির বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।