উলিপুর সরকারি খাদ্যগুদাম থেকে নিম্ন মানের খাবার অযোগ্য চাল সরবরাহের অভিযোগ উঠেছে।
উলিপুর (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি-
কুড়িগ্রামের উলিপুর সরকারি খাদ্যগুদাম থেকে ভিজিডির নিম্নমানের খাবার অযোগ্য চাল সরবরাহের অভিযোগ উঠেছে। ফলে ১৪ দিন ধরে সুবিধাভোগীদের মাঝে চাল বিতরন না করে ইউপি পরিষদের গুদামে তা পরে রয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে, উপজেলার বজরা ইউনিয়ন পরিষদে।
বজরা ইউনিয়ন পরিষদ সূত্রে জানা গেছে, গত ১৮ ডিসেম্বর ২শত ৯০ জন ভিজিডিরকার্ডধারীর বিপরীতে (৩০ কেজি করে) ৮ মেঃ টন ৭ শত কেজি চাল উলিপুর সরকারি খাদ্য গুদাম থেকে সরবরাহ করা হয়। চাল গুলো নিম্নমানের, দূর্ঘন্ধযুক্ত,
খাবার অযোগ্য হওয়ায় ভিজিডির কার্ডধারী সুবিধাভোগীরা তা নিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। এরপর বজরা ইউপি চেয়ারম্যান খারাপ চালের বিষয়টি খাদ্য গুদাম
কর্মকর্তা, ইউএনও ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানকে অবগত করেন। পরবর্তীতে চাল পরিবর্তন করে ভালো চাল দেয়ার কথা বলে তালবাহনা করে আসছেন খাদ্য গুদাম
কর্মকর্তা।
সরেজমিন রোববার (০১ জানুয়ারী) দুপুরে বজরা ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে গিয়ে
দেখা যায়, নিম্নমানের চালগুলো পরিষদের গুদামে রাখা হয়েছে। এদিকে ডিসেম্বর
মাসের ভিজিডির চাল ১৪ দিন পূর্বে উত্তোলন করা হলেও চাল গুলো নিম্নমানের হওয়ায় তা বিতরন করতে পারছেন না ইউনিয়ন পরিষদ।
খাদ্য গুদামের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন মিলার জানান, খাদ্য গুদাম
কর্মকর্তার যোগসাজশে সরকারি খাদ্যগুদাম থেকে ভালো চাল বের করে নিয়ে একটি
অসাধু চাল ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট ভিজিডিসহ সরকারিভাবে বিতরনকৃত বিভিন্ন সুবিধাভোগীদের মধ্যে নিম্নমানের চাল সরবরাহ করে আসছেন। ওই সিন্ডিকেট
প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে কেউ কথা বলার সাহস পাননা।
বজরা ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল কাইয়ুম সরদার বলেন, ডিসেম্বর মাসের ভিজিডির
চাল নিম্ন মানের ও খাবার অযোগ্য হওয়া তা বিতরন করা হয়নি। বিষয়টি খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা, ইউএনও ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানকে জানানো হয়েছে। খাদ্য
গুদাম কর্মকর্তা চাল পরিবর্তন করে দিতে চেয়েছেন। কয়েকদিন হয়ে গেলো এখনো
বিষয়টি সুরাহা হয়নি। ফলে ভিজিডির সুবিধাভোগীদের মধ্যে চাল বিতরন করা বন্ধ
রয়েছে।
খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম বজরা ইউনিয়ন পরিষদের ভিজিডির চাল
নিম্নমানের হওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, আমরা চাল পরিবর্তন করে দিতে চেয়েছি। নিম্নমানের চাল সরকারি খাদ্য গুদাম থেকে কিভাবে সরবরাহ করা হলো জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি এখানে এক মাস পূর্বে যোগদান করেছি। পূর্বের কর্মকর্তা গুদামে খারাপ চাল নেয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। তবে তিনি ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট কর্তৃক চাল পরিবর্তনের কথা অস্বীকার করেন।
উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মিসবাহুল হোসাইন জানান, খাদ্য গুদাম থেকে নিম্ন মানের চাল সরবরাহ করার প্রশ্নই উঠে না। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার শোভন রাংসা বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমি খাদ্য নিয়ন্ত্রকের সাথে কথা বলে প্রকৃত ঘটনা জেনে ভালো চাল বিতরনের ব্যবস্থা করবো।
এ বিষয়ে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বীরমুক্তিযোদ্ধা গোলাম হোসেন মন্টু
ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বজরার ভিজিডির নিম্নমানের চাল সম্পর্কে আমি অবগত
রয়েছি। তিনি আরোও বলেন, খাদ্য গুদাম কর্মকর্তার যোগসাজশে অসাধু ব্যবসায়ীদের একটি সিন্ডিকেট গুদাম থেকে ভালো চাল বের করে পথিমধ্যে পরিবর্তন করে ইউনিয়ন পরিষদ গুলোতে নিম্নমানের চাল সরবরাহ করেন। এতে করেসরকারের ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে। এ ব্যাপারে আমি জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের সাথে কথা বলবো। এর একটা বিহীত হওয়া উচিত।”