সাইফুর রহমান শামীম,,,, কুড়িগ্রাম।।
কুড়িগ্রামে উজানের ঢলে নদ নদীর পানি কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে।পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় জেলার ১৬ টি নদীতে মৃদু ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে। এতে করে দুধকুমার, ব্রহ্মপুত্র,ধরলাসহ বেশ কয়েকটি নদ নদীর তীরবর্তী মানুষজন বসতভিটা ফসলি জমি নিয়ে পড়েছে আতঙ্কে।নদী ভাঙনে জিও ব্যাগ দিয়ে ভাঙনরোধের চেষ্টা করলেও শেষ রক্ষা হচ্ছে না স্কুল,মাদ্রাসা,কমিউনিটি ক্লিনিকসহ সরকারি বেসরকারি স্থাপনাগুলো।
সরজমিনে দেখা যায়,গত এক সপ্তাহে জেলার উলিপুর, চিলমারী ও কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার দুধকুমার ও ব্রহ্মপুত্র নদে ভাঙনের বসতভিটা ফসলিজমি নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে।সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের চরভগবতীপুরে ব্যাপক ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে। এতে করে চরভগবতীপুরে উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়টি নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে। এছাড়া হুমকির মুখে পড়ে আছে চরভগবতীপুর কমিউনিটি ক্লিনিক সহ আশপাশের ৪ টি গ্রাম।স্থানীয়রা জানান,নদীর পানি বন্যায় পরিণত হওয়ার আগেই যেহারে ভাঙনের সৃষ্টি হচ্ছে।আসন্ন বন্যায় এ অঞ্চলের মানুষের দূর্ভোগের সীমা থাকবে না।এ অবস্থায় জরুরি ভিত্তিতে নদী শাসন ব্যবস্থা চান এলাকাবাসী।
চরভগবতীপুরের কৃষক মোঃ নুর ইসলাম বলেন, গত এক সপ্তাহে আমার দুই বিঘা আবাদি জমি নদীতে চলে গেছে।এখনো বন্যা আসে নাই এতেই যে ভাঙনের অবস্থা।জানি না কপালে কি দুঃখ আছে।
চরভগবতীপুর কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপি মোঃ রাশেদুল ইসলাম বলেন,গত কয়েকদিন ধরে ব্রহ্মপুত্রের ভাঙনে অনেক জমি বাড়ি নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে। আমাদের কমিউনিটি ক্লিনিকটি ভাঙনের মুখে।গতকাল ক্লিনিকটির স্থাপনা নিলামে তোলা হয়েছিল।সরকারি শিডিউল অনুযায়ী মুল্য না উঠায় বিক্রি করা সম্ভব হয় নাই। আজকে যে অবস্থা দেখতছি যেকোন মহুর্তে ক্লিনিকটি
নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাবে।
তিনি আরো বলেন,আমরা ক্লিনিকের ভিতরে সব আসবাব পত্র ও ওষুধ অন্য জায়গায় নিয়েছি।অস্থায়ী ভাবে সেখানে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হবে।
এ বিষয়ে কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ নজরুল ইসলাম বলেন,অনেক চেষ্টা করেও ক্লিনিকটি রক্ষা করা গেলো না।আবার কবে ওই চরে ক্লিনিকের স্থাপনা হবে জানি না।তবে অস্থায়ী ভাবে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
যাত্রাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ আব্দুল গফুর মিয়া বলেন,নদী ভাঙনে চরভগবতীপুরে প্রায় ৩৬ টি বসতভিটা নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে।আমরা বসতভিটা হারানো পরিবারের তালিকা প্রস্তুত করছি। কাল পরশুর মধ্যে উপজেলা প্রশাসন বরাবর তালিকা জমা দেওয়া হবে।
তিনি আরো বলেন, উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে নির্মান করা একটি মাধ্যমিক স্কুল নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে। একটি কমিউনিটি ক্লিনিক সেটাও নদীর মুখে।এই ক্লিনিক হারালে এ অঞ্চলে আর কবে মানুষজন ক্লিনিক পাবে আল্লাহ জানে।
কুড়িগ্রামের পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘উজানের ঢলে ব্রহ্মপুত্রে পানি বাড়ছে। তবে মাত্রা কম। চরাঞ্চলে কিছু ভাঙন রয়েছে। ভগবতীপুরে চরের ভাঙন প্রতিরোধে অস্থায়ী কার্যক্রমের জন্য প্রায় সাড়ে ৭ কোটি টাকার প্রকল্প প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। তবে সেখানে ওই মূল্যমানের স্থাপনা ও সম্পদ নেই।তারপরও আমরা ভাঙন রোধে যথাসাধ্য চেষ্টা করছি।