Dhaka ০১:০২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

খুলনার ৬টি আসনের ৫টিতেই আ. লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের ছড়াছড়ি

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৩:৩১:৪৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৩ অগাস্ট ২০২৩
  • ১০৬ Time View
মোঃ শামীম হোসেন – খুলনা প্রতিনিধিঃ-
খুলনার ৬টি আসনের মধ্যে ৫টিতেই আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের ছড়াছড়ি। এই আসনগুলোতে ৪ থেকে ১০ জন করে সম্ভাব্য প্রার্থী মনোনয়ন লাভের আশায় ইতোমধ্যে মাঠে নেমে পড়েছেন। এর মধ্যে খুলনা-১, ৫ ও ৬-এ তিনটি আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের কেউ কেউ প্রকাশ্যে বর্তমান সংসদ সদস্যদের সমালোচনা করছেন। মনোনয়ন প্রত্যাশীদের তৎপরতায় ক্ষমতাসীন দলটির তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা বিভিন্ন গ্রুপে বিভক্ত হয়ে পড়েছেন। খুলনা-১ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য ও হুইপ পঞ্চানন বিশ্বাস আবারও দলের কাছে মনোনয়ন চাইবেন। এছাড়া এ আসনে দলের মনোনয়ন প্রত্যাশী রয়েছেন আরও ৯ জন। তারা হলেন- সাবেক সংসদ সদস্য ননী গোপাল মণ্ডল, সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য গ্লোরিয়া ঝর্ণা সরকার, জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক শ্রীমন্ত অধিকারী রাহুল, দাকোপ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান শেখ আবুল হোসেন, বটিয়াঘাটা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান আশরাফুল আলম খান, ভারত বিচিত্রার সম্পাদক ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য নান্টু রায়, দাকোপ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বিনয় কৃষ্ণ রায়, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি রনজিত কুমার মণ্ডল, সাবেক সচিব ড. প্রশান্ত রায়। এছাড়া আবার আওয়ামীলীগের অনেক নেতা ও এলাকা বাসীর পক্ষ থেকে জোড়ে সরে প্রচার ও দাবি রাখছে শেখ সোহেলকে এই আসন দেওয়ার জন্য। জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য নান্টু রায় অভিযোগ করে বলেন, পঞ্চানন বিশ্বাস বার বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলেও জেলার যে কোনো সংসদীয় আসনের তুলনায় খুলনা-১ আসনের এলাকা সবচেয়ে অবহেলিত ও উন্নয়ন বঞ্চিত। পঞ্চানন বিশ্বাস চার বার সংসদ সদস্য হয়েও তার নির্বাচনী এলাকায় দৃশ্যমান কোনো উন্নয়ন ঘটাতে পারেননি। এ অবস্থায় এলাকার জনগণ পরিবর্তন চায়। তবে সংসদ সদস্য পঞ্চানন বিশ্বাস বলেন, এলাকার উন্নয়ন হয়েছে কি হয়নি, সেই মূল্যায়ন করবে এলাকার জনগণ। তিনি যে কথা বলেছেন সেটি তার ব্যক্তিগত মতামত। নির্বাচনের আগে দলের লোক হয়ে এ ধরণের বক্তব্য দিলে দল ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি। ব্যতিক্রম শুধু খুলনা-২ আসনে। এ আসনে আওয়ামী লীগের একমাত্র প্রার্থী প্রধানমন্ত্রীর চাচাতো ভাই ও বর্তমান সংসদ সদস্য শেখ সালাহউদ্দিন জুয়েল। সম্ভাব্য আর কোনো প্রার্থী নেই।
খুলনা-৩ আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশী চারজন। তারা হলেন- বর্তমান সংসদ সদস্য, শ্রম প্রতিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বেগম মন্নুজান সুফিয়ান, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন, বর্তমান সেনাপ্রধানের বোন ও প্রয়াত যুবলীগ নেতা শহীদ ইকবাল বিথারের স্ত্রী অধ্যাপক রুনু ইকবাল বিথার, মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সদস্য শেখ ফারুক হাসান হিটলু। শেখ ফারুক হাসান হিটলু বলেন, বর্তমান সংসদ সদস্য অনেক দিন ধরেই নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তিনি অনেক সিনিয়র। এলাকার নেতাকর্মী ও দলের লোকজন অনেকেই নতুন নেতৃত্ব চাইছে। সে কারণে আমি দলের কাছে মনোনয়ন চাইবো। অনেক দিন ধরে এলাকায় গণসংযোগ করছি। তবে সংসদ সদস্য বেগম মন্নুজান সুফিয়ানের সঙ্গে কথা বলার জন্য অনেকবার মোবাইল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। খুলনা-৪ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীর সংখ্যা ৬ জন। তারা হলেন- বর্তমান সংসদ সদস্য শিল্পপতি আব্দুস সালাম মূর্শেদী, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সুজিত অধিকারী, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মো. কামরুজ্জামান জামাল, যুগ্ম সম্পাদক শরফুদ্দিন বিশ্বাস বাচ্চু, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও এ আসনের সাবেক সাংসদ মরহুম মোস্তফা রশিদী সুজার ছেলে খালেদীন রশিদী সুকর্ন, মহানগর যুবলীগের সভাপতি শফিকুর রহমান পলাশ।
শরফুদ্দিন বিশ্বাস বাচ্চু বলেন, সংসদ সদস্যকে এলাকার মানুষ সবসময় কাছে না পেলে তাদের মনে কষ্ট তৈরি হয়। দল যদি আমাকে মনোনয়ন দেয় এবং আমি যদি নির্বাচিত হতে পারি তাহলে এলাকার মানুষ আমার কাছ থেকে সর্বোচ্চ সেবা পাবে। আব্দুস সালাম মূর্শেদী বলেন, নিয়মিত নির্বাচনী এলাকায় দলীয় ও সরকারি কর্মকাণ্ডে অংশ নিচ্ছি। দলের কাছে যে কেউ মনোনয়ন চাইতেই পারে, সিদ্ধান্ত দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
খুলনা-৫ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী ৬ জন। তারা হলেন- বর্তমান সংসদ সদস্য নারায়ণ চন্দ্র চন্দ, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি মো. সাইফুল ইসলাম, বঙ্গবন্ধু পরিষদের জেলা সহ-সভাপতি ড. মাহাবুব উল ইসলাম, গুটুদিয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মোস্তফা সরোয়ার, ফুলতলা উপজেলা চেয়ারম্যান শেখ আকরাম হোসেন এবং জেলা আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক অজয় সরকার। খুলনা সদর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, বর্তমান সংসদ সদস্যের অনেক বয়স হয়েছে, তিনি এলাকার মানুষকে কাঙ্ক্ষিত সেবা দিতে পারছেন না। তার কর্মকাণ্ডে দলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে তার দূরত্ব বেড়েছে। গত ইউপি নির্বাচনে তিনি নৌকার প্রার্থীদের বিরোধিতা করেছিলেন। এ নিয়ে তৃণমূল পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ রয়েছে। এলাকার মানুষ এখন পরিবর্তন চায়। তবে নারায়ণ চন্দ্র চন্দ বলেন, মনোনয়ন প্রত্যাশীদের কেউ কেউ তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী এবং দলের সিনিয়র নেতারা দেখবেন। আমি মনোনয়ন প্রত্যাশীদের কাছে কৈফিয়ত দেবো না, কৈয়িফত দেবো এলাকার জনগণের কাছে।
খুলনা-৬ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী ৬ জন। তারা হলেন- বর্তমান সংসদ সদস্য শেখ মো. আকতারুজ্জামান বাবু, জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি সাবেক সংসদ সদস্য সোহরাব আলী সানা, কোষাধ্যক্ষ ইঞ্জিনিয়ার জি এম মাহবুবুল আলম, সাংগঠনিক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার প্রেম কুমার মণ্ডল, শিল্প বাণিজ্য সম্পাদক শেখ রাশেদুল ইসলাম রাসেল, বিএমএ নেতা ডা. মো. শেখ শহীদ উল্লাহ।
জি এম মাহবুবুল আলম বলেন, দীর্ঘদিনেও এলাকার কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন হয়নি। বর্তমান সংসদ সদস্য ঠিকাদারি কাজগুলো এককভাবে নিয়ন্ত্রণ করেন, বিভিন্ন দপ্তরে নিয়োগের বিষয়ে নেতা-কর্মীদের মধ্যে অসন্তোষ আছে। তিনি দলীয় নেতা-কর্মীদের প্রাধান্য না দিয়ে নিজস্ব লোকজনকে গুরুত্ব দেন বেশি। দলের নেতা-কর্মীদের বেশিরভাগই তার বিপক্ষে। দলের সিনিয়র নেতাদের মূল্যায়ন করেন না। এলাকার মানুষ বহিরাগত কাউকে মেনে নিতে চাইছে না। এ কারণে মানুষ পরিবর্তন চায়।
প্রেম কুমার মণ্ডল বলেন, বর্তমান সংসদ সদস্যের ব্যাপারে দলীয় নেতা-কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ আছে। তবে সংসদ সদস্য আকতারুজ্জামান বাবু বলেন, মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে কেউ কেউ গণসংযোগে গিয়ে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করছে। প্রধানমন্ত্রী মনোনয়ন প্রত্যাশীদের শুধু উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের প্রচারণা চালাতে বলেছেন। দলের সংসদ সদস্যদের বিরুদ্ধে প্রচারণা চালাতে নিষেধ করেছেন। বিষয়টি দলের সিনিয়র নেতারা দেখে ব্যবস্থা নেবেন।
Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

আলোচিত

বোয়ালমারীতে চার বছর কর্মস্থলে না গিয়েও বেতন ভাতা নিচ্ছে উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ঝুমা !

খুলনার ৬টি আসনের ৫টিতেই আ. লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের ছড়াছড়ি

Update Time : ০৩:৩১:৪৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৩ অগাস্ট ২০২৩
মোঃ শামীম হোসেন – খুলনা প্রতিনিধিঃ-
খুলনার ৬টি আসনের মধ্যে ৫টিতেই আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের ছড়াছড়ি। এই আসনগুলোতে ৪ থেকে ১০ জন করে সম্ভাব্য প্রার্থী মনোনয়ন লাভের আশায় ইতোমধ্যে মাঠে নেমে পড়েছেন। এর মধ্যে খুলনা-১, ৫ ও ৬-এ তিনটি আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের কেউ কেউ প্রকাশ্যে বর্তমান সংসদ সদস্যদের সমালোচনা করছেন। মনোনয়ন প্রত্যাশীদের তৎপরতায় ক্ষমতাসীন দলটির তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা বিভিন্ন গ্রুপে বিভক্ত হয়ে পড়েছেন। খুলনা-১ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য ও হুইপ পঞ্চানন বিশ্বাস আবারও দলের কাছে মনোনয়ন চাইবেন। এছাড়া এ আসনে দলের মনোনয়ন প্রত্যাশী রয়েছেন আরও ৯ জন। তারা হলেন- সাবেক সংসদ সদস্য ননী গোপাল মণ্ডল, সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য গ্লোরিয়া ঝর্ণা সরকার, জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক শ্রীমন্ত অধিকারী রাহুল, দাকোপ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান শেখ আবুল হোসেন, বটিয়াঘাটা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান আশরাফুল আলম খান, ভারত বিচিত্রার সম্পাদক ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য নান্টু রায়, দাকোপ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বিনয় কৃষ্ণ রায়, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি রনজিত কুমার মণ্ডল, সাবেক সচিব ড. প্রশান্ত রায়। এছাড়া আবার আওয়ামীলীগের অনেক নেতা ও এলাকা বাসীর পক্ষ থেকে জোড়ে সরে প্রচার ও দাবি রাখছে শেখ সোহেলকে এই আসন দেওয়ার জন্য। জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য নান্টু রায় অভিযোগ করে বলেন, পঞ্চানন বিশ্বাস বার বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলেও জেলার যে কোনো সংসদীয় আসনের তুলনায় খুলনা-১ আসনের এলাকা সবচেয়ে অবহেলিত ও উন্নয়ন বঞ্চিত। পঞ্চানন বিশ্বাস চার বার সংসদ সদস্য হয়েও তার নির্বাচনী এলাকায় দৃশ্যমান কোনো উন্নয়ন ঘটাতে পারেননি। এ অবস্থায় এলাকার জনগণ পরিবর্তন চায়। তবে সংসদ সদস্য পঞ্চানন বিশ্বাস বলেন, এলাকার উন্নয়ন হয়েছে কি হয়নি, সেই মূল্যায়ন করবে এলাকার জনগণ। তিনি যে কথা বলেছেন সেটি তার ব্যক্তিগত মতামত। নির্বাচনের আগে দলের লোক হয়ে এ ধরণের বক্তব্য দিলে দল ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি। ব্যতিক্রম শুধু খুলনা-২ আসনে। এ আসনে আওয়ামী লীগের একমাত্র প্রার্থী প্রধানমন্ত্রীর চাচাতো ভাই ও বর্তমান সংসদ সদস্য শেখ সালাহউদ্দিন জুয়েল। সম্ভাব্য আর কোনো প্রার্থী নেই।
খুলনা-৩ আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশী চারজন। তারা হলেন- বর্তমান সংসদ সদস্য, শ্রম প্রতিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বেগম মন্নুজান সুফিয়ান, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন, বর্তমান সেনাপ্রধানের বোন ও প্রয়াত যুবলীগ নেতা শহীদ ইকবাল বিথারের স্ত্রী অধ্যাপক রুনু ইকবাল বিথার, মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সদস্য শেখ ফারুক হাসান হিটলু। শেখ ফারুক হাসান হিটলু বলেন, বর্তমান সংসদ সদস্য অনেক দিন ধরেই নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তিনি অনেক সিনিয়র। এলাকার নেতাকর্মী ও দলের লোকজন অনেকেই নতুন নেতৃত্ব চাইছে। সে কারণে আমি দলের কাছে মনোনয়ন চাইবো। অনেক দিন ধরে এলাকায় গণসংযোগ করছি। তবে সংসদ সদস্য বেগম মন্নুজান সুফিয়ানের সঙ্গে কথা বলার জন্য অনেকবার মোবাইল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। খুলনা-৪ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীর সংখ্যা ৬ জন। তারা হলেন- বর্তমান সংসদ সদস্য শিল্পপতি আব্দুস সালাম মূর্শেদী, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সুজিত অধিকারী, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মো. কামরুজ্জামান জামাল, যুগ্ম সম্পাদক শরফুদ্দিন বিশ্বাস বাচ্চু, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও এ আসনের সাবেক সাংসদ মরহুম মোস্তফা রশিদী সুজার ছেলে খালেদীন রশিদী সুকর্ন, মহানগর যুবলীগের সভাপতি শফিকুর রহমান পলাশ।
শরফুদ্দিন বিশ্বাস বাচ্চু বলেন, সংসদ সদস্যকে এলাকার মানুষ সবসময় কাছে না পেলে তাদের মনে কষ্ট তৈরি হয়। দল যদি আমাকে মনোনয়ন দেয় এবং আমি যদি নির্বাচিত হতে পারি তাহলে এলাকার মানুষ আমার কাছ থেকে সর্বোচ্চ সেবা পাবে। আব্দুস সালাম মূর্শেদী বলেন, নিয়মিত নির্বাচনী এলাকায় দলীয় ও সরকারি কর্মকাণ্ডে অংশ নিচ্ছি। দলের কাছে যে কেউ মনোনয়ন চাইতেই পারে, সিদ্ধান্ত দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
খুলনা-৫ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী ৬ জন। তারা হলেন- বর্তমান সংসদ সদস্য নারায়ণ চন্দ্র চন্দ, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি মো. সাইফুল ইসলাম, বঙ্গবন্ধু পরিষদের জেলা সহ-সভাপতি ড. মাহাবুব উল ইসলাম, গুটুদিয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মোস্তফা সরোয়ার, ফুলতলা উপজেলা চেয়ারম্যান শেখ আকরাম হোসেন এবং জেলা আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক অজয় সরকার। খুলনা সদর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, বর্তমান সংসদ সদস্যের অনেক বয়স হয়েছে, তিনি এলাকার মানুষকে কাঙ্ক্ষিত সেবা দিতে পারছেন না। তার কর্মকাণ্ডে দলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে তার দূরত্ব বেড়েছে। গত ইউপি নির্বাচনে তিনি নৌকার প্রার্থীদের বিরোধিতা করেছিলেন। এ নিয়ে তৃণমূল পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ রয়েছে। এলাকার মানুষ এখন পরিবর্তন চায়। তবে নারায়ণ চন্দ্র চন্দ বলেন, মনোনয়ন প্রত্যাশীদের কেউ কেউ তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী এবং দলের সিনিয়র নেতারা দেখবেন। আমি মনোনয়ন প্রত্যাশীদের কাছে কৈফিয়ত দেবো না, কৈয়িফত দেবো এলাকার জনগণের কাছে।
খুলনা-৬ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী ৬ জন। তারা হলেন- বর্তমান সংসদ সদস্য শেখ মো. আকতারুজ্জামান বাবু, জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি সাবেক সংসদ সদস্য সোহরাব আলী সানা, কোষাধ্যক্ষ ইঞ্জিনিয়ার জি এম মাহবুবুল আলম, সাংগঠনিক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার প্রেম কুমার মণ্ডল, শিল্প বাণিজ্য সম্পাদক শেখ রাশেদুল ইসলাম রাসেল, বিএমএ নেতা ডা. মো. শেখ শহীদ উল্লাহ।
জি এম মাহবুবুল আলম বলেন, দীর্ঘদিনেও এলাকার কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন হয়নি। বর্তমান সংসদ সদস্য ঠিকাদারি কাজগুলো এককভাবে নিয়ন্ত্রণ করেন, বিভিন্ন দপ্তরে নিয়োগের বিষয়ে নেতা-কর্মীদের মধ্যে অসন্তোষ আছে। তিনি দলীয় নেতা-কর্মীদের প্রাধান্য না দিয়ে নিজস্ব লোকজনকে গুরুত্ব দেন বেশি। দলের নেতা-কর্মীদের বেশিরভাগই তার বিপক্ষে। দলের সিনিয়র নেতাদের মূল্যায়ন করেন না। এলাকার মানুষ বহিরাগত কাউকে মেনে নিতে চাইছে না। এ কারণে মানুষ পরিবর্তন চায়।
প্রেম কুমার মণ্ডল বলেন, বর্তমান সংসদ সদস্যের ব্যাপারে দলীয় নেতা-কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ আছে। তবে সংসদ সদস্য আকতারুজ্জামান বাবু বলেন, মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে কেউ কেউ গণসংযোগে গিয়ে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করছে। প্রধানমন্ত্রী মনোনয়ন প্রত্যাশীদের শুধু উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের প্রচারণা চালাতে বলেছেন। দলের সংসদ সদস্যদের বিরুদ্ধে প্রচারণা চালাতে নিষেধ করেছেন। বিষয়টি দলের সিনিয়র নেতারা দেখে ব্যবস্থা নেবেন।