গত বছর করোনার সময় চাকুরি ছেড়ে দিয়ে মৌসুমী ফল চাষের উদ্যোগ নিয়ে সফল হয়েছে গোলাম মোস্তফা দম্পতি।
নওগাঁ জেলা প্রতিনিধি ঃ
বাগানের একপাশে শুধু বরই আর বরই। ছোট গাছগুলো বরইয়ের ভারে নুইয়ে পড়েছে। অপর পাশে পেয়ার`র সারি সারি গাছ। বাগানের মাঝে দিয়ে দেশী জাতের মালটার সারি সারি গাছ। এ বাগান গড়ে তুলেছেন নওগাঁর বর্ষাইল ইউনিয়নের কেশবপুর গ্রামের মোস্তফা দম্পতি।
গত বছর করোনার সময় এনজিওর চাকুরি ছেড়ে দিয়ে ৭ একর জমি ইজারা নেন মোস্তফা দম্পতি। পরে সেখানে বল সুন্দরী, কাশ্মীরি, আপেল কুল জাতের বরই, দেশী পেয়ারা, মালটা, বারমাসি আমের আবাদ করেন। এক বছরে মোস্তফা দম্পতি পেয়েছেন অভাবনীয় সাফল্য। তাঁদের এ সফলতায় এ রকম উদ্যোগ গ্রহণ করেছে একই ইউনিয়নের আরও ৩টি পরিবার।
গত সোমবার উপজেলা সদরের বর্ষাইল ইউনিয়নের কেশবপুর এলাকায় মোস্তফা দম্পতির বাগানে গিয়ে দেখা যায়, গোলাম মোস্তফা, তাঁর স্ত্রী আম্বিয়া আকতার সহ আরও তিন আদিবাসী মহিলা বরই, ও পেয়ারা তুলতে ব্যস্ত। এ সময় কথা হয় গোলাম মোস্তফার সঙ্গে। তিনি বলেন, করোনার সময় চারদিকে হাহা কার। চাকরি ছেড়ে গ্রামে চলে এসেছি। নিজের কোনো কর্মসংস্থান নেই। তাই আমি ও আমার স্ত্রী উদ্দোগ্য নেই ফল-ফলাদির বাগান করার, এতে আশে পাশের কিছু পরিবার বাগানের কাজে সহযোগিতা করে, তাঁরাও আর্থিকভাবে সচ্ছল হবে। সারা দিন অন্য কোনো দিকে সময় না দিয়ে আমি ও আমার স্ত্রী বাগানে সময় দেই।
গাছ পরিচর্যা ও বরই এবং পেয়ারা তুলতে তাঁদের আরও স্থানীয় ১০ যুবক সহযোগিতা করেন। সবার পরিশ্রমে বড়ই, পেয়ারা এবং মালটা চাষে ভালো আয় করছেন তাঁরা। এতে তাঁরা নিজেরা চলার পাশাপাশি প্রত্যেকের পরিবারও উপকৃত হচ্ছে।
গোলাম মোস্তফার স্ত্রী আম্বিয়া আকতার আরও বলেন, প্রতিদিন তাঁর বাগানে আসা অটোরিকশাসহ অন্যান্য যানবাহনের চালকদেরও আয় হচ্ছে। প্রতিটি গাছ থেকে ২৫ থেকে ৩০ কেজি বড়ই এবং প্রতিটি পেয়ারা গাছ থেকে ৮ থেকে ১২ কেজি পেয়ারা তুলতে পারছেন তাঁরা। বাগানের জমিটি তাঁরা আরেকজনের কাছ থেকে ইজারা নেন। এ থেকে তিনি প্রায় তিন লাখ টাকা আয় করতে পারবেন।
স্থানীয় উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা স.ম সফিকুর রহমান বলেন, তাঁরা নিয়মিত মোস্তফা দম্পতি আম্বিয়া আকতার’কে পরামর্শ দিয়ে আসছেন। তাঁরা খুব অল্প সময়ে বরই, পেয়ারা মালটা চাষে যেভাবে সফলতা পেয়েছেন, সেটা অন্যদের জন্য দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। তিনি আশাবাদী তাঁদের এ সফলতা দেখে অন্যান্য অসচ্ছল পরিবারের বেকার উদ্যোক্তারা এ রকম বাগান চাষে আগ্রহী হয়ে উঠবেন।
সুবীর দাস
নওগাঁ জেলা প্রতিনিধি