গাছপালা রক্ষা ও গাছের যত্ন নেওয়া যেন একই সুত্রে গাঁথা। “গাছ লাগান পরিবেশ বাঁচান”
স্লোগানটি কেবল ব্যানারে কিংবা আলোচনা- সভার মধ্যে সীমাবদ্ধ রেখেছে কতিপয় ব্যক্তি। একটি গাছ কাটলে তার পরিবর্তে ৩-৪টি গাছ লাগান এটাও যেন বইয়ের পাতায় সীমাবদ্ধ, মুখে মুখে চর্চা ছাড়া কিছুই হয় না,কারন অনেক শিক্ষার্থীরা মন থেকে এটাকে ভালোবাসে না। অথচো সৃষ্টির সবচেয়ে অমূল্য দান হলো গাছ।আমি মনে করি গাছ লাগলোর পাশাপাশি এটার যত্ন নেওয়া জরুরী। সুন্দরভাবে বেড়ে উঠতে প্রত্যেক জীবের কমবেশি যত্নের প্রয়োজন যদিও গাছ কম যত্নেই বেড়ে উঠে। গাছের যত্ন বলতে গেলে একটি শিশুকে যেমন যত্ন করে বড় করতে হয়,গাছের ক্ষেত্রে এমনটা করতে হয় না। গাছের যত্ন হলো, গাছ যাতে প্রতিকুল পরিবেশ না পায় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। যেমন -অযথা গাছ না কাটা, গাছের পাতায় ময়লা জমে থাকলে সুযোগ মতো পরিষ্কার করা,ছাঁদ বাগানে নিয়মিত পানি দেওয়া,গাছপালার পরিবেশ রক্ষা করা,প্রয়োজনে কৃত্রিমভাবে পরিবেশ সৃষ্টি করে দেওয়া,ইন্ডাস্ট্রিজের ময়লা যাতে গাছপালার ক্ষতি না করে সেদিকে লক্ষ রাখা,বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতি সনাক্ত করে বোটানিক্যাল গার্টেনে লাগানো,অযথা মাটি খনন না করা,বনের গাছপালা ধ্বংস না করা ইত্যাদি।
এছাড়া ছাঁদ বাগানের যত্ন নেওয়ার পদ্ধতি হলো-
লম্বা গাছকে পিছনে ও ছোট গাছকে সামনে রাখতে হবে।
টবে বা ফ্রেমে খৈল দেয়া যাবে না, এতে পিঁপড়ার উপদ্রব বাড়তে পারে।
বাজার থেকে কেনা প্যাকেটজাত কম্পোস্ট সার ব্যবহার করলে ভালো হয়।
বছরে একবার নতুন মাটি দিয়ে পুরানো মাটি বদলিয়ে দিতে হবে। এটি অক্টোবর মাসে করা ভালো।
ছাদের বাগানের জন্য মিশ্র সার, গুঁটি ইউরিয়া, খৈল, হাড়ের গুঁড়া (পচিয়ে) ব্যবহার করা ভালো।
অবস্থা বুঝে গাছের গোড়ায় চুনের পানি সপ্তাহে ১ বার ব্যবহার করা যায়।
জীবনের মুল্যবান উৎসে কারন হলো- গাছ বায়ুমণ্ডলে থেকে কার্বন ডাই অক্সাইড নিয়ে অক্সিজেন দেয় যা প্রশ্বাস রূপে জীবজন্তুর ফুসফুসে গিয়ে বেঁচে থাকতে সাহায্য করে জীবনের জন্য প্রয়োজনীয় খাদ্য যেমন ফলমুল ও শাকসবজি আহোরণ করে এবং তৃণভোজী প্রাণী গাছপালার পাতা ও অন্যান্য অংশ প্রয়োজনে খাদ্য হিসেবে গ্রগণ করে।
গাছপালা বায়ুর ক্ষতিকর পদার্থ ধ্বংশ করে। গাছপালা থাকার জন্যই পৃথিবীতে বৃষ্টি হয় যা মানুষ ও জীবজন্তুর জীবনের অত্যান্ত প্রয়োজন। শুধু তাই নয়, গাছের সবুজ রঙের পাতার দিকে তাকালেই মানুষের দৃষ্টিশক্তির উপকার হয়। গাছ প্রচুর মাত্রায় শব্দ চলাচলকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে ফলে গাছ আমাদের শব্দদূষণ থেকেও রক্ষা করে। এছাড়া তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণেও গাছপালা চমৎকার ভুমিকা পালন করে। এজন্য চাই গাছ লাগার পাশাপাশি গাছের যত্ন নেওয়া।শুধু গাছ লাগালেই পরিবেশ সুরক্ষিত থাকবে না,প্রয়োজন মতো যত্ন নেওয়া প্রয়োজন। কোনো অনুষ্ঠানে উদ্ভোদনে একটি গাছ লাগালাম আর অন্যদিকে বন জঙ্গল মনে করে শত শত গাছ ধ্বংস করলাম, এমনটা হওয়া উচিত নয়। আসুন গাছ লাগানোর পাশাপাশি গাছের যত্ন জোরদার করি,তাহলেই সুন্দর প্রকৃতি সুরক্ষিত থাকবে।
মাসুম বিল্লাহ
শিক্ষার্থী ও সাংবাদিক
উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
** চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ‘চবিতে’ বিজয় দিবসে শহীদদের স্মরণে বিনম্র শ্রদ্ধা জানানো হয়।**