“চট্টগ্রামে লাইটার শ্রমিকদের কর্মবিরতি”
মোঃ ইব্রাহিম শেখ চট্টগ্রাম ব্যুরো:
পতেঙ্গা চরপাড়া ঘাটের ইজারা বাতিল, বন্দর চেয়ারম্যান ও পতেঙ্গা থানার
ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) প্রত্যাহারসহ ৫ দফা দাবিতে কর্মবিরতি পালন করছেন লাইটার শ্রমিকরা।
শুক্রবার (১১ নভেম্বর) ভোর ছয়টা থেকে কর্ণফুলীর ১৬টি ঘাট ও বহির্নোঙরে অবস্থানরত লাইটার শ্রমিকরা
কাজ বন্ধ করে দেন। বাংলাদেশ লাইটার শ্রমিক ইউনিয়নের সহ-সভাপতি মোহাম্মদ নবী আলম বিষয়টি নিশ্চিত
করেছেন। তিনি জানান, পতেঙ্গা চরপাড়া ঘাটের ইজারা বাতিল, বন্দর চেয়ারম্যান ও পতেঙ্গা থানার ওসিকে প্রত্যাহারসহ ৫
দফা দাবিতে কর্মবিরতি পালন করছেন লাইটারের শ্রমিকরা।
পতেঙ্গা সী বিচ এর উত্তর পাশে চরপাড়া ঘাট ইজারা দিয়েছে। বাধ্য হয়ে লাইটার শ্রমিকরা আনোয়ারা পারকির
চর এলাকায় চলে যান। কিন্তু সেখানে শ্রমিকরা জাহাজ থেকে নেমে দৈনন্দিন বাজার করার জন্য চাইনিজ কার্ড
ব্যবহার করে আসছিল। সেই ঘাটে শ্রমিকদের ওপর নির্যাতন করা হয়েছে, বাজার নিয়ে জাহাজে ফিরতে পারেননি
অনেক শ্রমিক। বাধ্য হয়ে ৫ দফা দাবিতে কর্মবিরতি পালন করছেন লাইটারের শ্রমিকরা’।
শুক্রবার বিকেল তিনটায় স্ট্র্যান্ড রোডের বাংলাবাজার লাইটার শ্রমিক ইউনিয়ন কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ
করবেন বলে জানান নবী আলম।
বিদেশ থেকে গম, চাল, ডাল, ছোলা, চিনি, তেল, ক্লিংকার ইত্যাদি খোলা পণ্য বড় জাহাজে বহির্নোঙরে (সাগরে)
আনা হয়। সেখান থেকে বিভিন্ন গুদাম, ঘাট, ডিপো, শিল্প-কারখানায় এসব পণ্য নিয়ে যায় লাইটারেজ জাহাজ।
“চট্টগ্রামে ১৫ হাজার হেক্টর অনাবাদি জমি”
মোঃ ইব্রাহিম শেখ চট্টগ্রাম ব্যুরো:
দুদিন আগে মন্ত্রী পরিষদ সচিবকে দেশের আনাচে কানাচে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা অনাবাদি
জমি খুঁজে বের করতে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলামকে নির্দেশ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
জেলা প্রশাসকের সহযোগিতায় সেসব অনাবাদি জমিকে আবাদযোগ্য করে গড়ে তোলেন সেই নির্দেশও দেন সরকারপ্রধান।
সেই নির্দেশনার পর অনাবাদি জমিগুলোকে আবাদযোগ্য করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি ৩ বছরের অধিক কোন
জমি অনাবাদি রাখলে খাস করে নেওয়ার আইন জানিয়ে ‘গণবিজ্ঞপ্তি’ জারি করা হচ্ছে বিভিন্ন উপজেলায়।
চট্টগ্রাম জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, চট্টগ্রামে জেলার মধ্যে মোট আবাদযোগ্য জমির পরিমাণ ২ লাখ ২৮
হাজার ৯৬৬ হেক্টর। আর এর মধ্যে প্রকৃত আবাদি জমি রয়েছে ২ লাখ ১৪ হাজার ৮১০ হেক্টর। আর বাকি চাষযোগ্য ১৪
হাজার ১৫৬ হেক্টর জমি বছরব্যাপী পতিত থাকে।
তবে দেশের সাধারণত ঋতু ছয়টি হলেও কৃষির মৌসুম তিনটি। সেগুলো হলো— খরিফ-১, খরিফ-২ ও রবি। উৎপাদনের
ওপর ভিত্তি করে যদিও কৃষি মৌসুমকে তিনভাগে ভাগ করা হয়েছে। কিন্তু ভৌগোলিক অবস্থান, আবহাওয়া, জলবায়ু এবং
প্রয়োজনের তাগিদে প্রতি মাসের প্রতিটি দিনই কিছু না কিছু কৃষি কাজ করতে হয়। চাষিরা নিজস্ব চিন্তা ধারা, চাহিদা ও
আর্থিক দিক বিবেচনা করে নিজের মতো প্রতিদিনের কাজগুলোকে সাজান।
তাই কৃষির তিন মৌসুমে চাষযোগ্য পতিত জমির পরিমাণ বাড়ে-কমে। খরিফ-১ মৌসুমে প্রধান ফসল হলো আউশ ধান
এবং গ্রীষ্মকালিন সবজি। এ মৌসুমে আবাদী জমির পরিমাণ ৯৩ হাজার ৮৮২ হেক্টর। বাকি ১ লাখ ২০ হাজার ৯২৮
হেক্টর জমি পতিত থাকে।
অন্যদিকে খরিপ-২ মৌসুমে প্রধান ফসল হলো আমন ধান এবং শরৎকালীন সবজি। এ মৌসুমে ২ লাখ ১৩ হাজার ৯৫৪
হেক্টর জমিতে আবাদ হয়। বাকি পতিত জমির পরিমাণ থাকে ৮৫৬ হেক্টর। এছাড়া রবি মৌসুমে প্রধান ফনল হলো বোরো
ধান, শীতকালীন সবজি, তেল ফসল, ডাল ফসল, গম ও ভূট্টা। এই মৌসুমে আবাদ করা হয় ১ লাখ ৫৭ হাজার ৩৫৮ হেক্টর
জমিতে। বাকি ৫৭ হাজার ৪৫২ হেক্টর জমি পতিত থেকে যায়।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মুহাম্মদ আখতারুজ্জামান বলেন, চট্টগ্রাম জেলায় বছরব্যাপী মৌসুমী
পতিত জমির পরিমাণ ১৪ হাজার ১৫৬ হেক্টর। প্রধানমন্ত্রী সারাদেশের অনাবাদী জমি খুঁজে বের করে আবাদযোগ্য করে
তোলার নির্দেশ দিয়েছেন। চট্টগ্রামে যে পতিত জমিগুলো রয়েছে; সেগুলো আবাদযোগ্য করে তোলা হবে।
চট্টগ্রামে বছরব্যাপী পতিত জমি নির্ধারণ থাকলেও মৌসুম ঘুরে আসতেই সে পতিত জমির পরিমাণ কমে এবং বাড়ে বলে
জানান তিনি। তিনি আরও বলেন, কৃষির তিন মৌসুমে ভিন্ন ভিন্ন জমি পতিত থাকে। এক মৌসুমে বেশি হলে অন্য মৌসুমে
কমে যায়। তবে খরিপ-১ মৌসুমে পতিত জমির পরিমাণ বেশি থাকে বলে জানান তিনি।
ওই মৌসুমে কেন পতিত জমির পরিমাণ বেশি থাকে সেই বিষয়ে জানতে চাইলে মুহাম্মদ আখতারুজ্জামান বলেন, খরিপ-
১’কে আউশ ধানের মৌসুমও বলা হয়। এ মৌসুমে সেচ সুবিধার অভাব এবং বোরো ধান দেরিতে রোপন ও কাটার কারণে
এ সমস্যা হয়ে থাকে। রবি মৌসুমেও বেশিরভাগ জমি সেচ সুবিধার অভাবে পতিত থাকে। তবে খরিপ-২ অর্থাৎ আমন
ধানের মৌসুমে সবচেয়ে কম জমি পতিত থাকে। এসময় ২ লাখ ১৩ হাজার ৯৫৪ হেক্টর জমিতেই আবাদ হয়। আর মাত্র
৮৫৬ হেক্টর জমি পতিত থাকে।
“চট্রগ্রাম সবজির বাজারে স্বস্তি ফিরেছে”
মোঃ ইব্রাহিম শেখ চট্টগ্রাম ব্যুরো:
গত সপ্তাহেও নগরের বাজারগুলোতে চড়া দামে বিক্রি হয়েছে সবজি। শীতের
আগাম বার্তা দিতেই স্বস্তি ফিরেছে সবজির বাজারে। প্রায় সব ধরনের সবজির দাম কিছুটা কমেছে।
শুক্রবার (১১ নভেম্বর) সকালে নগরের বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতিকেজি গোল বেগুন ১০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে
৭০ টাকায়, লম্বা বেগুন ৫০ টাকা, ফুলকপি ২০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকা, হাইব্রিড শসা ৯০ টাকা, চিচিঙ্গা
৪০ টাকা, মুলা ৩০ টাকা, করলা ৬০ টাকা, কচুমুখি ৫০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা, বাঁধাকপি ৪০ টাকা, পটল ৫০
টাকা, লাউ ৭০ টাকা, চালকুমড়া ৫০ টাকা, ঢেঁড়স ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাশাপাশি শিম, টমেটো ও গাজর
বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৪০ টাকায়। তবে এখনো দাম কমেনি ক্যাপসিকামের। সবুজ ক্যাপসিকাম বিক্রি হচ্ছে
৩০০ টাকায়, লাল ও হলুদ ক্যাপসিকাম ৬০০ টাকা।
নগরের বহদ্দারহাট বাজারে গত সপ্তাহে ১৮০ টাকায় বিক্রি হওয়া ব্রয়লার মুরগি এখন বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকায়।
দেশি মুরগির কেজিতেও ২০ টাকা কমে দাম ঠেকেছে ৫২০ টাকায়। পাশাপাশি গত সপ্তাহে ১৪০ টাকায় বিক্রি
হওয়া ফার্মের ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৩৫ টাকায়।
চকবাজারের সবজি বিক্রেতা আব্দুল মতিন বলেন, গ্রামাঞ্চল থেকে সবজি আশা শুরু করেছে। সেই সঙ্গে সবজির
দামও কমতে শুরু করেছে। শীত পুরোদমে এলে আরও কমে যাবে। তখন সরবরাহ আরও বাড়বে।
শুক্রবার সকালে নগরের মুরাদপুর এলাকায় বাজার করতে আসা রাকিব উদ্দিন মুরাদ বাংলানিউজকে বলেন,
আগের চেয়ে সবজির দাম কিছুটা কমেছে। তাই একসঙ্গে হরেক রকমের সবজি নিয়েছি। চিনির দাম বেড়েছে
অনেক বেশি। নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দামও বাড়তি। এর মধ্যে সবজির বাজারে কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে। তবে
মাছ-মাংসের দাম কমেনি বলে জানান তিনি।
“গাছের সঙ্গে পিকনিকের বাসের ধাক্কায় নিহত ২”
মোঃ ইব্রাহিম শেখ চট্টগ্রাম ব্যুরো:
লোহাগাড়ায় গাছের সঙ্গে পিকনিক বাসের ধাক্কায় দুইজন নিহত হয়েছেন। এ
সময় আহত হয়েছেন বাসের আরও ২১ যাত্রী। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৩টার দিকে উপজেলার চট্টগ্রাম-
কক্সবাজার মহাসড়কের আধুনগর হাজির রাস্তার মাথা এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- অভিজিৎ ও সাখাওয়াত ছিদ্দিক। তবে আহতদের পরিচয় পাওয়া যায়নি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, কক্সবাজারমুখী দ্রুতগতির সৌদিয়া বাসটি ঘটনাস্থলে পৌঁছলে নিয়ন্ত্রণ হারায়। এরপর
মহাসড়কের দক্ষিণ পাশে গাছের সঙ্গে ধাক্কা লাগলে বাসটি সড়কে উল্টে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই বাসের দুই যাত্রী
নিহত হন। এ সময় আহত হয়েছেন বাসের আরো ২১ যাত্রী।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দোহাজারী হাইওয়ে পুলিশের এসআই সুমন রহমান।
তিনি জানান, যাত্রীবাহী পিকনিকের বাসটি চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার যাচ্ছিল। দ্রুতগতির কারণে বাসটি পৌঁছলে
উল্টে যায়। এ সময় দুজন যাত্রী নিহত ও ২১ যাত্রী আহত হন। মরদেহ ও গাড়ি উদ্ধার করে হাইওয়ে থানার
হেফাজতে রাখা হয়েছে। এ ব্যাপার আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।