চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) :
বাংলাদেশের চট্টগ্রাম শহর থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার দূরে হাটহাজারী থানায় অবস্থিত। বহুল গবেষণাধর্মী বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে এটি একটি। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় ২৭,৫০০ শিক্ষার্থী এবং ৮৭২ জন শিক্ষক রয়েছেন। অধিকাংশ শিক্ষক গবেষণায় সম্পৃক্ত। আয়তনের দিক থেকে এটি দেশের প্রথম বিশ্ববিদ্যালয়। সবুজে ঘেরা পাহাড়ে আবৃত বাংলাদেশের সরকারি বহু-অনুষদভিত্তিক গবেষণা বিশ্ববিদ্যালয়টি ১৯৬৬ সালে চট্টগ্রাম স্থাপিত হয়। এটি দেশের তৃতীয় এবং শিক্ষাঙ্গণ আয়তনের দিক থেকে দেশের সর্ববৃহৎ বিশ্ববিদ্যালয়। চবির বায়োলোক্যাল ফ্যাকাল্টি দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে বড় ফ্যাকাল্টি,যেখানে উদ্ভিদ ও প্রাণী নিয়ে বৃহৎ গবেষণা হয়।
শতশত পাখির কলকল শব্দে ঘুম ভাঙ্গে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের । ২৩০০ একর আয়তনের ক্যাম্পাসে বিচরণ করে দুই শতাধিক প্রজাতির পাখি। তবে ক্যাম্পাসে দেশি পাখির সংখ্যা বাড়লেও বন্ধ হয়ে গেছে অতিথি পাখির আগমন। আজ থেকে ১৫-২০ বছর পুর্বে পরিযায়ী পাখি আসতো চবি ক্যাম্পাসে কিন্তু বর্তমানে তেমন চোখে পড়ে না। বিভিন্ন মৌসুমে ইন্ডিয়া সাইবেরিয়া, চীন ও নরওয়েসহ বিভিন্ন দেশ থেকে প্রায় ৬০ থেকে ৬৫ প্রজাতির পাখি আসত চবি ক্যাম্পাসে। ২০১০ সালের পর সেই চিত্র আর মিলছে না।
ক্যাম্পাসজুড়ে ছিল সরালি, হরিয়াল, চেস্টনাট, হেডেড বি ইটার, মথুরা, কোকিল, মৌটুসী, সেন্টমার্টিন, ধনেশ, কাঠঠোকরা, পেঁচা, ঘুঘু, বাবুই, ফেইচ্চা চড়ুই, শালিক, ময়না,সিপাহি বুলবুল, বনমোরগ, গ্রিন ম্যাগপাই, রবিন, কাল মাথার ইষ্টিকুটুম, মাছারাঙা, জংলি মুরগি, ছাতারে পাখি, অতিথি পাখি আগের মতো না আসায় বিষয়টি নিয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণী বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক প্রভাষক হায়দার আশ্রয় প্রতিদিনকে বলেন এক সময় এখানে সরালি নামে এক ধরনের পাখি আসতো। যেটা জাহাঙ্গীনগর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এখনো আসে। চবি ক্যাম্পাসে যে একে বারে আসে না, এমনটা না, মাঝে মাঝে আসে।
সরালি পাখির পরিবেশ নিয়ে কথা বলতে গেলে তিনি বলেন, লেকের মতো পরিবেশে আসে, যেখানে মানুষের চলাচল সীমিত।
সরালি পাখিটি যাতে আগের মতো দেখা যায় এজন্য তার পরিবেশ সৃষ্টি করে দিতে হবে।
তিনি আরো বলেন পরিযায়ী পাখি আর অতিথি পাখি এক না। আমরা অনেকেই বিষয়টি নিশ্চিত হতে না পেরে ভুল করি। আসলে দেশের সীমানা আছে,সীমানা পেরুলেই অন্য দেশ। কিন্তু পাখির জন্য তো সীমানা নেই,পাখির কোনো দেশ নেই,পাখি সব খানেই ঘুরতে পারে মুক্তভাবে। তবে পরিবেশ ঠিক থাকলে অনেক পাখি আসতো। ঐ ডিপার্টমেন্টের আরেক সিনিয়র শিক্ষক ড.মোহাম্মদ আব্দুল ওয়াহেদ চৌধুরী বলেন মানুষের বেশি মানুষের চলাচল অর্থাৎ শব্দ দুষণকেই চিহ্নিত করেছেন।
উদ্ভিদের দ্বারা কোনো সমস্যা হচ্ছে কি না,এ বিষয়ে কথা বলতে গেলে, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক প্রফেসর ড. শেখ বখতিয়ার উদ্দীন বলেন আমরা কখনো এমন পরিবেশ তৈরী করি নি যার কারনে অতিথি পাখি কমছে। বরং আমরা বিভিন্ন প্রান্তে গাছ বিভিন্ন প্রজাতির উদ্ভিদ লাগিয়ে আমরা সুন্দর পরিবেশ সৃষ্টি করে দিচ্ছি। প্রায় সারাবছর ফল পাওয়া যায় এমন উদ্ভিদ লাগানো হচ্ছে। তবে সাউন্ড পলুশনের কারনে এমনটা হচ্ছে। এছাড়া পেস্টিসাইড ব্যবহার ও কমাচ্ছে অতিথি পাখির আগমন।