নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
এশিয়ান টিভির স্টাফ রিপোর্টার ও সোনামসজিদ প্রেসক্লাবের সভাপতি ফয়সাল আজম অপু ও তার ৩ সহকর্মীর ওপর হামলা করেছে মাদক, যৌন ব্যবসায়ী ও চোরাকারবারীর পরিবার।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলাধীন বাঙ্গাবাড়ী ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের শীর্ষ মাদক সম্রাজ্ঞী রহিমা বেগম, তার মেয়ে সাগরী খাতুন, স্বামী ভাদু আলী সহ অজ্ঞাত ৭/৮ জন, বুধবার (১৭ মে) ভবানীপুর নামক গ্রামে সিনিয়র সাংবাদিক অপু সহ তার ৩ সহকর্মী সাংবাদিক ও ড্রাইভারকে মারপিট করে তাদের সাথে থাকা ক্যামেরা, মাইক্রোফোন (বুম), ক্যামেরা স্ট্যান্ড, মোবাইল ফোন ভাংচুর ও নগদ টাকা ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে।
এবিষয়ে মামলার বাদী সাংবাদিক ফয়সাল আজম অপু বলেন, আমি ও আমার সহকর্মী ইয়ামিন হাসান শুভ, আলমগীর হোসেন সহ সেইদিন একটি টিম বিকাল ৫ টার সময় ভবানীপুর গ্রামে একজন চিন্হিত মাদক ব্যবসায়ীর বাড়িতে তথ্য সংগ্রহে যায়। এসময় ভবানীপুর গ্রামের চিন্হিত মাদক সম্রাজ্ঞী রহিমা বেগম, মেয়ে সাগরী খাতুন, রহিমার স্বামী ভাদু আলী সহ অজ্ঞাত আরও ৮/১০ জন আমাকে ও আমার সহকর্মী শুভ, আলমগীর, জাব্বার ও ড্রাইভার ইমনকে ব্যাপক মারধর করে এবং আমাদের সাথে থাকা ক্যামেরা, মাইক্রোফোন (বুম), ক্যামেরা স্ট্যান্ড, মোবাইল ফোন ভাংচুর ও নগদ টাকা ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে। এব্যাপারে আমি গোমস্তাপুর থানায় লিখিত জিডি দিয়েছি।
এবিষয়ে সাংবাদিক ফয়সাল আজম অপু আরও অভিযোগ করে বলেন, মাদক সম্রাজ্ঞী রহিমা বেগম বাঙ্গাবাড়ী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম ও গোমস্তাপুর থানার একজন এএসআই এর সহিত গোপন সখ্যতা থাকার কারনেই, দাপটের সাথে এলাকায় মাদক ব্যবসা বিস্তার ও যৌন ব্যবসাসহ সকল অন্যায় ও অপকর্ম বুক ফুলিয়ে করতে পারছে।
চলতি মে মাসের ১২ তারিখ গ্রামবাসীর সাথে মাদক ব্যবসা নিয়ে রহিমা বেগমের পরিবারের সাথে বাক-বিতন্ডা হয়। এনিয়ে রহিমা বেগম থানায় মিথ্যা এজাহার দায়ের করে। এবিষয়ে গত ১৪ মে মিমাংসার কোনো কথা না বলেই গ্রামের মোড়ল আজাহার আলী ও শুকুরুদ্দীনকে এএসআই রেজাউল করিম ও শহিদুল চেয়ারম্যান তার বাড়ীতে ডেকে পাঠায়। এর প্রেক্ষিতে মোড়ল তার এলাকার মাদক বিরোধী কমিটির ৭/৮ জন শহিদুল চেয়ারম্যানের বাড়ী যায়। চেয়ারম্যানের বাড়ী গেলে মাদক ব্যবসায়ী বেগমের পক্ষ নিয়ে জোর করে সাক্ষর নিয়ে মিমাংসা করে দিতে চাই চেয়ারম্যান।
আজাহার আলী মোড়ল সহ
ঘটনার সময় উপস্থিত ভবানীপুর গ্রামের হাবিবুর রহমান (৩০), আবু কালাম (৪৫), রুবেল আলী (২১), সেনারুল ইসলাম (৩৭), আল-আমিন সহ আরও কয়েকজন বলেন, রহিমা বেগম এলাকার চিহ্নিত মাদক ও যৌন ব্যবসায়ী। বর্তমান চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলামের ক্ষমতার চরম অপব্যবহার করে তারা ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করছে। রহিমার ছেলের বিরুদ্ধে মাডার মামলা থাকলেও সে উপর মহলের অদৃশ্য ইসারায় ধরা ছোয়ার বাইরে রয়েছেন। আজকে আমাদের সামনেই সাংবাদিকের উপর জঘন্য হামলা করেছে। আমরা তার ন্যায় বিচার কামনা করছি।
সাংবাদিকের উপর প্রকাশ্য দিবালোকে তার বাড়ীর সামনে হামলা ও মারপিট করে তাদের কাছ থেকে নগদ টাকা ও পেশাগত প্রয়োজনে ব্যবহৃত ক্যামেরা ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগের বিষয়ে, রহিমা বেগমের বক্তব্য জানতে তার ব্যবহৃত মুঠোফোনে এ বারং বার কল দিলেও তিনি ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
এব্যাপারে বাঙ্গাবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম তার বিরুদ্ধে অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন আমি সবসময় মাদকের বিরুদ্ধে। মাদক সম্রাজ্ঞীর বাড়িতে প্রায় তিন চারবার ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম পুলিশ দিয়ে চোলাই মদ সহ চোলাই মদ তৈরির সরঞ্জাম জব্দ করেছি। আর মাদক ব্যবসা করবোনা এমন মুচলেকায় গ্রামবাসীর সাথে রহিমা বেগমের পরিবারের মিমাংসা করে দেওয়ার চেষ্টা করেছি মাত্র। কিন্তু রহিমা বেগমের পরিবার সাংবাদিকদের সাথে মারধর, ক্যামেরা ভাংচুর ও ছিনতাইয়ের মতো জঘন্য ঘটনা ঘটিয়েছে, এটা সত্যি অনাকাঙ্ক্ষিত ও দুঃখজনক এবং কোনোভাবেই গ্রহন যোগ্য নয়। তিনিও রহিমা ও তার পরিবারের বিচারের পক্ষে সায় দেন।
অভিযোগের বিষয়ে গোমস্তাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাহবুবুর রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিব।