জয়পুরহাটে আধুনিকতা ছোয়ায় হারিয়ে যাচ্ছে গরুর হাল চাষ পদ্ধতি।
মোঃ জাহিদুল ইসলাম, কালাই (জয়পুরহাট) সংবাদদাতাঃ২০/১২/২০২২২
গ্রাম বাংলায় জমি চাষের একমাত্র অবলম্বন ছিল ঐতিহ্যবাহী একটি চিরায়ত পদ্ধতি গরু-মহিষ, লাঙ্গল ও জোয়াল দিয়ে জমি চাষ। এটি ছিলো অনেক উপকারী একটি পদ্ধতি। কারণ লাঙ্গলের ফলা জমির অনেক গভীর অংশ পর্যন্ত আলগা করতো। গরুর-মহিষের পায়ের কারণে জমিতে কাদা হতো অনেক। কালের বিবর্তনে যান্ত্রিক আধুনিকতার ছোঁয়ায় হারিয়ে যাচ্ছে গ্রাম বাংলার এই ঐতিহ্যটি। সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে দেশের উত্তর জনপদের খাদ্য ভাণ্ডার হিসেবে জয়পুরহাটের কালাই উপজেলায় লাঙ্গল দিয়ে জমি চাষ এখন আর চোখে পড়ে না। আধুনিক কৃষি প্রযুক্তির ছোঁয়ায় হারিয়ে গেছে চিরচেনা এই ঐতিহ্যবাহী দৃশ্যটি। একসময় ছিল সেই কাক ডাকা ভোরে কৃষকরা গরু কাঁধে লাঙ্গল-জোয়াল নিয়ে বেরিয়ে পড়তো মাঠের জমিতে চাষ করতে। বর্তমানে বিজ্ঞানের নতুন নতুন আবিষ্কারের ফলে কৃষকদের জীবনে এসেছে নানা পরিবর্তন। আর সেই পরিবর্তনের ছোঁয়া লেগেছে কৃষিতে। তাই সকালে কাঁধে লাঙ্গল-জোয়াল নিয়ে কৃষককে মাঠে যেতে আর দেখা যায় না। কৃষি প্রধান বাংলাদেশের হাজার বছরের ইতিহাসের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে গরু, লাঙ্গল-জোয়াল। অনেকে গবাদিপশু দিয়ে হাল চাষকে পেশা হিসেবে বেছে নিয়ে ছিলেন। নিজের সামান্য জমির পাশাপাশি অন্যের জমিতে হালচাষ করে তাদের সংসার চালাতেন। তারা এখন পেশা বদল করে অন্য পেশায় ঝুঁকছেন।
কালাই উপজেলা ঝামুটপুর গ্রামের কৃষক আবু সাঈদ বলেন, ছোটবেলায় হালচাষের কাজ করতাম। বাড়িতে হালচাষের বলদ গরু ছিল ২জোড়া। চাষের জন্য দরকার হতো এক জোড়া বলদ, কাঠের তৈরি লাঙ্গল, বাঁশের তৈরি জোয়াল, মই, লরি (বাঁশের তৈরি গরু তাড়ানোর পান্টিও ছটকা) গরুর মুখে গোমাই ইত্যাদি। বাড়িতে পান্তা ভাত মরিচ পিয়াজ দিয়ে মেখে খেয়ে বেড়িয়ে পড়তাম, লাঙ্গল-জোয়াল কাঁধে দিয়ে জমি চাষ করতে। এখন আধুনিক মেশিন দিয়ে লোকজন জমি চাষ করে।
অনেকে মন্তব্য করে বলেছেন কবি নজরুলের পত্রিকা ‘লাঙ্গল’ যেমন হারিয়ে গেছে, তেমনি আর কিছু দিন পর আমাদের নতুন প্রজন্মকে লাঙ্গল জোয়াল চেনাতে নিয়ে যেতে হবে যাদুঘরে।
মোঃ জাহিদুল ইসলাম
কালাই, জয়পুরহাট
০১৭৮৫-৩৫২৫৫৮
জয়পুরহাটে উগ্রবাদ প্রতিরোধে গ্রাম পুলিশদের শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মোঃ আমজাদ হোসেন স্টাফ রিপোর্টার জয়পুরহাট-
জয়পুরহাটে উগ্রবাদ প্রতিরোধে গ্রাম পুলিশ-দফাদারদের ভূমিকা শীর্ষক দিনব্যাপী সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার (২০ ডিসেম্বর) সকাল ১০টায় পুলিশ লাইনস ড্রিল শেডে জেলা পুলিশের সহযোগিতায় এই সেমিনার করা হয়।
সেমিনারে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ নূরে আলমের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক সালেহীন তানভীর গাজী, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ খাজা সামছুল আলম, পাঁচবিবি পৌরসভার মেয়র হাবিবুর রহমান হাবির, জেলা কমিনিটি ফোরামের সদস্য সচিব নন্দলাল পার্শী, ডিএমএসএস এর নির্বাহী পরিচালক মাহবুবা সরকার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কে এম এ মামুন খান চিশতী, ফারজানা হোসেন প্রমুখ। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কাউন্টার ন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার সাইদ নাসিরুল্লাহ পিপিএম।
উক্ত অনুষ্ঠানে উপস্থিত বক্তারা বাংলাদেশের উন্নয়ন এবং অগ্রগতিতে বাধা প্রদানকারী উগ্রবাদ প্রতিরোধে গ্রাম পুলিশ-দফাদার, গণমাধ্যম কর্মী এবং সুশীল সমাজের ভূমিকা এবং তাদের করণীয় সম্পর্কে আলোচনা করেন। সন্ত্রাসবাদে ‘না’ বলুন শ্লোগানকে প্রতিপাদ্য করে দেশের ৪৮ জেলায় বাংলাদেশ পুলিশের সন্ত্রাস দমন ও আন্তর্জাতিক অপরাধ প্রতিরোধে কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় এই সেমিনার করা হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে। জয়পুরহাটে বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষকে নিয়ে ৩দিন ধরে এই সেমিনার করা হয়। জেলার ৫ উপজেলার দুই শতাধিক গ্রাম পুলিশ-দফাদার ও প্রায় ২০ জন গণমাধ্যম কর্মী এই সেমিনারে অংশগ্রহণ করেন।