Dhaka ১০:০৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঠাকুরগাঁওয়ে কৃষক ও ক্রেতার মেলবন্ধনের বাজার!

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৮:৪২:৩০ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪
  • ৪০ Time View

জসীমউদ্দীন ইতি ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি

দেশে চলমান দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির কারনে জনমনে স্বস্তি ফেরাতে ব্যাতিক্রমি উদ্যোগ নিয়েছে ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসন।

নবাগত জেলা প্রশাসক ইশরাত ফারজানা’র উদ্যোগে কৃষক ও ক্রেতাদের মেল বন্ধনের উদ্দেশ্যে চালু করেছে মানবতার সওদাপাতি কৃষকের বাজার। যেখানে কৃষক তার উৎপাদিত পন্য সরাসরি বিক্রি করতে পারছে। এতে একদিকে যেমন খুশি হচ্ছেন সাধারণ ক্রেতারা অপরদিকে লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা। মধ্যস্বত্যাভোগী না থাকায় ন্যায্য দাম পাচ্ছে কৃষকরা ।

ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসন ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র সমন্বয়কদের যৌথ উদ্যোগে শুক্রবার সকাল ৮ টায় ঠাকুরগাঁও সাধারণ পাঠাগার মাঠ চত্ত্বরে বসে মানবতার সওদাপাতি কৃষকের বাজার নামে অস্থায়ী এ বাজার। সপ্তাহের শুক্র ও শনিবার সকাল ৮ টা থেকে শুরু হওয়া এ বাজার চলবে মধ্য দুপুর পর্যন্ত।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, এ বাজারে নিজেদের ক্ষেতের উৎপাদিত লাউ, শিম, মূলা, বটবটি, আলু, কাচামরিচ সহ অন্যান্য কাচা সবজির পসড়া নিয়ে বসেছেন কৃষকরা। তাতে ক্রেতাদেরও উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা যায়। বাজারের চেয়ে প্রতিটি পন্যে ৫ থেকে ১০ টাকা কমে পেয়ে খুশি ক্রেতারা। বাজারে পলিথিন মুক্ত কেনাকাটা করতে ও ক্রেতা বিক্রেতাদের উদ্বুদ্ধ করতে এ বাজারের আরেকটি বিশেষ ব্যবস্থা রয়েছে, যেখানে বিনামূল্যে সরবরাহ করা হচ্ছে পরিবেশবান্ধব ভুট্টার আঁশে তৈরী বিশেষ ব্যাগ ও পাটের ব্যাগ। এছাড়াও শুধুমাত্র কাঁচা সবজিই নয়, এ বাজারে পাওয়া যায় মাছ গোশতসহ নিত্য প্রয়োজনীয় প্রায় সব পন্যই।

বাজার করতে আসা ক্রেতা রফিকুল ইসলাম জানান, আমাদের এখানে আশেপাশে প্রায় ৩ টি বাজার রয়েছে। আমি সব গুলোতেই যাই এবং সব গুলোরই মূল্য তালিকা আমার জানা। এখানে আমি কিছু সবজি ও প্রয়োজনীয় আরো দু একটি জিনিস কিনেছি। এ বাজারে আমি প্রতিটি জিনিস স্থানীয় অন্য বাজার গুলোর তুলনায় অনেক কমেই কিনেছি। কোনটাতে তো কেজি প্রতি ৩০ থেকে ৪০ টাকা পর্যন্ত কম পেয়েছি।

জহির হোসেন নামের আরেক ক্রেতা জানান, আমি ব্রয়লার মুরগির মাংস কিনেছি এবং স্থানীয় বাজারের চেয়ে কেজিতে ২০ টাকা কম পেয়েছি। সপ্তাহে সাত দিন না হলেও অন্তত এ বাজারটিকে যেনো অস্থায়ী ভাবে না রেখে এটিকে স্থায়ীভাবে রাখার জন্য জেলা প্রশাসনকে অনুরোধ করছি।

বাজারে সবজি বিক্রি করতে আসা কৃষক হারিস উদ্দিন জানান, আমি আধা মণ বটবটি নিয়ে আসছিলাম। এক ঘন্টার মধ্যেই সব বিক্রি হয়েছে। বাজারের চেয়েও কেজিতে ২০ টাকা কমে বিক্রি করেছি তবুও পাইকারদের চেয়ে বেশি মূল্য পেয়েছি। এর পরের দিন আমি আরো বেশি সবজি নিয়ে আসবো।

জেলা প্রশাসক ইসরাত ফারজানা জানান, কৃষকের বাজার মূলত হলিডে মার্কেটের মত। ছুটির দিনে সুলভ মূল্যে ক্রেতাদের ক্রয় করা এবং কৃষক সরাসরি নিজেই বিক্রেতা হয়ে ন্যায্য মূল্য পাওয়ার উদ্দেশ্যেই এই বাজারটি চালু করা। ভোক্তারা চাইলে আরো বড় পরিসরে এ বাজারকে আমরা করার কথা ভাবতে পারি।

সাধ্যের মধ্যে কেনাকাটা করতে পেরে এ বাজারকে চলমান রাখতে ক্রেতাদের রয়েছে যেমন আগ্রহ, তেমনি ছোট্ট এ আয়োজন বড় সিন্ডিকেটেদের ওপর কোন প্রভাব ফেলবেনা বলে মনে করছেন সুশিল সমাজের প্রতিনিধিরা। এর জন্যে চাই নিয়মিত বাজার মনিটরিং।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

আলোচিত

বোয়ালমারীতে চার বছর কর্মস্থলে না গিয়েও বেতন ভাতা নিচ্ছে উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ঝুমা !

ঠাকুরগাঁওয়ে কৃষক ও ক্রেতার মেলবন্ধনের বাজার!

Update Time : ০৮:৪২:৩০ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪

জসীমউদ্দীন ইতি ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি

দেশে চলমান দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির কারনে জনমনে স্বস্তি ফেরাতে ব্যাতিক্রমি উদ্যোগ নিয়েছে ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসন।

নবাগত জেলা প্রশাসক ইশরাত ফারজানা’র উদ্যোগে কৃষক ও ক্রেতাদের মেল বন্ধনের উদ্দেশ্যে চালু করেছে মানবতার সওদাপাতি কৃষকের বাজার। যেখানে কৃষক তার উৎপাদিত পন্য সরাসরি বিক্রি করতে পারছে। এতে একদিকে যেমন খুশি হচ্ছেন সাধারণ ক্রেতারা অপরদিকে লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা। মধ্যস্বত্যাভোগী না থাকায় ন্যায্য দাম পাচ্ছে কৃষকরা ।

ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসন ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র সমন্বয়কদের যৌথ উদ্যোগে শুক্রবার সকাল ৮ টায় ঠাকুরগাঁও সাধারণ পাঠাগার মাঠ চত্ত্বরে বসে মানবতার সওদাপাতি কৃষকের বাজার নামে অস্থায়ী এ বাজার। সপ্তাহের শুক্র ও শনিবার সকাল ৮ টা থেকে শুরু হওয়া এ বাজার চলবে মধ্য দুপুর পর্যন্ত।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, এ বাজারে নিজেদের ক্ষেতের উৎপাদিত লাউ, শিম, মূলা, বটবটি, আলু, কাচামরিচ সহ অন্যান্য কাচা সবজির পসড়া নিয়ে বসেছেন কৃষকরা। তাতে ক্রেতাদেরও উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা যায়। বাজারের চেয়ে প্রতিটি পন্যে ৫ থেকে ১০ টাকা কমে পেয়ে খুশি ক্রেতারা। বাজারে পলিথিন মুক্ত কেনাকাটা করতে ও ক্রেতা বিক্রেতাদের উদ্বুদ্ধ করতে এ বাজারের আরেকটি বিশেষ ব্যবস্থা রয়েছে, যেখানে বিনামূল্যে সরবরাহ করা হচ্ছে পরিবেশবান্ধব ভুট্টার আঁশে তৈরী বিশেষ ব্যাগ ও পাটের ব্যাগ। এছাড়াও শুধুমাত্র কাঁচা সবজিই নয়, এ বাজারে পাওয়া যায় মাছ গোশতসহ নিত্য প্রয়োজনীয় প্রায় সব পন্যই।

বাজার করতে আসা ক্রেতা রফিকুল ইসলাম জানান, আমাদের এখানে আশেপাশে প্রায় ৩ টি বাজার রয়েছে। আমি সব গুলোতেই যাই এবং সব গুলোরই মূল্য তালিকা আমার জানা। এখানে আমি কিছু সবজি ও প্রয়োজনীয় আরো দু একটি জিনিস কিনেছি। এ বাজারে আমি প্রতিটি জিনিস স্থানীয় অন্য বাজার গুলোর তুলনায় অনেক কমেই কিনেছি। কোনটাতে তো কেজি প্রতি ৩০ থেকে ৪০ টাকা পর্যন্ত কম পেয়েছি।

জহির হোসেন নামের আরেক ক্রেতা জানান, আমি ব্রয়লার মুরগির মাংস কিনেছি এবং স্থানীয় বাজারের চেয়ে কেজিতে ২০ টাকা কম পেয়েছি। সপ্তাহে সাত দিন না হলেও অন্তত এ বাজারটিকে যেনো অস্থায়ী ভাবে না রেখে এটিকে স্থায়ীভাবে রাখার জন্য জেলা প্রশাসনকে অনুরোধ করছি।

বাজারে সবজি বিক্রি করতে আসা কৃষক হারিস উদ্দিন জানান, আমি আধা মণ বটবটি নিয়ে আসছিলাম। এক ঘন্টার মধ্যেই সব বিক্রি হয়েছে। বাজারের চেয়েও কেজিতে ২০ টাকা কমে বিক্রি করেছি তবুও পাইকারদের চেয়ে বেশি মূল্য পেয়েছি। এর পরের দিন আমি আরো বেশি সবজি নিয়ে আসবো।

জেলা প্রশাসক ইসরাত ফারজানা জানান, কৃষকের বাজার মূলত হলিডে মার্কেটের মত। ছুটির দিনে সুলভ মূল্যে ক্রেতাদের ক্রয় করা এবং কৃষক সরাসরি নিজেই বিক্রেতা হয়ে ন্যায্য মূল্য পাওয়ার উদ্দেশ্যেই এই বাজারটি চালু করা। ভোক্তারা চাইলে আরো বড় পরিসরে এ বাজারকে আমরা করার কথা ভাবতে পারি।

সাধ্যের মধ্যে কেনাকাটা করতে পেরে এ বাজারকে চলমান রাখতে ক্রেতাদের রয়েছে যেমন আগ্রহ, তেমনি ছোট্ট এ আয়োজন বড় সিন্ডিকেটেদের ওপর কোন প্রভাব ফেলবেনা বলে মনে করছেন সুশিল সমাজের প্রতিনিধিরা। এর জন্যে চাই নিয়মিত বাজার মনিটরিং।