ঠাকুরগাঁওয়ে মৎস্যজীবী ও সুফলভোগীদের সচেতনতা সৃষ্টি ও উদ্বুদ্ধকরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
জসীমউদ্দীন ইতি, ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি:
ঠাকুরগাঁওয়ে ২০২২-২৩ আর্থিক সালে বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তির আওতায় মৎস্যজীবী, সুফলভোগীদের জলাশয় ব্যবস্থাপনা, আইন প্রতিপালন বিষয়ক সচেতনতা সৃষ্টি এ উদ্বুদ্ধকরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার বিকালে সদর উপজেলা চিলারং ইউনিয়নের বুড়িবাঁধ এলাকায় উপজেলা প্রশাসন ও সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার দপ্তরের আয়োজনে উক্ত সভাটি অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু তাহের মো: সামসুজ্জামান এর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, জেলা প্রশাসক মাহবুবুর রহমান, সদর উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা আয়েশা সিদ্দিকা, চিলারং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ফজলুল হক প্রমূখ।
সচেতনতা সৃষ্টি সভায় জেলা প্রশাসক মাহবুবুর রহমান বলেন, বাঁধ এলাকায় মৎস্য অভয়াশ্রমের মাছ রক্ষা করা আপনাদের দায়িত্ব। মা মাছ রক্ষা করলেই মাছ বৃদ্ধি পাবে। এই এলাকায় সরকারিভাবে মাছ ছাড়া হয় শুধু আপনাদের জন্য। রিং জাল ব্যবহার করবেন না কেও। যে কোন তথ্য আমাকে সরাসরি দিবেন আমি ব্যবস্থা নিব। অভয়াশ্রমে কেও মাছ ধরবো না এমন শপথ করান জেলা প্রশাসক।
বিয়ে যার ব্যাবসা, ঠাকুরগাঁওয়ে ১ মেয়ের ১০ বিয়ে, দেনমোহর আদায় ৭১লক্ষ টাকা।
জসীমউদ্দীন ইতি, ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি :
ঠাকুরগাঁও পীরগঞ্জ উপজেলার নসিবঞ্জ নুহালী এলাকার মরজিনা আক্তার মিম (৩২) পর পর ১০ টি বিয়ে করে এলাকায় চাঞ্চ্যল্য সৃষ্টি করেছেন। বিয়ে করার ২ মাস পরেই তিনি স্বামীকে তালাক দেন। এটাই তার ব্যবসা বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
সরেজমিনে জানা যায়, পীরগঞ্জ উপজেলার মোজাম্মেল হকের ১ম মেয়ে মরজিনা আক্তার মিম একে একে ১০ টি বিয়ে করেছেন। প্রথম বিয়ে করেন ২০১৭ সালে পঞ্চগড়ের আটোয়ারী উপজেলার বাকডোকরা গ্রামের মৃত নজরুল ইসলামের ছেলে ইয়াসিন আলীর সাথে। তাকে ৫ মাস পরেই তালাক দিয়ে ৭ লাখ টাকা মোহরানা আদায় করেন। ২০১৮ সালে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার কহরপাড়া গ্রামের মৃত আব্দুল হাকিমের পুত্র শাহদাত হোসেন কে বিয়ে করেন। ২ মাস পরেই তাকে তালাক দিয়ে ১০ লক্ষ টাকা দেনমোহর আদায় করেন। ২০১৯ সালে রাণীশংকৈল উপজেলার নয়নপুর গ্রামের সোহরাব আলীর ছেলে জমিরুলকে বিয়ে করেন। ১ মাসের মাথায় তালাক দিয়ে ৯ লক্ষ টাকা দেনমোহর আদায় করেন। আবার ২০১৯ সালে ওই এলাকার পাশের গ্রামের মখলেসুরের পুত্র আফতাবর রহমানকে বিয়ে করেন। ২৫ দিন পরে ১২ লক্ষ টাকা দেনমোহর নিয়ে তালাক দেয়। ২০২০ সালে দিনাজপুর বালুবাড়ি এলাকার আকতারুজ্জামান বাবুর সাথে বিয়ে করেন। ১ মাস পরেই ৬ লক্ষ টাকা দেনমোহর নিয়ে তাকেও তালাক দেন। আবারো ২০২০ সালে দিনাজপুর রাণীগঞ্জ এলাকার আব্দুল কাদের এর সাথে বিয়ে করেন। দেড় মাস সংসার করে ৮ লক্ষ টাকা দেনমোহর নিয়ে তাকেও তালাক দেয়। ২০২০ সালের শেষের দিকে কুড়িগ্রামের মোকলেসুর রহমানকে বিয়ে করে ৪৫ দিন সংসার করে ১১ লক্ষ টাকা দেনমোহর নিয়ে তাকে তালাক দেয়।
অপরদিকে পীরগঞ্জ উপজেলার চাঁদগাঁও গ্রামের রজব আলীর ছেলে রবিউল ইসলাম এর সাথে ২০২১ সালে ২৭ই নভেম্বর বিয়ে হয়। এই বিয়েতে ৮ লক্ষ ৯ হাজার টাকা দেনমোহর ধরা হয়। অবশেষে এই পাত্রের সাথেও তালাক করার জন্য মেয়েটি পাত্রের পরিবারকে চাঁপ দেওয়া শুরু করেছে। মেয়েটি তার বাপের বাড়িতে গিয়ে তার স্বামীর পরিবারের সকলকে মামলা দেওয়ার চাঁপ দিচ্ছে। না হলে দেনমোহর পরিশোধ করে তালাক দিতে বলতেছে।
মেয়েটির সবশেষ পাত্র রবিউল ইসলাম এর সাথে কথা বললে তিনি বলেন, মেয়েটির এতগুলো বিয়ে হয়েছে আমার জানা ছিল না। পারিবারিক ভাবেই বিবাহ হয়েছে। মেয়েকে যেদিন দেখতে গিয়েছিলাম সেদিনই জোর করে বিয়ে দিয়ে দেওয়া হয়। আর দেনমোহর ও বেশি টাকা লেখা হয়। বিয়ের প্রথম থেকেই মেয়েটি সমস্যা করতেছিল। বেশিরভাগ সময় তার বাবার বাসায় থাকতো। ৩ মাস পরেই আমাকে কোন কারণ ছাড়াই তালাক দিবে জানায়। পরে আমি খবর নিয়ে তার আগেও ১০ টা বিয়ে হয়েছে সেটা জানতে পারি। এখন সে দেনমোহর এর টাকার জন্য আর তালাক এর জন্য আমাকে ও আমার পরিবারকে চাঁপ দিচ্ছে।
এ বিষয়ে মেয়ের বাবা সহ দুই চেয়ারম্যান নিয়ে পীরগঞ্জ থানায় বসা হলে মেয়ের বাবা বলেন, আমার মেয়ের ১০ টা বিয়ে তাতে তার কি সমস্যা। মেয়ের সাথে সংসার না করলে মোহরানার টাকা দিয়ে আমার মেয়েকে তালাক দেক।
মরজিনা আক্তার মিম এর সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন, কোন ছেলে আমার মন মত না। সেজন্য কারো সাথেই সংসার টিকে নাই আমার।
এ বিষয়ে পীরগঞ্জ উপজেলার ৯নং সেনগাঁও ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শহিদুজ্জামান বলেন, আমি নতুন চেয়ারম্যান হয়েছি। একটি মেয়ের এতগুলো বিয়ে আমার জানা ছিল না। বিষয়টি জানার পরে আমি মেয়ে বাবাকে ডেকেছিলাম। কিন্তু তার কথা বলার ধরণ ভালো না। বিষয়গুলো পরে দেখা হবে।
জসীমউদ্দীন ইতি
০১৭৫১-০৭৯৮২৩
ঠাকুরগাঁও