তাহিরপুরে হাঁস পালনে লাভবান হচ্ছে খামারিরা।
স্টাফ রিপোর্টার, তাহিরপুরঃ
সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে হাওরে হাঁস পালন করে লাভবান খামারিরা। দিন দিন বৃদ্ধি পেয়েছে হাওরে হাঁস পালন। হাওরে হাঁস পালনে খরচ তুলনামূলক কম হয়ে থাকে। এছাড়াও স্থানীয় বাজারসহ অন্যান্য জেলা উপজেলায় হাঁস ও ডিমের দাম বেশী থাকায় ব্যাপক বৃদ্ধি পাচ্ছে খামার ও খামারির সংখ্যা। তবে বিশেষ করে খামারিরা এখন মাংসের হাঁসের (হাঁসা) খামারের দিকেও ঝুঁকছেন। এই বছর মাংসের হাঁসের দাম অন্য বছরের চেয়ে বেশি হওয়ায় খামারিদের এমন হাঁস পালনে আগ্রহও বেড়েছে। এতে করে বেকারদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে।
জানাযায়, এ উপজেলার শনির হাওর ও মাটিয়ান হাওর সহ ছোট বড় প্রতিটি হাওরেই হাঁসের খামার রয়েছে। যদিও প্রতিনিয়ত বেড়ে চলছে এর সংখ্যা। হাঁসের খামার করে অনেকেই স্বাবলম্বী হচ্ছেন। এছাড়াও হাঁস পালন ব্যাপক লাভজনক হওয়ায় অনেকেই এই পেশা আসছেন বলে জানিয়েছেন স্থানীরা। রবিবার সকালে ঘুরতে গিয়ে কথা হয় তাহিরপুর সদর ইউনিয়নের রতনশ্রী গ্রামের খামারি সুজাত মিয়ার সাথে। তিনি জানান, তিনি এবার ৬৫০টি ডিমের হাঁস পালন করেছেন। প্রতিদিন ৪’শ হাসে ডিম দিচ্ছে। সপ্তাহে ৪০হাজার টাকারও বেশি ডিম বিক্রয় করছেন।
একই গ্রামের হৃদয় তালুকদার জানান, আমি এবার ১৪’শ ডিমের হাঁস নিয়েছি তবে এবার মাংসের হাঁসের দাম বেশি পাচ্ছেন খামারিরা। প্রতিশ’ হাঁসা ৪০ থেকে ৪৫ হাজার টাকায় বিক্রয় হচ্ছে। ডিমের হাঁস কয়েকদিন লালন পালন করলেই ডিম পাড়া শুরু হয়। টাকা আসতে থাকে। এজন্য তিনি ডিমের হাঁস পালন করেন। তিনি আরও জানান, গেল জুনের বন্যায় অনেক হাঁসের খামারি একেবারে নিঃস্ব হয়ে গেছে। অনেকে নতুনভাবে বিনিয়োগ করে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছেন। কেউ কেউ বন্যার পর নতুনভাবে খামার করতে পারে নি। না হয় খামারির সংখ্যা আরও বেড়ে যেত। শুধু ডিমের হাঁস পালন কারী খামারি সুজাত মিয়া ও হৃদয় তালুকদারেই নন কথা হয় মাংসের হাঁস পালনকারী উজ্জল মিয়ার সাথে। তিনি বলেন, এবার তিনি ৩৮’শ হাঁসা কিনেন প্রতি হাজার হাঁস ৩৫ হাজার টাকা করে। এখন প্রতিশ হাস ৪০থকে ৪৫ হাজার বিক্রি করছি। ইতিমধ্যে ২হাজার বিক্রি করেছি। বাকি হাঁসও বিক্রি করতে পারবো।এ ধরণের হাঁস পাঁচ মাস লালন পালন করার পর বিক্রয় করতে হয়। তাতে ধৈর্য্য ধরে পরিশ্রম করা লাগে।
স্থানীয়দের মতে, তাহিরপুরে সারা বছরেই টাংগুয়ার হাওর সহ বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান দেখতে পর্যটকদের আগমন ঘটে। হাওরে আসা পর্যটকদের খাবারের চাহিদার প্রথম পছন্দ হাঁসের মাংস। এজন্য হাঁসের কদর বেড়েছে। হাওরের কিছু খাল ডোবা লিজ না দেওয়া না হলে হাঁসের খামার আরও বেড়ে যেত। এ বিষয়ে উপজেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা ডা. হাবিব আহমেদ বলেন, উপজেলায় আমাদের তালিকা মতে ৫০টির বেশি হাঁসের খামারি আছে। তবে সল্প মেয়াদে এবার খামারি অনেক বেড়েছে। হাঁসের মাংসের কদর বাড়ায় এবছর অনেকেই কেবল মাংসের হাঁস পালন করেছেন। প্রাণি সম্পদ বিভাগ বিনামূল্যের ভ্যাকসিন দেওয়াসহ প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দিচ্ছে খামারিদের।
শওকত হাসান
তাহিরপুর, সুনামগঞ্জ
০১৭১৭৯৮৬২৩২