মাসুম বিল্লাহ, বগুড়াঃ
বগুড়ার শেরপুরে সাত কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত রাস্তার উন্নয়ন কাজ এগিয়ে চলেছে কচ্ছপ গতিতে। প্রায় তিন বছর পার হলেও এখনও প্রকল্পের কাজ শেষ হয়নি। রাস্তায় নিম্নমানের খোয়া দিয়ে কাজ করার ফলে ওই সকল খোয়ার ধুলায় চরমদুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে এলাকাবাসীকে।
দীর্ঘদিন যাবত উপজেলার কুসুম্বি ইউনিয়নের কলেজ সড়ক থেকে মুরাদপুর পর্যন্ত প্রায় ৮ কিলোমিটার সড়কের এই অবস্থা বিরাজ করলেও কোন প্রতিকার নেই।
উপজেলা প্রকৌশলীর (এলজিইডি) কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ঢাকা-বগুড়া জাতীয় মহাসড়ক থেকে কুসুম্বি ইউনিয়নের মুরাদপুর পর্যন্ত সড়কের উন্নয়ন কাজ চলমান রয়েছে। এর দৈর্ঘ্য ৮ দশমিক ৩৫০ মিটার, প্রস্থ পাঁচ মিটার। রাজশাহী বিভাগের গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ব্যয় ধরা হয়েছে ৭ কোটি ১৫ লাখ ৫০ হাজার ১২১ টাকা।
এই কাজের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান হলো ঢাকার তেজগাওঁয়ের নাখালপাড়ার ম্যাক ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড। প্রতিষ্ঠানটি কাজ শুরু করেছেন ২০২২ সালের ১৫ মার্চ থেকে। কাজটি সমাপ্ত করার কথা ছিল ২০২৩ সালের ৮ জুনের মধ্যে। মেয়াদ শেষ হওয়ার পর তারা আবারও মেয়াদ বাড়িয়ে নিয়েছেন ৫ জানুয়ারি ২০২৫ পর্যন্ত। প্রায় তিন বছর পার হলেও কাজটি সমাপ্ত হয়েছে ৭০ শতাংশ। সময় আছে মাত্র এক মাস এই সময়ের মধ্যে কাজটি সম্পন্ন হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম।
কুসুম্বী গ্রামের কৃষক তোজাম জানান, আমাকে প্রতিদিন এই রাস্তায় চলাচল করতে হয়। কিন্তু এতদিনেও রাস্তার কাজ সমাপ্ত না হওয়ায় আমাদেরকে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়। পণ্য পরিবহনে বেশি টাকা ও ধুলাবালির কারণে শ্বাসকষ্ট লেগেই আছে।
সড়কটি উন্নয়ন কাজের তদারকি করছেন শেরপুর উপজেলার (এলজিইডি) উপ-সহকারী প্রকৌশলী মাহমুদুল হাসান। তিনি নিন্মমানের খোয়া ব্যবহারের কথা অস্বীকার করে বলেন, সড়কটির উন্নয়নের কাজ প্রায় তিন বছর হতে চলেছে। দীর্ঘদিন পরে থাকার কারণে খোয়া দেখে এমন মনে হচ্ছে।
তবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপক বোরহান উদ্দিন বলেন, দীর্ঘদিন খোয়া বিছানোর ফলে ধুলা হয়ে উড়ে মানুষের ভোগান্তির কারণ হয়েছে। আমরা কাজ শুরু করেছি খুব দ্রুত সময়ের মধ্যেই কাজ শেষ করা হবে। কুসুম্বি ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মো. শাহ আলম বলেন, তার ইউনিয়নের ২৫টি গ্রামের অন্তত ১৫ হাজার কৃৃষক এই সড়কের ওপর দিয়ে কৃষি পণ্য নিয়ে শেরপুর শহরে যাতায়াত করেন। এই ভাঙা সড়কের ওপর দিয়ে মালামাল বহন করতে ভোগান্তির পাশাপাশি অতিরিক্ত ভাড়া গুণতে হচ্ছে।
উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) আব্দুল মজিদ বলেন, আমি এখানে আসার পর সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে দ্রুত সময়ের মধ্যে কাজটি শেষ করার জন্য বলা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার আশিক খান জানান, এতদিনেও কাজটি সমাপ্ত না হওয়া অত্যন্ত দুঃখজনক। দ্রুত কাজটি সমাপ্ত করতে প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।