তীব্র শীতেও মেহেরপুরে বিদ্যুতের লুকোচুরি খেলা। প্রতিদিন বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ে ৪/৫ বার বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকছে।
মাজিদ আল মামুন, মেহেরপুরঃ
মেহেরপুরে পল্লী বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ে চলছে বিদ্যুতের লুকোচুরি খেলা। এতে জনমনে নানা প্রশ্ন জাগছে তীব্র শীতেও কেন এ লুকোচুরি খেলা। গত ৫ দিন ধরে তীব্র শীত অব্যাহত থাকলেও প্রতিদিন বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ে ৪/৫ বার বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকছে। সম্প্রতি সময়ে বিশ্বব্যাপী মূল্য বৃদ্ধি জনিত পরিস্থিতি বিবেচনায় বিদ্যুৎ ও জ্বালানী সাশ্রয়ের লক্ষ্যে রাত ১০ টার পর সারাদেশব্যাপী দোকান, শপিংমল, মার্কেট, বিপণী বিতান, কাঁচাবাজার ইত্যাদি বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
সেলক্ষ্যে মেহেরপুর জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ নির্দেশ বাস্তবায়নে প্রচার-প্রচারণাও চালানো হয় এবং এ নির্দেশ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বলা হয়েছে। যার পরিপ্রেক্ষিতে জেলার ব্যবসায়ীরা সরকারি নির্দেশ মেনেই তাদের দোকানপাট পরিচালনা করেছেন।
কিন্তু এখনতো শীতকাল। বৈদ্যুতিক পাখা ও এসি বন্ধ থাকে। তারপরেও এমন কিসের ঘাটতি রয়েছে যে কারণে গত ৪/৫ দিন যাবত প্রতিদিনে ৪/৫ বার বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকছে। এনিয়ে জনমনে নানা প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। মেহেরপুর সদর উপজেলার সোনাপুর গ্রামের আওয়ামী যুবলীগ নেতা মোহাম্মদ আলী জানান, দিনে থেমে থেমে কয়েকবার বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকায় ছেলেমেয়েদের পড়ালেখায় ব্যাঘাত ঘটছে। তাছাড়া ধান রোপণের জন্য কৃষকরা জমিতে সেচ কাজ ও পাকানো কাজ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
একই গ্রামের শাহাবুদ্দীন জানান, যদিও শীতকাল তবুও রাতের খাবার খাওয়ার সময় বিদ্যুৎ না থাকায় ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে।
হিজলবাড়ীয়া গ্রামের ইমরান হোসেন জানান, মাছ চাষে পুকুরে মটর দিয়ে পানি দিতে হয়। বিভিন্ন এলাকায় পুকুর লিজ নিয়ে মাছ চাষ করায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হলে ছুটতে হয় মটর চালুর জন্য। মাইলমারী গ্রামের আব্বাস আলী জানান, চৈতী ধান লাগানোর সময় এখন এভাবে বিদ্যুতের লোডশেডিং হলে সেচ কাজ ব্যহত হবার সম্ভাবনা রয়েছে। তাছাড়া শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ায় সমস্যা তৈরি হবে।
তবে মুজিবনগর উপজেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহে খুব বেশি একটা সমস্যার কথা না শোনা গেলেও মেহেরপুর সদর উপজেলা বিশেষ করে মেহেরপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির গাংনী জোনাল এরিয়াতে রয়েছে সমস্যা। গাংনী উপজেলার কয়েকটি গ্রাম ঘুরে একাধিক মানুষের সাথে আলাপকালে তিনারা জানান, সকাল, দুপুর ও সন্ধার পরেই বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকছে।
মঙ্গলবার (১৭ জানুয়ারি), সারাদিনে কয়েকবার এবং সন্ধার পূর্বে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। যা রাত ৯ টার পর আসলেও আবারও সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। পরে রাত পোনে ১০ টার দিকে আবারও ফিরে আসে। এভাবে থেমে থেমে কয়েকবারে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হওয়ায় রান্নাবান্নায় সমস্যা হচ্ছে। কুকারে ভাত রান্নার মাঝে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হওয়ায় তা শেষ করতে হচ্ছে গ্যাসে। একদিকে বিদ্যুৎ বিল অপরদিকে গ্যাস, দুটোতেই পয়সা গুনতে হচ্ছে।
তাছাড়া ছাত্র-ছাত্রীদের পড়াশোনায় এভাবে বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ে তারা চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হবে বলেও অভিভাবকরা জানিয়েছেন। তিনারা আরও জানান, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা দেশব্যাপী শতভাগ বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করলেও কেন এমন ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। অনেকেই বলেন, বিগত সরকারের আমলে বিদ্যুৎ নিয়ে ভোগান্তি ছিল। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হলে সে ভোগান্তি দূর হলেও এমন কি হলো যে, গত ৩/৪ দিন ধরে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। তিনারা দ্রুত লোডশেডিং দূরীকরণে মেহেরপুর পল্লী বিদ্যুত সমিতির কর্মকর্তাদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন।
এবিষয়ে গাংনী জোনাল অফিসে ফোন করা হলে জনাব আব্দুল্লাহ জানান, লোডশেডিং চলছে। প্রয়োজন চার দিচ্ছে দুই। চাহিদা অনু্যায়ী বিদ্যুৎ সরবরাহ না পাওয়ায় লোডশেডিং হচ্ছে।
কবে নাগাদ লোডশেডিং দূর হবে সেবিষয়ে নিশ্চিত করে বলতে পারেনি।
মাজিদ আল মামুন
মেহেরপুর প্রতিনিধি
০১৯১৫৩৫১৪৯৮
Your point of view caught my eye and was very interesting. Thanks. I have a question for you.