আজিজুল ইসলাম, খুলনা জেলা প্রতিনিধি।
প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হলো শারদীয় দুর্গাপূজা এবং কৈলাসে ফিরলেন দেবী দুর্গা। এই দিনেই দেবী মর্ত্য ছেড়ে ফিরে গেলেন স্বামীগৃহ কৈলাসে। মণ্ডপে মণ্ডপে বিষাদের ছায়া। উলুধ্বনি-শঙ্খ ঘণ্টা আর ঢাক-ঢোলের বাজনায় বাজলো দেবী দুর্গার বিদায়ের সুর। ৫ দিনব্যাপী শারদীয় উৎসবের শেষ দিনে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্যদিয়ে ধর্মীয় উৎসব শেষ হলো।
সারাদেশের ন্যায় রূপসা উপজেলা এলাকায় মন্ডপে মন্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে হিন্দু ধর্মের সর্বোবৃহৎ দূর্গোৎসব। উপজেলার ৫টি ইউনিয়নের মধ্যে ৭৪টি পূজামণ্ডপে ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী বিভিন্ন আয়োজনের মাধ্যমে উৎসবমুখর পরিবেশে পূজা উদযাপন করেছেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। মণ্ডপগুলোতে সকাল থেকে মানুষের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। বিকেলের দিকে এ উপস্থিতি হয় ভিড়ে পরিণত। উৎসবকে ঘিরে রূপসায় আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকায় সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন রূপসা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদ সাংবাদিক কৃষ্ণ গোপাল সেন। তিনি জানান- দুর্গোৎসব ঘিরে পদচারনায় মুখরিত মণ্ডপে মানুষের মাঝে ছিল বিপুল আনন্দ। দেবী মায়ের কাছে প্রার্থনা, দেশ জাতি ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবার সুখ ও সমৃদ্ধি হোক।
বিজয়ার দিনে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে অন্যরকম আবেগ ও মন খারাপ করা এক অনুভূতির সৃষ্টি হয়েছে। দশমী মানেই দুর্গা মায়ের ফিরে যাওয়া অপেক্ষায় থাকতে হবে আরো একটি বছর। সনাতনী শাস্ত্র অনুযায়ী এবার দেবীদুর্গা জগতের মঙ্গল কামনায় “দোলায় এসে দেবী ঘোটকেই যান” মর্ত্যলোকে (পৃথিবী) এসেছেন। এতে করে প্রাকৃতিক বিপর্যয় ঝড় বৃষ্টি হবে এবং শস্য ও ফসল উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে, এমনটা মনে করেন হিন্দুধর্মের অনুসারীরা।
নবমীতে এসেই পূজার ষোলোকলা পূর্ণ হয় এবং বিদায়ের সুর বাজে। দশমীতে বিদায় জানানো হয়। এবার নবমীতেই দর্পণে বিসর্জন হয়েছে। শনিবার মহা নবমী তিথিতে বিহিত পূজা ও দর্পণ বিসর্জনের মাধ্যমে মণ্ডপে মণ্ডপে দেবী দুর্গার আরাধনা করেন হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা। এদিন সকালে ১০৮টি বেল পাতা, আম কাঠ, ঘি দিয়ে যজ্ঞের মাধ্যমে দেবী দুর্গার কাছে দেওয়া হয় আহুতি। দশমীর বিহিত পূজা শেষে দর্পণ বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হয় দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা।
পূজা দিতে আসা ভক্তরা বলেন, আমাদের সব কষ্ট দূর করে দেবী দুর্গা চলে যাবেন। এক বছর পর মা আবার আসবেন। মায়ের কাছে দেশের জন্য কল্যাণ কামনা করেছি। তিনি যেন উন্নতি আর প্রগতিতে আমাদের জীবন ভরিয়ে দেন। বিশ্বজুড়ে যেন শান্তি ফিরে আসে। বন্ধ হয় মানুষে মানুষে সব হানাহানি