Dhaka ০৯:৩০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নানা অনিয়ম ও সমস্যায় চিহ্নিত সোহরাওয়ার্দী কলেজ 

  • Reporter Name
  • Update Time : ১১:৪৯:৩৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ অগাস্ট ২০২৩
  • ১২৫ Time View
শেখ জাহাঙ্গীর আলম, ক্যাম্পাস প্রতিনিধিঃ সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ পুরান ঢাকার লক্ষ্মীবাজারে অবস্থিত ঐতিহ্যবাহী একটি সরকারি কলেজ। এ কলেজটি নানা অনিয়ম ও সমস্যায় অনান্য কলেজের তুলনায় চিহ্নিত। সব দিক দিয়েই সংকটের মধ্যেই অধ্যয়ন করছে শিক্ষার্থীরা। এই কলেজে নেই কোন হলের ব্যবস্থা, নেই কোন নিজস্ব পরিবহন ও ক্যান্টিন।
যদিও এ কলেজটিতে বর্তমানে উচ্চ মাধ্যমিক, স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে অধ্যায়নের সুব্যবস্থা রয়েছে। এটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত সরকারি ৭ কলেজের অন্যতম একটি কলেজ। ২০১৭ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি কলেজটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত হলেও অনিয়ম ও সমস্যা থেকে রেহাই পায়নি। ঐতিয্য ও পুরান ঢাকার অন্যতম বিদ্যাপীঠ হলেও কলেজটি সবদিক থেকেই অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তুলনায় বহুগুণে পিছিয়ে আছে বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের।
১৭টি বিভাগে এই কলেজের শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ১২ হাজারের অধিক। এর মধ্যে শিক্ষক রয়েছেন মাত্র ১০৩ জন। এক একর জমিতে গড়ে ওঠা কলেজ ভবনের শ্রেণিকক্ষ গুলো আয়তনে খুব ছোট । সেখানে শ্রেণিকক্ষের সংখ্যাও পর্যাপ্ত নেই। শ্রেণীকক্ষের সংকটের কারণে শিক্ষার্থীরা ঠিকমতো ক্লাস করতে পারছে না। তুলনামুলক কম ক্লাসের কারণে ঠিক ভাবে পাঠদান করা সম্ভব হচ্ছে না। আর পাঠদানের উপযুক্ত ব্যবস্থা না থাকার কারণে শিক্ষার্থীরা তুলনা মূলক ভালো ফলাফল অর্জন করতে পারছেনা।
 কলেজটির মধ্যে মসজিদের পাশেই রয়েছে একটি গ্রন্থাগার, যেখানে নেই পর্যাপ্ত পরিমাণে পড়াশোনার জায়গা। যেটি নামে মাত্র চলছে সেখানে নেই ক্যাটালগ। বই নেয়ার ব্যবস্থাপনাও গোছালো নয়। গ্রন্থাগারে উপযুক্ত বসার জায়গা না থাকায় শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা করতে অসুবিধা হচ্ছে। প্রায় সময় লক্ষ্য করা যায় গ্রন্থগারে বসার জায়গা না পেয়ে মসজিদ বারান্দায় পড়াশোনা করছে।
 মসজিদে অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা যায়,লাইব্রেরীতে জায়গা না পেয়ে মসজিদের বারান্দায় পড়াশোনা করতে হচ্ছে। খুব সকালে এসেও গ্রন্থাগারে জায়গা পাওয়াতে মসজিদে এসে বসেছি। বাসায় পড়ার উপযুক্ত ব্যবস্থা না থাকায় ক্লাসের পড়া এখানে এসে কভার করতে হচ্ছে।
তাছাড়া এ কলেজেই বিভিন্ন বর্ষে ভর্তি ও ফর্ম পূরণের সময় অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগ উঠে প্রতিবারই। কলেজ প্রশাসনও এ বিষয়ে তৎপর, একাধিক নোটিশ দিয়েও এ অতিরিক্ত অর্থ আদায় বন্ধ করা যায়নি। শুধুমাত্র নোটিশ দিয়েই নয় অবলম্বন করা হয়েছে একাধিক পন্থা। মানোন্নয়নের ক্ষেত্রে ইএমএসের ব্যবহার, যার ফলে কোন প্রকার অর্থের লেনদেন ছাড়াই স্বয়ংক্রিয়ভাবে ফর্ম ফিলাপ করা যাচ্ছে। তবুও আটকানো যাচ্ছে না অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগ। বিভাগভেদে ৮০-১৫০ টাকা আদায় করা হচ্ছে।
ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের এক শিক্ষার্থী জানান, প্রথম বর্ষের তার মানোন্নয়নের জন্য ফর্ম জমা দিতে গেলে বিভাগ থেকে অতিরিক্ত ২০০ টাকা দাবি করা হয়। এ অতিরিক্ত টাকা ছাত্রলীগের চাঁদার বাবদ দাবি করা হয়। পরবর্তীতে তার কাছে অতিরিক্ত ২০০ টাকা না থাকায় ১৫০ টাকা দিয়ে আসতে বাধ্য হয় এবং বলা হয় যেন বাকী ৫০ টাকাটাও দ্রুত দিয়ে দেওয়া হয়। এ টাকা নাকি বাধ্যতামূলক! অথচ এ অতিরিক্ত অর্থ বাবদ দেওয়া হয় না কোন রশিদও।
এ বিষয়ে অধ্যক্ষ অধ্যাপক মোঃ মোহসিন কবীর বলেন, অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের ব্যাপারে সোহরাওয়ার্দী কলেজ প্রশাসন সর্তক অবস্থানে আছে। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়ার প্রেক্ষিতে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। যদি এ ধরনের কাজে সোহরাওয়ার্দী কলেজের কোন কর্মচারী জড়িত থাকে তবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে কলেজ প্রশাসন।
Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

আলোচিত

বোয়ালমারীতে চার বছর কর্মস্থলে না গিয়েও বেতন ভাতা নিচ্ছে উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ঝুমা !

নানা অনিয়ম ও সমস্যায় চিহ্নিত সোহরাওয়ার্দী কলেজ 

Update Time : ১১:৪৯:৩৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ অগাস্ট ২০২৩
শেখ জাহাঙ্গীর আলম, ক্যাম্পাস প্রতিনিধিঃ সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ পুরান ঢাকার লক্ষ্মীবাজারে অবস্থিত ঐতিহ্যবাহী একটি সরকারি কলেজ। এ কলেজটি নানা অনিয়ম ও সমস্যায় অনান্য কলেজের তুলনায় চিহ্নিত। সব দিক দিয়েই সংকটের মধ্যেই অধ্যয়ন করছে শিক্ষার্থীরা। এই কলেজে নেই কোন হলের ব্যবস্থা, নেই কোন নিজস্ব পরিবহন ও ক্যান্টিন।
যদিও এ কলেজটিতে বর্তমানে উচ্চ মাধ্যমিক, স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে অধ্যায়নের সুব্যবস্থা রয়েছে। এটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত সরকারি ৭ কলেজের অন্যতম একটি কলেজ। ২০১৭ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি কলেজটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত হলেও অনিয়ম ও সমস্যা থেকে রেহাই পায়নি। ঐতিয্য ও পুরান ঢাকার অন্যতম বিদ্যাপীঠ হলেও কলেজটি সবদিক থেকেই অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তুলনায় বহুগুণে পিছিয়ে আছে বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের।
১৭টি বিভাগে এই কলেজের শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ১২ হাজারের অধিক। এর মধ্যে শিক্ষক রয়েছেন মাত্র ১০৩ জন। এক একর জমিতে গড়ে ওঠা কলেজ ভবনের শ্রেণিকক্ষ গুলো আয়তনে খুব ছোট । সেখানে শ্রেণিকক্ষের সংখ্যাও পর্যাপ্ত নেই। শ্রেণীকক্ষের সংকটের কারণে শিক্ষার্থীরা ঠিকমতো ক্লাস করতে পারছে না। তুলনামুলক কম ক্লাসের কারণে ঠিক ভাবে পাঠদান করা সম্ভব হচ্ছে না। আর পাঠদানের উপযুক্ত ব্যবস্থা না থাকার কারণে শিক্ষার্থীরা তুলনা মূলক ভালো ফলাফল অর্জন করতে পারছেনা।
 কলেজটির মধ্যে মসজিদের পাশেই রয়েছে একটি গ্রন্থাগার, যেখানে নেই পর্যাপ্ত পরিমাণে পড়াশোনার জায়গা। যেটি নামে মাত্র চলছে সেখানে নেই ক্যাটালগ। বই নেয়ার ব্যবস্থাপনাও গোছালো নয়। গ্রন্থাগারে উপযুক্ত বসার জায়গা না থাকায় শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা করতে অসুবিধা হচ্ছে। প্রায় সময় লক্ষ্য করা যায় গ্রন্থগারে বসার জায়গা না পেয়ে মসজিদ বারান্দায় পড়াশোনা করছে।
 মসজিদে অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা যায়,লাইব্রেরীতে জায়গা না পেয়ে মসজিদের বারান্দায় পড়াশোনা করতে হচ্ছে। খুব সকালে এসেও গ্রন্থাগারে জায়গা পাওয়াতে মসজিদে এসে বসেছি। বাসায় পড়ার উপযুক্ত ব্যবস্থা না থাকায় ক্লাসের পড়া এখানে এসে কভার করতে হচ্ছে।
তাছাড়া এ কলেজেই বিভিন্ন বর্ষে ভর্তি ও ফর্ম পূরণের সময় অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগ উঠে প্রতিবারই। কলেজ প্রশাসনও এ বিষয়ে তৎপর, একাধিক নোটিশ দিয়েও এ অতিরিক্ত অর্থ আদায় বন্ধ করা যায়নি। শুধুমাত্র নোটিশ দিয়েই নয় অবলম্বন করা হয়েছে একাধিক পন্থা। মানোন্নয়নের ক্ষেত্রে ইএমএসের ব্যবহার, যার ফলে কোন প্রকার অর্থের লেনদেন ছাড়াই স্বয়ংক্রিয়ভাবে ফর্ম ফিলাপ করা যাচ্ছে। তবুও আটকানো যাচ্ছে না অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগ। বিভাগভেদে ৮০-১৫০ টাকা আদায় করা হচ্ছে।
ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের এক শিক্ষার্থী জানান, প্রথম বর্ষের তার মানোন্নয়নের জন্য ফর্ম জমা দিতে গেলে বিভাগ থেকে অতিরিক্ত ২০০ টাকা দাবি করা হয়। এ অতিরিক্ত টাকা ছাত্রলীগের চাঁদার বাবদ দাবি করা হয়। পরবর্তীতে তার কাছে অতিরিক্ত ২০০ টাকা না থাকায় ১৫০ টাকা দিয়ে আসতে বাধ্য হয় এবং বলা হয় যেন বাকী ৫০ টাকাটাও দ্রুত দিয়ে দেওয়া হয়। এ টাকা নাকি বাধ্যতামূলক! অথচ এ অতিরিক্ত অর্থ বাবদ দেওয়া হয় না কোন রশিদও।
এ বিষয়ে অধ্যক্ষ অধ্যাপক মোঃ মোহসিন কবীর বলেন, অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের ব্যাপারে সোহরাওয়ার্দী কলেজ প্রশাসন সর্তক অবস্থানে আছে। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়ার প্রেক্ষিতে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। যদি এ ধরনের কাজে সোহরাওয়ার্দী কলেজের কোন কর্মচারী জড়িত থাকে তবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে কলেজ প্রশাসন।