Dhaka ০৩:৫৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পবিত্র ঈদে গরিবের শিক্ষা, ধর্মে বিভাজন নয়, ঐক্য বললেন ঢাবি’র দর্শন বিভাগের চেয়ারম্যান ড.কাওসার মুস্তাফা

  • Reporter Name
  • Update Time : ১১:৩৮:৪২ অপরাহ্ন, শনিবার, ৮ জুলাই ২০২৩
  • ৩২২ Time View


ম. মাহবুবুর রহমান ভূঁইয়া, ঢাকা

বিশ্বব্যাপী এখন চলছে মানুষে মানুষে বিভক্তি। ধর্মের মাঝে বহুবিধ
বিভক্তির সময়ে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন বিভাজন নয়, আমাদের মাঝে ঐক্য।
ঐতিহাসিক গাদিরে খুম নামক স্থানে আমাদের প্রিয় রাসুল সোয়া লক্ষ সাহাবী
(রা.) গণের সমাবেশে সাইয়্যিদেনা মাওলা আলী ইবনে আবু তালেব-এর পবিত্র হাত
তুলে যে কথা বলেছিলেন, আল্লাহ আমার মাওলা (অভিভাবক), আমি সকল মুমিনগণের
মাওলা, আর আমি যার মাওলা এ আলিও সকল মুমিনগণের মাওলা, এ মহান সত্যকে মেনে
নিয়ে সকল বিভাজনের উর্ধ্বে উঠে পবিত্র ঈদে গাদিরের শিক্ষা ধারণ করা।”
কথাগুলো বলছিলেন ‘পবিত্র ঈদে গাদির মাওলার অভিষেক’ অনুষ্ঠানের প্রধান
আলোচক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. শাহ্
কাওসার মুস্তাফা আবুলউলায়ী।
 ৮ জুলাই, শনিবার সকাল ১০ ঘটিকায় ঢাকা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট সেমিনার
হলে গাদিরে খুম উদযাপন পরিষদ কর্তৃক আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন
ঢাকা পাক পাঞ্জাতন দরবার শরীফের শায়েখ মোশতাক আহমাদ। বাংলাদেশ বেতার ও
টেলিভিশনের কুরআন তাফসিরকারক মহিউদ্দিন খান ফারুকীর সঞ্চালনায় সভায়
শুভেচ্ছা বক্তব্য প্রদান করেন উদযাপন পরিষদের সদস্য সচিব রেহানে মুস্তাফা
আবুলউলায়ী। আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ভারতের হুজুর
গরিবে নেওয়াজ (রাহ.) আজমির শরীফের খাদিম সাইয়্যেদ সালমান চিশতী।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত অন্যান্য আলোচকদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ঢাকা
বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্সি ও সাহিত্য বিভাগের অধ্যাপক ড. কে এম সাইফুল
ইসলাম, একই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম খান,
কিশোরগঞ্জের সরারচর মুফতিয়া দরবার শরীফের গদ্দিনশীন ও বিশিষ্ট ইসলামি
চিন্তাবিদ শাহ্ সারোয়ার মোস্তাফা আবুলউলায়ী, টঙ্গি হায়দারীয়া দরবার
শরীফের সাজ্জাদানসীন ডা. সৈয়দ আবু দাউদ মসনবী হায়দার, ড. বাকী বিল্লাহ
মিশকাত চৌধুরী, মাওলানা মনজুর কাদেরি, সৈয়দ আমিনুল এহসান ফেরদৌস ও হাফেজ
মাওলানা ফুয়াদ আল মাহদী ফারুকী।
অভিষেক অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, ইসলামের ইতিহাসে যে গুরুত্বপূর্ণ
ঘটনাগুলো রয়েছে তার মধ্যে গাদীরে খুম ঘটনা উল্লেখযোগ্য। রাসূলুল্লাহ
(সা.) যখন বিদায় হজ সমাপ্ত করে মদীনায় প্রত্যাবর্তন করছিলেন পথে ১৮ জিলহজ
তারিখে ‘গাদিরে খুমে’ (গাদির অর্থ জলাশয়, খুম-স্থানের নাম) অর্থাৎ খুমের
জলাশয়ের কাছাকাছি হলে কোরআনের সর্বশেষ আয়াতের ঠিক আগের আয়াতটি নাজিল হয়।
জীবরাইল (আ.) মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে ওহী নিয়ে অবতরণ করেন এবং আল্লাহ
মহানবী (সা.)-কে সম্বোধন করে বলেন : হে রাসূল! যা তোমার প্রতিপালকের পক্ষ
হতে তোমার প্রতি অবতীর্ণ হয়েছে তা পৌঁছে দাও, আর যদি তুমি তা না কর, তবে
তুমি তার কোন বার্তাই পৌঁছাওনি; এবং আল্লাহ তোমাকে মানুষের অনিষ্ট হতে
রক্ষা করবেন; এবং নিশ্চয় আল্লাহ অবিশ্বাসী সম্প্রদায়কে সঠিক পথে পরিচালিত
করেন না (সুরা মায়েদা আয়াত নং ৬৭)। মহানবী (সা.) গাদীরে খুমে যাত্রা
বিরতি করে লোকদের সামনে ঐতিহাসিক বক্তব্য প্রদান করেন এবং হযরত আলী
(আ.)-কে তাঁর পরে মুসলমানদের মাওলা বা অভিভাবক হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেন।
এরপর মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে অপর আয়াত নাযিল হয় : ‘আজ আমি তোমাদের জন্য
তোমাদের দীনকে পূর্ণ করলাম ও তোমাদের প্রতি আমার নিয়ামত সম্পূর্ণ করলাম
এবং তোমাদের জন্য ধর্ম হিসেবে ইসলামের প্রতি সন্তুষ্ট হলাম।’ গাদীরে খুমে
নাযিলকৃত দুটি আয়াত থেকে আমরা এই ঘটনার অপরিসীম গুরুত্ব অনুধাবন করতে
পারি।
বক্তরা আরো বলেন, বিশ্বাসীগণের ‘মাওলা’ হিসেবে হজরত আলী ইবনে আবি তালিবকে
রাসূলে পাক (সা.) তার স্থলাভিষিক্ত করে গাদিরে খুমে যে অভিষেক অনুষ্ঠান
করেন, ইতিহাসে তা ‘গাদিরে খুম’ বা ‘ঈদে গাদির’ নামে পরিচিত।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

আলোচিত

বোয়ালমারীতে চার বছর কর্মস্থলে না গিয়েও বেতন ভাতা নিচ্ছে উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ঝুমা !

পবিত্র ঈদে গরিবের শিক্ষা, ধর্মে বিভাজন নয়, ঐক্য বললেন ঢাবি’র দর্শন বিভাগের চেয়ারম্যান ড.কাওসার মুস্তাফা

Update Time : ১১:৩৮:৪২ অপরাহ্ন, শনিবার, ৮ জুলাই ২০২৩


ম. মাহবুবুর রহমান ভূঁইয়া, ঢাকা

বিশ্বব্যাপী এখন চলছে মানুষে মানুষে বিভক্তি। ধর্মের মাঝে বহুবিধ
বিভক্তির সময়ে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন বিভাজন নয়, আমাদের মাঝে ঐক্য।
ঐতিহাসিক গাদিরে খুম নামক স্থানে আমাদের প্রিয় রাসুল সোয়া লক্ষ সাহাবী
(রা.) গণের সমাবেশে সাইয়্যিদেনা মাওলা আলী ইবনে আবু তালেব-এর পবিত্র হাত
তুলে যে কথা বলেছিলেন, আল্লাহ আমার মাওলা (অভিভাবক), আমি সকল মুমিনগণের
মাওলা, আর আমি যার মাওলা এ আলিও সকল মুমিনগণের মাওলা, এ মহান সত্যকে মেনে
নিয়ে সকল বিভাজনের উর্ধ্বে উঠে পবিত্র ঈদে গাদিরের শিক্ষা ধারণ করা।”
কথাগুলো বলছিলেন ‘পবিত্র ঈদে গাদির মাওলার অভিষেক’ অনুষ্ঠানের প্রধান
আলোচক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. শাহ্
কাওসার মুস্তাফা আবুলউলায়ী।
 ৮ জুলাই, শনিবার সকাল ১০ ঘটিকায় ঢাকা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট সেমিনার
হলে গাদিরে খুম উদযাপন পরিষদ কর্তৃক আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন
ঢাকা পাক পাঞ্জাতন দরবার শরীফের শায়েখ মোশতাক আহমাদ। বাংলাদেশ বেতার ও
টেলিভিশনের কুরআন তাফসিরকারক মহিউদ্দিন খান ফারুকীর সঞ্চালনায় সভায়
শুভেচ্ছা বক্তব্য প্রদান করেন উদযাপন পরিষদের সদস্য সচিব রেহানে মুস্তাফা
আবুলউলায়ী। আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ভারতের হুজুর
গরিবে নেওয়াজ (রাহ.) আজমির শরীফের খাদিম সাইয়্যেদ সালমান চিশতী।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত অন্যান্য আলোচকদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ঢাকা
বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্সি ও সাহিত্য বিভাগের অধ্যাপক ড. কে এম সাইফুল
ইসলাম, একই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম খান,
কিশোরগঞ্জের সরারচর মুফতিয়া দরবার শরীফের গদ্দিনশীন ও বিশিষ্ট ইসলামি
চিন্তাবিদ শাহ্ সারোয়ার মোস্তাফা আবুলউলায়ী, টঙ্গি হায়দারীয়া দরবার
শরীফের সাজ্জাদানসীন ডা. সৈয়দ আবু দাউদ মসনবী হায়দার, ড. বাকী বিল্লাহ
মিশকাত চৌধুরী, মাওলানা মনজুর কাদেরি, সৈয়দ আমিনুল এহসান ফেরদৌস ও হাফেজ
মাওলানা ফুয়াদ আল মাহদী ফারুকী।
অভিষেক অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, ইসলামের ইতিহাসে যে গুরুত্বপূর্ণ
ঘটনাগুলো রয়েছে তার মধ্যে গাদীরে খুম ঘটনা উল্লেখযোগ্য। রাসূলুল্লাহ
(সা.) যখন বিদায় হজ সমাপ্ত করে মদীনায় প্রত্যাবর্তন করছিলেন পথে ১৮ জিলহজ
তারিখে ‘গাদিরে খুমে’ (গাদির অর্থ জলাশয়, খুম-স্থানের নাম) অর্থাৎ খুমের
জলাশয়ের কাছাকাছি হলে কোরআনের সর্বশেষ আয়াতের ঠিক আগের আয়াতটি নাজিল হয়।
জীবরাইল (আ.) মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে ওহী নিয়ে অবতরণ করেন এবং আল্লাহ
মহানবী (সা.)-কে সম্বোধন করে বলেন : হে রাসূল! যা তোমার প্রতিপালকের পক্ষ
হতে তোমার প্রতি অবতীর্ণ হয়েছে তা পৌঁছে দাও, আর যদি তুমি তা না কর, তবে
তুমি তার কোন বার্তাই পৌঁছাওনি; এবং আল্লাহ তোমাকে মানুষের অনিষ্ট হতে
রক্ষা করবেন; এবং নিশ্চয় আল্লাহ অবিশ্বাসী সম্প্রদায়কে সঠিক পথে পরিচালিত
করেন না (সুরা মায়েদা আয়াত নং ৬৭)। মহানবী (সা.) গাদীরে খুমে যাত্রা
বিরতি করে লোকদের সামনে ঐতিহাসিক বক্তব্য প্রদান করেন এবং হযরত আলী
(আ.)-কে তাঁর পরে মুসলমানদের মাওলা বা অভিভাবক হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেন।
এরপর মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে অপর আয়াত নাযিল হয় : ‘আজ আমি তোমাদের জন্য
তোমাদের দীনকে পূর্ণ করলাম ও তোমাদের প্রতি আমার নিয়ামত সম্পূর্ণ করলাম
এবং তোমাদের জন্য ধর্ম হিসেবে ইসলামের প্রতি সন্তুষ্ট হলাম।’ গাদীরে খুমে
নাযিলকৃত দুটি আয়াত থেকে আমরা এই ঘটনার অপরিসীম গুরুত্ব অনুধাবন করতে
পারি।
বক্তরা আরো বলেন, বিশ্বাসীগণের ‘মাওলা’ হিসেবে হজরত আলী ইবনে আবি তালিবকে
রাসূলে পাক (সা.) তার স্থলাভিষিক্ত করে গাদিরে খুমে যে অভিষেক অনুষ্ঠান
করেন, ইতিহাসে তা ‘গাদিরে খুম’ বা ‘ঈদে গাদির’ নামে পরিচিত।