Dhaka ০৯:৫৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

“ফেনীতে সিটি স্ক্যান, এমআরআই ও ডায়াগনস্টিক পরীক্ষার নতুন মূল্য তালিকা দেওয়া হয়েছে।”

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৬:৫২:৪২ অপরাহ্ন, সোমবার, ৫ ডিসেম্বর ২০২২
  • ৬৫৫ Time View
“ফেনীতে সিটি স্ক্যান,এমআরআই ও ডায়াগনস্টিক পরীক্ষার নতুন মূল্য তালিকা দেওয়া হয়েছে।”
আবুল হাসনাত রিন্টু, ফেনী প্রতিনিধি :
বিশ্ব বাজারে ডলার সংকটের কারণে আমদানির ক্ষেত্রে দেখা দিয়েছে জটিলতা। অন্যদিকে মেডিকেল ডিভাইস ও স্বাস্থ্য পরীক্ষার উপকরণের উৎপাদন ও সরবরাহ কমে গেছে। এতে সংকটের মুখে পড়ছে দেশের স্বাস্থ্য খাত। তেমনি সংকটে পড়েছে ফেনীর বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক প্রতিষ্ঠানগুলো। রোগ নির্ণয়ের রি-এজেন্ট বা রাসায়নিক উপাদানের সংকট দেখা দেওয়ায় নতুন করে পূনরায় সিটি স্ক্যান, এমআরআই, বিএমডি ও ডায়াগনস্টিক পরীক্ষার মূল্য তালিকা দেওয়া হয়েছে। রি-এজেন্ট ও মেডিকেল সরঞ্জাম সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলো বলছে, রোগ নির্ণয়ের পরীক্ষায় ব্যবহৃত প্রায় সব উপাদানই আমদানিনির্ভর।রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে উৎপাদন কমে গেছে। পাশাপাশি ডলার সংকটের কারণে বেসরকারি ব্যাংকগুলোতে আমদানির চাহিদার অর্ধেকের মতো রিএজেন্ট আসছে।
ফেনী “এসকর্ট ইমেজিং সেন্টার” র ম্যানেজার গোলাম কবির বাদল বলেন, কিছুদিন ধরে এই সংকট তৈরি হয়েছে। সিটি স্ক্যান ও এমআরআই ফিল্ম সরবরাহকারীরা আজ ১ মাস কোন ফিল্ম সহ মেশিনে ব্যাবহৃত কোন সরঞ্জাম দিচ্ছে না। কারণ জানতে চেয়েছিলাম। তারা ফোনের মাধ্যমে জানিয়েছে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে কাঁচামাল আমদানিতে সংকট রয়েছে। ফলে উৎপাদন কমে যাওয়ায় ডিভাইস আমদানি ও কমে গেছে। সেই সাথে ৩০% মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। ফেনীর সবচেয়ে বড় প্রতিষ্ঠান “এসকর্ট ইমেজিং সেন্টার” প্রয়োজনের তুলনায় অন্তত তিন মাসের সিটি স্ক্যান,এমআরআই ফিল্ম সহ অন্যান্য সরন্জাম মজুত রাখে। এই মুহূর্তে এমন সমস্যায় অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের অবস্থা দেখে তারাও দুশ্চিন্তায় আছে। প্রতিষ্ঠানটির ব্যাবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মনিরুল ইসলাম বাবুু বলেন, আমাদের কিছু ফিল্ম মজুত থাকায় এখনো চলছে, তবে কিছু প্রতিষ্ঠানের সমস্যা হচ্ছে। আমাদের এখনো সে ধরনের অবস্থায় পৌঁছেনি। কিন্তু চলমান সংকটাবস্থা নিয়ে আমরা খুবই চিন্তিত।‌‌’
বিএমএ সভাপতি (ফেনী জেলা) অধ্যাপক ডা. সাহেদুল ইসলাম কাওসার বলেন, ‘রোগ নির্ণয়ে দেশে সব পরীক্ষা-নিরীক্ষার রিএজেন্ট বাইরের দেশ থেকে আনতে হয়।এলসি খুলতে না পারায় সরবরাহকারীরা রিএজেন্ট দিতে পারছে না। আগে যেটা এক মাসে পাওয়া যেত, এখন সেটি ছয় মাসেও হচ্ছে না। ডলার সংকটের কারণে সিটিস্ক্যান,এমআরআই,এক্স-রে ফিল্মসহ সব ধরনের রিএজেন্টের দাম বেড়েছে। সরবরাহকারীরা বলছে, রিএজেন্ট পাওয়া কঠিন হয়ে যাচ্ছে। দামও অন্তত ৩০ শতাংশ বেড়েছে।
ফেনী হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিকের সাধারন সম্পাদক আবু জুবায়ের মুন্না বলেন, ‘বেশ কিছুদিন ধরেই এলসি খোলা যাচ্ছে না। সরকারের পক্ষ থেকে সমস্যা নেই বলা হলেও অতি জরুরি রিএজেন্ট আনতে সমস্যা হচ্ছে। অর্ডার দিয়েও পাচ্ছে না বহু প্রতিষ্ঠান। যার ১ লাখ ডলার প্রয়োজন, তাকে দিচ্ছে ১৫ হাজার। ব্যাংকগুলোতে ডলার সংকট, সেটা সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে শুরু করে সবারই জানা। এই সমস্যা না কাটলে অচিরেই বহু পরীক্ষা-নিরীক্ষা বন্ধ হয়ে যেতে পারে। ফেনী হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিকের সভাপতি হারুনুর রশিদ বলেন, সিটি স্ক্যান,এমআরআই, বিএমডি, এক্স-রের মতো অধিকাংশ বড় পরীক্ষার রিএজেন্ট বাইরে থেকে আনতে হয়। সেগুলোর কাঁচামাল বেলারুশ, রাশিয়া ও ইউক্রেন থেকে আসে। কিন্তু কাঁচামাল না থাকায় উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। তাই সবকিছু বিবেচনা করে আমরা সকল পরীক্ষার নতুন মূল্য তালিকা দিয়েছি।
Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

আলোচিত

বোয়ালমারীতে চার বছর কর্মস্থলে না গিয়েও বেতন ভাতা নিচ্ছে উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ঝুমা !

“ফেনীতে সিটি স্ক্যান, এমআরআই ও ডায়াগনস্টিক পরীক্ষার নতুন মূল্য তালিকা দেওয়া হয়েছে।”

Update Time : ০৬:৫২:৪২ অপরাহ্ন, সোমবার, ৫ ডিসেম্বর ২০২২
“ফেনীতে সিটি স্ক্যান,এমআরআই ও ডায়াগনস্টিক পরীক্ষার নতুন মূল্য তালিকা দেওয়া হয়েছে।”
আবুল হাসনাত রিন্টু, ফেনী প্রতিনিধি :
বিশ্ব বাজারে ডলার সংকটের কারণে আমদানির ক্ষেত্রে দেখা দিয়েছে জটিলতা। অন্যদিকে মেডিকেল ডিভাইস ও স্বাস্থ্য পরীক্ষার উপকরণের উৎপাদন ও সরবরাহ কমে গেছে। এতে সংকটের মুখে পড়ছে দেশের স্বাস্থ্য খাত। তেমনি সংকটে পড়েছে ফেনীর বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক প্রতিষ্ঠানগুলো। রোগ নির্ণয়ের রি-এজেন্ট বা রাসায়নিক উপাদানের সংকট দেখা দেওয়ায় নতুন করে পূনরায় সিটি স্ক্যান, এমআরআই, বিএমডি ও ডায়াগনস্টিক পরীক্ষার মূল্য তালিকা দেওয়া হয়েছে। রি-এজেন্ট ও মেডিকেল সরঞ্জাম সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলো বলছে, রোগ নির্ণয়ের পরীক্ষায় ব্যবহৃত প্রায় সব উপাদানই আমদানিনির্ভর।রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে উৎপাদন কমে গেছে। পাশাপাশি ডলার সংকটের কারণে বেসরকারি ব্যাংকগুলোতে আমদানির চাহিদার অর্ধেকের মতো রিএজেন্ট আসছে।
ফেনী “এসকর্ট ইমেজিং সেন্টার” র ম্যানেজার গোলাম কবির বাদল বলেন, কিছুদিন ধরে এই সংকট তৈরি হয়েছে। সিটি স্ক্যান ও এমআরআই ফিল্ম সরবরাহকারীরা আজ ১ মাস কোন ফিল্ম সহ মেশিনে ব্যাবহৃত কোন সরঞ্জাম দিচ্ছে না। কারণ জানতে চেয়েছিলাম। তারা ফোনের মাধ্যমে জানিয়েছে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে কাঁচামাল আমদানিতে সংকট রয়েছে। ফলে উৎপাদন কমে যাওয়ায় ডিভাইস আমদানি ও কমে গেছে। সেই সাথে ৩০% মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। ফেনীর সবচেয়ে বড় প্রতিষ্ঠান “এসকর্ট ইমেজিং সেন্টার” প্রয়োজনের তুলনায় অন্তত তিন মাসের সিটি স্ক্যান,এমআরআই ফিল্ম সহ অন্যান্য সরন্জাম মজুত রাখে। এই মুহূর্তে এমন সমস্যায় অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের অবস্থা দেখে তারাও দুশ্চিন্তায় আছে। প্রতিষ্ঠানটির ব্যাবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মনিরুল ইসলাম বাবুু বলেন, আমাদের কিছু ফিল্ম মজুত থাকায় এখনো চলছে, তবে কিছু প্রতিষ্ঠানের সমস্যা হচ্ছে। আমাদের এখনো সে ধরনের অবস্থায় পৌঁছেনি। কিন্তু চলমান সংকটাবস্থা নিয়ে আমরা খুবই চিন্তিত।‌‌’
বিএমএ সভাপতি (ফেনী জেলা) অধ্যাপক ডা. সাহেদুল ইসলাম কাওসার বলেন, ‘রোগ নির্ণয়ে দেশে সব পরীক্ষা-নিরীক্ষার রিএজেন্ট বাইরের দেশ থেকে আনতে হয়।এলসি খুলতে না পারায় সরবরাহকারীরা রিএজেন্ট দিতে পারছে না। আগে যেটা এক মাসে পাওয়া যেত, এখন সেটি ছয় মাসেও হচ্ছে না। ডলার সংকটের কারণে সিটিস্ক্যান,এমআরআই,এক্স-রে ফিল্মসহ সব ধরনের রিএজেন্টের দাম বেড়েছে। সরবরাহকারীরা বলছে, রিএজেন্ট পাওয়া কঠিন হয়ে যাচ্ছে। দামও অন্তত ৩০ শতাংশ বেড়েছে।
ফেনী হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিকের সাধারন সম্পাদক আবু জুবায়ের মুন্না বলেন, ‘বেশ কিছুদিন ধরেই এলসি খোলা যাচ্ছে না। সরকারের পক্ষ থেকে সমস্যা নেই বলা হলেও অতি জরুরি রিএজেন্ট আনতে সমস্যা হচ্ছে। অর্ডার দিয়েও পাচ্ছে না বহু প্রতিষ্ঠান। যার ১ লাখ ডলার প্রয়োজন, তাকে দিচ্ছে ১৫ হাজার। ব্যাংকগুলোতে ডলার সংকট, সেটা সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে শুরু করে সবারই জানা। এই সমস্যা না কাটলে অচিরেই বহু পরীক্ষা-নিরীক্ষা বন্ধ হয়ে যেতে পারে। ফেনী হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিকের সভাপতি হারুনুর রশিদ বলেন, সিটি স্ক্যান,এমআরআই, বিএমডি, এক্স-রের মতো অধিকাংশ বড় পরীক্ষার রিএজেন্ট বাইরে থেকে আনতে হয়। সেগুলোর কাঁচামাল বেলারুশ, রাশিয়া ও ইউক্রেন থেকে আসে। কিন্তু কাঁচামাল না থাকায় উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। তাই সবকিছু বিবেচনা করে আমরা সকল পরীক্ষার নতুন মূল্য তালিকা দিয়েছি।