বটিয়াঘাটা(খুলনা)প্রতিনিধি, খুলনা’র বটিয়াঘাটার মেয়াদ উত্তীর্ণ দলিল লেখক সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটির সভাপতির বিরুদ্ধে সীমাহীন দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে ।
অভিযোগে জানা গেছে, বটিয়াঘাটা দলিল লেখক সমিতির সভাপতি মোঃ আমিনুল ইসলাম অপু কমিটির ১ বছর ৫ মাস মেয়াদ উত্তীর্ণ হলেও উক্ত সভাপতি পেসিশক্তি ব্যবহার করে তার অনৈতিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে অবৈধ অর্থ উপার্জন করে চলেছে । আর তার ওই অবৈধ কর্মকান্ড পরিচালনা করতে রয়েছে বিশাল হাতুড়ী বাহিনী । প্রতিদিন সাব রেজিস্ট্রি অফিসে দলিল সম্পাদন করতে আশা জমির ক্রেতা-বিক্রেতাগন তার বাহিনীর নির্যাতনের শিকার হয় । উক্ত অবৈধ সভাপতি মদ ও বিয়ার পান করে তার গড়া বাহিনীদের সাথে নিয়ে সাব-রেজিষ্ট্রি অফিসের পরিবেশ নষ্ট করে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সাথে পা, পড়িয়ে কৃত্রিম সমস্যা সৃষ্টি করে দুর্বল দলিল লেখকদের ভয়ভীতি দেখিয়ে বটিয়াঘাটা হাসপাতাল মোড়ে তার ব্যক্তিগত অফিসে ডেকে নিয়ে শালিসি বৈঠকের নামে মোটা অংকের টাকা দাবি করে । তার দাবি পূরণ না হলে হাতুড়ি বাহিনীর মাধ্যমে ওই দলিল লেখক ও সাব-রেজিষ্ট্রারকে ভয় দেখিয়ে দলিল সম্পাদন বন্ধ করে দেয় । কেউ প্রতিবাদ করতে গেলে তার উপর নেমে আসে বাহিনীর নির্যাতনের খড়গ । অভিযোগে আরো জানা গেছে, বটিয়াঘাটা দলিল লেখক সমিতির অবৈধ সভাপতি একজন স্বীকৃত মাদক সেবনকারি হয়েও কিভাবে সাব-রেজিষ্ট্রি অফিসে রাম রাজাত্ব করছে তা সাধারণ মানুষের বোধগম্য নয় । অন্যদিকে সমিতির অবৈধ সভাপতির বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় হত্যা,মাদক, অগ্নিসংযোগ,জাল-জালিয়াতি মামলা সহ একাধিক জিডি রয়েছে । অবৈধভাবে তার মেয়াদ উত্তীর্ণ সভাপতির পদ দখল করে রাখতে প্রশাসন ও নেতাদের ব্যক্তিগত ভাবে বিভিন্ন জাতীয় প্রোগ্ৰাম এবং উৎসবে অর্থ দিয়ে টিকে আছে বলে অভিযোগ রয়েছে । এছাড়াও মেয়াদ উত্তীর্ণ কমিটির সভাপতি প্রভাব খাটিয়ে সাব-রেজিষ্ট্রি অফিসের সাব-রেজিষ্ট্রার ও পেশকারকে ম্যানেজ করে আয় -ব্যয়ের হিসেব না দিয়ে সমিতির লক্ষ লক্ষ টাকা একা লুটেপাটে খাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে । কেউ প্রতিবাদ করতে সাহস পায় না । বিভিন্ন সময়ে মেয়াদ উত্তীর্ণ কার্যনির্বাহী কমিটির সকল সদস্যদের চাপে সভার আহ্ববান করার কথা বললেও সভাপতির পদ হারানোর ভয়ে সভা আহবান থেকে বিরত থাকেন । অনেক চাপাচাপির একপর্যায়ে গত শনিবার সকাল সাড়ে ১০ টায় সমিতির সাধারণ সভার আহ্ববানের লক্ষ্যে কার্যকরী কমিটির এক জরুরি সভার আহ্ববান করা হয় । কিন্তু সভাপতি উক্ত সভায় উপস্থিত হননি । পরবর্তীতে সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটির ১২ সদস্যদের মধ্যে ৮ সদস্যের উপস্থিতিতে সমিতির সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব আব্দুল হালিম আঁকুঞ্জীর সভাপতিত্বে সভা অনুষ্ঠিত হয় । উল্লেখ্য বটিয়াঘাটা দলিল লেখক সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটির নির্বাচিত মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে ১ বছর ৫ মাস অতিরিক্ত সময় অতিবাহিত হলেও বর্তমান কার্যনির্বাহী কমিটি নির্বাচনের নামই নিচ্ছেন না বর্তমান মেয়াদ উত্তীর্ণ অবৈধ কমিটির সভাপতি আমিনুল ইসলাম । দলিল লেখক সমিতির সাধারণ সদস্যরা কমিটিকে বর্ধিত সভা ডেকে পুনরায় নির্বাচন দিতে গণদাবি উঠালেও কমিটি সভাপতি ব্যক্তিস্বার্থ চরিতার্থ করতে কমিটির মেয়াদ উত্তীর্ণ হলেও আজ পর্যন্ত পুনরায় নির্বাচন দিতে উক্ত গণদাবিকে কোন প্রকার তোয়াক্কাই করছে না । এব্যাপারে বর্তমান কার্যনির্বাহী কমিটির সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব আব্দুল হালিম আঁকুঞ্জীর কাছে জানতে চাইলে তিনি এ প্রতিবেদকে বলেন,২২ জুলাই শনিবার বটিয়াঘাটা দলিল লেখক সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটির সভাপতির সন্মতিতে সভা অনুষ্ঠিত হবার কথা ছিল । কিন্তু সভাপতির নিকট সমিতির কার্যালয়ের চাবি থাকায় অন্য সকল কর্মকর্তারা সমিতির কর্যালয়ে ঢুকতে না পেরে কার্যালয়ের বাইরে সমিতির সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে । সমিতির ১২ সদস্যের মধ্যে ৮ সদস্য উপস্থিত ছিলেন । এসময় সমিতির সহ-সভাপতি মোঃ নজরুল ইসলাম অসুস্থ হয়ে ভারতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ছিলেন । এছাড়াও আরো একজন খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন । তিনি আরো বলেন, আমাদের সমিতির নির্বাচিত মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে ১ বছর ৫ মাসেরও বেশি অতিবাহিত হয়েছে । বর্তমান মেয়াদ উত্তীর্ণ কমিটি ভেঙ্গে দিয়ে ৩ মাস মেয়াদি নতুন একটা আহ্বায়ক কমিটি গঠন করে উক্ত আহ্বায়ক কমিটি নির্বাচন কমিশন গঠন পূর্বক উক্ত আহ্বায়ক কমিটি পুনরায় নির্বাচন দেয়ার লক্ষ্যে গতকাল শনিবার সকালে একটি বর্ধিত সভা ডাকার জন্য কার্যনির্বাহী কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হবার কথা ছিল । কিন্তু সভাপতির অনুপস্থিত এবং সমিতির কার্যালয়ের চাবি তার কাছে থাকায় সভার কার্যক্রম সংক্ষিপ্ত ভাবে শেষ হয় । সভা চলাকালীন সময়ে উপস্থিত ছিলেন সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটির কর্মকর্তা যথাক্রমে সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব আব্দুল হালিম আঁকুঞ্জী,যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান মাসুম, সাংগঠনিক সম্পাদক জহির রায়হান লালন, ক্যাশিয়ার লুৎফর রহমান, প্রচার সম্পাদক এ,কে এম মাহবুবুল হক,সদস্য মোঃ আব্দুল গফুর, নিউটন রায়,জয়ন্ত গাইন প্রমুখ। তিনি আরো বলেন, মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পুর্বেই কমিটির সভাপতি সমিতির সকল আয়-ব্যয়ের হিসাবাদী তার অনুকূলে নিয়ে নেওয়ার কারণে,সমিতির সকল সদস্য বৃন্দের আয় ব্যয়ের হিসেব দিচ্ছে না এবং সমিতির সকল সদস্যদের উৎস বোনাস সম্পুর্ন বন্ধ করে দিয়েছে বর্তমান কমিটির অবৈধ সভাপতি । এব্যাপারে দলিল লেখক সমিতি ৮৩ জন সদস্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট সমিতির নির্বাচনের জোর দাবি জানান । এব্যাপারে জেলা দলিল লেখক সমিতির সভাপতি মোঃ আলমগীর হোসেন এর সঙ্গে যোগাযোগ করলে তার কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।