Dhaka ০৪:৪৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বরিশালে নতুন বছরের প্রথম দিনে সব বই পাওয়া নিয়ে সংশয়।

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৫:০২:১৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২২
  • ৯১২ Time View

বরিশালে নতুন বছরের প্রথম দিনে সব বই পাওয়া নিয়ে সংশয়।

বরিশাল: নতুন বছরে নতুন বইয়ের ঘ্রাণ পাওয়ার অপেক্ষায় আছে বরিশালের
কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। এ বছর জেলায় প্রাথমিক স্তরে নতুন বইয়ের চাহিদা
প্রায় ১৩ লাখ ২১ হাজার। কিন্তু বছর শেষের ১০ দিন বাকি থাকলেও অনেক
বিষয়ের নতুন বই এখনো এসে পৌঁছায়নি। বরিশাল জেলা প্রাথমিক শিক্ষা
অধিদপ্তরের তথ্যমতে, জেলায় নতুন বইয়ের মোট চাহিদা ১৩ লাখ ২১ হাজার
২০টি। এর মধ্যে বরিশাল সদর উপজেলায় ২ লাখ ৮৬ হাজার ৮০০টি, আগৈলঝাড়া
উপজেলায় ৮৮ হাজার ৮৪৮টি, উজিরপুরে ১ লাখ ৩ হাজার ৫১২টি, গৌরনদীতে ৮৬
হাজার ৭০০টি, বাকেরগঞ্জে ১ লাখ ৮১ হাজার ১৪০টি, বানারীপাড়ায় ৮৫ হাজার
২০টি, বাবুগঞ্জে ৬৭ হাজার ৮০০টি, মুলাদীতে ১ লাখ ১৬ হাজার ২৫০টি,
মেহেন্দীগঞ্জ ২ লাখ ১০ হাজার ৬০০টি এবং হিজলায় ৯৪ হাজার ৩৫০টি নতুন
বইয়ের চাহিদা রয়েছে। বাকেরগঞ্জ উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা
কর্মকর্তা মুজাহিদুল ইসলাম জানান, প্রাক্-প্রাথমিকের সব নতুন বই পেয়েছেন।
আগামী সপ্তাহে প্রথম শ্রেণি ও দ্বিতীয় শ্রেণির বই দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
তবে তৃতীয় থেকে পঞ্চম শ্রেণির বইয়ের বিষয়ে তাঁরা কিছুই জানেন না।
মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শাহাদাত হোসেন জানান,
তাঁর উপজেলায় নতুন বইয়ের চাহিদা দুই লাখের বেশি। এখন পর্যন্ত কেবল প্রাক্-
প্রাথমিকের দুটি বই এসেছে। বাকি বই কবে আসবে, তা বলা যাচ্ছে না। একই
ধরনের তথ্য পাওয়া গেছে জেলার বাবুগঞ্জ, হিজলা, মুলাদী, বানারীপাড়া উপজেলা
থেকে। বাকেরগঞ্জের দক্ষিণ দাড়িয়াল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক
শিক্ষার্থীর অভিভাবক জামাল উদ্দিন জানান, তাঁর মেয়ে দ্বিতীয় শ্রেণি থেকে
তৃতীয় শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হয়েছে। নতুন বছরে নতুন বইয়ের অপেক্ষায় তার
সন্তানের মতো কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষক সালমান
আজিম জানান, বার্ষিক পরীক্ষা শেষ। এখন শিশুশিক্ষার্থীরা খেলাধুলায় ব্যস্ত।
তারা নতুন বছরে নতুন বই পাওয়ার আশায় আছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বরিশাল
জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোহন লাল দাস বলেন, কিছু কিছু শ্রেণির বই আসছে;
বিশেষ করে প্রাক্-প্রাথমিক, প্রথম শ্রেণি ও পঞ্চম শ্রেণির কোনো কোনো
বিষয়ের নতুন বই পৌঁছেছে, বাকিগুলোও এসে পড়বে। ২৭ ডিসেম্বরের মধ্যে নতুন
বইয়ের প্রকৃত চিত্র বোঝা যাবে।

বরিশালে লক্ষাধিক মানুষের ভোগান্তির নাম ডিসি রোড খেয়াঘাট।

বরিশাল: বাকেরগঞ্জের ভাতশালা গ্রামের রহিম মিয়া তার গুরুতর অসুস্থ বড় ভাইকে বরিশালে
ডাক্তার দেখাতে নিয়ে যাচ্ছিলেন, ডিসি রোড খেয়া পার হতে গিয়েই পড়েন বিপত্তিতে। নদীর তীরের
কাছাকাছি এসেই চরে আটকে যায় ট্রলার। প্রায় কোমর সমান পানির মধ্যে অসুস্থ বড় ভাইকে কোলে
তুলে নিয়ে নামতে হয় তাকে। এরপর বিপদ আরো বেড়ে যায়। প্রায় আধা কিলোমিটার কাদামাটির চরের
মধ্য দিয়ে বড় ভাইকে কোলে নিয়ে হেটে রাস্তায় উঠতে হয় তাকে। ঝালকাঠির কর্মস্থল থেকে স্ত্রী
আর ছোট বাচ্চাকে নিয়ে মোটরসাইকেল যোগে ডিসি রোড খেয়াঘাটে পৌঁছান বাদল তালুকদার, তার
গন্তব্য বাউফল উপজেলার ধুলিয়া ইউনিয়নের চাঁদকাঠি নিজ গ্রাম। নদীতে ভাটা থাকায় সকাল থেকে
দুপুর অব্দি প্রায় ৪ ঘণ্টা জোয়ারের অপেক্ষায় মোটরসাইকেল পারাপারের জন্য অপেক্ষা করতে হয়
তাকে। এরপর কয়েকজনের সহায়তায় প্রায় ৩০০মিটার কাদামাটির চরের মধ্য দিয়ে মোটরসাইকেলটি
ট্রলারে উঠানো হয়। এরকম ঘটনা বাকেরগঞ্জ ডিসি রোড খেয়াঘাটের নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার। শুষ্ক
মৌসুমে নদীর পানি কম থাকায় চরের মধ্যকার খালটি শুকিয়ে যায়, প্রায় আধা কিলোমিটার কাদামাটির
চর পেরিয়েও অনেকসময় রক্ষা হয় না। ডুবোচর থাকায় হাটুসমান পানির মধ্যেই ট্রলারে ওঠানামা
করতে হয় যাত্রীদের। বাকেরগঞ্জের ফরিদপুর ও দূর্গাপাশা ইউনিয়ন, বাউফলের কালিশুরি, ধুলিয়া,
কেশবপুর, সূর্যমনি, নূরাইনপুর, কনকদিয়াসহ কয়েকটি ইউনিয়নের প্রায় লক্ষাধিক মানুষের বরিশাল
ও বাকেরগঞ্জ সদরের সাথে যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম এই ডিসি খেয়াঘাট। গত কয়েক বছর চরের
মধ্য দিয়ে নদীর পাড় পর্যন্ত কাঠের পুল দিয়ে মানুষের হাটার ব্যবস্থা করা হলেও গত বছর এবং
চলতি বছর তা নির্মাণ করা হয়নি। প্রতিদিন প্রায় ২ সহস্রাধিক মানুষকে কাদা মাটির চর পেরিয়ে হাটু
সমান পানির মধ্যে নেমে পাড়ি দিতে হয় এই খেয়া। এছাড়া ফরিদপুর ইউনিয়নের কাকরধা কলেজে
পরীক্ষা কেন্দ্র থাকায় অপর পাড়ের পাঁচটি কলেজের এইচএসসি ও ডিগ্রি শিক্ষার্থীদের এই ঘাট
দিয়ে মারাত্মক ভোগান্তির মধ্যে পারাপার হতে হয়। হেলাল উদ্দিন আহম্মেদ ডিগ্রি কলেজের
অধ্যক্ষ মো: নুর দারাজ বলেন, এই অঞ্চলের লক্ষাধিক মানুষের ভোগান্তির নাম ডিসি রোড
খেয়াঘাট। যা চরের মধ্যকার খাল ও ডুবোচর ড্রেজিং অথবা চরের মধ্যে স্থায়ী পুল নির্মাণের মাধ্যমে
সমাধান করা সম্ভব। ডিসি রোড খেয়াঘাটের ইজারাদার হারুন খান বলেন, চরের মধ্যকার খালটি
ড্রেজিং করা হলে পুনরায় কিছু দিনের মধ্যে বালুতে ভরে যায়। এখানে স্থায়ী ব্রিজ/পুল নির্মাণের জন্য
উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে বলা হয়েছে।তিনি এ ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস
দিয়েছেন বলেও জানান ঠিকাদার। বাকেরগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) আবুল খায়ের মিয়া
বলেন, ডিসি রোড খেয়াঘাটে যাত্রীদের ভোগান্তি দূর করতে ইতোপূর্বে একাধিকবার প্রজেক্ট দেয়া
হয়েছে। যা অর্থায়নের অভাবে বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি। চরের উপর প্রায় ৫০০ মিটার আয়রন
ব্রিজ নির্মাণের জন্য এ বছর পুনরায় প্রজেক্ট জমা দেয়া হয়েছে, যাতে এক কোটি টাকার উপর খরচ
হবে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। বাকেরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সজল চন্দ্র
শীল বলেন, ইতোপূর্বে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য ৪০ লাখ টাকা প্রাক্কলন ব্যয় ধরা হয়েছিল। যা
দিয়ে চরের উপর প্রায় ৫০০ মিটার আয়রন ব্রিজ নির্মাণ করা সম্ভব ছিল না। এ বছর এলজিইডির
মাধ্যমে এক কোটি ৩০ লাখ টাকার মতো প্রাক্কলন ধরে মন্ত্রণালয়ে প্রজেক্ট পাঠানো হয়েছে।
আশা করা যায় খুব শীঘ্রই প্রকল্পটি পাশ হবে।

বরিশালে ভরা মৌসুমেও শীতকালীন সবজির দাম চড়া। 
বরিশাল: শীতের ভরা মৌসুমেও বরিশালের খুচরা বাজারে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে
শীতকালীন সবজি। এতে সাধারণ ক্রেতারা বাজারে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন। পাইকারি
বাজারে শীতকালীন সবজির দাম কমলেও খুচরা বাজারে এর প্রভাব নেই। ক্রেতাদের
অভিযোগ, সরকারি সংস্থার তদারকি না থাকায় খুচরা বাজারের ব্যবসায়ীদের বেশি
মুনাফা করার কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। বাজার ঘুরে ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা
বলে জানা যায়, গত সপ্তাহে বিটকপি ১৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও এ সপ্তাহে
বিক্রি হচ্ছে ১০ টাকায়। ফুলকপি গত সপ্তাহে প্রতি কেজি ১৮ টাকা করে বিক্রি হলেও
এ সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ১২ থেকে ১৫ টাকায়। গত সপ্তাহে কাঁচা মরিচ ২৫ টাকা কেজি
বিক্রি হলেও এ সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ২০-২২ টাকায়। টমেটো গত সপ্তাহে প্রতি কেজি
৬০ টাকা করে বিক্রি হলেও এ সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা করে। নতুন আলু গত
সপ্তাহে প্রতি কেজি ৩০ টাকা করে বিক্রি হলেও এ সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকা
করে। বেগুন গত সপ্তাহে প্রতি কেজি ২৫ টাকা থাকলেও এ সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ২০
টাকায়। পাইকারি সবজি বাজারের ব্যবসায়ী আরিফুল ইসলাম বলেন, বাজারে শীতকালীন
সবজির পর্যাপ্ত সরবরাহ রয়েছে। দুই সপ্তাহের ব্যবধানে সব ধরনের সবজির দাম
কেজিপ্রতি ৫-১০ টাকা করে কমেছে। তবে নগরের খুচরা বাজারে এর কোনো প্রভাব
পড়েনি। গতকাল মঙ্গলবার বাংলাবাজার, চৌমাথা, বটতলা, নতুন বাজার ঘুরে দেখা যায়,
বিটকপি প্রতি কেজি ৩০ টাকা, ফুলকপি ৪০ টাকা, কাঁচা মরিচ ৪০ টাকা, টমেটো ৫০
টাকা, আলু ৩০ টাকা, বেগুন ৪০ টাকা, বাঁধাকপি ৩০ টাকা, মিষ্টিকুমড়া ৩০ টাকা, শিম
৪০ টাকা টাকায় বিক্রি হচ্ছে। চৌমাথা বাজারে সবজি কিনতে এসেছেন আমির হোসেন।
তিনি বলেন, পাইকারি আড়ত থেকে চৌমাথার দূরত্ব দুই কিলোমিটার। এতটুকু দূরত্বে
সবজির দামে কেজিপ্রতি পার্থক্য হতে পারে ২-৪ টাকা। কিন্তু ব্যবসায়ীরা কেজিতে
কয়েক গুণ বেশি দাম নিচ্ছেন। বাজারের ব্যবসায়ী বাদল সরদার বলেন, মোকাম থেকে
সবজি কেনার পর খাজনা, পরিবহন ব্যয় ও শ্রমিকের মজুরি দিতে হয়; দোকানভাড়াও
রয়েছে। বিদ্যুতের জন্য আলাদা টাকা দিতে হয়। অনেক সময় সবজি নষ্ট হয়ে যায়।
খুচরা বাজারের সঙ্গে পাইকারি দরের তুলনা করে লাভ নেই। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ
অধিদপ্তরের বরিশাল জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক শাহ শোয়াইব মিয়া বলেন,
কেউ অযথা সবজির মূল্য বৃদ্ধি করলে জরিমানাসহ আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
21/12/2022
01620-849601

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

আলোচিত

বোয়ালমারীতে চার বছর কর্মস্থলে না গিয়েও বেতন ভাতা নিচ্ছে উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ঝুমা !

বরিশালে নতুন বছরের প্রথম দিনে সব বই পাওয়া নিয়ে সংশয়।

Update Time : ০৫:০২:১৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২২

বরিশালে নতুন বছরের প্রথম দিনে সব বই পাওয়া নিয়ে সংশয়।

বরিশাল: নতুন বছরে নতুন বইয়ের ঘ্রাণ পাওয়ার অপেক্ষায় আছে বরিশালের
কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। এ বছর জেলায় প্রাথমিক স্তরে নতুন বইয়ের চাহিদা
প্রায় ১৩ লাখ ২১ হাজার। কিন্তু বছর শেষের ১০ দিন বাকি থাকলেও অনেক
বিষয়ের নতুন বই এখনো এসে পৌঁছায়নি। বরিশাল জেলা প্রাথমিক শিক্ষা
অধিদপ্তরের তথ্যমতে, জেলায় নতুন বইয়ের মোট চাহিদা ১৩ লাখ ২১ হাজার
২০টি। এর মধ্যে বরিশাল সদর উপজেলায় ২ লাখ ৮৬ হাজার ৮০০টি, আগৈলঝাড়া
উপজেলায় ৮৮ হাজার ৮৪৮টি, উজিরপুরে ১ লাখ ৩ হাজার ৫১২টি, গৌরনদীতে ৮৬
হাজার ৭০০টি, বাকেরগঞ্জে ১ লাখ ৮১ হাজার ১৪০টি, বানারীপাড়ায় ৮৫ হাজার
২০টি, বাবুগঞ্জে ৬৭ হাজার ৮০০টি, মুলাদীতে ১ লাখ ১৬ হাজার ২৫০টি,
মেহেন্দীগঞ্জ ২ লাখ ১০ হাজার ৬০০টি এবং হিজলায় ৯৪ হাজার ৩৫০টি নতুন
বইয়ের চাহিদা রয়েছে। বাকেরগঞ্জ উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা
কর্মকর্তা মুজাহিদুল ইসলাম জানান, প্রাক্-প্রাথমিকের সব নতুন বই পেয়েছেন।
আগামী সপ্তাহে প্রথম শ্রেণি ও দ্বিতীয় শ্রেণির বই দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
তবে তৃতীয় থেকে পঞ্চম শ্রেণির বইয়ের বিষয়ে তাঁরা কিছুই জানেন না।
মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শাহাদাত হোসেন জানান,
তাঁর উপজেলায় নতুন বইয়ের চাহিদা দুই লাখের বেশি। এখন পর্যন্ত কেবল প্রাক্-
প্রাথমিকের দুটি বই এসেছে। বাকি বই কবে আসবে, তা বলা যাচ্ছে না। একই
ধরনের তথ্য পাওয়া গেছে জেলার বাবুগঞ্জ, হিজলা, মুলাদী, বানারীপাড়া উপজেলা
থেকে। বাকেরগঞ্জের দক্ষিণ দাড়িয়াল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক
শিক্ষার্থীর অভিভাবক জামাল উদ্দিন জানান, তাঁর মেয়ে দ্বিতীয় শ্রেণি থেকে
তৃতীয় শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হয়েছে। নতুন বছরে নতুন বইয়ের অপেক্ষায় তার
সন্তানের মতো কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষক সালমান
আজিম জানান, বার্ষিক পরীক্ষা শেষ। এখন শিশুশিক্ষার্থীরা খেলাধুলায় ব্যস্ত।
তারা নতুন বছরে নতুন বই পাওয়ার আশায় আছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বরিশাল
জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোহন লাল দাস বলেন, কিছু কিছু শ্রেণির বই আসছে;
বিশেষ করে প্রাক্-প্রাথমিক, প্রথম শ্রেণি ও পঞ্চম শ্রেণির কোনো কোনো
বিষয়ের নতুন বই পৌঁছেছে, বাকিগুলোও এসে পড়বে। ২৭ ডিসেম্বরের মধ্যে নতুন
বইয়ের প্রকৃত চিত্র বোঝা যাবে।

বরিশালে লক্ষাধিক মানুষের ভোগান্তির নাম ডিসি রোড খেয়াঘাট।

বরিশাল: বাকেরগঞ্জের ভাতশালা গ্রামের রহিম মিয়া তার গুরুতর অসুস্থ বড় ভাইকে বরিশালে
ডাক্তার দেখাতে নিয়ে যাচ্ছিলেন, ডিসি রোড খেয়া পার হতে গিয়েই পড়েন বিপত্তিতে। নদীর তীরের
কাছাকাছি এসেই চরে আটকে যায় ট্রলার। প্রায় কোমর সমান পানির মধ্যে অসুস্থ বড় ভাইকে কোলে
তুলে নিয়ে নামতে হয় তাকে। এরপর বিপদ আরো বেড়ে যায়। প্রায় আধা কিলোমিটার কাদামাটির চরের
মধ্য দিয়ে বড় ভাইকে কোলে নিয়ে হেটে রাস্তায় উঠতে হয় তাকে। ঝালকাঠির কর্মস্থল থেকে স্ত্রী
আর ছোট বাচ্চাকে নিয়ে মোটরসাইকেল যোগে ডিসি রোড খেয়াঘাটে পৌঁছান বাদল তালুকদার, তার
গন্তব্য বাউফল উপজেলার ধুলিয়া ইউনিয়নের চাঁদকাঠি নিজ গ্রাম। নদীতে ভাটা থাকায় সকাল থেকে
দুপুর অব্দি প্রায় ৪ ঘণ্টা জোয়ারের অপেক্ষায় মোটরসাইকেল পারাপারের জন্য অপেক্ষা করতে হয়
তাকে। এরপর কয়েকজনের সহায়তায় প্রায় ৩০০মিটার কাদামাটির চরের মধ্য দিয়ে মোটরসাইকেলটি
ট্রলারে উঠানো হয়। এরকম ঘটনা বাকেরগঞ্জ ডিসি রোড খেয়াঘাটের নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার। শুষ্ক
মৌসুমে নদীর পানি কম থাকায় চরের মধ্যকার খালটি শুকিয়ে যায়, প্রায় আধা কিলোমিটার কাদামাটির
চর পেরিয়েও অনেকসময় রক্ষা হয় না। ডুবোচর থাকায় হাটুসমান পানির মধ্যেই ট্রলারে ওঠানামা
করতে হয় যাত্রীদের। বাকেরগঞ্জের ফরিদপুর ও দূর্গাপাশা ইউনিয়ন, বাউফলের কালিশুরি, ধুলিয়া,
কেশবপুর, সূর্যমনি, নূরাইনপুর, কনকদিয়াসহ কয়েকটি ইউনিয়নের প্রায় লক্ষাধিক মানুষের বরিশাল
ও বাকেরগঞ্জ সদরের সাথে যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম এই ডিসি খেয়াঘাট। গত কয়েক বছর চরের
মধ্য দিয়ে নদীর পাড় পর্যন্ত কাঠের পুল দিয়ে মানুষের হাটার ব্যবস্থা করা হলেও গত বছর এবং
চলতি বছর তা নির্মাণ করা হয়নি। প্রতিদিন প্রায় ২ সহস্রাধিক মানুষকে কাদা মাটির চর পেরিয়ে হাটু
সমান পানির মধ্যে নেমে পাড়ি দিতে হয় এই খেয়া। এছাড়া ফরিদপুর ইউনিয়নের কাকরধা কলেজে
পরীক্ষা কেন্দ্র থাকায় অপর পাড়ের পাঁচটি কলেজের এইচএসসি ও ডিগ্রি শিক্ষার্থীদের এই ঘাট
দিয়ে মারাত্মক ভোগান্তির মধ্যে পারাপার হতে হয়। হেলাল উদ্দিন আহম্মেদ ডিগ্রি কলেজের
অধ্যক্ষ মো: নুর দারাজ বলেন, এই অঞ্চলের লক্ষাধিক মানুষের ভোগান্তির নাম ডিসি রোড
খেয়াঘাট। যা চরের মধ্যকার খাল ও ডুবোচর ড্রেজিং অথবা চরের মধ্যে স্থায়ী পুল নির্মাণের মাধ্যমে
সমাধান করা সম্ভব। ডিসি রোড খেয়াঘাটের ইজারাদার হারুন খান বলেন, চরের মধ্যকার খালটি
ড্রেজিং করা হলে পুনরায় কিছু দিনের মধ্যে বালুতে ভরে যায়। এখানে স্থায়ী ব্রিজ/পুল নির্মাণের জন্য
উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে বলা হয়েছে।তিনি এ ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস
দিয়েছেন বলেও জানান ঠিকাদার। বাকেরগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) আবুল খায়ের মিয়া
বলেন, ডিসি রোড খেয়াঘাটে যাত্রীদের ভোগান্তি দূর করতে ইতোপূর্বে একাধিকবার প্রজেক্ট দেয়া
হয়েছে। যা অর্থায়নের অভাবে বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি। চরের উপর প্রায় ৫০০ মিটার আয়রন
ব্রিজ নির্মাণের জন্য এ বছর পুনরায় প্রজেক্ট জমা দেয়া হয়েছে, যাতে এক কোটি টাকার উপর খরচ
হবে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। বাকেরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সজল চন্দ্র
শীল বলেন, ইতোপূর্বে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য ৪০ লাখ টাকা প্রাক্কলন ব্যয় ধরা হয়েছিল। যা
দিয়ে চরের উপর প্রায় ৫০০ মিটার আয়রন ব্রিজ নির্মাণ করা সম্ভব ছিল না। এ বছর এলজিইডির
মাধ্যমে এক কোটি ৩০ লাখ টাকার মতো প্রাক্কলন ধরে মন্ত্রণালয়ে প্রজেক্ট পাঠানো হয়েছে।
আশা করা যায় খুব শীঘ্রই প্রকল্পটি পাশ হবে।

বরিশালে ভরা মৌসুমেও শীতকালীন সবজির দাম চড়া। 
বরিশাল: শীতের ভরা মৌসুমেও বরিশালের খুচরা বাজারে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে
শীতকালীন সবজি। এতে সাধারণ ক্রেতারা বাজারে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন। পাইকারি
বাজারে শীতকালীন সবজির দাম কমলেও খুচরা বাজারে এর প্রভাব নেই। ক্রেতাদের
অভিযোগ, সরকারি সংস্থার তদারকি না থাকায় খুচরা বাজারের ব্যবসায়ীদের বেশি
মুনাফা করার কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। বাজার ঘুরে ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা
বলে জানা যায়, গত সপ্তাহে বিটকপি ১৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও এ সপ্তাহে
বিক্রি হচ্ছে ১০ টাকায়। ফুলকপি গত সপ্তাহে প্রতি কেজি ১৮ টাকা করে বিক্রি হলেও
এ সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ১২ থেকে ১৫ টাকায়। গত সপ্তাহে কাঁচা মরিচ ২৫ টাকা কেজি
বিক্রি হলেও এ সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ২০-২২ টাকায়। টমেটো গত সপ্তাহে প্রতি কেজি
৬০ টাকা করে বিক্রি হলেও এ সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা করে। নতুন আলু গত
সপ্তাহে প্রতি কেজি ৩০ টাকা করে বিক্রি হলেও এ সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকা
করে। বেগুন গত সপ্তাহে প্রতি কেজি ২৫ টাকা থাকলেও এ সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ২০
টাকায়। পাইকারি সবজি বাজারের ব্যবসায়ী আরিফুল ইসলাম বলেন, বাজারে শীতকালীন
সবজির পর্যাপ্ত সরবরাহ রয়েছে। দুই সপ্তাহের ব্যবধানে সব ধরনের সবজির দাম
কেজিপ্রতি ৫-১০ টাকা করে কমেছে। তবে নগরের খুচরা বাজারে এর কোনো প্রভাব
পড়েনি। গতকাল মঙ্গলবার বাংলাবাজার, চৌমাথা, বটতলা, নতুন বাজার ঘুরে দেখা যায়,
বিটকপি প্রতি কেজি ৩০ টাকা, ফুলকপি ৪০ টাকা, কাঁচা মরিচ ৪০ টাকা, টমেটো ৫০
টাকা, আলু ৩০ টাকা, বেগুন ৪০ টাকা, বাঁধাকপি ৩০ টাকা, মিষ্টিকুমড়া ৩০ টাকা, শিম
৪০ টাকা টাকায় বিক্রি হচ্ছে। চৌমাথা বাজারে সবজি কিনতে এসেছেন আমির হোসেন।
তিনি বলেন, পাইকারি আড়ত থেকে চৌমাথার দূরত্ব দুই কিলোমিটার। এতটুকু দূরত্বে
সবজির দামে কেজিপ্রতি পার্থক্য হতে পারে ২-৪ টাকা। কিন্তু ব্যবসায়ীরা কেজিতে
কয়েক গুণ বেশি দাম নিচ্ছেন। বাজারের ব্যবসায়ী বাদল সরদার বলেন, মোকাম থেকে
সবজি কেনার পর খাজনা, পরিবহন ব্যয় ও শ্রমিকের মজুরি দিতে হয়; দোকানভাড়াও
রয়েছে। বিদ্যুতের জন্য আলাদা টাকা দিতে হয়। অনেক সময় সবজি নষ্ট হয়ে যায়।
খুচরা বাজারের সঙ্গে পাইকারি দরের তুলনা করে লাভ নেই। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ
অধিদপ্তরের বরিশাল জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক শাহ শোয়াইব মিয়া বলেন,
কেউ অযথা সবজির মূল্য বৃদ্ধি করলে জরিমানাসহ আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
21/12/2022
01620-849601