Dhaka ১২:১০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বরিশাল সার্কিট হাউজে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান প্রদান করেছে। 

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৬:২২:২২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩ জানুয়ারী ২০২৩
  • ৬২৮ Time View

বরিশাল সার্কিট হাউজে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান প্রদান করেছে। 
রমজান আহম্মেদ (রঞ্জু), ব্যুরো চীফ, বরিশাল-

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি বীর
মুক্তিযোদ্ধা শাজাহান খান বলেছেন, আওয়ামী লীগ ছাড়া কোনো সরকারই
বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রকৃত সম্মান-মর্যাদা দেননি। জিয়া ও খালেদা
সরকার মিলে বিভিন্ন সময়ে আন্দোলন-সংগ্রামের নামে বীর
মুক্তিযোদ্ধাদের খুন করেছে। আর বর্তমান প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ
হাসিনা ক্ষমতায় এসে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রকৃত সম্মান-মর্যাদা দেওয়ার
পাশাপাশি সম্মানিত ভাতা, আবাসন, সুদমুক্ত লোনের ব্যবস্থা ও মৃত্যুর পরে
রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন সম্পন্নসহ চলাফেরায় নানা সুযোগ-সুবিধা
দিয়েছেন। সোমবার (২ জানুয়ারি) সকালে বরিশাল সার্কিট হাউস মিলনায়তনে
বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে
তিনি এসব কথা বলেন। শাজাহান খান বলেন, নতুন প্রজন্মের কাছে
বঙ্গবন্ধুর চেতনা, মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস তুলে ধরে বর্তমান
সরকারের ধারাবাহিক উন্নয়ন প্রচারের পাশাপাশি আগামী দ্বাদশ জাতীয়
সংসদ নির্বাচনে শেখ হাসিনাকে পুনরায় প্রধানমন্ত্রী হিসেবে এবং নৌকা
প্রার্থীদের বিজয়ী করতে হবে। বীর মুক্তিযোদ্ধা, তাদের সন্তান ও নাতি-
নাতনিদের এখনি প্রস্তুতি নিয়ে রাজনৈতিক মাঠে নামারও আহ্বান জানান
তিনি। মতবিনিময় সভায় প্রধান বক্তার বক্তব্যে বরিশাল সিটি
করপোরেশনের মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক
সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর
রহমানের ডাকে সাড়া দিয়ে যুদ্ধ করেছেন বীর মুক্তিযোদ্ধারা। আর
বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান ও
মর্যাদা দিয়েছেন। তাই আগামী জাতীয় সংসদ সদস্য নিবার্চনে নৌকা বিজয়ে
বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নির্দেশে তরুণ প্রজন্মরা নিরলস কাজ করবে বলে

আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। বরিশাল বিভাগ সেক্টর কমান্ডার্স ফোরাম
মুক্তিযোদ্ধা ৭১ এর সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রদ্বীপ কুমার ঘোষের
সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় আরও বক্তব্য দেন- সম্মিলিত মুক্তিযোদ্ধা
সংসদের যুগ্ম সদস্য সচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা এবিএম সুলতান আহমেদসহ
জেলা ও মহানগর মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ড ও মুক্তিযোদ্ধা সন্তান
কমান্ড নেতারা। এরপর প্রধান অতিথি বরিশাল জেলা বীর মুক্তিযোদ্ধাদের
যাচাই-বাছাই কার্যক্রম পরিচালনা করেন।

বরিশালে ২১ বছর বন্ধ থাকা সেই সরকারি স্কুল অবশেষে চালু হয়েছে। 
রমজান আহম্মেদ (রঞ্জু), ব্যুরো চীফ বরিশাল-
বরিশাল : শিক্ষকদের দ্বন্দ্বে দীর্ঘ ২১ বছর বন্ধ থাকার পর শিক্ষাক্রম চালু হয়েছে বরিশালের
বাবুগঞ্জ উপজেলার চাঁদপাশা ইউনিয়নের শহীদ আফসার উদ্দিন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।
রোববার (১ জানুয়ারি) শিক্ষাবর্ষের প্রথম দিনেই নতুন ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে
দিয়ে কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক সূচনা করেন সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা রোমাঞ্চ
আহম্মেদ। প্রায় দুই যুগ বন্ধ স্কুলের দরজা উন্মুক্ত হওয়ায় দিনটিকে আনন্দ-উচ্ছ্বাসে উদযাপন
করেছে এলাকাবাসী। সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা রোমাঞ্চ আহম্মেদ বলেন, অন্য দুটি স্কুল
থেকে ডেপুটেশনে দুজন শিক্ষক সংযুক্ত করে শহীদ আফসার উদ্দিন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের
কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। প্রথম দিনে কয়েকজন শিক্ষার্থী ভর্তি নিয়ে তাদের হাতে
আনুষ্ঠানিকভাবে বই তুলে দিয়েছি। বিদ্যালয়টিতে আরও একজন নতুন নিয়োগ পাওয়া শিক্ষক যুক্ত
করা হবে। তিনি বলেন, বন্ধ স্কুলটি এবং শিক্ষা গ্রহণে ওই এলাকার মানুষদের দুর্ভোগের বিষয়
উল্লেখ করে কিছু দিন আগে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল। ওই প্রতিবেদন প্রকাশের পরই
জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে আমি চিঠি পাই। চিঠির আলোকে জরুরি ভিত্তিতে স্কুলটি
চালুর উদ্যোগ নিই। স্কুল ভবনের জরাজীর্ণ অবস্থার বিষয়ে কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। আশা
করছি দ্রুত সময়ের মধ্যে সেই কাজও শুরু হবে। স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন
করবেন ডেপুটেশনে নিযুক্ত মিনারা বেগম এবং সহকারী শিক্ষক পদে আব্দুল কালাম। বিদ্যালয় চালু
হওয়ার সংবাদে রোববার ভোর থেকেই ওই এলাকায় স্থানীয়রা ভিড় জমান। এতদিনের দুর্দশা থেকে
মুক্তি পাওয়ায় কান্নাও করেন অনেকে। স্থানীয় বাসিন্দা ফারুক হোসেন বলেন, সাংবাদিকদের
ধন্যবাদ দিয়ে শেষ করা যাবে না। কত যুগ বন্ধ থাকার পর তাদের চেষ্টায় স্কুলের দরজা খুলেছে। এটি
আমাদের আনন্দের দিন। আমাদের সন্তানরা এখন সহজভাবে শিক্ষার সুযোগ পাবে। এই আনন্দ ভাষায়
প্রকাশ করা যায় না। কামাল হোসেন রাঢ়ী আরেকজন বলেন, বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর আমিও এখানে
লেখাপড়া করেছি। কিন্তু স্বার্থান্বেষী দুটি মহলের কারণে বন্ধ ছিল। স্কুল চালু হওয়ায় খুব খুশি
হয়েছি। সেই সঙ্গে যে দুটি পক্ষ স্কুলটি বন্ধ করে রেখেছিলেন, তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক
আমি এই দাবি জানাই। ব্যবসায়ী হাসান তালুকদার বলেন, দুই পক্ষ নিজেদের স্বার্থের কারণে স্কুলটি
বন্ধ করে দিয়েছিল। এই এলাকার ভবিষ্যৎ নষ্ট করেছে তারা। স্কুল চালু হওয়ায় আশার আলো
ফুটেছে। যাদের মামলাবাজিতে সরকারি স্কুলটি বন্ধ হয়ে গিয়েছিল, তাদের শাস্তির দাবি জানাই।
আমাদের সন্তানদের অনেক কষ্টে লেখাপড়া করতে হয়েছে। সহকারী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা
কর্মকর্তা মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল বলেন, দুই পক্ষের শিক্ষকদের বিবাদে বন্ধ থাকা স্কুলটি
দ্রুত চালু করতে পেরে আমরাও আশাবাদী ওই এলাকায় শিক্ষা গ্রহণে যে প্রতিবন্ধকতা ছিল তা দূর
হয়েছে। প্রসঙ্গত, ১৯৭৫ সালে মুক্তিযুদ্ধে শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা আফসার উদ্দীনের নামে
বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করা হয়। শুরুতে আবদুল করিম হাওলাদার নামে এক ব্যক্তিকে প্রধান শিক্ষক
ও অন্য তিনজনকে সহকারী শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়। ওই সময় মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ও
আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার আসামি ফ্লাইট সার্জেন্ট ফজলুল হক বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির
সভাপতি ছিলেন। কিন্তু ১৯৯০ সালের পর পরিচালনা কমিটি নিয়ে এলাকায় বিভাজন সৃষ্টি হয়। ১৯৯৮

সালে বিদ্যালয়ের অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য এলজিইডি প্রায় ১০ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি একতলা
ভবন নির্মাণ করে। ভবন তোলার পর স্থানীয় জাফর আলী ও আবদুস ছাত্তার নামে দুই ব্যক্তি
পাল্টাপাল্টি কমিটি করে আলাদা আলাদাভাবে চারজন করে মোট আটজন শিক্ষক নিয়োগ করেন। দুই
পক্ষ পাল্টাপাল্টি নিজেদের শিক্ষক দাবি করায় সেখানে বিশৃঙ্খল অবস্থার সৃষ্টি হয়। স্থানীয়রা
জানিয়েছেন, বিবাদমান দুটি পক্ষের এক পক্ষ একদিন স্কুলে আসলে অপর পক্ষ পরের দিন এসে
স্কুল দখল করতেন। এই নিয়ে শিক্ষকদের বিরুদ্ধে পরস্পর বিরোধী দুটি মামলা হলে ২০০১ সালে
স্কুলটির শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। যেহেতু স্কুলটি শুরু থেকেই নিবন্ধিত ছিল, তাই ২০১৩
সালে জাতীয়করণ হয়। বিবাদমান দুটি পক্ষের কারণে সরকারি হওয়ার পরও স্কুলটি চালু করা সম্ভব
হয়নি। বিদ্যালয়টি বন্ধ থাকায় প্রায় চার কিলোমিটার হেঁটে গিয়ে অন্য স্কুলে পড়াশুনা করতে হতো
কোমলমতি শিশুদের। এ নিয়ে ২০২২ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর ‘২১ বছর ধরে স্কুল বন্ধ, এখন বসবাস
করছে বেদে পরিবার’ শিরোনামে একটি ভিডিও প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এর পরপরই নড়েচড়ে বসে
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস। তিন মাসের প্রচেষ্টায় চালু করা হয় বিদ্যালয়টিতে।

বরিশালের শেবাচিমে ১০ মেশিন বাক্সবন্দী, সেবাবঞ্চিত হচ্ছেন কিডনি রোগীরা।
রমজান আহম্মেদ (রঞ্জু), বরিশাল ব্যুরো চীফ –
বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে একমাসেও স্থাপন করা
হয়নি কিডনি ডায়ালাইসিসের নতুন ১০টি মেশিন। ফলে চাহিদা অনুযায়ী
স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন কিডনি রোগীরা। ভুক্তভোগীরা জানান,
কমমূল্যে আধুনিক চিকিৎসা নেওয়ার জন্য শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ
হাসপাতালে আসতে হয় তাদের। কিন্তু এখানে ডায়ালাইসিস করতে এসে
ঠিকমতো সেবা মেলে না। ডায়ালাইসিসের সিরিয়াল পাওয়ার আগেই অনেক
সময় মারা যাচ্ছে রোগী। আবার অনেকেই ছুটছেন ঢাকায়। জানা যায়,
হাসপাতালটিতে বর্তমানে ১০টি ডায়ালাইসিস মেশিন রয়েছে। যার মাধ্যমে
দিনে ২০ জনের কিডনি ডায়ালাইসিস করা যায়। কিন্তু দিনে রোগী আসছেন
১০০ জনেরও বেশি। তাই চাহিদা বিবেচনায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আরও ১০টি
নতুন ডায়ালাইসিস মেশিন সরবরাহ করলেও স্থান সংকট থাকায় সেগুলো
একমাস ধরে বাক্সবন্দী হয়ে আছে। নেফ্রোলজি বিভাগের সিনিয়র স্টাফ
নার্স বিউটি বেগম জানান, একজন রোগী প্রতি সপ্তাহে দুটি ডায়ালাইসিস
করার সুযোগ পাচ্ছেন। জনপ্রতি মাত্র চারশ টাকা খরচে প্রতিদিন ২০ জন
রোগীকে এখানে ডায়ালাইসিস করা হয়। নেফ্রোলজি বিভাগের প্রধান সহকারী
অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আলী রুমি বলেন, এখানে স্বতন্ত্র কোনো কিডনি
ওয়ার্ড নেই। তাই মেডিসিন বিভাগের বিভিন্ন ওয়ার্ডে এ ধরনের রোগীদের
ভর্তি করা হচ্ছে। এখানে প্রাথমিকভাবে ৫০ শয্যার ডায়ালাইসিস ইউনিট
চালুর জন্য চাহিদাপত্র ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। তবে শিগগিরই মেশিনগুলো
স্থাপন করে চালুর উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের
পরিচালক ডা. এইচএম সাইফুল ইসলাম। তিনি বলেন, হাসপাতালের নতুন

ভবনে মেডিসিন বিভাগ চালু করা হয়েছে। এ কারণে কয়েকটি ওয়ার্ড খালি
হয়েছে। তবে নতুন ভবনে কিডনি ডায়ালাইসিস বিভাগ চালুর পরিকল্পনা
রয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব আমরা বাকি ১০টি ডায়ালাইসিস মেশিন চালু করবো।

তারিখঃ ০২-০১-২০২৩
মোবাঃ ০১৬২০৮৪৯৬০১

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

আলোচিত

বোয়ালমারীতে চার বছর কর্মস্থলে না গিয়েও বেতন ভাতা নিচ্ছে উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ঝুমা !

বরিশাল সার্কিট হাউজে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান প্রদান করেছে। 

Update Time : ০৬:২২:২২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩ জানুয়ারী ২০২৩

বরিশাল সার্কিট হাউজে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান প্রদান করেছে। 
রমজান আহম্মেদ (রঞ্জু), ব্যুরো চীফ, বরিশাল-

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি বীর
মুক্তিযোদ্ধা শাজাহান খান বলেছেন, আওয়ামী লীগ ছাড়া কোনো সরকারই
বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রকৃত সম্মান-মর্যাদা দেননি। জিয়া ও খালেদা
সরকার মিলে বিভিন্ন সময়ে আন্দোলন-সংগ্রামের নামে বীর
মুক্তিযোদ্ধাদের খুন করেছে। আর বর্তমান প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ
হাসিনা ক্ষমতায় এসে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রকৃত সম্মান-মর্যাদা দেওয়ার
পাশাপাশি সম্মানিত ভাতা, আবাসন, সুদমুক্ত লোনের ব্যবস্থা ও মৃত্যুর পরে
রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন সম্পন্নসহ চলাফেরায় নানা সুযোগ-সুবিধা
দিয়েছেন। সোমবার (২ জানুয়ারি) সকালে বরিশাল সার্কিট হাউস মিলনায়তনে
বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে
তিনি এসব কথা বলেন। শাজাহান খান বলেন, নতুন প্রজন্মের কাছে
বঙ্গবন্ধুর চেতনা, মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস তুলে ধরে বর্তমান
সরকারের ধারাবাহিক উন্নয়ন প্রচারের পাশাপাশি আগামী দ্বাদশ জাতীয়
সংসদ নির্বাচনে শেখ হাসিনাকে পুনরায় প্রধানমন্ত্রী হিসেবে এবং নৌকা
প্রার্থীদের বিজয়ী করতে হবে। বীর মুক্তিযোদ্ধা, তাদের সন্তান ও নাতি-
নাতনিদের এখনি প্রস্তুতি নিয়ে রাজনৈতিক মাঠে নামারও আহ্বান জানান
তিনি। মতবিনিময় সভায় প্রধান বক্তার বক্তব্যে বরিশাল সিটি
করপোরেশনের মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক
সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর
রহমানের ডাকে সাড়া দিয়ে যুদ্ধ করেছেন বীর মুক্তিযোদ্ধারা। আর
বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান ও
মর্যাদা দিয়েছেন। তাই আগামী জাতীয় সংসদ সদস্য নিবার্চনে নৌকা বিজয়ে
বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নির্দেশে তরুণ প্রজন্মরা নিরলস কাজ করবে বলে

আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। বরিশাল বিভাগ সেক্টর কমান্ডার্স ফোরাম
মুক্তিযোদ্ধা ৭১ এর সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রদ্বীপ কুমার ঘোষের
সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় আরও বক্তব্য দেন- সম্মিলিত মুক্তিযোদ্ধা
সংসদের যুগ্ম সদস্য সচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা এবিএম সুলতান আহমেদসহ
জেলা ও মহানগর মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ড ও মুক্তিযোদ্ধা সন্তান
কমান্ড নেতারা। এরপর প্রধান অতিথি বরিশাল জেলা বীর মুক্তিযোদ্ধাদের
যাচাই-বাছাই কার্যক্রম পরিচালনা করেন।

বরিশালে ২১ বছর বন্ধ থাকা সেই সরকারি স্কুল অবশেষে চালু হয়েছে। 
রমজান আহম্মেদ (রঞ্জু), ব্যুরো চীফ বরিশাল-
বরিশাল : শিক্ষকদের দ্বন্দ্বে দীর্ঘ ২১ বছর বন্ধ থাকার পর শিক্ষাক্রম চালু হয়েছে বরিশালের
বাবুগঞ্জ উপজেলার চাঁদপাশা ইউনিয়নের শহীদ আফসার উদ্দিন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।
রোববার (১ জানুয়ারি) শিক্ষাবর্ষের প্রথম দিনেই নতুন ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে
দিয়ে কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক সূচনা করেন সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা রোমাঞ্চ
আহম্মেদ। প্রায় দুই যুগ বন্ধ স্কুলের দরজা উন্মুক্ত হওয়ায় দিনটিকে আনন্দ-উচ্ছ্বাসে উদযাপন
করেছে এলাকাবাসী। সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা রোমাঞ্চ আহম্মেদ বলেন, অন্য দুটি স্কুল
থেকে ডেপুটেশনে দুজন শিক্ষক সংযুক্ত করে শহীদ আফসার উদ্দিন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের
কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। প্রথম দিনে কয়েকজন শিক্ষার্থী ভর্তি নিয়ে তাদের হাতে
আনুষ্ঠানিকভাবে বই তুলে দিয়েছি। বিদ্যালয়টিতে আরও একজন নতুন নিয়োগ পাওয়া শিক্ষক যুক্ত
করা হবে। তিনি বলেন, বন্ধ স্কুলটি এবং শিক্ষা গ্রহণে ওই এলাকার মানুষদের দুর্ভোগের বিষয়
উল্লেখ করে কিছু দিন আগে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল। ওই প্রতিবেদন প্রকাশের পরই
জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে আমি চিঠি পাই। চিঠির আলোকে জরুরি ভিত্তিতে স্কুলটি
চালুর উদ্যোগ নিই। স্কুল ভবনের জরাজীর্ণ অবস্থার বিষয়ে কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। আশা
করছি দ্রুত সময়ের মধ্যে সেই কাজও শুরু হবে। স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন
করবেন ডেপুটেশনে নিযুক্ত মিনারা বেগম এবং সহকারী শিক্ষক পদে আব্দুল কালাম। বিদ্যালয় চালু
হওয়ার সংবাদে রোববার ভোর থেকেই ওই এলাকায় স্থানীয়রা ভিড় জমান। এতদিনের দুর্দশা থেকে
মুক্তি পাওয়ায় কান্নাও করেন অনেকে। স্থানীয় বাসিন্দা ফারুক হোসেন বলেন, সাংবাদিকদের
ধন্যবাদ দিয়ে শেষ করা যাবে না। কত যুগ বন্ধ থাকার পর তাদের চেষ্টায় স্কুলের দরজা খুলেছে। এটি
আমাদের আনন্দের দিন। আমাদের সন্তানরা এখন সহজভাবে শিক্ষার সুযোগ পাবে। এই আনন্দ ভাষায়
প্রকাশ করা যায় না। কামাল হোসেন রাঢ়ী আরেকজন বলেন, বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর আমিও এখানে
লেখাপড়া করেছি। কিন্তু স্বার্থান্বেষী দুটি মহলের কারণে বন্ধ ছিল। স্কুল চালু হওয়ায় খুব খুশি
হয়েছি। সেই সঙ্গে যে দুটি পক্ষ স্কুলটি বন্ধ করে রেখেছিলেন, তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক
আমি এই দাবি জানাই। ব্যবসায়ী হাসান তালুকদার বলেন, দুই পক্ষ নিজেদের স্বার্থের কারণে স্কুলটি
বন্ধ করে দিয়েছিল। এই এলাকার ভবিষ্যৎ নষ্ট করেছে তারা। স্কুল চালু হওয়ায় আশার আলো
ফুটেছে। যাদের মামলাবাজিতে সরকারি স্কুলটি বন্ধ হয়ে গিয়েছিল, তাদের শাস্তির দাবি জানাই।
আমাদের সন্তানদের অনেক কষ্টে লেখাপড়া করতে হয়েছে। সহকারী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা
কর্মকর্তা মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল বলেন, দুই পক্ষের শিক্ষকদের বিবাদে বন্ধ থাকা স্কুলটি
দ্রুত চালু করতে পেরে আমরাও আশাবাদী ওই এলাকায় শিক্ষা গ্রহণে যে প্রতিবন্ধকতা ছিল তা দূর
হয়েছে। প্রসঙ্গত, ১৯৭৫ সালে মুক্তিযুদ্ধে শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা আফসার উদ্দীনের নামে
বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করা হয়। শুরুতে আবদুল করিম হাওলাদার নামে এক ব্যক্তিকে প্রধান শিক্ষক
ও অন্য তিনজনকে সহকারী শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়। ওই সময় মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ও
আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার আসামি ফ্লাইট সার্জেন্ট ফজলুল হক বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির
সভাপতি ছিলেন। কিন্তু ১৯৯০ সালের পর পরিচালনা কমিটি নিয়ে এলাকায় বিভাজন সৃষ্টি হয়। ১৯৯৮

সালে বিদ্যালয়ের অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য এলজিইডি প্রায় ১০ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি একতলা
ভবন নির্মাণ করে। ভবন তোলার পর স্থানীয় জাফর আলী ও আবদুস ছাত্তার নামে দুই ব্যক্তি
পাল্টাপাল্টি কমিটি করে আলাদা আলাদাভাবে চারজন করে মোট আটজন শিক্ষক নিয়োগ করেন। দুই
পক্ষ পাল্টাপাল্টি নিজেদের শিক্ষক দাবি করায় সেখানে বিশৃঙ্খল অবস্থার সৃষ্টি হয়। স্থানীয়রা
জানিয়েছেন, বিবাদমান দুটি পক্ষের এক পক্ষ একদিন স্কুলে আসলে অপর পক্ষ পরের দিন এসে
স্কুল দখল করতেন। এই নিয়ে শিক্ষকদের বিরুদ্ধে পরস্পর বিরোধী দুটি মামলা হলে ২০০১ সালে
স্কুলটির শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। যেহেতু স্কুলটি শুরু থেকেই নিবন্ধিত ছিল, তাই ২০১৩
সালে জাতীয়করণ হয়। বিবাদমান দুটি পক্ষের কারণে সরকারি হওয়ার পরও স্কুলটি চালু করা সম্ভব
হয়নি। বিদ্যালয়টি বন্ধ থাকায় প্রায় চার কিলোমিটার হেঁটে গিয়ে অন্য স্কুলে পড়াশুনা করতে হতো
কোমলমতি শিশুদের। এ নিয়ে ২০২২ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর ‘২১ বছর ধরে স্কুল বন্ধ, এখন বসবাস
করছে বেদে পরিবার’ শিরোনামে একটি ভিডিও প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এর পরপরই নড়েচড়ে বসে
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস। তিন মাসের প্রচেষ্টায় চালু করা হয় বিদ্যালয়টিতে।

বরিশালের শেবাচিমে ১০ মেশিন বাক্সবন্দী, সেবাবঞ্চিত হচ্ছেন কিডনি রোগীরা।
রমজান আহম্মেদ (রঞ্জু), বরিশাল ব্যুরো চীফ –
বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে একমাসেও স্থাপন করা
হয়নি কিডনি ডায়ালাইসিসের নতুন ১০টি মেশিন। ফলে চাহিদা অনুযায়ী
স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন কিডনি রোগীরা। ভুক্তভোগীরা জানান,
কমমূল্যে আধুনিক চিকিৎসা নেওয়ার জন্য শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ
হাসপাতালে আসতে হয় তাদের। কিন্তু এখানে ডায়ালাইসিস করতে এসে
ঠিকমতো সেবা মেলে না। ডায়ালাইসিসের সিরিয়াল পাওয়ার আগেই অনেক
সময় মারা যাচ্ছে রোগী। আবার অনেকেই ছুটছেন ঢাকায়। জানা যায়,
হাসপাতালটিতে বর্তমানে ১০টি ডায়ালাইসিস মেশিন রয়েছে। যার মাধ্যমে
দিনে ২০ জনের কিডনি ডায়ালাইসিস করা যায়। কিন্তু দিনে রোগী আসছেন
১০০ জনেরও বেশি। তাই চাহিদা বিবেচনায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আরও ১০টি
নতুন ডায়ালাইসিস মেশিন সরবরাহ করলেও স্থান সংকট থাকায় সেগুলো
একমাস ধরে বাক্সবন্দী হয়ে আছে। নেফ্রোলজি বিভাগের সিনিয়র স্টাফ
নার্স বিউটি বেগম জানান, একজন রোগী প্রতি সপ্তাহে দুটি ডায়ালাইসিস
করার সুযোগ পাচ্ছেন। জনপ্রতি মাত্র চারশ টাকা খরচে প্রতিদিন ২০ জন
রোগীকে এখানে ডায়ালাইসিস করা হয়। নেফ্রোলজি বিভাগের প্রধান সহকারী
অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আলী রুমি বলেন, এখানে স্বতন্ত্র কোনো কিডনি
ওয়ার্ড নেই। তাই মেডিসিন বিভাগের বিভিন্ন ওয়ার্ডে এ ধরনের রোগীদের
ভর্তি করা হচ্ছে। এখানে প্রাথমিকভাবে ৫০ শয্যার ডায়ালাইসিস ইউনিট
চালুর জন্য চাহিদাপত্র ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। তবে শিগগিরই মেশিনগুলো
স্থাপন করে চালুর উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের
পরিচালক ডা. এইচএম সাইফুল ইসলাম। তিনি বলেন, হাসপাতালের নতুন

ভবনে মেডিসিন বিভাগ চালু করা হয়েছে। এ কারণে কয়েকটি ওয়ার্ড খালি
হয়েছে। তবে নতুন ভবনে কিডনি ডায়ালাইসিস বিভাগ চালুর পরিকল্পনা
রয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব আমরা বাকি ১০টি ডায়ালাইসিস মেশিন চালু করবো।

তারিখঃ ০২-০১-২০২৩
মোবাঃ ০১৬২০৮৪৯৬০১