সুমন খান:
ক্রিপ্টোকারেন্সিতে বিনিয়োগের নামে প্রায় ১ বিলিয়ন ডলার বা প্রায় ১১ হাজার কোটি টাকা নিয়ে বন্ধ হয়েছে এমটিএফই (mtfe) নামক প্রতিষ্ঠান। দুবাই ভিত্তিক এই প্রতিষ্ঠানটি মাল্টিলেভেল মার্কেটিং বা এমএলএম পঞ্জি মডেলে ব্যবসা করতো।
বানারীপাড়ায় MTFE তে বিনিয়োগকারীদের প্রায় ১০০ কোটি টাকা নিয়ে লাপাত্তার অভিযোগ রহমান,নাসির ও মিজান বিরুদ্ধে। অভিযোগ সুত্রে জানা যায় -মূলত বানারীপাড়ার MTFE ব্যবসাটি নিয়ে প্রবেশ করেন দুবাই থেকে আগত আব্দুর রহমান। তিনি প্রথম বানারীপাড়ায় এই এ্যাপটি নিয়ে আসেন। আব্দুর রহমান মূলত বানারীপাড়া উপজেলার বাকপুর ইউনিয়নের ফকির বাড়ির ছেলে তার পিতার নাম মান্নান মাওলানা। রহমান প্রথমে ডেসটিনির বড় কর্মকর্তা ছিলো,ডেসটিনিতে যখন বাংলাদেশ থেকে বন্ধ হয়ে যায় তখন রহমান অনেক চাপে পরে ও পরবর্তীতে তিনি দুবাই চলে যায়। দুবাই থেকে তিনি প্রায় সাত আট মাস পূর্বে এই এ্যাপটি নিয়ে তিনি বাংলাদেশে ফেরেন এবং তিনি তার ডেসটিনির বানারীপাড়া সাবেক কর্মকর্তাদের দিয়ে ব্যবসাটি পরিচালনা শুরু করেন। তার সাবেক কর্মকর্তারা যখন মাঠে সফল হতে পারতে ছিলনা তখন তিনি অন্য পন্থা অবলম্বন করেন কারন তিনি এর পূর্বেও ডেসটিনিতে বিনিয়োগের মাধ্যমে তিনি অনেককে সর্বশান্ত করেছেন। তাই তিনি বানারীপাড়ার মাঠে নতুন কর্মীর নিয়োগ দেন।
তিনি বানারীপাড়া পৌরসভার নব্য নির্মিত মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের সামনে অবস্থিত মোল্লা মার্কেটের দোকানদার নাসিরকে নিয়োগ দেন যিনি এর পূর্বে বাংলালিংকে চাকরি করত বিধায় তিনি বাংলালিংক নাসির নামে পরিচিত ছিলেন বেশী, পরবর্তীতে তিনি mtfe এর এ্যাম্বাসেডর হিসেবে পরিচিত ছিলেন। নাসির মুলত পৌরশহরের ৪নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা তার পিতার নাম আলাউদ্দিন মিস্ত্রি। মূলত নাসিরের হাত ধরেই বানারীপাড়ায় mtfe প্রসার পায়। এই নাসিরই মূলত বানারীপাড়ার সাধারন মানুষদের সেমিনারে বলত mtfe কখন পালাবে না এটি একটি কানাডার কম্পানি মূলত এরা দালাল হিসেবে কাজ করে আমাদের টাকা নিয়ে তারা শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করে লাভের সামান্য অংশ আমাদের দেয় এছাড়াও তিনি সাধারণ মানুষদের বিনিয়োগ করতে ঘরে ঘরে মহিলা টিম তৈরি করেছিলেন। তিনি মূলত বরিশাল বিভাগের Mtfe এ্যাম্বাসেডর ছিলেন। তিনি কেক ও ক্রিড়া সামগ্রী বেচেঁ যা না করতে পেরেছেন তা তিনি সাত আট মাসে ফুলে ফেঁপে উঠে করে দেখিয়ে দিয়েছেন জানাযায় তিনি প্রায় ২০ কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। এছাড়াও তার সাঙ্গপাঙগরা বলেছেন তিনি mtfe থেকে একটি গাড়ি পেয়েছেন গত মাসে,যা বানাড়িপাড়ায় কখনও দেখা যায়নি।
এই নাসির ছিলো আব্দুর রহমানের ডান হাত এবার আসি রহমানের বাম হাতে দিকে,রহমানের বাম হাত ছিল মিজানুর রহমান যিনি বীমা মিজান নামে পরিচিতি তার বাড়িও পৌর শহরের ৪নং ওয়ার্ডে তিনি মৃত মালেক হাওলাদারের ছেলে। তিনি এর পূর্বে দুটি ইনসুরেন্স থেকে বরখাস্ত হয়েছেন গ্রহকদের টাকা নিয়ে কারসাজির কারনে এর পূর্বে অনেক লোক সর্বশান্ত হয়েছেন তার বীমাবাজির কারনে তবে তার হাতে FO অর্থাৎ বীমার ফিল্ড অফিসার ছিল অনেক এছাড়াও তার বিশাল একটি বীমার নারী কর্মী ছিল এই কর্মী গুলো তিনি বাড়ি বাড়ি পাঠিয়ে mtfe যোগ করিয়ে ছিলেন বিশাল একটি গ্রুপ যার সদস্য সংখ্যা ছিলো পাচঁ হাজারের উপরে আর তিনি এর মাধ্যমেই হয়েছিলন mtfe ‘CEO’ অর্থাৎ মিজান ছিলেন MTFE এর চীফ এক্সিকিউটিভ অফিসার। তিনি সর্বদা MTFE সেমিনারে বলতেন সকলের গ্যারান্টি সহকারে বড়লোক হওয়ার সুযোগ একমাত্র এটাই এছাড়াও তিনি বলতেন এটাই একমাত্র নির্ভরযোগ্য প্রতিষ্ঠান যার টাকা কখন এদিক ওদিক হয়না। এছাড়াও তিনি এটি গ্যারান্টি দিয়ে করতে বলতেন অথবা তিনি বলতেন টাকা মার গেলে তিনি দিয়ে দিবেন। এছাড়াও তিনি বিভিন্ন উপজেলা ও জেলায় সেমিনার করতেন ও ফি নিতেন সম্প্রতি তিনি সাতক্ষীরা সেমিনার করতে গিয়ে ডিবির হাতে ধরা পরেন পরবর্তীতে তিনি দশ লক্ষাধিক টাকার উপরে জরিমানা দিয়ে ছারা পান। লোক মুখে শোনা যায় তিনি প্রায় ১০ থেকে ১৫ কোটি টাকার মালিক হয়েছেন।
এই মিজান ছিলেন আব্দুর রহমানের বাম হাত ও ডান হাত ছিলো নাসির। আব্দুর রহমানের ডাউনে ছিলো এরা দুজন যার মধ্যে সর্বাধিক সদস্য বিনিয়োগকারী ছিলো নাসিরের ও তার পরে সর্বাধিক বিনিয়োগকারী ছিলো মিজানের। আর এই নাসির ও মিজান ঘরের পুরুষদের একাউন্ট করিয়ে শুধু তারা ছাড় দেয়নি তারা তাদের বিশাল নারী কর্মীদের দিয়ে ঘরের স্ত্রীদের ও একাউন্ট করিয়েছেন। যার ফলস্বরূপ বানারীপাড়ায় হাজার হাজার মানুষ আজ নিঃশ প্রায়। ঘটনাসুত্রে জানায়ায় মাস খানের আগে আব্দুর রহমান দুবাই পাড়ি জমিয়েছেন এছাড়াও গতকাল থেকে নাসির ও মিজান উদাও হয়েছেন। মোট কথা আব্দুর রহমান ছিলো দুবাইয়ের মূল এজেন্ট যিনি সরাসরি ১১হাজারর কোটি টাকার লোপাটের সাথে জড়িত এছাড়া বানাড়িপাড়ায় প্রায় শত কোটি লোপাটের সাথে জড়িত নাসির ও মিজান। আজ তারা তিনিজই লাপাত্তা।
বানারীপাড়ায় হাজার হাজার বিনোয়োগকারী লজ্জায়,ভয়ে ও দুঃখে মুখ খুলছেনা ও আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার সাহায্য নিচ্ছেনা। যা দু একটি অভিযোগ হচ্ছে সেটা তারা টাকা দিয়ে মুখ বন্ধ করে দিচ্ছে।
তাই অধিকাংশ বিনিয়োগকারী এই তিনজনকে অবিলম্বে গ্রেফতার করে শাস্তির আওতায় আনার দাবী জানিয়েছেন এছাড়াও তাদের সকল ব্যাঙ্ক একাউন্ট ফ্রীজ করার অবেদন করেন যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে নতুবা তারা আত্মহত্যার পথও বেছে নিতে দ্বিধা করবে না আর এজন্য দ্বায়ী থাকবে রহমান,নাসির ও মিজান। এ সম্পর্কে এক মহিলা বিনিয়োগকারী জানান তিনি সেমিনারে নাসির ও মিজানের আশ্বাসে তার স্বামীীর গচ্ছিত টাকা স্বামীকে না বলে বিনিয়োগ করেন এখন তিনি কি জবাব দেবেন। তাই তিনি এই দুজনার শাস্তি দাবী করেছেন।
উল্লেখ্য ডেসটিনির আদলেই গড়া এই MTFE এম এল এম ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানটি মূলত দুবাইতে কারা পরিচালনা করত তারা মূলত আমাদের দেশেরই লোক যারা ডেসটিনির মাধ্যমে হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাট করে অনেক আগেই পাড়ি জমিয়েছিলেন সুদুর দুবাইতে সোজা কথায় দেশ থেকে বিতাড়িত ডেসটিনির সাবেক কিছু কর্মকর্তারই MTfe পরিচালানায় সরাসরি জড়িত যারা ডেসটিনির পর MTFE দিয়ে ট্রিলিয়ন ডলার সারা পৃথিবী থেকে লোপাট করেছেন তবে তাদের দুবাই ভিত্তিক এই প্রতিষ্ঠানে আন্তর্জাতিক কিছু সদস্য ছিলো যারা মূলত শ্রীলঙ্কান,ইন্ডিয়ান,আফ্রিকান সদস্য ছিলো গুরুত্বপূর্ণ। তবে MTFE এর সাথে ডেসটিনি কোনভাবেই জড়িত নয়।
ধারাবাহিক আসছে…….