বান্দরবানে লামায় ১৬০টি মিয়ানমারের গরু আটক করেছে।
মোঃ ইব্রাহিম শেখ চট্টগ্রাম ব্যুরোঃ
বান্দরবানে অরক্ষিত সীমান্ত দিয়ে গরু পাচার কোন ভাবেই থামছেনা। এবার
নাইক্ষ্যংছড়ি ১১ বিজিবি’র অভিযানে লামার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের তীরেরডিভা বিজিবি ক্যাম্প এবং
জারুলিয়াছড়ি, ভালুখাইয়া, আশারতলী, ফুলতলী বিওপির সদস্যরা চোরাচালান বিরোধী অভিযান পরিচালনা
করে অবৈধ ভাবে দেশে আসা ১৬০টি গরু আটক করেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, গত ৪ জানুয়ারি রাত ৯টা থেকে ৫ জানুয়ারি রাত ৮টা পর্যন্ত উপজেলার ফাঁসিয়াখালী
ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে এসব গরু আটক করা হয়।
নাইক্ষ্যংছড়ি ১১ বিজিবি অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল রেজাউল করিম বলেন, উদ্ধারকৃত মিয়ানমারের গরুর
আনুমানিক সিজার মূল্য ২ কোটি টাকা বলে ধারনা করা হচ্ছে।
বিজিবি এক প্রেস রিলিজে জানায়, সীমান্ত পথে গরু চোরাচালান রোধকল্পে নাইক্ষ্যংছড়ি ব্যাটালিয়ন (১১ বিজিবি)
কর্তৃক কঠোর নজরদারী ও গোয়েন্দা তৎপরতা বৃদ্ধি করা হয়। এছাড়া যেকোন মূল্যে নাইক্ষ্যংছড়ি ব্যাটালিয়ন
(১১ বিজিবি) চোরাচালান প্রতিরোধে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে।
বিজিবি’র অধিনায়ক লে. কর্ণেল রেজাউল করিম আরো জানান, সীমান্ত এলাকা দিয়ে অবৈধ মিয়ানমারের গরু,
মাদকদ্রব্য পাচার, অস্ত্র, অবৈধ কাঠ পাচার-পরিবহন, অন্যান্য যে কোন ধরনের অবৈধ পণ্য সামগ্রী পাচার এবং
অত্র এলাকায় যেকোন ধরনের সন্ত্রাসী কার্যক্রম রোধে বিজিবি’র এ ধরনের কার্যক্রম ও তৎপরতা অব্যাহত
থাকবে।
পাহাড়ে তীব্র শীতে কাঁপছে মানুষ।
মোঃ ইব্রাহিম শেখ চট্টগ্রাম ব্যুরোঃ
শীত জেঁকে বসেছে পাহাড়ি অঞ্চল বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার দূর্গম পাহাড়ে
ঘন কুয়াশা ও শৈত্য প্রবাহে এখানকার জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। শীতের তীব্রতায় জেলার নাইক্ষ্যংছড়ির দুর্গম
এলাকাগুলোর পাহাড়ি দুস্থ ও শ্রমজীবী মানুষের জবুথবু অবস্থা। এছাড়া শীতজনিত কারণে সর্দি-কাশিসহ নানা রোগে
আক্রান্ত হচ্ছে এখানকার মানুষ। তবে এদের মধ্যে শিশু ও বৃদ্ধের সংখ্যাই বেশি।
পাহাড়ি নারী নিংলে মুরুং বলেন, আমাদের পাড়ার সবাই গরিব মানুষ। চাহিদামতো শীতের কাপড় কেনা কারও পক্ষে সম্ভব
নয়। তাই সরকারি ভাবে যদি আমাদেরকে কম্বল দিয়ে সহায়তা করা হয় তাহলে ভালো হতো
আরেক পাহাড়ি নারী মেচিং মারমা বলেন, অন্যবারের চেয়ে এ বছরে বেশি শীত পড়েছে। শীত থেকে রক্ষা পেতে আমরা
আগুন জ্বালিয়ে তাপ নিচ্ছি।
তিনি আরও বলেন, বেশি শীত পড়লেও আমরা পাহাড়ে যারা বসবাস করছি তাদের খবর কেউ রাখে না। আমরা চাই
এনজিও বা সরকার আমাদের শীতবস্ত্র দিয়ে সহযোগিতা করুক।
পাহাড়ে বসবাস রত তমফ্রে মুরুং বলেন, এ বছর বেশি শীত পড়েছে,আমাদের গরম কাপড় যা আছে, তা দিয়ে শীত
ঠেকানো সম্ভব হচ্ছে না।
তীব্র শীতের কারণে দৈনন্দিন কাজকর্ম ব্যাহত হওয়ায় পরিবার-পরিজনের খাদ্য যোগান দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে দুস্থ ও
শ্রমজীবী মানুষদের।
এ বিষয়ে বাঙালি শ্রমিক নুরুল কবির বলেন, এ বছর অতিরিক্ত শীতের কারণে আমরা কোনও কাজ ঠিকমতো করতে
পারছি না। কাজ করতে না পারায় সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
এদিকে শীতজনিত কারণে উপজেলায় ডায়রিয়া, সর্দি-কাশি, নিউমোনিয়াসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশু ও বৃদ্ধরা।
নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দায়িত্বরত চিকিৎসক (শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ) আবু জাফর মোহাম্মদ সেলিম বলেন,
শীতজনিত কারণে বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধরা ডায়রিয়া, সর্দি-কাশি, নিউমোনিয়াসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।
এদিকে দুস্থ ও শ্রমজীবী মানুষজনের শীতের কষ্ট লাঘবে গরম কাপড় ও আর্থিক সহায়তা নিয়ে এগিয়ে আসতে সরকারি-
বেসরকারি সংস্থা ও সমাজের বিত্তবানদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন সচেতন মহল।