Dhaka ০১:৫৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মেহেরপুরে কাজী নিয়োগ প্রক্রিয়ায় বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে।

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৫:২৩:০৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২২
  • ১১৩৪ Time View
মেহেরপুরে কাজী নিয়োগ প্রক্রিয়ায় বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে।
মাজিদ আল মামুন,  মেহেরপুর-
মেহেরপুরের গাংনীতে নিকাহ রেজিস্টার বা কাজী নিয়োগ প্রক্রিয়ায় বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে। বিধি লঙ্ঘনকারী ওই কাজীর নাম মনিরুল ইসলাম। বিধি লঙ্ঘনকারী ওই কাজী গাংনী উপজেলার সাহারবাটী ইউনিয়নের স্থায়ী কাজী হিসেবে দায়িত্বে রয়েছে, আবার একই সাথে ১২০ দিনের অস্থায়ী নিয়োগে ৬ বছর ধরে গাংনী পৌরসভায় কাজীর দায়িত্ব চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে ১২০ দিনের অস্থায়ী নিয়োগে কীভাবে ৬ বছর ধরে পৌরসভায় কাজীর দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে কাজী মহলে। অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গাংনী পৌরসভার স্থায়ী কাজী কাদের হোসেন এর বয়স শেষ হওয়ার কারণে লাইসেন্স বাতিল হলে ওই পদটি শূন্য হয়, ফলে গাংনী উপজেলার ৯ টি ইউনিয়নের ৯ জন কাজীর মধ্যে থেকে নিয়োগ উপদেষ্টা কমিটি ১২০ দিনের জন্য সাহারবাটী ইউনিয়নের কাজী মনিরুল ইসলাম কে নিয়োগ দেয়। অস্থায়ী ১২০ দিনের নিয়োগে কিভাবে টানা ৬ বছর ধরে একই ব্যক্তি পৌরসভার কাজীর দায়িত্বে থাকে তা নিয়ে অন্য কাজীদের মধ্যে চলছে নানা গুঞ্জন। অনেকেই দাবী করছেন নিয়োগ উপদেষ্টা কমিটিকে ম্যানেজ করেই তিনি নিকাহ রেজিস্ট্রারের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, মুসলিম তালাক ও বিবাহ (রেজিস্টীকরণ) বিধিমালা ২০০৭, ৪ এর ক ৫(১) বিধিতে উল্লেখ আছে যে, অস্থায়ী নিয়োগের বিধান বিদ্যমান। নিকাহ রেজিস্টার পদে শূন্যতা সৃষ্টি হলে জেলা রেজিস্টার জরুরী মনে করলে অস্থায়ী নিয়োগের জন্য মন্ত্রণালয়ের নিকট প্রস্তাব প্রেরণ করতে পারবেন ও উক্ত প্রস্তাব সরকারের অনুমোদন প্রাপ্ত হলে কার্যকর হবে।
বিধি মালার ৪ এর গ তে বলা হয়েছে, অস্থায়ীভাবে অতিরিক্ত দায়িত্ব প্রদানের ক্ষেত্রে এই ভাবে বিধি প্রণয়ন করা যেতে পারে যে, সংশ্লিষ্ট এলাকার স্থানীয় সরকার প্রতিনিধি (ইউ,পি চেয়ারম্যান/ মেম্বার, সিটি কর্পোরেশন মেয়র/ কমিশনার থেকে নির্দিষ্ট সময় উল্লেখক্রমে মতামত গ্রহণ করা যেতে পারে এবং প্রাপ্ত মতামত বিবেচনাক্রমে জেলা উপদেষ্টা কমিটি কর্তৃক যথোপযুক্ত সিদ্ধান্ত প্রদান করার বিধান করা যেতে পারে। বিধানে এটা উল্লেখ করা যেতে পারে যে, যথাসময়ে মতামত পাওয়া না গেলে জেলা উপদেষ্টা কমিটির তদসংক্রান্তে যথোপযুক্ত সিদ্ধান্ত প্রদান করতে পারবেন৷ সেই আলোকে প্রণীতব্য বিধিতে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালনের সময়সীমা ১২০ দিন নির্ধারণক্রমে জেলা উপদেষ্টা কমিটিকে উক্ত সময়ের মধ্যে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার জন্য উল্লেখ করা যেতে পারে। এছাড়া উক্ত সময়সীমার মধ্যে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা সম্ভব না হলে অতিরিক্ত দায়িত্ব ১২০ দিনের অধিক বহাল রাখার বিষয়ে সময়সীমা উত্তীর্ণ হওয়ার পূর্বে জেলা উপদেষ্টা কমিটিকে সরকারের নিকট অনুমতির জন্য আবেদন করিতে হবে এবং সরকার ঐরুপ আবেদনের প্রেক্ষিতে যথোপযুক্ত সিদ্ধান্ত প্রদান করতে পারবে এবং ইহার ধারাবাহিকতায় নিয়োগ প্রক্রিয়ার সময় বৃদ্ধি করিতে পারিবে।
কিন্তু উল্লেখিত বিধি অনুসরণ না করে বিধি বর্হিভূতভাবে বর্তমানে নিয়োগ প্রক্রিয়া চালানো হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
অভিযোগের বিষয়ে মনিরুল ইসলাম এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, শূন্য পদটিতে যতদিন পর্যন্ত স্থায়ীভাবে কাউকে নিয়োগ দেওয়া না হয়। ততদিন পর্যন্তই আমাকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তবে কিসের ভিত্তিতে এমন মনগড়া নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করতে বলেছেন। এবিষয়ে মেহেরপুর জেলা কাজী সমিতির সভাপতি আবুল বাসার বলেন, উক্ত পদটি মামলা জটিলতার কারণে স্থায়ী নিয়োগ প্রক্রিয়া স্থগিত হয়ে আছে, তবে আমার জানা মতে মনিরুল ইসলাম কে তৎকালীন জেলা রেজিস্ট্রার নিয়োগ দিয়েছিলেন, কিন্তু কিসের ভিত্তিতে কোন বিধিতে নিয়োগ দিয়েছিলেন এ বিয়ষে আমি কোন মন্তব্য করতে চাচ্ছি না। মেহেরপুর জেলা রেজিস্ট্রার সাইফুল ইসলাম এর সাথে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে, তিনি মোবাইল ফোন কল (গ্রহণ) রিসিভ করেনি।
মাজিদ আল মামুন
মেহেরপুর প্রতিনিধি
০১৯১৫৩৫১৪৯৮
Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

আলোচিত

বোয়ালমারীতে চার বছর কর্মস্থলে না গিয়েও বেতন ভাতা নিচ্ছে উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ঝুমা !

মেহেরপুরে কাজী নিয়োগ প্রক্রিয়ায় বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে।

Update Time : ০৫:২৩:০৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২২
মেহেরপুরে কাজী নিয়োগ প্রক্রিয়ায় বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে।
মাজিদ আল মামুন,  মেহেরপুর-
মেহেরপুরের গাংনীতে নিকাহ রেজিস্টার বা কাজী নিয়োগ প্রক্রিয়ায় বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে। বিধি লঙ্ঘনকারী ওই কাজীর নাম মনিরুল ইসলাম। বিধি লঙ্ঘনকারী ওই কাজী গাংনী উপজেলার সাহারবাটী ইউনিয়নের স্থায়ী কাজী হিসেবে দায়িত্বে রয়েছে, আবার একই সাথে ১২০ দিনের অস্থায়ী নিয়োগে ৬ বছর ধরে গাংনী পৌরসভায় কাজীর দায়িত্ব চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে ১২০ দিনের অস্থায়ী নিয়োগে কীভাবে ৬ বছর ধরে পৌরসভায় কাজীর দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে কাজী মহলে। অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গাংনী পৌরসভার স্থায়ী কাজী কাদের হোসেন এর বয়স শেষ হওয়ার কারণে লাইসেন্স বাতিল হলে ওই পদটি শূন্য হয়, ফলে গাংনী উপজেলার ৯ টি ইউনিয়নের ৯ জন কাজীর মধ্যে থেকে নিয়োগ উপদেষ্টা কমিটি ১২০ দিনের জন্য সাহারবাটী ইউনিয়নের কাজী মনিরুল ইসলাম কে নিয়োগ দেয়। অস্থায়ী ১২০ দিনের নিয়োগে কিভাবে টানা ৬ বছর ধরে একই ব্যক্তি পৌরসভার কাজীর দায়িত্বে থাকে তা নিয়ে অন্য কাজীদের মধ্যে চলছে নানা গুঞ্জন। অনেকেই দাবী করছেন নিয়োগ উপদেষ্টা কমিটিকে ম্যানেজ করেই তিনি নিকাহ রেজিস্ট্রারের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, মুসলিম তালাক ও বিবাহ (রেজিস্টীকরণ) বিধিমালা ২০০৭, ৪ এর ক ৫(১) বিধিতে উল্লেখ আছে যে, অস্থায়ী নিয়োগের বিধান বিদ্যমান। নিকাহ রেজিস্টার পদে শূন্যতা সৃষ্টি হলে জেলা রেজিস্টার জরুরী মনে করলে অস্থায়ী নিয়োগের জন্য মন্ত্রণালয়ের নিকট প্রস্তাব প্রেরণ করতে পারবেন ও উক্ত প্রস্তাব সরকারের অনুমোদন প্রাপ্ত হলে কার্যকর হবে।
বিধি মালার ৪ এর গ তে বলা হয়েছে, অস্থায়ীভাবে অতিরিক্ত দায়িত্ব প্রদানের ক্ষেত্রে এই ভাবে বিধি প্রণয়ন করা যেতে পারে যে, সংশ্লিষ্ট এলাকার স্থানীয় সরকার প্রতিনিধি (ইউ,পি চেয়ারম্যান/ মেম্বার, সিটি কর্পোরেশন মেয়র/ কমিশনার থেকে নির্দিষ্ট সময় উল্লেখক্রমে মতামত গ্রহণ করা যেতে পারে এবং প্রাপ্ত মতামত বিবেচনাক্রমে জেলা উপদেষ্টা কমিটি কর্তৃক যথোপযুক্ত সিদ্ধান্ত প্রদান করার বিধান করা যেতে পারে। বিধানে এটা উল্লেখ করা যেতে পারে যে, যথাসময়ে মতামত পাওয়া না গেলে জেলা উপদেষ্টা কমিটির তদসংক্রান্তে যথোপযুক্ত সিদ্ধান্ত প্রদান করতে পারবেন৷ সেই আলোকে প্রণীতব্য বিধিতে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালনের সময়সীমা ১২০ দিন নির্ধারণক্রমে জেলা উপদেষ্টা কমিটিকে উক্ত সময়ের মধ্যে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার জন্য উল্লেখ করা যেতে পারে। এছাড়া উক্ত সময়সীমার মধ্যে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা সম্ভব না হলে অতিরিক্ত দায়িত্ব ১২০ দিনের অধিক বহাল রাখার বিষয়ে সময়সীমা উত্তীর্ণ হওয়ার পূর্বে জেলা উপদেষ্টা কমিটিকে সরকারের নিকট অনুমতির জন্য আবেদন করিতে হবে এবং সরকার ঐরুপ আবেদনের প্রেক্ষিতে যথোপযুক্ত সিদ্ধান্ত প্রদান করতে পারবে এবং ইহার ধারাবাহিকতায় নিয়োগ প্রক্রিয়ার সময় বৃদ্ধি করিতে পারিবে।
কিন্তু উল্লেখিত বিধি অনুসরণ না করে বিধি বর্হিভূতভাবে বর্তমানে নিয়োগ প্রক্রিয়া চালানো হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
অভিযোগের বিষয়ে মনিরুল ইসলাম এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, শূন্য পদটিতে যতদিন পর্যন্ত স্থায়ীভাবে কাউকে নিয়োগ দেওয়া না হয়। ততদিন পর্যন্তই আমাকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তবে কিসের ভিত্তিতে এমন মনগড়া নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করতে বলেছেন। এবিষয়ে মেহেরপুর জেলা কাজী সমিতির সভাপতি আবুল বাসার বলেন, উক্ত পদটি মামলা জটিলতার কারণে স্থায়ী নিয়োগ প্রক্রিয়া স্থগিত হয়ে আছে, তবে আমার জানা মতে মনিরুল ইসলাম কে তৎকালীন জেলা রেজিস্ট্রার নিয়োগ দিয়েছিলেন, কিন্তু কিসের ভিত্তিতে কোন বিধিতে নিয়োগ দিয়েছিলেন এ বিয়ষে আমি কোন মন্তব্য করতে চাচ্ছি না। মেহেরপুর জেলা রেজিস্ট্রার সাইফুল ইসলাম এর সাথে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে, তিনি মোবাইল ফোন কল (গ্রহণ) রিসিভ করেনি।
মাজিদ আল মামুন
মেহেরপুর প্রতিনিধি
০১৯১৫৩৫১৪৯৮