যশোরে খুন হওয়া কঙ্কালের পরিচয় মিলেছে,অঃপর পি,বি,আইয়ের হাতে আসামি আটক।
আঃজলিল,স্টাফ রিপোর্টারঃ–
যশোর শহরের পুরাতন কসবায় প্লাস্টিকের ড্রাম থেকে উদ্ধার সেই কঙ্কালের পরিচয় মিলেছে। কঙ্কাল উদ্ধারের পর ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে পরিচয় সনাক্ত করেছে যশোর পিবিআই (পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন)। ছয় বছর আগে খুলনার দিঘলিয়ার চন্দোলি মহল এলাকার ফারুক হোসেনের ছেলে রাজীব হোসেন কাজীকে (৩২) হত্যার পর লাশ গুম করে দেয়া হয়েছিল। এ ঘটনার সাথে জড়িত সালাম (৫৫) নামে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সালাম নড়াইলের লোহাগড়া থানার মঙ্গলহাটা গ্রামের মৃত নুর মিয়ার ছেলে। বর্তমানে যশোর সদরের কিসমত নওয়াপাড়া গ্রামের জনৈক আবদার ড্রাইভারের বাড়ির ভাড়াটিয়া।
পিবিআই যশোরের এসআই জিয়াউর রহমান জানান, গত ২০২২ সালের ৩০ মে যশোর শহরের পুরাতন কসবা নিরিবিলি এলাকা থেকে বজলুর রহমানের বাউন্ডারী দেয়া জমিতে ভবন নির্মাণের জন্য ভাঙ্গার কাজ করে। এসময় পরিত্যক্ত পুরাতন টয়লেটের রিং স্লাবের কুয়ার ভিতর রাখা প্লাস্টিকের ড্রামের মধ্যে থেকে রাজিবের হাড়গোড় ও মাথার খুলি পাওয়া যায়। এই ঘটনার পর পিবিআই কর্মকর্তারা তদন্ত কাজ শুরু করেন। পরে তারা জানতে পারেন শহরের পুরাতন কসবা আবু তালেব সড়কের শেখ আজিজুল হকের ছেলে শেখ সজিবুর রহমান (৩৪) নিহত রাজিবের চাচা হাসমতের অফিসে কাজ করতেন।
২০১৬ সালের ২৯ মার্চ রাত ৮টার দিকে রাজিব তার পিতাকে ফোন করে তাদের খুলনার বাড়িতে আসছে বলে জানায়। কিন্তু রাজিব খুলনায় তাদের বাড়িতে যায়নি। রাজিবে মা মাবিয়া বেগম ও চাচা হাসমত সজীবের বাসায় গিয়ে রাজিবের খোঁজ করলে সজীব জানায় রাজিব কোথায় গেছে সে তা জানে না। প্রয়োজনে মামলা করে ছেলেকে উদ্ধারের ব্যবস্থা করতে পরামর্শ দেন তিনি। দীর্ঘদিন পর গত বছরের ৩০ মে চাচা হাসমত রাজিবের পিতা ফারুক হোসেনকে ফোন করে জানাই যশোর শহরের পুরাতন কসবা নিরিবিলি এলাকায় টয়লেটের রিং স্লাবের কুয়ার মধ্যে থেকে মানুষের হাড়গোড় ও মাথার খুলি পাওয়া গেছে। শেখ সজীবুর রহমানের যেখানে অফিস ছিল সেখান থেকে মানুষের কঙ্কাল পাওয়া গেছে। রাজিব নিখোঁজ হওয়ার কিছুদিন পর সজীব তার অফিস ভেঙ্গে ফেলেছিল। ফারুক হোসেন তার ভাই হাসমতের কথা শুনে যশোরে আসে। ছায়া তদন্তকালীন সময়ে নিহত রাজিবের পিতা ফারুক হোসেন পিবিআই যশোর অফিসে এসে পুলিশ সুপারকে তার ছেলেকে সনাক্তকরণের জন্য অনুরোধ করে। পিবিআই যশোর কার্যালয়ে তিনি একটি জিডি করেন। যার জিডি নং-১৪৬, তাং ১২/০৯/২০২২।
জিডির সূত্র ধরে পিবিআই যশোর জেলার এসআই জিয়াউর রহমান রাজিবের পিতা ফারুক হোসেন এবং তার স্ত্রী মাবিয়া বেগমকে বিজ্ঞ আদালতের নির্দেশ গ্রহণ করে কঙ্কালের সাথে তাদের পরিচয় সনাক্তের জন্য ডিএনএ পরীক্ষার উদ্যোগ গ্রহণ করেন। পরে ডিএনএ পরীক্ষায় ড্রামের মধ্যে পাওয়া মানবদেহের কঙ্কালের সাথে ফারুক হোসেন ও তার স্ত্রী মাবিয়ার ডিএনএর মিল পাওয়া যায়। পিবিআই যশোরের পুলিশ সুপার রেশমা শারমিন জানান, মামলাটির তদন্ত করতে গিয়ে যশোর সদরের কিসমত নওয়াপাড়ার আবদার ড্রাইভারের বাড়ির ভাড়াটিয়া সালামকে (৫৫) নিজ বাড়ি থেকে আটক করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি জানায় পরিকল্পিভাবে রাজিবকে হত্যা করে শেখ সজিবুর রহমানের অফিসের টয়লেটের কুয়ার মধ্যে ফেলে দেয়। গতকাল আটক সালামকে যশোরের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ কুমার দালালের আদালতে সোপর্দ করা হলে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও প্রদান করে। মৃতদেহ বহনের কাজে ব্যবহৃত রিক্সা জব্দ করা হয়েছে। হত্যাকাণ্ডে জড়িত অন্যান্য অসামিদের আটকে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
প্রেরক,
আঃজলিল