Dhaka ০৮:৪৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রাজশাহীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনসভা উপলক্ষ্যে আওয়ামী লীগ, রাজশাহী জেলা ও মহানগরের উদ্যোগে প্রতিনিধি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৫:৩০:৪৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৩
  • ৯০৯ Time View
রাজশাহীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনসভা উপলক্ষ্যে আওয়ামী লীগ, রাজশাহী জেলা ও মহানগরের উদ্যোগে প্রতিনিধি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আবুল হাশেম, রাজশাহী প্রতিনিধিঃ
২৯ জানুয়ারি রাজশাহীতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার জনসভা সফল করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, রাজশাহী জেলা ও মহানগরের উদ্যোগে প্রতিনিধি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১ টায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজের ডা. কাইছার রহমান চৌধুরী মিলনায়তনে আয়োজিত সভায় তিনি প্রধান  অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মাননীয়  মেয়র জননেতা এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী হাছান মাহমুদ এমপি। প্রধান বক্তা ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন।
রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী কামাল সভায় সভাপতিত্ব করেন। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা অনিল কুমার সরকার। সভা সঞ্চালন করেন রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ আব্দুল ওয়াদুদ দারা ও রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ ডাবলু সরকার।
সভায় জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার ও পাবনা-১ আসনের সংসদ সদস্য শামসুল হক টুকু, খাদ্য মন্ত্রী ও নওগাঁ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাধন চন্দ্র মজুমদার এমপি, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এমপি, রাজশাহী-৫ (পুঠিয়া-দূর্গাপুর) আসনের সংসদ সদস্য ডা. মনসুর রহমান,  রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসনের সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক, রাজশাহী -৩ (পবা-মোহনপুর)  আসনের সংসদ সদস্য আয়েন উদ্দিন, পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রেজাউল রহিম লাল, জয়পুরহাট জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আরিফুর রহমান রকেট,  সিরাজগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা এ্যাড. হোসেন আলী হাসান, নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম রমজান প্রমুখ।
সভায় কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনস্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রোকেয়া সুলতানা, সদস্য নুরুল ইসলাম ঠান্ডু, সদস্য বেগম আখতার জাহান, সদস্য প্রফেসর মেরিনা জাহান এমপি সহ রাজশাহী বিভাগের আট জেলার বিভিন্ন আসনের সরকারদলীয় এমপি এবং আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা অংশ নেন।
রাজশাহী তানোরে আলুর বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা, শৈত্য প্রবাহে সতর্ক কৃষি বিভাগ।
আবুল হাশেম, রাজশাহী বিভাগীয় প্রতিনিধিঃ
রাজশাহীর জেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি আলুর আবাদ হয় বরেন্দ্র খ্যাত তানোর উপজেলায়। কৃষি বিভাগের সূত্র মতে, এ বছর ১৩ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে আলু উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২ লাখ ৯৭ হাজার মেট্রিক টন। চাষ করা জাতের মধ্যে রয়েছে ডায়মন্ড, কার্ডিনাল, গ্রানোলা, এসটেরিক্স, বারি আলু ৯১, বারি আলু ৪১, এলুয়েট, পাকড়ি, গুটিসহ বিভিন্ন প্রজাতির আলু।
ইতোমধ্যে বিলকুমারী বিল ও শিব নদীর উপকূল এলাকায় চাষকৃত আগাম আলুর উত্তোলনও শুরু হয়েছে।
উপজেলার রহিমাডাংগার আলু চাষীরা আগাম আলু উত্তোলন করে বিঘা প্রতি প্রায় ৯০ থেকে ১০০ মণ ফলন পাচ্ছে। তানোর পৌরসভার আলু চাষী আবু হোসেন বলেন, বাজারে ১০০০-১২০০ টাকা মণ আগাম আলু বিক্রয় হচ্ছে। বিঘা প্রতি আলু চাষে খরচ হয়েছে ৪০-৪৫ হাজার টাকা।
আগাম আলুর পাশাপাশি মাঠে রয়েছে প্রায় ১০-১২ হাজার হেক্টর আলু। ইতোমধ্যে রাজশাহী জেলায় শৈত্যপ্রবাহ শুরু হয়েছে। দিনের তাপমাত্রা ৮-৯ ডিগ্রিতে নেমে আসছে। সকালে তীব্র কুয়াশা পড়ছে। এরকম বৈরী আবহাওয়ায় আলু গাছ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। প্রতিকূল আবহাওয়ায় আলুতে নাবী ধ্বসা তথা মোড়ক রোগ দেখা যেতে পারে।  কৃষি বিভাগের পরামর্শে আলু চাষীরা ইতোমধ্যে জমিতে সতর্কতামূলক স্প্রে শুরু করেছে।  উপজেলা কৃষি অফিসার সাইফুল্লাহ আহম্মদ বলেন, শৈত্যপ্রবাহ ও কুয়াশাচ্ছন্ন আবহাওয়াজনিত কারণে লেট ব্লাইট বা মড়ক রোগ থেকে আলু গাছ রক্ষা করতে কৃষি বিভাগের ব্লক পর্যায়ে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা নিয়মিত পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছে। কৃষক সমাবেশ, উঠোন বৈঠক, মতবিনিময় সভার আয়োজন এবং লিফলেট বিতরণের মাধ্যমে কৃষকদের আগাম সতর্কতা করা হচ্ছে। ইউনিয়ন পরিষদে স্থাপিত আবহাওয়া ডিসপ্লে বোর্ডে আবহাওয়ার আগাম পূর্বাভাস প্রদানসহ করণীয় কৃষি বার্তা প্রচারের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও প্রচারণা অব্যাহত রয়েছে।
অতিরিক্ত কৃষি অফিসার কামরুল ইসলাম বলেন, মড়ক রোগের আক্রমণে প্রথমে গাছের গোড়ার দিকের পাতায় ছোপ ছোপ ভেজা হালকা সবুজ গোলাকার বা বিভিন্ন আকারের দাগ দেখা যায়, যা দ্রুত কালো রং ধারণ করে এবং পাতা পঁচে যায়। সকাল বেলা মাঠে গেলে আক্রান্ত পাতার নিচে সাদা পাউডারের মত জীবাণু দেখা যায়। ঠাণ্ডা ও কুয়াশাচ্ছন্ন আবহাওয়ায় আক্রান্ত গাছ দ্রুত পঁচে যায়। এই অবস্থায় ২-৩ দিনের মধ্যেই ক্ষেতের সমস্ত গাছ মরে যেতে পারে। এ রোগে আক্রান্ত আলুর গায়ে বাদামি থেকে কালচে দাগ পড়ে এবং খাবার অযোগ্য হয়ে যায়।
সাধারণত নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি মাসের (মধ্য কার্তিক থেকে মধ্য ফাল্গুন) যে কোন সময় নিম্ন তাপমাত্রা (রাতে ১০-১৬ ডিগ্রি এবং দিনে ১৬-২৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস) এবং কুয়াশাচ্ছন্ন আর্দ্র আবহাওয়া (আর্দ্রতা ৯০% এর বেশি) এ রোগ বিস্তারের জন্য অনুকূল। কুয়াশাচ্ছন্ন আবহাওয়ার সাথে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হলে এ রোগ ২-৩ দিনের মধ্যে মহামারী আকার ধারণ করে। বাতাস, বৃষ্টিপাত ও সেচের পানির সাহায্যে এ রোগের জীবাণু আক্রান্ত গাছ থেকে সুস্থ গাছে দ্রুত বিস্তার লাভ করে।
লেইট ব্লাইট বা মড়ক রোগ নিয়ন্ত্রণে আলুর মৌসুমে নিয়মিত মাঠ পরিদর্শন করতে হবে।  আলুর সারিতে ভালভাবে মাটি উঁচু করে দিতে হবে। সেচের পর আলু গাছের গোড়ার মাটি সরে গেলে তা মাটি দিয়ে পুনরায় ঢেকে দিতে হবে। নিম্ন তাপমাত্রা, কুয়াশাচ্ছন্ন আবহাওয়া ও বৃষ্টির পূর্বাভাস পাওয়ার সাথে সাথে রোগ প্রতিরোধের জন্য  ৭-১০ দিন অন্তর ম্যানকোজেব গ্রুপের অনুমোদিত ছত্রাকনাশক যেমন- ডাইথেন এম-৪৫, ইন্ডোফিল এম-৪৫ বা পেনকোজেব ৮০ ডব্লিউপি প্রতি লিটার পানিতে ২ গ্রাম হারে মিশিয়ে স্প্রে করে গাছ ভালভাবে ভিজিয়ে দিতে হবে। আক্রান্ত জমিতে রোগ নিয়ন্ত্রণ না হওয়া পর্যন্ত সেচ প্রদান বন্ধ রাখতে হবে।  নিজের বা পার্শ্ববর্তী ক্ষেতে রোগ দেখা মাত্রই ৭ দিন অন্তর নিম্নের যে কোন একটি গ্রুপের অনুমোদিত ছত্রাকনাশক পর্যায়ক্রমিকভাবে নিম্নবর্ণিত হারে প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করে গাছ ভালভাবে ভিজিয়ে দিতে হবে। যেমন: এক্রোবেট এম জেড (ম্যানকোজেব ৬০% + ডাইমেথোমর্ফ ৯%)- ২ গ্রাম অথবা সিকিউর ৬০০ ডব্লিউজি (ম্যানকোজেব ৫০% + ফেনামিডন ১০%)- ২ গ্রাম অথবা মেলোডি ডুও ৬৬.৮ ডব্লিউপি ( প্রোপিনেব ৭০ % + ইপ্রোভেলিকার্ব)- ২ গ্রাম অথবা জ্যামপ্রো ডি এম (এমেটোকট্রাডিন ৩০% + ডাইমেথোমর্ফ ২২.৫%)- ২ মিলি অথবা কার্জেট এম ৮ (ম্যানকোজেব ৬৪% + সাইমোক্সানিল ৮%)- ২ গ্রাম অথবা ফুলিমেইন ৬০ ডব্লিউপি (ফ্লুমর্ফ ১০% + ম্যানকোজেব ৫০%)- ২ গ্রাম।
যদি কুয়াশাচ্ছন্ন আবহাওয়া দীর্ঘ সময় বিরাজ করে ও রোগের মাত্রা ব্যাপক হয় সেক্ষেত্রে নিম্নোক্ত ছত্রাকনাশকের যে কোন একটি মিশ্রণ পর্যায়ক্রমিকভাবে নিম্নবর্ণিত হারে প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে ৫ দিন অন্তর স্প্রে করে গাছ ভালভাবে ভিজিয়ে দিতে হবে। এক্রোবেট এম জেড ৪ গ্রাম + সিকিউর ৬০০ ডব্লিউজি ১ গ্রাম অথবা এক্রোবেট এম জেড ৪ গ্রাম + মেলোডি ডুও ৬৬.৮ ডব্লিউপি ১ গ্রাম অথবা
ফুলিমেইন ৬০ ডব্লিউপি ৪ গ্রাম + অটোস্টিন ৫০ ডব্লিউডিজি (কার্বেনডাজিম ৫০%) ১ গ্রাম অথবা মেলোডি ডুও ৬৬.৮ ডব্লিউপি ৪ গ্রাম + সিকিউর ৬০০ ডব্লিউজি ১ গ্রাম। আর রোগের প্রাদুর্ভাব খুব বেশি হলে ৩-৪ দিন অন্তর ছত্রাকনাশকের মিশ্রণ স্প্রে করতে হবে। ছত্রাকনাশক পাতার উপরে ও নিচে ভালভাবে স্প্রে করতে হবে। সাধারণ স্প্রেয়ারের পরিবর্তে পাওয়ার স্প্রেয়ার ব্যবহার করলে ভাল ফল পাওয়া যায়। স্প্রে করার সময় সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
গাছ ভেজা অবস্থায় জমিতে ছত্রাকনাশক স্প্রে না করাই ভাল। আর যদি স্প্রে করতেই হয় তাহলে প্রতি লিটার পানিতে ২ গ্রাম হারে সাবানের গুড়া মিশিয়ে নিতে হবে।
Tag :

One thought on “রাজশাহীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনসভা উপলক্ষ্যে আওয়ামী লীগ, রাজশাহী জেলা ও মহানগরের উদ্যোগে প্রতিনিধি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

আলোচিত

বোয়ালমারীতে চার বছর কর্মস্থলে না গিয়েও বেতন ভাতা নিচ্ছে উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ঝুমা !

রাজশাহীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনসভা উপলক্ষ্যে আওয়ামী লীগ, রাজশাহী জেলা ও মহানগরের উদ্যোগে প্রতিনিধি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

Update Time : ০৫:৩০:৪৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৩
রাজশাহীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনসভা উপলক্ষ্যে আওয়ামী লীগ, রাজশাহী জেলা ও মহানগরের উদ্যোগে প্রতিনিধি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আবুল হাশেম, রাজশাহী প্রতিনিধিঃ
২৯ জানুয়ারি রাজশাহীতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার জনসভা সফল করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, রাজশাহী জেলা ও মহানগরের উদ্যোগে প্রতিনিধি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১ টায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজের ডা. কাইছার রহমান চৌধুরী মিলনায়তনে আয়োজিত সভায় তিনি প্রধান  অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মাননীয়  মেয়র জননেতা এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী হাছান মাহমুদ এমপি। প্রধান বক্তা ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন।
রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী কামাল সভায় সভাপতিত্ব করেন। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা অনিল কুমার সরকার। সভা সঞ্চালন করেন রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ আব্দুল ওয়াদুদ দারা ও রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ ডাবলু সরকার।
সভায় জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার ও পাবনা-১ আসনের সংসদ সদস্য শামসুল হক টুকু, খাদ্য মন্ত্রী ও নওগাঁ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাধন চন্দ্র মজুমদার এমপি, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এমপি, রাজশাহী-৫ (পুঠিয়া-দূর্গাপুর) আসনের সংসদ সদস্য ডা. মনসুর রহমান,  রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসনের সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক, রাজশাহী -৩ (পবা-মোহনপুর)  আসনের সংসদ সদস্য আয়েন উদ্দিন, পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রেজাউল রহিম লাল, জয়পুরহাট জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আরিফুর রহমান রকেট,  সিরাজগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা এ্যাড. হোসেন আলী হাসান, নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম রমজান প্রমুখ।
সভায় কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনস্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রোকেয়া সুলতানা, সদস্য নুরুল ইসলাম ঠান্ডু, সদস্য বেগম আখতার জাহান, সদস্য প্রফেসর মেরিনা জাহান এমপি সহ রাজশাহী বিভাগের আট জেলার বিভিন্ন আসনের সরকারদলীয় এমপি এবং আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা অংশ নেন।
রাজশাহী তানোরে আলুর বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা, শৈত্য প্রবাহে সতর্ক কৃষি বিভাগ।
আবুল হাশেম, রাজশাহী বিভাগীয় প্রতিনিধিঃ
রাজশাহীর জেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি আলুর আবাদ হয় বরেন্দ্র খ্যাত তানোর উপজেলায়। কৃষি বিভাগের সূত্র মতে, এ বছর ১৩ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে আলু উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২ লাখ ৯৭ হাজার মেট্রিক টন। চাষ করা জাতের মধ্যে রয়েছে ডায়মন্ড, কার্ডিনাল, গ্রানোলা, এসটেরিক্স, বারি আলু ৯১, বারি আলু ৪১, এলুয়েট, পাকড়ি, গুটিসহ বিভিন্ন প্রজাতির আলু।
ইতোমধ্যে বিলকুমারী বিল ও শিব নদীর উপকূল এলাকায় চাষকৃত আগাম আলুর উত্তোলনও শুরু হয়েছে।
উপজেলার রহিমাডাংগার আলু চাষীরা আগাম আলু উত্তোলন করে বিঘা প্রতি প্রায় ৯০ থেকে ১০০ মণ ফলন পাচ্ছে। তানোর পৌরসভার আলু চাষী আবু হোসেন বলেন, বাজারে ১০০০-১২০০ টাকা মণ আগাম আলু বিক্রয় হচ্ছে। বিঘা প্রতি আলু চাষে খরচ হয়েছে ৪০-৪৫ হাজার টাকা।
আগাম আলুর পাশাপাশি মাঠে রয়েছে প্রায় ১০-১২ হাজার হেক্টর আলু। ইতোমধ্যে রাজশাহী জেলায় শৈত্যপ্রবাহ শুরু হয়েছে। দিনের তাপমাত্রা ৮-৯ ডিগ্রিতে নেমে আসছে। সকালে তীব্র কুয়াশা পড়ছে। এরকম বৈরী আবহাওয়ায় আলু গাছ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। প্রতিকূল আবহাওয়ায় আলুতে নাবী ধ্বসা তথা মোড়ক রোগ দেখা যেতে পারে।  কৃষি বিভাগের পরামর্শে আলু চাষীরা ইতোমধ্যে জমিতে সতর্কতামূলক স্প্রে শুরু করেছে।  উপজেলা কৃষি অফিসার সাইফুল্লাহ আহম্মদ বলেন, শৈত্যপ্রবাহ ও কুয়াশাচ্ছন্ন আবহাওয়াজনিত কারণে লেট ব্লাইট বা মড়ক রোগ থেকে আলু গাছ রক্ষা করতে কৃষি বিভাগের ব্লক পর্যায়ে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা নিয়মিত পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছে। কৃষক সমাবেশ, উঠোন বৈঠক, মতবিনিময় সভার আয়োজন এবং লিফলেট বিতরণের মাধ্যমে কৃষকদের আগাম সতর্কতা করা হচ্ছে। ইউনিয়ন পরিষদে স্থাপিত আবহাওয়া ডিসপ্লে বোর্ডে আবহাওয়ার আগাম পূর্বাভাস প্রদানসহ করণীয় কৃষি বার্তা প্রচারের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও প্রচারণা অব্যাহত রয়েছে।
অতিরিক্ত কৃষি অফিসার কামরুল ইসলাম বলেন, মড়ক রোগের আক্রমণে প্রথমে গাছের গোড়ার দিকের পাতায় ছোপ ছোপ ভেজা হালকা সবুজ গোলাকার বা বিভিন্ন আকারের দাগ দেখা যায়, যা দ্রুত কালো রং ধারণ করে এবং পাতা পঁচে যায়। সকাল বেলা মাঠে গেলে আক্রান্ত পাতার নিচে সাদা পাউডারের মত জীবাণু দেখা যায়। ঠাণ্ডা ও কুয়াশাচ্ছন্ন আবহাওয়ায় আক্রান্ত গাছ দ্রুত পঁচে যায়। এই অবস্থায় ২-৩ দিনের মধ্যেই ক্ষেতের সমস্ত গাছ মরে যেতে পারে। এ রোগে আক্রান্ত আলুর গায়ে বাদামি থেকে কালচে দাগ পড়ে এবং খাবার অযোগ্য হয়ে যায়।
সাধারণত নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি মাসের (মধ্য কার্তিক থেকে মধ্য ফাল্গুন) যে কোন সময় নিম্ন তাপমাত্রা (রাতে ১০-১৬ ডিগ্রি এবং দিনে ১৬-২৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস) এবং কুয়াশাচ্ছন্ন আর্দ্র আবহাওয়া (আর্দ্রতা ৯০% এর বেশি) এ রোগ বিস্তারের জন্য অনুকূল। কুয়াশাচ্ছন্ন আবহাওয়ার সাথে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হলে এ রোগ ২-৩ দিনের মধ্যে মহামারী আকার ধারণ করে। বাতাস, বৃষ্টিপাত ও সেচের পানির সাহায্যে এ রোগের জীবাণু আক্রান্ত গাছ থেকে সুস্থ গাছে দ্রুত বিস্তার লাভ করে।
লেইট ব্লাইট বা মড়ক রোগ নিয়ন্ত্রণে আলুর মৌসুমে নিয়মিত মাঠ পরিদর্শন করতে হবে।  আলুর সারিতে ভালভাবে মাটি উঁচু করে দিতে হবে। সেচের পর আলু গাছের গোড়ার মাটি সরে গেলে তা মাটি দিয়ে পুনরায় ঢেকে দিতে হবে। নিম্ন তাপমাত্রা, কুয়াশাচ্ছন্ন আবহাওয়া ও বৃষ্টির পূর্বাভাস পাওয়ার সাথে সাথে রোগ প্রতিরোধের জন্য  ৭-১০ দিন অন্তর ম্যানকোজেব গ্রুপের অনুমোদিত ছত্রাকনাশক যেমন- ডাইথেন এম-৪৫, ইন্ডোফিল এম-৪৫ বা পেনকোজেব ৮০ ডব্লিউপি প্রতি লিটার পানিতে ২ গ্রাম হারে মিশিয়ে স্প্রে করে গাছ ভালভাবে ভিজিয়ে দিতে হবে। আক্রান্ত জমিতে রোগ নিয়ন্ত্রণ না হওয়া পর্যন্ত সেচ প্রদান বন্ধ রাখতে হবে।  নিজের বা পার্শ্ববর্তী ক্ষেতে রোগ দেখা মাত্রই ৭ দিন অন্তর নিম্নের যে কোন একটি গ্রুপের অনুমোদিত ছত্রাকনাশক পর্যায়ক্রমিকভাবে নিম্নবর্ণিত হারে প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করে গাছ ভালভাবে ভিজিয়ে দিতে হবে। যেমন: এক্রোবেট এম জেড (ম্যানকোজেব ৬০% + ডাইমেথোমর্ফ ৯%)- ২ গ্রাম অথবা সিকিউর ৬০০ ডব্লিউজি (ম্যানকোজেব ৫০% + ফেনামিডন ১০%)- ২ গ্রাম অথবা মেলোডি ডুও ৬৬.৮ ডব্লিউপি ( প্রোপিনেব ৭০ % + ইপ্রোভেলিকার্ব)- ২ গ্রাম অথবা জ্যামপ্রো ডি এম (এমেটোকট্রাডিন ৩০% + ডাইমেথোমর্ফ ২২.৫%)- ২ মিলি অথবা কার্জেট এম ৮ (ম্যানকোজেব ৬৪% + সাইমোক্সানিল ৮%)- ২ গ্রাম অথবা ফুলিমেইন ৬০ ডব্লিউপি (ফ্লুমর্ফ ১০% + ম্যানকোজেব ৫০%)- ২ গ্রাম।
যদি কুয়াশাচ্ছন্ন আবহাওয়া দীর্ঘ সময় বিরাজ করে ও রোগের মাত্রা ব্যাপক হয় সেক্ষেত্রে নিম্নোক্ত ছত্রাকনাশকের যে কোন একটি মিশ্রণ পর্যায়ক্রমিকভাবে নিম্নবর্ণিত হারে প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে ৫ দিন অন্তর স্প্রে করে গাছ ভালভাবে ভিজিয়ে দিতে হবে। এক্রোবেট এম জেড ৪ গ্রাম + সিকিউর ৬০০ ডব্লিউজি ১ গ্রাম অথবা এক্রোবেট এম জেড ৪ গ্রাম + মেলোডি ডুও ৬৬.৮ ডব্লিউপি ১ গ্রাম অথবা
ফুলিমেইন ৬০ ডব্লিউপি ৪ গ্রাম + অটোস্টিন ৫০ ডব্লিউডিজি (কার্বেনডাজিম ৫০%) ১ গ্রাম অথবা মেলোডি ডুও ৬৬.৮ ডব্লিউপি ৪ গ্রাম + সিকিউর ৬০০ ডব্লিউজি ১ গ্রাম। আর রোগের প্রাদুর্ভাব খুব বেশি হলে ৩-৪ দিন অন্তর ছত্রাকনাশকের মিশ্রণ স্প্রে করতে হবে। ছত্রাকনাশক পাতার উপরে ও নিচে ভালভাবে স্প্রে করতে হবে। সাধারণ স্প্রেয়ারের পরিবর্তে পাওয়ার স্প্রেয়ার ব্যবহার করলে ভাল ফল পাওয়া যায়। স্প্রে করার সময় সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
গাছ ভেজা অবস্থায় জমিতে ছত্রাকনাশক স্প্রে না করাই ভাল। আর যদি স্প্রে করতেই হয় তাহলে প্রতি লিটার পানিতে ২ গ্রাম হারে সাবানের গুড়া মিশিয়ে নিতে হবে।