মেহেরুল ইসলাম মোহন লালপুর উপজেলা প্রতিনিধি
নাটোরের লালপুর উপজেলার ৮নং দুড়দুড়িয়া ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও সাবেক সেনা সদস্য আসলাম হোসেন(৬০)এর বিরুদ্ধে লালপুর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তার স্বাক্ষর জালিয়াতি করে ২৫জন ব্যক্তিকে ভূয়া প্রতিবন্ধী কার্ড তৈরি করে দিয়ে অর্থ হাতিয়ে নেওয়াসহ প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে।
মঙ্গলবার(১২ই সেপ্টেম্বর-২৩) এ বিষয়ে লালপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার(ইউএনও) বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। অভিযুক্ত আসলাম দুড়দুড়িয়া ইউনিয়নের নতুনপাড়া গ্রামের মৃত মাতু সরকার ছেলে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়,গত বছর উপজেলার দুড়দুড়িয়া ইউনিয়নের ২৫ জন ব্যক্তিকে প্রতিবন্ধী কার্ড করে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ভুক্তভোগী প্রতিবন্ধী আব্দুল মান্নানের মাধ্যমে প্রত্যেকের থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকা করে নেন আসলাম হোসেন। পরবর্তীতে লালপুর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আব্দুল মোতালেবের স্বাক্ষর জালিয়াতি করে প্রত্যককে ভূয়া প্রতিবন্ধী কার্ড প্রদান করেন তিনি। সম্প্রতি তারা উপজেলা সমাজসেবা কার্যলয়ে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন তাদের ভূয়া প্রতিবন্ধী কার্ড করে দেওয়া হয়েছে। তারা প্রতারণার শিকার হয়েছেন।এরই ধারাবাহিকতায়
শনিবার(১৬ই সেপ্টেম্বর-২৩)সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়,প্রতারণার শিকার হওয়া প্রত্যেক ব্যক্তিই অসচ্ছল।তবে ২৫ জনের কয়েক জন প্রকৃত প্রতিবন্ধী। তবে বাকিরাও শারীরিক ভাবে অসুস্থ ও সামান্য ত্রুটিপূর্ণ।তাদের সবাইকে ভাতা করে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে কৌশলে ৬২ হাজার ৫০০ টাকা হাতিয়ে নেন ওই আওয়ামী লীগ নেতা।
তেমনি এক ভুক্তভোগী একই এলাকার পলান উদ্দিনের ছেলে আব্দুল মান্নান।তার এক হাত নেই। তিনি জানান,প্রতিবন্ধী কার্ড করতে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরেও কার্ড করতে পারেন নি। পরে আসলামকে ২৫ শত টাকা দেন ভাতা করার জন্য। তার কিছুদিন পর কার্ড দেন।পরে জানতে পারেন কার্ডটি ভুয়া। এবং তার মাধ্যমে যে কার্ড করা হয়েছে সবগুলোই ভূয়া।
আরেক ভুক্তভোগী নওশের আলীর স্ত্রী রাফিয়া বেগম।এক চোখে দেখতে পান না। তিনি জানান,২ হাজার ৫শ টাকায় সরকারি সুবিধা পাওয়ার আশায় প্রতিবন্ধী কার্ড নিয়েছেন।পরে তিনি উপজেলা থেকে জানতে পারেন তিনি প্রতারিত হয়েছেন।একইভাবে ভুক্তভোগী শারিরিক প্রতিবন্ধী মৃত আপতার আলীর ছেলে রাকিব হোসেন (৩৮),আশাদুল ইসলামের স্ত্রী শিরিনা খাতুন(৪১),মৃত জালাল উদ্দিনের ছেলে লালন আলী (৩১)ছাড়াও অনেকে সরকারি সুবিধা পাওয়ার আশায় প্রতিবন্ধী কার্ড করার পর জানতে পারেন প্রতারিত হয়েছেন।
তারা প্রতারক আসলামের বিচার দাবি করেন। বাকি ভুক্তভোগীরাও ঘটনা তদন্ত করে প্রতারক আসলাম হোসেনের বিচার এবং টাকা ফেরত পেতে সংশ্লিষ্টদের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
বিষয়টি অস্বীকার করে আসলাম হোসেন বলেন,আমি সরাসরি কারো থেকে টাকা নেয় নি। তবে ভুক্তভোগী আব্দুল মান্নানের থেকে টাকা নিয়েছেন বলে স্বীকার করেন।
এ বিষয়ে লালপুর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মোতালেব সরকার বলেন, ভুক্তভোগীদের কার্ড যাচাই-বাচাই করে দেখা গেছে তাদের কার্ড ভূয়া।এবং ভুক্তভোগী ব্যক্তিদের যাচাই বাচাই করে প্রকৃত প্রতিবন্ধীদের ভাতার ব্যবস্থা করে দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
লালপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।