“সাজেকে পর্যটকদের উপচে পড়া ভিড়”
মোঃ ইব্রাহিম শেখ চট্টগ্রাম ব্যুরো:
সকালের সূর্যোদয় দেখতে সাজেকে পর্যটকদের ভিড়। ছবি: আজকের পত্রিকা নতুন
বছরের শুরুতেই প্রকৃতি কন্যা ও রাঙ্গামাটির ছাদ খ্যাত সাজেক ভ্যালীতে ভিড় করেছেন হাজারো পর্যটক। সকালের
সূর্যোদয়ের সঙ্গে মেঘের মিতালি দেখতে সেখানে হাজারো পর্যটক ভিড় করছেন রুইলুই হেলী প্যাড, কংলাক পাহাড় ও
ঐতিহ্যবাহী লুসাই গ্রামে। তবে পর্যটকের বাড়তি চাপের কারণে অনেকে রিসোর্ট বা কটেজে জায়গা না পেয়ে রাত কাটাচ্ছেন
খোলা আকাশের নিচে।
স্থানীয়রা বলছেন, গত তিন দিনে সাজেকে ধারণ ক্ষমতার চেয়ে ৪ গুণ পর্যটক এসেছেন। বাড়তি পর্যটকদের চাপ সামলাতে
হিমশিম খেতে হচ্ছে রিসোর্ট ও কটেজ মালিকদের। রুম না পেয়ে অনেকে সারা দিন নেচে গেয়ে আনন্দ-উল্লাস শেষে রাত
কাটাচ্ছেন খোলা আকাশের নিচে। সাজেক রিসোর্ট ও কটেজ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জেরী লুসাই বলেন, ‘গত তিন দিনে সাজেকে প্রচুর পরিমাণ পর্যটক এসেছেন। কোনো রিসোর্ট ও কটেজ খালি নেই। ফলে অনেকে আবার এক থেকে দুই হাজার টাকা ভাড়ায় খোলা আকাশের নিচে তাঁবুতে থাকছেন।’
প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করতে সাজেকে ভিড় করছেন পর্যটকেরা।কটেজ মালিক শাহাদাৎ হোসেন বলেন, প্রচুর
পরিমাণ পর্যটক সাজেকে আসেন। এ সময় বাড়তি পর্যটকদের জায়গা দিতে আমাদের হিমশিম খেতে হয়। আমার রিসোর্টে
প্রত্যেকটি রুমের ধারণ ক্ষমতা ৪ জন হলেও পর্যটকেরা ৬ থেকে ৮ জন থাকতে চায়। অনেকে রুম না পেয়ে আবার ফিরেও
যাচ্ছেন। যারা রিসোর্টে জায়গা পেয়েছেন, তাঁরা অনেকেই এক থেকে তিন মাস আগে রুম বুকিং দিয়েছেন।’
অন্যদিকে বাড়তি পর্যটকের চাপে খাবার হোটেলেও প্রচণ্ড চাপ পড়েছে। ফলে ভালো খাবার পেতেও বেগ পেতে হচ্ছে
পর্যটকদের।
সাজেকের মনটানা রেস্টুরেন্টের মালিক জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘পর্যটকের বাড়তি চাপের কারণে আমাদের হিমশিম খেতে
হচ্ছে। তবে পর্যটকদের সন্তুষ্ট করতে সাধ্যের ভেতর সবটুকু চেষ্টা করছি।’ অনেক পর্যটক রিসোর্ট ও কটেজে জায়গা না
পেয়ে তাঁবুতে রাত্রিযাপন করছেন।তবে এত কিছুর পরও সেনাবাহিনীর কঠোর নিরাপত্তা বলয় ও প্রকৃতির সৌন্দর্য সব
ভোগান্তি ভুলিয়ে দিচ্ছে পর্যটকদের। চারপাশের প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য পর্যটকদের বিমোহিত করে তুলছে। ফলে থাকা-
খাওয়ার জন্য বেগ পেতে হলেও প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগের পর হাসিমুখে সাজেক থেকে ফিরে যাচ্ছেন পর্যটকেরা।
আলমগির হোসেন নামে ঢাকা থেকে আগত এক পর্যটক বলেন, ‘সাজেকে দেশের অন্য সব পর্যটন কেন্দ্র থেকে নিরাপত্তা
ব্যবস্থা খুবই চমৎকার। সাজেকে প্রবেশ থেকে শুরু করে সবই একটি নির্দিষ্ট নিয়মের মধ্যে চলে। সেনাবাহিনীর কঠোর
নিরাপত্তা বলয়ের পাশাপাশি সড়কে কোনো যানবাহন ওভারটেকিং করতে পারে না। সারা রাত সেনাবাহিনী টহল দেয়। সব
মিলিয়ে পর্যটকদের নিরাপত্তা নিয়ে কোনো সংশয় নেই।’
রংপুর থেকে আগত আরেক পর্যটক মজিবুর রহমান বলেন,বন্ধুরা মিলে সাজেকে ঘুরতে এসেছি। আমরা আগে থেকেই রুম
বুকিং দিয়েছি। এ জন্য সমস্যায় পড়তে হয়নি। তবে অনেকেই রিসোর্ট বা কটেজে জায়গা না পেয়ে খোলা আকাশের নিচে
তাঁবুতে থাকছেন। বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুমানা আক্তার বলেন, আমরা রিসোর্টগুলোকে শক্ত নির্দেশনা দিয়েছি ধারণ ক্ষমতার বাইরে যাতে কোনো বুকিং না নেয়। কিন্তু অনেকেই বুকিং না দিয়েই সাজেক চলে আসছেন, তাই তারা থাকার জায়গা পাচ্ছেন না। সাজেকে ১০০-এর বেশি রিসোর্ট আছে। আমরা যদি গড়ে ২৫ জন করেও ধরি তাও ২৫০০-এর বেশি পর্যটক থাকতে পারে না। তাছাড়া সাজেকে পানিরও সমস্যা আছে। কিন্তু ধারণক্ষমতার বেশি পর্যটক চলে আসায় এই সমস্যার সৃষ্টি। সাজেকে প্রবেশের বিষয়টা যেহেতু বাংলাদেশ সেনাবাহিনী দেখভাল করে, তাই আমরা উনাদের অবগত করেছি যাতে অগ্রিম বুকিং না থাকা পর্যটকদের সাজেক প্রবেশে নিরুৎসাহিত করে।
“এবার শিশু আয়াতের খণ্ডিত মাথা উদ্ধার”
মোঃ ইব্রাহিম শেখ চট্টগ্রাম ব্যুরো:
চট্টগ্রাম নগরীর ইপিজেড এলাকায় হত্যার পর ছয় টুকরা করা শিশু আলিনা
ইসলাম আয়াতের শরীরের আরও একটি অংশ উদ্ধারের কথা জানিয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন
(পিবিআই)।
পিবিআই মেট্রোর পরিদর্শক ইলিয়াস খান জানিয়েছেন, আয়াতের খণ্ডিত মাথা উদ্ধার করেছে পিবিআই।
বৃহস্পতিবার সকালে ইপিজেড থানার আউটার রিং রোড বেড়িবাঁধ এলাকা থেকে দেহাংশ উদ্ধার করা হয়।
এর আগে আলিনা ইসলাম আয়াতের খণ্ডিত দুটি পা উদ্ধারের কথা জানায় পিবিআই। বুধবার (৩০ নভেম্বর)
দুপুর আড়াইটার দিকে ইপিজেড থানার আকমল আলী রোডের স্লুইসগেটের পাশ থেকে দেহাংশ উদ্ধার করা হয়।
চট্টগ্রাম মহানগরীর ইপিজেড থানার বন্দরটিলা এলাকা থেকে গত ১৫ নভেম্বর নিখোঁজ হয় সাত বছর বয়সী
আলিনা ইসলাম আয়াত। ওইদিন খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে ইপিজেড থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন তার বাবা
সোহেল রানা। এ ঘটনায় থানা পুলিশ কোনো ক্লু উদঘাটন করতে না পারলেও ২৪ নভেম্বর রাত ১১টার দিকে
ইপিজেড থানাধীন আকমল আলী সড়ক থেকে আবির আলীকে গ্রেফতার করে পিবিআই।
আটকের পর পিবিআইয়ের জিজ্ঞাসাবাদে শিশু আয়াতকে মুক্তিপণ আদায়ের উদ্দেশ্যে অপহরণের কথা স্বীকার
করেন আবির আলী। পরে শ্বাসরোধ করে হত্যা এবং ধারালো বটি ও অ্যান্টিকাটার দিয়ে মরদেহ ছয় টুকরা করে
নালা ও সাগরে ফেলে দেওয়ার তথ্য দেন পিবিআইকে।
এদিকে এ ঘটনায় করা মামলায় গ্রেফতার আবিরকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ফের সাতদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন
আদালত। সোমবার (২৮ নভেম্বর) চট্টগ্রামের অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ আবদুল হালিম
এ আদেশ দেন।
এর আগে শনিবার (২৬ নভেম্বর) আবির আলীর দুদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন
ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মো. সাদ্দাম হোসেন এ আদেশ দেন। এছাড়া আবির আলীর বাবা আজহারুল ও
মা আলো বেগমের তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
আবির আলী (১৯) নগরের ইপিজেড থানার দক্ষিণ হালিশহর ওয়ার্ডের নয়ারহাট এলাকার ভাড়াটিয়া বাসিন্দা
আজহারুল ইসলামের ছেলে। তাদের বাড়ি রংপুর জেলায়।