Dhaka ০৮:৫৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সাতক্ষীরার কলারোয়া থানা এলাকায় চাঞ্চল্যকর পেট্রোল ঢেলে আগুন দিয়ে “শ্যালক আব্দুল কাদের ও তার স্ত্রী শারমিন”হত্যা মামলার প্রধান আসামী মোঃ সবুজ হোসেন কে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-৬।

  • Reporter Name
  • Update Time : ১১:৫৩:৫৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ অগাস্ট ২০২৩
  • ১২০ Time View
 সাতক্ষীরার কলারোয়া থানার চন্দনপুরে মোছাঃ সুফিয়া খাতুন (২৩), পিতা- আব্দুল গাজী, এর সাথে বিগত ০৪ বছর পূর্বে আসামী মোঃ সবুজ হোসেন (২৫), পিতা- আব্দুল বারিক মন্ডল, এর সহিত বিবাহ হয়। উক্ত সবুজ পূর্ব হতেই গরু চোরাচালান এবং মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত ছিল। মাদকাসক্ত হওয়ার কারনে বিবাহের পর থেকেই সে কারনে/অকারনে সুফিয়া খাতুনকে মারধর করতো। তার অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে সুফিয়া খাতুন এ বছরের মার্চ মাসে তার ভাই মৃত আব্দুল কাদেরের বাড়ি চলে আসে।
এর পর হতে তার ভাই মৃত আব্দুল কাদের বোনকে আশ্রয় প্রদান করা এবং স্বামীর অত্যাচারে বাঁধা দেয়ার কারনে স্বামী সবুজ বারবার আব্দুল কাদেরকে প্রান নাশের হুমকি দিয়ে আসছিল। মোছাঃ সুফিয়া খাতুন গত ২৮ মে ২০২৩ ইং তারিখ তার ভাই আব্দুল কাদের (২৯), এর বাসা হতে মায়ের সাথে দেখা করার জন্য যশোরে গেলে ঐ দিন রাত্র অনুমান ০২.৪৫ ঘটিকার সময় আসামী মোঃ সবুজ হোসেন তার মামাত ভাই মোঃ সোহাগ আলম (২২) সহ অজ্ঞাতনামা ৩/৪ জন একত্রিত হয়ে সুফিয়া খাতুনের ভাই আব্দুল কাদেরের টিনের বেড়া ও ছাউনিযুক্ত বসত ঘরে পেট্রোল ঢেলে বাহির থেকে তালা বন্ধ করে আগুন ধরিয়ে দেয়। তালা বন্ধ ঘরের ভিতর হতে তার ভাই-ভাবীর ডাকচিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে উপরোক্ত আসামীরা পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে এলাকার লোকজন ঘর তালা বন্ধ দেখে জানালা ভেঙ্গে ঘরের ভিতর থাকা সুফিয়া খাতুন এর ভাই মোঃ আব্দুল কাদের ও ভাবী শারমিন খাতুন এবং তার শিশু মেয়ে ফাতিমা খাতুন (০৫) কে আগুনে দ্বগ্ধ অবস্থায় বের করে নিয়ে আসে। তাৎক্ষনিক এলাকার লোকজন সুফিয়া খাতুন এর ভাই, ভাবী ও শিশু কন্যার অবস্থা গুরতর দেখে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়া আসেন। কর্তব্যরত ডাক্তার তাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক দেখে ঢাকা বার্ন ইউনিটে রেফার্ড করেন।
 এই সংক্রান্তে গত ২৮ মে ২০২৩ ইং তারিখ সুফিয়া খাতুন  বাদী হয়ে কলারোয়া থানায় আসামীদের বিরুদ্ধে একটি মামলা রুজু করেন। পরবর্তীতে ঢাকার বান ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ০১ জুন ২৩ ইং তারিখ আব্দুল কাদের ও পরবর্তী ১৪ জুন ২৩ ইং তারিখ তার স্ত্রী শারমিন খাতুন মারা যান। হত্যার ঘটনার পর থেকেই সে ভারতের চব্বিশ পরগনা জেলার বনগ্রাম থানার কমলাপুর গ্রামে তার অপকর্মের সহকারী ভারতীয় নাগরিক শাহজাহান মন্ডলের আশ্রয়ে অবৈধভাবে ভারতে অবস্থান করে।
ঘটনার পর থেকে র‌্যাব ছায়া তদন্তে নামে। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল ২০ আগষ্ট ২০২৩ ইং তারিখ বিকালে র‌্যাব-৬ (সিপিসি-১ কোম্পানি) সাতক্ষীরার একটি আভিযানিক দল গোপন সূত্রে জানতে পারে যে, উক্ত চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলার ১নং প্রধান আসামী “মোঃ সবুজ হোসেন” ঝিনাইদাহ জেলার মহেশপুর থানা এলাকায় অবস্থান করছে। প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে উক্ত  এলাকায় অভিযান চালিয়ে মাটিলা এলাকা হতে ১ নং আসামী মোঃ সবুজ হোসেন (২৫), পিং- আব্দুল বারিক মন্ডল, সাং- পোড়াবাড়ি, থানা- শার্শা, জেলা- যশোরকে গ্রেফতার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামী তার দোষ স্বীকার করে এবং শাস্তির ভয়ে ভারতে পালিয়ে ছিল বলে জানায়।
  আসামী সবুজ এলাকার কুখ্যাত চোরাকারবারী সে ভারত সিমান্ত হতে মাদক, গরু এবং অন্যান্য পাচারের সাথে সরাসরি জড়িত। এই পেশায় নিয়োজিত হয়ে সে ইতোপূর্বে ৪টি বিবাহ করে এবং সকল ধরনের অপকর্মে জড়িত। তাহার বিরুদ্ধে বেনাপোল পোট থানায় হিরোইন পাচারের মামলা চলমান রয়েছে, যে মামলায় সে ১৭ মাস জেল হাজতে থাকার পর মুক্ত হয়ে পরবর্তীতে পলাতক রয়েছে এবং তার বিরুদ্ধে গ্রেফতরী পরোয়ানা জারী হয়েছে বলে জানা যায়।
Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

আলোচিত

বোয়ালমারীতে চার বছর কর্মস্থলে না গিয়েও বেতন ভাতা নিচ্ছে উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ঝুমা !

সাতক্ষীরার কলারোয়া থানা এলাকায় চাঞ্চল্যকর পেট্রোল ঢেলে আগুন দিয়ে “শ্যালক আব্দুল কাদের ও তার স্ত্রী শারমিন”হত্যা মামলার প্রধান আসামী মোঃ সবুজ হোসেন কে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-৬।

Update Time : ১১:৫৩:৫৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ অগাস্ট ২০২৩
 সাতক্ষীরার কলারোয়া থানার চন্দনপুরে মোছাঃ সুফিয়া খাতুন (২৩), পিতা- আব্দুল গাজী, এর সাথে বিগত ০৪ বছর পূর্বে আসামী মোঃ সবুজ হোসেন (২৫), পিতা- আব্দুল বারিক মন্ডল, এর সহিত বিবাহ হয়। উক্ত সবুজ পূর্ব হতেই গরু চোরাচালান এবং মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত ছিল। মাদকাসক্ত হওয়ার কারনে বিবাহের পর থেকেই সে কারনে/অকারনে সুফিয়া খাতুনকে মারধর করতো। তার অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে সুফিয়া খাতুন এ বছরের মার্চ মাসে তার ভাই মৃত আব্দুল কাদেরের বাড়ি চলে আসে।
এর পর হতে তার ভাই মৃত আব্দুল কাদের বোনকে আশ্রয় প্রদান করা এবং স্বামীর অত্যাচারে বাঁধা দেয়ার কারনে স্বামী সবুজ বারবার আব্দুল কাদেরকে প্রান নাশের হুমকি দিয়ে আসছিল। মোছাঃ সুফিয়া খাতুন গত ২৮ মে ২০২৩ ইং তারিখ তার ভাই আব্দুল কাদের (২৯), এর বাসা হতে মায়ের সাথে দেখা করার জন্য যশোরে গেলে ঐ দিন রাত্র অনুমান ০২.৪৫ ঘটিকার সময় আসামী মোঃ সবুজ হোসেন তার মামাত ভাই মোঃ সোহাগ আলম (২২) সহ অজ্ঞাতনামা ৩/৪ জন একত্রিত হয়ে সুফিয়া খাতুনের ভাই আব্দুল কাদেরের টিনের বেড়া ও ছাউনিযুক্ত বসত ঘরে পেট্রোল ঢেলে বাহির থেকে তালা বন্ধ করে আগুন ধরিয়ে দেয়। তালা বন্ধ ঘরের ভিতর হতে তার ভাই-ভাবীর ডাকচিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে উপরোক্ত আসামীরা পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে এলাকার লোকজন ঘর তালা বন্ধ দেখে জানালা ভেঙ্গে ঘরের ভিতর থাকা সুফিয়া খাতুন এর ভাই মোঃ আব্দুল কাদের ও ভাবী শারমিন খাতুন এবং তার শিশু মেয়ে ফাতিমা খাতুন (০৫) কে আগুনে দ্বগ্ধ অবস্থায় বের করে নিয়ে আসে। তাৎক্ষনিক এলাকার লোকজন সুফিয়া খাতুন এর ভাই, ভাবী ও শিশু কন্যার অবস্থা গুরতর দেখে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়া আসেন। কর্তব্যরত ডাক্তার তাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক দেখে ঢাকা বার্ন ইউনিটে রেফার্ড করেন।
 এই সংক্রান্তে গত ২৮ মে ২০২৩ ইং তারিখ সুফিয়া খাতুন  বাদী হয়ে কলারোয়া থানায় আসামীদের বিরুদ্ধে একটি মামলা রুজু করেন। পরবর্তীতে ঢাকার বান ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ০১ জুন ২৩ ইং তারিখ আব্দুল কাদের ও পরবর্তী ১৪ জুন ২৩ ইং তারিখ তার স্ত্রী শারমিন খাতুন মারা যান। হত্যার ঘটনার পর থেকেই সে ভারতের চব্বিশ পরগনা জেলার বনগ্রাম থানার কমলাপুর গ্রামে তার অপকর্মের সহকারী ভারতীয় নাগরিক শাহজাহান মন্ডলের আশ্রয়ে অবৈধভাবে ভারতে অবস্থান করে।
ঘটনার পর থেকে র‌্যাব ছায়া তদন্তে নামে। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল ২০ আগষ্ট ২০২৩ ইং তারিখ বিকালে র‌্যাব-৬ (সিপিসি-১ কোম্পানি) সাতক্ষীরার একটি আভিযানিক দল গোপন সূত্রে জানতে পারে যে, উক্ত চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলার ১নং প্রধান আসামী “মোঃ সবুজ হোসেন” ঝিনাইদাহ জেলার মহেশপুর থানা এলাকায় অবস্থান করছে। প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে উক্ত  এলাকায় অভিযান চালিয়ে মাটিলা এলাকা হতে ১ নং আসামী মোঃ সবুজ হোসেন (২৫), পিং- আব্দুল বারিক মন্ডল, সাং- পোড়াবাড়ি, থানা- শার্শা, জেলা- যশোরকে গ্রেফতার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামী তার দোষ স্বীকার করে এবং শাস্তির ভয়ে ভারতে পালিয়ে ছিল বলে জানায়।
  আসামী সবুজ এলাকার কুখ্যাত চোরাকারবারী সে ভারত সিমান্ত হতে মাদক, গরু এবং অন্যান্য পাচারের সাথে সরাসরি জড়িত। এই পেশায় নিয়োজিত হয়ে সে ইতোপূর্বে ৪টি বিবাহ করে এবং সকল ধরনের অপকর্মে জড়িত। তাহার বিরুদ্ধে বেনাপোল পোট থানায় হিরোইন পাচারের মামলা চলমান রয়েছে, যে মামলায় সে ১৭ মাস জেল হাজতে থাকার পর মুক্ত হয়ে পরবর্তীতে পলাতক রয়েছে এবং তার বিরুদ্ধে গ্রেফতরী পরোয়ানা জারী হয়েছে বলে জানা যায়।