Dhaka ০৭:৪৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

“সিভিল সার্জনের ভুল চিকিৎসায় এক নবজাতকের মৃত্যু”

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৪:৩৬:৫৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৬ অক্টোবর ২০২২
  • ৩৪৫ Time View
সিভিল সার্জনের ভুল চিকিৎসায় এক নবজাতকের মৃত্যু 
মোঃ আবুবকর সিদ্দিক,কয়রা খুলনা প্রতিনিধিঃ
খুলনার কয়রা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অন্তস্বত্বা এক নারীকে সিজার করতে গিয়ে সিভিল সার্জন ডা. সুজাত আহমেদের ভুল সিজারে নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। কর্তব্যরত চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে মায়ের অবস্থাও আশংকাজনক। তাকে কয়রা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রেখে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। শনিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) বিকালে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অপরাশেন থিয়েটারে ঘটনাটি ঘটে। আশংকাজনক অবস্থায় চিকিৎসা নেয়া রোগির নাম ফাতিমা খাতুন। কয়রা উপজেলার মঠবাড়িয়া এলাকার আসাদুর মোড়লের স্ত্রী তিনি।
ফাতিমার স্বামী আসাদুর মোড়ল জানান, সাত হাজার টাকার বিনিময়ে সিজার করানোর জন্য  খুলনার সিভিল সার্জন ডা. সুজাত আহমেদের  সাথে অন্তস্বত্বা নারীর পরিবারের সদস্যদের চুক্তি হয়। নির্দিষ্ট সময়ে ভুল অপারেশনে নবজাতকের মারা যায়।
কয়রা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কমকর্তা ডা. সুদিপ বালা জানান, “ অপারেশনটি সিভিল সার্জন করেছেন। ” শনিবার ১৫সেপ্টেম্বর রাতে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কতব্যরত চিকিৎসক ডা. এম এ হাসানও একই অভিযোগ করেন।
রোগির স্বজনরা জানান, সম্পূর্ন সুস্থ অবস্থায় ফাতিমাকে অপারেশন থিয়েটারে প্রবেশ করানো হয়। তার আগে সব ধরণের পরীক্ষা-নীরিক্ষা করানো হলে নবজাতকসহ মা সুস্থ আছেন বলে সিভিল সার্জন তাদের জানান। তারা বলেন, সবাই সুস্থ অবস্থায় অপরাশেন থিয়েটারে গেলেও নবজাতক মৃত অবস্থায় এলো। এই সময় রোগির স্বজনরা বিক্ষোভ করলে ডা. সুজাত আহমেদ গোপনে দ্রুত খুলনায় চলে যায় ।
কয়রা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কমকর্তা ডা. সুদিপ বালা জানান, প্রতি সপ্তাহে শুক্রবার ও শনিবারে সিভিল সাজন কয়রা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এসে চুক্তি ভিত্তিক মাসে ৫০ থেকে ৬০টির মতো এপেন্ডিক্স, ৩০টির মতো সিজারসহ অন্যান্য অপারেশন করে থাকেন। তিনি জানান, সিভিল সার্জন ডা. সুজাত আহমেদের গ্রামের বাড়ি কয়রা উপজেলায়। সিভিল সার্জন হিসেবে পদোন্নতি পাবার আগে তিনি ওই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ছিলেন। তবে নিজের ভুলে নবজাতকের মৃত্যুর বিষয় অস্বীকার করেছেন সিভিল সার্জন ডা. সুজাত আহমেদ। তিনি দাবি করেন, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সভার কারণে তিনি সেখানে গিয়েছিলেন। সেখানে অন্তস্বত্বা এক রোগি ভর্তি দেখতে পেয়ে তিনি অপারেশন করেন। অপারেশনে মৃত সন্তান জম্ম নিয়েছে ।
সিভিল সার্জন দাবি করেন, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অন্যান্য চিকিৎসক ঢাকায় ট্রেনিংয়ে থাকায় তিনি অপারেশন করেছেন। তবে তাঁর এই দাবি মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বলেছেন, স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কমকর্তা ডা. সুদিপ বালা। তিনি বলেন, কয়রা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কোন চিকিৎসকই ঢাকাতে ট্রেনিংয়ে নেই। অপারেশনের সময় তিনি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেই ছিলেন। সন্ধ্যায় তিনি ঢাকার উদ্দেশ্যে কয়রা ছাড়েন।
Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

আলোচিত

বোয়ালমারীতে চার বছর কর্মস্থলে না গিয়েও বেতন ভাতা নিচ্ছে উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ঝুমা !

“সিভিল সার্জনের ভুল চিকিৎসায় এক নবজাতকের মৃত্যু”

Update Time : ০৪:৩৬:৫৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৬ অক্টোবর ২০২২
সিভিল সার্জনের ভুল চিকিৎসায় এক নবজাতকের মৃত্যু 
মোঃ আবুবকর সিদ্দিক,কয়রা খুলনা প্রতিনিধিঃ
খুলনার কয়রা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অন্তস্বত্বা এক নারীকে সিজার করতে গিয়ে সিভিল সার্জন ডা. সুজাত আহমেদের ভুল সিজারে নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। কর্তব্যরত চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে মায়ের অবস্থাও আশংকাজনক। তাকে কয়রা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রেখে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। শনিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) বিকালে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অপরাশেন থিয়েটারে ঘটনাটি ঘটে। আশংকাজনক অবস্থায় চিকিৎসা নেয়া রোগির নাম ফাতিমা খাতুন। কয়রা উপজেলার মঠবাড়িয়া এলাকার আসাদুর মোড়লের স্ত্রী তিনি।
ফাতিমার স্বামী আসাদুর মোড়ল জানান, সাত হাজার টাকার বিনিময়ে সিজার করানোর জন্য  খুলনার সিভিল সার্জন ডা. সুজাত আহমেদের  সাথে অন্তস্বত্বা নারীর পরিবারের সদস্যদের চুক্তি হয়। নির্দিষ্ট সময়ে ভুল অপারেশনে নবজাতকের মারা যায়।
কয়রা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কমকর্তা ডা. সুদিপ বালা জানান, “ অপারেশনটি সিভিল সার্জন করেছেন। ” শনিবার ১৫সেপ্টেম্বর রাতে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কতব্যরত চিকিৎসক ডা. এম এ হাসানও একই অভিযোগ করেন।
রোগির স্বজনরা জানান, সম্পূর্ন সুস্থ অবস্থায় ফাতিমাকে অপারেশন থিয়েটারে প্রবেশ করানো হয়। তার আগে সব ধরণের পরীক্ষা-নীরিক্ষা করানো হলে নবজাতকসহ মা সুস্থ আছেন বলে সিভিল সার্জন তাদের জানান। তারা বলেন, সবাই সুস্থ অবস্থায় অপরাশেন থিয়েটারে গেলেও নবজাতক মৃত অবস্থায় এলো। এই সময় রোগির স্বজনরা বিক্ষোভ করলে ডা. সুজাত আহমেদ গোপনে দ্রুত খুলনায় চলে যায় ।
কয়রা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কমকর্তা ডা. সুদিপ বালা জানান, প্রতি সপ্তাহে শুক্রবার ও শনিবারে সিভিল সাজন কয়রা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এসে চুক্তি ভিত্তিক মাসে ৫০ থেকে ৬০টির মতো এপেন্ডিক্স, ৩০টির মতো সিজারসহ অন্যান্য অপারেশন করে থাকেন। তিনি জানান, সিভিল সার্জন ডা. সুজাত আহমেদের গ্রামের বাড়ি কয়রা উপজেলায়। সিভিল সার্জন হিসেবে পদোন্নতি পাবার আগে তিনি ওই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ছিলেন। তবে নিজের ভুলে নবজাতকের মৃত্যুর বিষয় অস্বীকার করেছেন সিভিল সার্জন ডা. সুজাত আহমেদ। তিনি দাবি করেন, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সভার কারণে তিনি সেখানে গিয়েছিলেন। সেখানে অন্তস্বত্বা এক রোগি ভর্তি দেখতে পেয়ে তিনি অপারেশন করেন। অপারেশনে মৃত সন্তান জম্ম নিয়েছে ।
সিভিল সার্জন দাবি করেন, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অন্যান্য চিকিৎসক ঢাকায় ট্রেনিংয়ে থাকায় তিনি অপারেশন করেছেন। তবে তাঁর এই দাবি মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বলেছেন, স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কমকর্তা ডা. সুদিপ বালা। তিনি বলেন, কয়রা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কোন চিকিৎসকই ঢাকাতে ট্রেনিংয়ে নেই। অপারেশনের সময় তিনি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেই ছিলেন। সন্ধ্যায় তিনি ঢাকার উদ্দেশ্যে কয়রা ছাড়েন।