তহিদুল ইসলাম মণিরামপুর উপজেলা প্রতিনিধিঃ
যশোরের মণিরামপুরে পারিবারিক কলহের জেরে স্ত্রীকে গলা কেটে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ ওঠে স্বামীর বিরুদ্ধে। এর কয়েক ঘণ্টা পর স্বামীর গলায় ফাঁস দেওয়া মরদেহ দেখতে পাই স্থানীয়রা। পরে পুলিশ যেয়ে শজনেগাছে থাকা
নিহত উজির আলীর ঝুলন্ত মৃতদের উদ্ধার করে। স্ত্রীকে হত্যাচেষ্টার পর তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলে ধারণা করছে পুলিশ। আজ বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলার নেহালপুর ঝাউতলা নামক গ্রামে গাছে স্বামীর ঝুলন্ত লাশ খুঁজে পাওয়া যায়। নেহালপুর ক্যাম্প পুলিশের ইনচার্জ উপপরিদর্শক (এসআই) আব্দুল হান্নান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। নিহত ওই ব্যক্তির নাম উজির আলী গাজী (৫০)। তাঁর স্ত্রীর নাম পারভিনা বেগম (৪৫)। উজির আলী গাজী নেহালপুর ইউনিয়নের বালিদা গ্রামের হাতেম আলী গাজীর ছেলে। পারভিনা বেগম একই গ্রামের দেনআলী গাজীর মেয়ে। পেশায় ভ্যানচালক উজির আলী স্ত্রী পারভিনাকে নিয়ে নয় মাস ধরে নেহালপুরের ঝাউতলায় রোজিনা বেগমের বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকতেন।স্থানীয় ইউপি সদস্য সোহরাব আলী বলেন, ‘বুধবার রাত ১১টার দিকে হঠাৎ ফোনে জানতে পারি এক নারীকে গলা কেটে ফেলে রেখে তাঁর স্বামী পালিয়ে গেছেন। খবর পেয়ে নেহালপুর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আব্দুল হান্নানসহ আমরা দ্রুত ঘটনাস্থলে যাই। এরপর রক্তাক্ত পারভিনা বেগমকে উদ্ধার করে মণিরামপুর হাসপাতালে নেওয়া হয়। অবস্থা গুরুতর হওয়ায় পরে তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।’সোহরাব আলী আরও বলেন, ‘রাতেই ফাঁড়ির পুলিশ উজির আলীকে ধরতে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন।
কিন্তু তাঁকে পাওয়া যায়নি। আজ বৃহস্পতিবার সকালে স্থানীয় লোকজন ভাড়া বাড়ির পাশে একটি শজনেগাছের সঙ্গে উজির আলীর ঝুলন্ত লাশ দেখতে পান।এবিষয়ে উজির প্রতিবন্ধী ছেলে জানায় রাতে আমার বাড়িতে পুলিশ যেয়ে জানায় তুমার বাবা তুমার ছোট মা কে জবাই করে পালিয়েছে।আমি ঘন্টা খানেক পরে জানতে পারি,আমার ছোটো মাকে জবাই করে বিষ খেয়ে দৌড়ে পালিয়েছে ।রাতে আমি সহ আশপাশের লোকজন মিলে পাগলের মতো খুঁজাখুঁজি করতে থাকি আমার বাবা কে কোথাও পাওয়া যাইনি।আজ ভোর বেলায় জানতে পারি আমার বাবা ভাড়া বাড়ির পাশেই শজনেগাছে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে।আমি এসে দেখি আমার বাবার নিথর দেহ শজনেগাছের সাথে ঝুলছে।স্থানীয়রা বলেন, উজির আলী ও তাঁর স্ত্রী পারভিনা বেগমের মধ্যে টাকা-পয়সা নিয়ে বেশ কয়েক দিন ধরে দ্বন্দ্ব চলছিল। বুধবার রাত ১১টার দিকে স্বামী-স্ত্রী ভাড়াবাড়িতে বসে কথা বলছিলেন। একপর্যায়ে উজির আলী হাসুয়া দা দিয়ে স্ত্রীর গলায় কোপ বসিয়ে দিয়ে পালিয়ে যান। এরপর স্ত্রীর চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে আসে।
মণিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা তন্ময় বিশ্বাস বলেন, গৃহবধূর গলার কয়েকটা শিরা ও শ্বাসনালির কিছু অংশ কেটে গেছে। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় রাতেই তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়েছিল।
নেহালপুর ক্যাম্প পুলিশের ইনচার্জ উপপরিদর্শক আব্দুল হান্নান বলেন, আহত গৃহবধূকে ঢাকায় একটি হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। আত্মহত্যা করা উজির আলীর লাশ উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।