Dhaka ০৫:১৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

৫০ বছরেও কেউ কথা রাখেনি, ইছামতী নদীতে হয়নি সেতু!

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৭:০৭:৪৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৬ ডিসেম্বর ২০২২
  • ৯৩৬ Time View

৫০ বছরেও রাখেনি কথা কেউ, ইছামতী নদীতে হয়নি সেতু!
মোঃ ইব্রাহিম শেখ চট্টগ্রাম ব্যুরোঃ

সরকার যায়, সরকার আসে, এমপ-মন্ত্রী আসে-যায় কিন্তু ইছামতী নদীতে আর সেতু হয় না।
ঘোচে না আমাদের দুর্ভাগ দুঃখ দুর্দশা। অথচ নির্বাচনের সময় সব দলের প্রার্থীরা ইছামতী নদীর উপর  সেতু নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দেয়। কিন্তু কেউ কথা রাখেনা। ৫০ বছরেও কেউ কথা রাখেনি- ক্ষোভের সঙ্গে কথা গুলো বলছিলেন রাঙ্গুনিয়া উপজেলার ১নং রাজানগর ইউনিয়নের শিয়ালবুক্ক এলাকার বাসিন্দা আবুল বশর।
চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার ১নং রাজানগর ও দক্ষিণ রাজানগর ইউনিয়নের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ইছামতী নদীর উপর
স্বাধীনতার দীর্ঘ ৫০ বছর পরেও একটি সেতু নির্মিত না হওয়ায় যুগযুগ ধরে দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন দুই ইউনিয়নের প্রায় ২০ হাজার মানুষ।একটি সেতুর অভাবে উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত রাজানগর ইউনিয়নের শিয়ালবুক্ক এলাকার নদীবেষ্টিত ৩ গ্রামের ১০ হাজার মানুষ।
স্বাধীনতার দীর্ঘ ৫০ বছর পরেও একটি সেতু নির্মিত না হওয়ায় এই ৩ গ্রামে পড়েনি তেমন একটা উন্নয়নের প্রভাব।
দীর্ঘদিনের দাবীর পরও ইছামতির নদীর ওপর সেতু না হওয়ায় দীর্ঘ ৫০ বছর ধরে রশি টেনে নৌকা দিয়ে নদী পার হতে হয় উপজেলা রাজানগর ও দঃ রাজানগর ইউনিয়নের বড়ুয়াপাড়া, হরিণাছড়া, শিয়ালবুক্ক ও ফুলবাগিচাসহ আশেপাশের আরও ৮ গ্রামের ২০ হাজার মানুষকে। চরম দূর্ভাগ ও ঝুঁকি নিয়ে নদী পারাপার করলেও এসব মানুষের কষ্ট যেনো দেখার কেউ নেই।
জানা যায়, চট্টগ্রাম – কাপ্তাই সড়ক ও চট্টগ্রাম-রাঙামাটি সড়কের সংযোগ সড়ক হচ্ছে পারুয়া-রানীরহাট কালীন্দা রাণী সড়ক।
উপজেলা ও জেলা শহরে যাতায়েতের একমাত্র পথ হচ্ছে এই সড়ক।
এই কালীন্দা রাণী সড়কটি বয়ে গেছে রাজানগর ও দ. রাজানগর ইউনিয়নের উপর দিয়ে। আর উক্ত ইউনিয়ন দু’টির উপর দিয়ে
প্রবাহিত ইছামতী নদী। নদীর পশ্চিম পাশে রয়েছে ৩টি গ্রাম, পূর্ব পাশে রয়েছে ৫টি গ্রাম। পশ্চিম পাশের ৩ গ্রামের তিনদিক থেকে ঘিরে রেখেছে ইছামতী নদী। অনেকটা দ্বীপের মতো। এই গ্রামের হাই স্কুল, প্রাইমারি স্কুল, কলেজ ও মাদরাসায় পড়ুয়া প্রায় দুই শতাধিক শিক্ষার্থী জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন রশি টানা নৌকা দিয়ে ইছামতী নদী পার হয়ে রাজাভূবন স্কুল, খন্ডলিয়াপাড়া মাদ্রাসা, আলমশাহ পাড়া কামিল মাদ্রাসা, উত্তর রাঙ্গুনিয়া হাই স্কুল, উত্তর রাঙ্গুনিয়া ডিগ্রি কলেজ, রাণীরহাট কলেজে যাতায়াত করেন।
এছাড়াও প্রতিদিন এপাশ ওপাশের মানুষজন নিত্য কাজে শিয়ালবুক্ক ঘাট দিয়ে এই নদী পারাপার হন। একই সাথে জেলা ও উপজেলা সদরে বিভিন্ন কাজসহ কৃষিকাজে আধুনিক যন্ত্রপাতি দিয়ে চাষাবাদ করা, অফিস-আদালত, হাট-বাজার, অসুস্থদের চিকিৎসাসেবা নিতে যাতায়াত করে এখানকার হাজার হাজার মানুষ। সেতু না থাকায় চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয় পশ্চিম পাড়ের ৩ গ্রামের মানুষদের। বেশি ভোগান্তিতে পড়তে হয় শিশু-নারী ও বৃদ্ধদের। ঘাটে এসে তাদের অপেক্ষা করতে হয় পুরুষদের জন্য। এরপর রশি টেনে নৌকা নিয়ে নদী পার হতে হয়। বর্ষাকালে এ ভোগান্তি, দুর্দশা তীব্র আকার ধারণ করে। শুধু তাই নয় বর্ষা মৌসুমে এই নদী পার হওয়া অনেক ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে দাঁড়ায়। নদী পার হতে গিয়ে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার শিকারও হতে হয় এসব গ্রামবাসীদেরকে। প্রায়শ নৌকা ডুবির ঘটনা ঘটে বলে জানান এলাকাবাসী।
এদিকে একটি সেতুর অভাবে নদীর পশ্চিম পাড়ের ৩ গ্রামে অগ্নিকাণ্ড, অসুস্থ রোগীদের নিয়ে হাসপাতালে যাওয়া বা কোনো প্রকার দুর্ঘটনা ঘটলে পুলিশ প্রশাসনের সদস্যরাও দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে পারেনা। এলাকাবাসীর অভিযোগ দল পাল্টায়, সরকার যায়, সরকার আসে, এমপি যায় মন্ত্রী আসে। কিন্তু ইছামতী নদীর উপর একটা সেতু হয় না। অথচ ভোট এলে সব দলের নেতারাই সেতু নির্মাণের কথা দেন, কিন্তু কথা দিয়েও কেউ কথা রাখেন না। রোকসানা আক্তার নামে রাজভূবন উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণীর এক ছাত্রী জানান, আমাদেরকে প্রতিদিনই রশি টেনে নৌকা নিয়ে নদী পার হয়ে স্কুলে যেতে হয়। অনেক সময় নৌকা না পেলে স্কুলে পৌঁছাতে দেরি হয়। আর শুষ্ক মৌসুমে হাঁটু পানি পার হতে হয়। বর্ষা মৌসুমে নদীতে পানি বৃদ্ধি পেলেই যাতায়াতে অনেক ভোগান্তি পোহাতে হয়। একটা সেতু হলে আমাদের এই কষ্ট দূর হত।

রাজাভূবন উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক আবদুল কাদের বলেন, একটি সেতুর অভাবে এই গ্রামের মানুষদের সারাবছর দুর্ভোগ পোহাতে হয়। বিশেষ করে স্কুলের কোমলমতি ছাত্রছাত্রী এবং গর্ভবতী মহিলাদের জন্য নৌকা পার হওয়া বেশ ঝুঁকিপূর্ণ। অত্র গ্রামগুলোর মানুষের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সংস্কৃতির উন্নয়নের ক্ষেত্রে এখানে ব্রিজ নির্মাণ অত্যন্ত জরুরী। শিয়ালবুক্ক এলাকার বয়োবৃদ্ধ সুলতান আহমদ বলেন, স্বাধীনতা সংগ্রামের দীর্ঘ ৫০ বছরে কত সরকার এলো গেলো, কত এমপি গেলো মন্ত্রী এলো আমাদের ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন হলো না। রাজানগর ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা আ. লীগের সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জি. শামসুল আলম বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে মাননীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এমপির ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় এ পর্যন্ত রাঙ্গুনিয়া উপজেলায় হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ছোট-বড় প্রায় অর্ধশতাধিক সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। তারপরও যদি কোনো নদীতে সেতু না থাকে সেখানে পর্যায়ক্রমে সেতু নির্মাণ করা হবে। ইছামতী নদীর ওইস্থানে সেতু স্থাপনের বিষয়ে আগামী উপজেলা পরিষদের মাসিক সভায় দাবি জানানো হবে।এ প্রসঙ্গে উপজেলা প্রকৌশলী দিদারুল আলম বলেন, যেসব নদীতে সেতু নির্মাণ প্রয়োজন এমন তালিকা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। তারপরও আমি উক্ত স্থান পরিদর্শন করে প্রয়োজনবোধে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট প্রস্তাব পাঠাবো, যাতে অতি দ্রুত শিয়ালবুক্ক এলাকার ইছামতী নদীতে একটি সেতু নির্মাণ করা হয়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আতাউল গণি ওসমানী বলেন, রাজানগর ইউনিয়নের শিয়ালবুক্ক নামকস্থানে একটি সেতু স্থাপনে এলাকাবাসীর দাবির বিষয়টি জানতে পারলাম। এলজিইডি কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে দ্রুত পর্যবেক্ষণ করা সংশ্লিষ্ট দপ্তরে বিষয়টি
জানানো হবে।

চবিতে অস্ত্রের মহড়া-ভাঙচুরে জড়িত ২০।
মোঃ ইব্রাহিম শেখ চট্টগ্রাম ব্যুরোঃ

সংঘর্ষ চলাকালে দেশীয় অস্ত্রের মহড়া এবং শিক্ষক-সাংবাদিকদের ওপর চড়াও
হওয়ার ঘটনায় প্রাথমিকভাবে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের ১৫-২০ জনকে শনাক্ত করা হয়েছে।
বিষয়টি খতিয়ে দেখে তদন্তের পর ব্যবস্থা নেবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।সোমবার (৫ ডিসেম্বর) বিষয়টি জানান
বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর এসএএম জিয়াউল ইসলাম।
এর আগে শুক্রবার (২ ডিসেম্বর) রাতে বগিভিত্তিক উপ-গ্রুপের চিকা মারাকে কেন্দ্র করে চবির এএফ রহমান হলে
সংঘর্ষে জড়ায় ভিএক্স ও বিজয় গ্রুপের অনুসারীরা। প্রায় ৪ ঘণ্টা ধরে চলা এ সংঘর্ষে উভয়ের পক্ষের অন্তত ২০
জন আহত হন। গুরুতর আহত বেশ কয়েজনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এছাড়া সংঘর্ষ চলাকালে চবির এএফ রহমান হলের প্রায় অর্ধশতাধিক রুম ভাঙচুর এবং কিছু রুমের মালামাল
লুটপাট করা হয়। ঘটনাস্থলে থাকা একজন সহকারী প্রক্টর ও কর্মরত সাংবাদিকদের ওপর চড়াও হয় ছাত্রলীগের
অনুসারীরা। এ ঘটনায় জড়িতদের শনাক্ত করতে কাজ করছে প্রশাসন। ইতিমধ্যে বিভিন্ন ভিডিও ফুটেজ, ছবি ও
সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে প্রাথমিকভাবে ১৫ জন ছাত্রলীগ কর্মীকে শনাক্ত করা হয়েছে। তবে জড়িতদের
তালিকা এবং শাস্তির বিষয়টি জানা যাবে তদন্ত প্রতিবেদন ও ডিসিপ্লিনারী কমিটির সিদ্ধান্তের পর।
এর আগে রোববার (৪ ডিসেম্বর) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টরিয়াল বডি ও পুলিশের উপস্থিতিতে চবির এএফ
রহমান হলের দেওয়ালে আঁকা ছাত্রলীগের বগিভিত্তিক উপ-গ্রুপগুলোর চিকা মুছে ফেলা হয়।
সহকারী প্রক্টর এসএএম জিয়াউল ইসলাম বলেন, গত শুক্রবার রাতে সংঘর্ষের ঘটনায় অনেকে আহত হয়েছে।
এছাড়া অনেকগুলো কক্ষ ভাঙচুর করা হয়েছে। পাশাপাশি শিক্ষক-সাংবাদিকদের ওপর চড়াও হওয়ার ঘটনায়
জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে কাজ করেছে প্রশাসন। প্রাথমিকভাবে ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ১৫-২০ জনকে
শনাক্ত করা হয়েছে। এছাড়া জড়িত আরও অনেকে এ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হতে পারে। তদন্তসাপেক্ষে দ্রুত সময়ের
মধ্যে প্রশাসন দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।

পল্লী চিকিৎসকের ছদ্মবেশে ইয়াবা পাচার। 
মোঃ ইব্রাহিম শেখ চট্টগ্রাম ব্যুরোঃ

কক্সবাজারের উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পল্লী চিকিৎসকের ছদ্মবেশে পাচারকালে ১০
হাজার ইয়াবাসহ মো. ফোরকান নামের এক রোহিঙ্গাকে গ্রেপ্তার করেছে এপিবিএনের সদস্যরা। রবিবার দুপুর সাড়ে ১২টার
দিকে ৯ নং ক্যাম্পের ডি/৩ ব্লকস্থ মসজিদ সংলগ্ন রাস্তার উপর থেকে তাকে ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার করা হয়।গ্রেপ্তারকৃত রোহিঙ্গা
হলেন, ১০ নং ক্যাম্পের ২৪/জি-ব্লকের মোহাম্মদ সিদ্দিকের ছেলে মো. ফোরকান (৩৯)।
৮ এপিবিএনের সহকারী পুলিশ সুপার (অপস্ এন্ড মিডিয়া) মো. ফারুক আহমেদ বিকেলে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য
নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে রবিবার সাড়ে ১২টার দিকে পানবাজার আর্মড পুলিশ ক্যাম্পের
কমান্ডার সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো. ফারুক আহমেদের নেতৃত্বে একটি মাদকবিরোধী অভিযান পরিচালনা করা
হয়। অভিযানে পানবাজার আর্মড পুলিশ ক্যাম্পের আওতাধীন ক্যাম্প-৯ এর ডি/৩ ব্লকস্থ মসজিদ সংলগ্ন রাস্তার উপর
থেকে ১০ দশ হাজার পিস ইয়াবাসহ মো. ফোরকান (৩৯) কে গ্রেপ্তার করা হয়।
প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, গ্রেপ্তারকৃত রোহিঙ্গা একজন স্থানীয় পল্লী চিকিৎসক। সে দীর্ঘদিন ধরে পল্লী চিকিৎসার আড়ালে
মাদক ব্যবসা করে আসছিল। বিষয়টি জানার পর তার কার্যক্রমের ওপর কিছুদিন থেকে পুলিশের গোয়েন্দা নজরদারি
চলছিল। গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তি পল্লী চিকিৎসকের ছদ্মবেশে একটি ব্যাকপ্যাকে (কাঁধে ঝোলানোর ব্যাগ) উক্ত ইয়াবা নির্দিষ্ট
ব্যক্তির নিকট পৌছে দেয়ার জন্য গন্তব্যের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। উক্ত সংবাদের ভিত্তিতেই পানবাজার আর্মড পুলিশ
ক্যাম্পের সদস্যরা উক্ত ব্লকের আশপাশ এলাকায় সাদাপোষাকে অবস্থান নেয়। মো. ফোরকান কাঁধে ব্যাগ নিয়ে চলাচলের
সময় পানবাজার আর্মড পুলিশের অভিযান দলটি কৌশলে তাকে ইয়াবার ব্যাগসহ গ্রেপ্তার করে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

আলোচিত

বোয়ালমারীতে চার বছর কর্মস্থলে না গিয়েও বেতন ভাতা নিচ্ছে উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ঝুমা !

৫০ বছরেও কেউ কথা রাখেনি, ইছামতী নদীতে হয়নি সেতু!

Update Time : ০৭:০৭:৪৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৬ ডিসেম্বর ২০২২

৫০ বছরেও রাখেনি কথা কেউ, ইছামতী নদীতে হয়নি সেতু!
মোঃ ইব্রাহিম শেখ চট্টগ্রাম ব্যুরোঃ

সরকার যায়, সরকার আসে, এমপ-মন্ত্রী আসে-যায় কিন্তু ইছামতী নদীতে আর সেতু হয় না।
ঘোচে না আমাদের দুর্ভাগ দুঃখ দুর্দশা। অথচ নির্বাচনের সময় সব দলের প্রার্থীরা ইছামতী নদীর উপর  সেতু নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দেয়। কিন্তু কেউ কথা রাখেনা। ৫০ বছরেও কেউ কথা রাখেনি- ক্ষোভের সঙ্গে কথা গুলো বলছিলেন রাঙ্গুনিয়া উপজেলার ১নং রাজানগর ইউনিয়নের শিয়ালবুক্ক এলাকার বাসিন্দা আবুল বশর।
চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার ১নং রাজানগর ও দক্ষিণ রাজানগর ইউনিয়নের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ইছামতী নদীর উপর
স্বাধীনতার দীর্ঘ ৫০ বছর পরেও একটি সেতু নির্মিত না হওয়ায় যুগযুগ ধরে দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন দুই ইউনিয়নের প্রায় ২০ হাজার মানুষ।একটি সেতুর অভাবে উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত রাজানগর ইউনিয়নের শিয়ালবুক্ক এলাকার নদীবেষ্টিত ৩ গ্রামের ১০ হাজার মানুষ।
স্বাধীনতার দীর্ঘ ৫০ বছর পরেও একটি সেতু নির্মিত না হওয়ায় এই ৩ গ্রামে পড়েনি তেমন একটা উন্নয়নের প্রভাব।
দীর্ঘদিনের দাবীর পরও ইছামতির নদীর ওপর সেতু না হওয়ায় দীর্ঘ ৫০ বছর ধরে রশি টেনে নৌকা দিয়ে নদী পার হতে হয় উপজেলা রাজানগর ও দঃ রাজানগর ইউনিয়নের বড়ুয়াপাড়া, হরিণাছড়া, শিয়ালবুক্ক ও ফুলবাগিচাসহ আশেপাশের আরও ৮ গ্রামের ২০ হাজার মানুষকে। চরম দূর্ভাগ ও ঝুঁকি নিয়ে নদী পারাপার করলেও এসব মানুষের কষ্ট যেনো দেখার কেউ নেই।
জানা যায়, চট্টগ্রাম – কাপ্তাই সড়ক ও চট্টগ্রাম-রাঙামাটি সড়কের সংযোগ সড়ক হচ্ছে পারুয়া-রানীরহাট কালীন্দা রাণী সড়ক।
উপজেলা ও জেলা শহরে যাতায়েতের একমাত্র পথ হচ্ছে এই সড়ক।
এই কালীন্দা রাণী সড়কটি বয়ে গেছে রাজানগর ও দ. রাজানগর ইউনিয়নের উপর দিয়ে। আর উক্ত ইউনিয়ন দু’টির উপর দিয়ে
প্রবাহিত ইছামতী নদী। নদীর পশ্চিম পাশে রয়েছে ৩টি গ্রাম, পূর্ব পাশে রয়েছে ৫টি গ্রাম। পশ্চিম পাশের ৩ গ্রামের তিনদিক থেকে ঘিরে রেখেছে ইছামতী নদী। অনেকটা দ্বীপের মতো। এই গ্রামের হাই স্কুল, প্রাইমারি স্কুল, কলেজ ও মাদরাসায় পড়ুয়া প্রায় দুই শতাধিক শিক্ষার্থী জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন রশি টানা নৌকা দিয়ে ইছামতী নদী পার হয়ে রাজাভূবন স্কুল, খন্ডলিয়াপাড়া মাদ্রাসা, আলমশাহ পাড়া কামিল মাদ্রাসা, উত্তর রাঙ্গুনিয়া হাই স্কুল, উত্তর রাঙ্গুনিয়া ডিগ্রি কলেজ, রাণীরহাট কলেজে যাতায়াত করেন।
এছাড়াও প্রতিদিন এপাশ ওপাশের মানুষজন নিত্য কাজে শিয়ালবুক্ক ঘাট দিয়ে এই নদী পারাপার হন। একই সাথে জেলা ও উপজেলা সদরে বিভিন্ন কাজসহ কৃষিকাজে আধুনিক যন্ত্রপাতি দিয়ে চাষাবাদ করা, অফিস-আদালত, হাট-বাজার, অসুস্থদের চিকিৎসাসেবা নিতে যাতায়াত করে এখানকার হাজার হাজার মানুষ। সেতু না থাকায় চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয় পশ্চিম পাড়ের ৩ গ্রামের মানুষদের। বেশি ভোগান্তিতে পড়তে হয় শিশু-নারী ও বৃদ্ধদের। ঘাটে এসে তাদের অপেক্ষা করতে হয় পুরুষদের জন্য। এরপর রশি টেনে নৌকা নিয়ে নদী পার হতে হয়। বর্ষাকালে এ ভোগান্তি, দুর্দশা তীব্র আকার ধারণ করে। শুধু তাই নয় বর্ষা মৌসুমে এই নদী পার হওয়া অনেক ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে দাঁড়ায়। নদী পার হতে গিয়ে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার শিকারও হতে হয় এসব গ্রামবাসীদেরকে। প্রায়শ নৌকা ডুবির ঘটনা ঘটে বলে জানান এলাকাবাসী।
এদিকে একটি সেতুর অভাবে নদীর পশ্চিম পাড়ের ৩ গ্রামে অগ্নিকাণ্ড, অসুস্থ রোগীদের নিয়ে হাসপাতালে যাওয়া বা কোনো প্রকার দুর্ঘটনা ঘটলে পুলিশ প্রশাসনের সদস্যরাও দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে পারেনা। এলাকাবাসীর অভিযোগ দল পাল্টায়, সরকার যায়, সরকার আসে, এমপি যায় মন্ত্রী আসে। কিন্তু ইছামতী নদীর উপর একটা সেতু হয় না। অথচ ভোট এলে সব দলের নেতারাই সেতু নির্মাণের কথা দেন, কিন্তু কথা দিয়েও কেউ কথা রাখেন না। রোকসানা আক্তার নামে রাজভূবন উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণীর এক ছাত্রী জানান, আমাদেরকে প্রতিদিনই রশি টেনে নৌকা নিয়ে নদী পার হয়ে স্কুলে যেতে হয়। অনেক সময় নৌকা না পেলে স্কুলে পৌঁছাতে দেরি হয়। আর শুষ্ক মৌসুমে হাঁটু পানি পার হতে হয়। বর্ষা মৌসুমে নদীতে পানি বৃদ্ধি পেলেই যাতায়াতে অনেক ভোগান্তি পোহাতে হয়। একটা সেতু হলে আমাদের এই কষ্ট দূর হত।

রাজাভূবন উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক আবদুল কাদের বলেন, একটি সেতুর অভাবে এই গ্রামের মানুষদের সারাবছর দুর্ভোগ পোহাতে হয়। বিশেষ করে স্কুলের কোমলমতি ছাত্রছাত্রী এবং গর্ভবতী মহিলাদের জন্য নৌকা পার হওয়া বেশ ঝুঁকিপূর্ণ। অত্র গ্রামগুলোর মানুষের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সংস্কৃতির উন্নয়নের ক্ষেত্রে এখানে ব্রিজ নির্মাণ অত্যন্ত জরুরী। শিয়ালবুক্ক এলাকার বয়োবৃদ্ধ সুলতান আহমদ বলেন, স্বাধীনতা সংগ্রামের দীর্ঘ ৫০ বছরে কত সরকার এলো গেলো, কত এমপি গেলো মন্ত্রী এলো আমাদের ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন হলো না। রাজানগর ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা আ. লীগের সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জি. শামসুল আলম বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে মাননীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এমপির ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় এ পর্যন্ত রাঙ্গুনিয়া উপজেলায় হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ছোট-বড় প্রায় অর্ধশতাধিক সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। তারপরও যদি কোনো নদীতে সেতু না থাকে সেখানে পর্যায়ক্রমে সেতু নির্মাণ করা হবে। ইছামতী নদীর ওইস্থানে সেতু স্থাপনের বিষয়ে আগামী উপজেলা পরিষদের মাসিক সভায় দাবি জানানো হবে।এ প্রসঙ্গে উপজেলা প্রকৌশলী দিদারুল আলম বলেন, যেসব নদীতে সেতু নির্মাণ প্রয়োজন এমন তালিকা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। তারপরও আমি উক্ত স্থান পরিদর্শন করে প্রয়োজনবোধে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট প্রস্তাব পাঠাবো, যাতে অতি দ্রুত শিয়ালবুক্ক এলাকার ইছামতী নদীতে একটি সেতু নির্মাণ করা হয়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আতাউল গণি ওসমানী বলেন, রাজানগর ইউনিয়নের শিয়ালবুক্ক নামকস্থানে একটি সেতু স্থাপনে এলাকাবাসীর দাবির বিষয়টি জানতে পারলাম। এলজিইডি কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে দ্রুত পর্যবেক্ষণ করা সংশ্লিষ্ট দপ্তরে বিষয়টি
জানানো হবে।

চবিতে অস্ত্রের মহড়া-ভাঙচুরে জড়িত ২০।
মোঃ ইব্রাহিম শেখ চট্টগ্রাম ব্যুরোঃ

সংঘর্ষ চলাকালে দেশীয় অস্ত্রের মহড়া এবং শিক্ষক-সাংবাদিকদের ওপর চড়াও
হওয়ার ঘটনায় প্রাথমিকভাবে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের ১৫-২০ জনকে শনাক্ত করা হয়েছে।
বিষয়টি খতিয়ে দেখে তদন্তের পর ব্যবস্থা নেবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।সোমবার (৫ ডিসেম্বর) বিষয়টি জানান
বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর এসএএম জিয়াউল ইসলাম।
এর আগে শুক্রবার (২ ডিসেম্বর) রাতে বগিভিত্তিক উপ-গ্রুপের চিকা মারাকে কেন্দ্র করে চবির এএফ রহমান হলে
সংঘর্ষে জড়ায় ভিএক্স ও বিজয় গ্রুপের অনুসারীরা। প্রায় ৪ ঘণ্টা ধরে চলা এ সংঘর্ষে উভয়ের পক্ষের অন্তত ২০
জন আহত হন। গুরুতর আহত বেশ কয়েজনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এছাড়া সংঘর্ষ চলাকালে চবির এএফ রহমান হলের প্রায় অর্ধশতাধিক রুম ভাঙচুর এবং কিছু রুমের মালামাল
লুটপাট করা হয়। ঘটনাস্থলে থাকা একজন সহকারী প্রক্টর ও কর্মরত সাংবাদিকদের ওপর চড়াও হয় ছাত্রলীগের
অনুসারীরা। এ ঘটনায় জড়িতদের শনাক্ত করতে কাজ করছে প্রশাসন। ইতিমধ্যে বিভিন্ন ভিডিও ফুটেজ, ছবি ও
সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে প্রাথমিকভাবে ১৫ জন ছাত্রলীগ কর্মীকে শনাক্ত করা হয়েছে। তবে জড়িতদের
তালিকা এবং শাস্তির বিষয়টি জানা যাবে তদন্ত প্রতিবেদন ও ডিসিপ্লিনারী কমিটির সিদ্ধান্তের পর।
এর আগে রোববার (৪ ডিসেম্বর) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টরিয়াল বডি ও পুলিশের উপস্থিতিতে চবির এএফ
রহমান হলের দেওয়ালে আঁকা ছাত্রলীগের বগিভিত্তিক উপ-গ্রুপগুলোর চিকা মুছে ফেলা হয়।
সহকারী প্রক্টর এসএএম জিয়াউল ইসলাম বলেন, গত শুক্রবার রাতে সংঘর্ষের ঘটনায় অনেকে আহত হয়েছে।
এছাড়া অনেকগুলো কক্ষ ভাঙচুর করা হয়েছে। পাশাপাশি শিক্ষক-সাংবাদিকদের ওপর চড়াও হওয়ার ঘটনায়
জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে কাজ করেছে প্রশাসন। প্রাথমিকভাবে ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ১৫-২০ জনকে
শনাক্ত করা হয়েছে। এছাড়া জড়িত আরও অনেকে এ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হতে পারে। তদন্তসাপেক্ষে দ্রুত সময়ের
মধ্যে প্রশাসন দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।

পল্লী চিকিৎসকের ছদ্মবেশে ইয়াবা পাচার। 
মোঃ ইব্রাহিম শেখ চট্টগ্রাম ব্যুরোঃ

কক্সবাজারের উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পল্লী চিকিৎসকের ছদ্মবেশে পাচারকালে ১০
হাজার ইয়াবাসহ মো. ফোরকান নামের এক রোহিঙ্গাকে গ্রেপ্তার করেছে এপিবিএনের সদস্যরা। রবিবার দুপুর সাড়ে ১২টার
দিকে ৯ নং ক্যাম্পের ডি/৩ ব্লকস্থ মসজিদ সংলগ্ন রাস্তার উপর থেকে তাকে ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার করা হয়।গ্রেপ্তারকৃত রোহিঙ্গা
হলেন, ১০ নং ক্যাম্পের ২৪/জি-ব্লকের মোহাম্মদ সিদ্দিকের ছেলে মো. ফোরকান (৩৯)।
৮ এপিবিএনের সহকারী পুলিশ সুপার (অপস্ এন্ড মিডিয়া) মো. ফারুক আহমেদ বিকেলে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য
নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে রবিবার সাড়ে ১২টার দিকে পানবাজার আর্মড পুলিশ ক্যাম্পের
কমান্ডার সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো. ফারুক আহমেদের নেতৃত্বে একটি মাদকবিরোধী অভিযান পরিচালনা করা
হয়। অভিযানে পানবাজার আর্মড পুলিশ ক্যাম্পের আওতাধীন ক্যাম্প-৯ এর ডি/৩ ব্লকস্থ মসজিদ সংলগ্ন রাস্তার উপর
থেকে ১০ দশ হাজার পিস ইয়াবাসহ মো. ফোরকান (৩৯) কে গ্রেপ্তার করা হয়।
প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, গ্রেপ্তারকৃত রোহিঙ্গা একজন স্থানীয় পল্লী চিকিৎসক। সে দীর্ঘদিন ধরে পল্লী চিকিৎসার আড়ালে
মাদক ব্যবসা করে আসছিল। বিষয়টি জানার পর তার কার্যক্রমের ওপর কিছুদিন থেকে পুলিশের গোয়েন্দা নজরদারি
চলছিল। গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তি পল্লী চিকিৎসকের ছদ্মবেশে একটি ব্যাকপ্যাকে (কাঁধে ঝোলানোর ব্যাগ) উক্ত ইয়াবা নির্দিষ্ট
ব্যক্তির নিকট পৌছে দেয়ার জন্য গন্তব্যের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। উক্ত সংবাদের ভিত্তিতেই পানবাজার আর্মড পুলিশ
ক্যাম্পের সদস্যরা উক্ত ব্লকের আশপাশ এলাকায় সাদাপোষাকে অবস্থান নেয়। মো. ফোরকান কাঁধে ব্যাগ নিয়ে চলাচলের
সময় পানবাজার আর্মড পুলিশের অভিযান দলটি কৌশলে তাকে ইয়াবার ব্যাগসহ গ্রেপ্তার করে।