গত ১৭ সেপ্টেম্বর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে সমাজসেবা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) ড. আবু সালেহ মোস্তফা কামালকে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করা হলেও এখনো অধিদপ্তর চলছে তার পরিচালনায়। বহাল তবিয়তে দপ্তরের সব কাজ করে যাচ্ছেন এই কর্মকর্তা। বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) সমাজসেবা অধিদপ্তরে ডিজির সঙ্গে একান্তে বৈঠক করেছেন সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা। এর আগে গত ১ অক্টোবর ৩৪তম আন্তর্জাতিক প্রবীণ দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ওএসডি আদেশ প্রাপ্ত এই কর্মকর্তা, একই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মাধ্যমে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নেয় অন্তর্বর্তী সরকার। এরপর প্রশাসন থেকে শুরু করে সব দপ্তরেই আওয়ামী লীগ সরকারের আশির্বাদপুষ্ট অভিযুক্ত কর্মকর্তাদের সরিয়ে দেয়া হচ্ছে। তবে এর ব্যত্যয় ঘটেছে সমাজসেবা অধিদপ্তরে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন অতিরিক্ত সচিব জানান, সমাজকল্যাণ উপদেষ্টার অসম্মতির কারণে সমাজসেবা অধিদপ্তরে কাউকে পদায়ন করা যাচ্ছে না। তিনি আপাতত কাউকে পদায়ন না করতে নির্দেশনা দিয়েছেন। তবে কোনো কর্মকর্তা ওএসডি হওয়ার পর আর ওই দপ্তরে অফিস করতে পারেন না বলে জানান তিনি। যদি কেউ অফিস করেন তাহলে তার দায়ভার তাকে নিতে হবে। প্রশাসনে এত অফিসার থাকতে ওএসডি কর্মকর্তাকে কেন বহাল রাখতে হবে এমন প্রশ্ন রাখেন তিনি। মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, ওএসডি কর্মকর্তা ড. আবু সালেহ মোস্তফা কামালকে স্বপদে বহাল বা সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ে সচিব পদে পদায়নে চেষ্টা করছেন সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা। তাদের অভিযোগ, রাষ্ট্রপতির আদেশে করা প্রজ্ঞাপনের নির্দেশ মানছেন না ড. আবু সালেহ মোস্তফা কামাল নিজেও। তিনি দপ্তরে নিয়মিত আসছেন। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে সভা করছেন, দিচ্ছেন নির্দেশনাও।
আবু সালেহ মোস্তফা কামালের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, অধিদপ্তরের নানা অনিয়ম, গোপন নথি গায়েব ও আলামত নষ্ট করতে ওএসডি হওয়ার পরও তিনি মন্ত্রণালয়ের মৌখিক নির্দেশের কথা বলে শুধু রুটিন দায়িত্ব নয়, আগের মতো দপ্তরের সব কাজ করছেন। বাস্তবে রাষ্ট্রপতির আদেশের পর মৌখিক নির্দেশে এটা কোনো কর্মকর্তা করতে পারেন না। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নিয়োগপ্রাপ্ত ও সুবিধাভোগী এ কর্মকর্তার এমন কর্মকাণ্ডে মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরে ক্ষোভ বাড়ছে। ওএসডি হওয়ার পরও দপ্তরের দায়িত্ব পালন করায় গত ২৬ সেপ্টেম্বর তার বিরুদ্ধে অধিদপ্তরে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করা হয়। ছাত্র-জনতার ব্যানারে ওই মানববন্ধনে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠা কর্মকর্তাদের বিচার দাবি করা হয়।