রেজাউল আজিম, বাঁশখালী প্রতিনিধি।
চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার রংগিয়াঘোনা মনছুরিয়া ফাজিল (ডিগ্রী) মাদ্রাসার বিএসসি শিক্ষক ও মানবাধিকার কর্মী আজিজুর রহমান এবং তাঁর ছেলে একই মাদ্রাসার নবম শ্রেণির ছাত্র, তাদের ওপর সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
উল্লেখ্য গত শুক্রবার (৮ নভেম্বর) রাত ১০টার দিকে চাম্বল সিকদার দোকানে এ হামলার ঘটনা ঘটে, অনুসন্ধানে জানা যায়, মাস্টার আজিজের মৃত বড় ভাইয়ের জমি দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে দখল করে রেখেছে হামলাকারী সন্ত্রাসীরা, দেশের কোন আইনকে পাত্তা না দিয়ে বিগত সরকারের কিছু দালাল নেতাদের ক্ষমতা দেখিয়ে মাস্টার আজিজের বড় ভাইয়ের স্ত্রী-কন্যাকে হয়রানী ও নির্যাতন এবং পার্শ্ববর্তী জমি দখল করা চেষ্টা করলে থানায় মামলা করা হয়। সেই মামলার সাক্ষীতে মাস্টার আজিজ ও তাঁর ছেলের নাম থাকায় চাম্বল বাজারে সাম্প্রতিক বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে জড়িত নুর মোহাম্মদ, দৌস মোহাম্মদ ও দিদারসহ ভাড়া করা কয়েকজন সন্ত্রাসী এই আক্রমণ চালায়। যা শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে।
আজ, ১০ নভেম্বর সকাল ১০টায় মাদ্রাসার শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও স্থানীয় জনসাধারণ মাদ্রাসা সংলগ্ন মনছুরিয়া বাজার প্রাঙ্গণে মানববন্ধন করে এই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানান। বিকাল ৪টায় বাঁশখালী উপজেলা পরিষদ চত্বরে বাঁশাখালী শিক্ষক কল্যাণ ঐক্য পরিষদ, বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন বাঁশখালী উপজেলা শাখা এবং বাংলাদেশ প্রেসক্লাব বাঁশখালী উপজেলা শাখার উদ্যোগে আরেকটি মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। বক্তারা শিক্ষক আজিজুর রহমানের ওপর এই ন্যাক্কারজনক হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে অবিলম্বে অপরাধীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
অত্র মাদ্রাসার শিক্ষক, সহকারী-অধ্যাপক মাওলানা শহিদ উল্লার সঞ্চালনায় এই মানববন্ধন পরিচালিত হয়।
অধ্যক্ষ মাওলানা ইসমাইল বলেন, “আজিজুর রহমান একজন আদর্শ শিক্ষক ও নিবেদিত মানবাধিকার কর্মী। তাঁর ওপর হামলা শুধুমাত্র ব্যক্তিগত আঘাত নয়, বরং এটি শিক্ষার মর্যাদা ও মানবাধিকারকে আঘাত করার সামিল। এমন সন্ত্রাসী হামলা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।”
মাওলানা মনিরুল ইসলাম আশরাফি বলেন, “এই হামলা আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সুরক্ষা ও মর্যাদার বিরুদ্ধে একটি চ্যালেঞ্জ। আমরা চাই অপরাধীদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক, যাতে ভবিষ্যতে কেউ এ ধরনের অপরাধ করতে সাহস না পায়।”
অধ্যক্ষ মাওলানা আবু তৈয়ব বলেন, “এই ন্যক্কারজনক হামলার বিরুদ্ধে শুধু শিক্ষকরা নয়, পুরো সমাজকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। আজিজুর রহমানের ওপর হামলা করার মাধ্যমে আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা ও সমাজের মূল্যবোধে আঘাত হানা হয়েছে।”
অধ্যক্ষ মাওলানা মোশাররফ হোসেন বলেন, “এমন সহিংসতা আমাদের শিক্ষকদের জন্য আতঙ্কের সৃষ্টি করেছে। আমরা চাই সরকার দ্রুত পদক্ষেপ নেবে এবং অপরাধীদের কঠোর শাস্তির মুখোমুখি করবে।”
বক্তারা প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ জানান, সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের গ্রেফতার ও শাস্তি নিশ্চিত করা হোক, যাতে সমাজের শান্তি ও শিক্ষাব্যবস্থা সুরক্ষিত থাকে।