Dhaka ০৭:৪৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ছাত্রীদের শ্লীলতাহানির অভিযোগ শিক্ষকের বিরুদ্ধে

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৯:৪৯:৫৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪
  • ৬৭ Time View

সফিকুল ইসলাম স্টাফ রিপোর্টার লালমনিরহাট
লালমনিরহাটের পাটগ্রামের হুজুর উদ্দিন সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের একাধিক ছাত্রীর শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠেছে শিক্ষকের বিরুদ্ধে । গতকাল মঙ্গলবার ২৬(নভেম্বর) দুপূরে পাটগ্রাম থানায় লালমনিরহাট জেলা পুলিশ সুপার তরিকুল ইসলাম কে অবগত করেন ভুক্তভোগী ছাত্রী ও তাদের অভিভাবকেরা।

অভিযুক্ত ব্যক্তি ওই বিদ্যালয়েরই গণিত বিভাগের সিনিয়র শিক্ষক নাজিমুল ইসলাম খান। ২০০২ সাল থেকে ২২ বছর ধরে একই স্কুলে কর্মরত ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে গত সোমবার (২৫ নভেম্বর) দুপুরে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে লিখিত অভিযোগ দেন ওই বিদ্যালয়ে অধ্যায়নরত একাধিক ছাত্রীর অভিভাবক। অভিযুক্ত শিক্ষকের বাড়ি পার্শ্ববর্তী হাতীবান্ধা উপজেলার বড়খাতা এলাকায়।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, শিক্ষক নাজিমুল ইসলাম খান দীর্ঘদিন ধরে প্রতিষ্ঠানের ছাত্রীদের সঙ্গে অশ্লীল দৃষ্টিভঙ্গিতে কথা বলে উত্ত্যক্ত করে আসছিলেন। এ ছাড়া টিউটোরিয়াল পরীক্ষায় নম্বর দেওয়ার কথা বলে ভয় দেখিয়ে একাধিক ছাত্রীর সঙ্গে যৌনতায় লিপ্ত হওয়ার চেষ্টা করেন। সামাজিক লজ্জার ভয়ে এতদিন অনেকে মুখ খোলেননি। সম্প্রতি দুজন ছাত্রীর সঙ্গে অনৈতিক প্রস্তাব দিয়ে শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেন নাজিমুল। ভুক্তভোগী ছাত্রীদের বান্ধবীদের মধ্যে বিষয়টি জানাজানি হয়। একপর্যায়ে অভিভাবকরা বিষয়টি জানতে পারেন। এ নিয়ে ছাত্রী ও অভিভাবকদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। পরে ওই বিদ্যালয় থেকে শতাধিক ছাত্রী একটি মিছিল নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে গিয়ে অবস্থান নেয়। এ সময় শিক্ষার্থীরা অভিযুক্ত শিক্ষকের শাস্তি ও বিদ্যালয় থেকে অপসারণের দাবি জানায়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ছাত্রী অভিযোগ করেন, ‘শিক্ষক নাজিমুল ইসলাম খান একজন লম্পট, চরিত্রহীন ব্যক্তি। তিনি প্রায়ই ছাত্রীদের সঙ্গে অশ্লীল ও খারাপ কথা বলেন। শরীরে হাত দেন।’ একাধিক অভিভাবক নাম প্রকাশ না করার শর্তে দাবি করেন, ‘বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকসহ অন্য শিক্ষকরা ছাত্রীদের সঙ্গে ওই শিক্ষকের শ্লীলতাহানির ঘটনা দীর্ঘদিন থেকে জানলেও কোনো ব্যবস্থা নেননি।’

এদিকে অভিযোগ অস্বীকার করে শিক্ষক নাজিমুল ইসলাম খান বলেন, ‘এটি আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। যার স্বার্থে আঘাত লেগেছে, তারা এ ধরনের ষড়যন্ত্র করে হেয় করার চেষ্টা করছে।’ এ ব্যাপারে বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলাম বলেন, ‘শিক্ষক নাজিমুল ইসলাম খানের বিরুদ্ধে ছাত্রীদের শ্লীলতাহানির ঘটনা কয়েক দিন আগে জানতে পেরেছি। ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের একটি কমিটি করা হয়েছে। এ ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হয়েছে।’ এ ঘটনায় পাটগ্রামের ইউএনও নুরুল ইসলাম বলেন, ‘ছাত্রীরা আমার কাছে এসেছে। ঘটনা জানতে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে একটি তদন্ত কমিটি করতে বলেছি। যদি ঘটনা প্রমাণ হয়, তাহলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

আলোচিত

বোয়ালমারীতে চার বছর কর্মস্থলে না গিয়েও বেতন ভাতা নিচ্ছে উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ঝুমা !

ছাত্রীদের শ্লীলতাহানির অভিযোগ শিক্ষকের বিরুদ্ধে

Update Time : ০৯:৪৯:৫৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪

সফিকুল ইসলাম স্টাফ রিপোর্টার লালমনিরহাট
লালমনিরহাটের পাটগ্রামের হুজুর উদ্দিন সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের একাধিক ছাত্রীর শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠেছে শিক্ষকের বিরুদ্ধে । গতকাল মঙ্গলবার ২৬(নভেম্বর) দুপূরে পাটগ্রাম থানায় লালমনিরহাট জেলা পুলিশ সুপার তরিকুল ইসলাম কে অবগত করেন ভুক্তভোগী ছাত্রী ও তাদের অভিভাবকেরা।

অভিযুক্ত ব্যক্তি ওই বিদ্যালয়েরই গণিত বিভাগের সিনিয়র শিক্ষক নাজিমুল ইসলাম খান। ২০০২ সাল থেকে ২২ বছর ধরে একই স্কুলে কর্মরত ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে গত সোমবার (২৫ নভেম্বর) দুপুরে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে লিখিত অভিযোগ দেন ওই বিদ্যালয়ে অধ্যায়নরত একাধিক ছাত্রীর অভিভাবক। অভিযুক্ত শিক্ষকের বাড়ি পার্শ্ববর্তী হাতীবান্ধা উপজেলার বড়খাতা এলাকায়।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, শিক্ষক নাজিমুল ইসলাম খান দীর্ঘদিন ধরে প্রতিষ্ঠানের ছাত্রীদের সঙ্গে অশ্লীল দৃষ্টিভঙ্গিতে কথা বলে উত্ত্যক্ত করে আসছিলেন। এ ছাড়া টিউটোরিয়াল পরীক্ষায় নম্বর দেওয়ার কথা বলে ভয় দেখিয়ে একাধিক ছাত্রীর সঙ্গে যৌনতায় লিপ্ত হওয়ার চেষ্টা করেন। সামাজিক লজ্জার ভয়ে এতদিন অনেকে মুখ খোলেননি। সম্প্রতি দুজন ছাত্রীর সঙ্গে অনৈতিক প্রস্তাব দিয়ে শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেন নাজিমুল। ভুক্তভোগী ছাত্রীদের বান্ধবীদের মধ্যে বিষয়টি জানাজানি হয়। একপর্যায়ে অভিভাবকরা বিষয়টি জানতে পারেন। এ নিয়ে ছাত্রী ও অভিভাবকদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। পরে ওই বিদ্যালয় থেকে শতাধিক ছাত্রী একটি মিছিল নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে গিয়ে অবস্থান নেয়। এ সময় শিক্ষার্থীরা অভিযুক্ত শিক্ষকের শাস্তি ও বিদ্যালয় থেকে অপসারণের দাবি জানায়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ছাত্রী অভিযোগ করেন, ‘শিক্ষক নাজিমুল ইসলাম খান একজন লম্পট, চরিত্রহীন ব্যক্তি। তিনি প্রায়ই ছাত্রীদের সঙ্গে অশ্লীল ও খারাপ কথা বলেন। শরীরে হাত দেন।’ একাধিক অভিভাবক নাম প্রকাশ না করার শর্তে দাবি করেন, ‘বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকসহ অন্য শিক্ষকরা ছাত্রীদের সঙ্গে ওই শিক্ষকের শ্লীলতাহানির ঘটনা দীর্ঘদিন থেকে জানলেও কোনো ব্যবস্থা নেননি।’

এদিকে অভিযোগ অস্বীকার করে শিক্ষক নাজিমুল ইসলাম খান বলেন, ‘এটি আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। যার স্বার্থে আঘাত লেগেছে, তারা এ ধরনের ষড়যন্ত্র করে হেয় করার চেষ্টা করছে।’ এ ব্যাপারে বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলাম বলেন, ‘শিক্ষক নাজিমুল ইসলাম খানের বিরুদ্ধে ছাত্রীদের শ্লীলতাহানির ঘটনা কয়েক দিন আগে জানতে পেরেছি। ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের একটি কমিটি করা হয়েছে। এ ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হয়েছে।’ এ ঘটনায় পাটগ্রামের ইউএনও নুরুল ইসলাম বলেন, ‘ছাত্রীরা আমার কাছে এসেছে। ঘটনা জানতে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে একটি তদন্ত কমিটি করতে বলেছি। যদি ঘটনা প্রমাণ হয়, তাহলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’