Dhaka ০২:৪২ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীতে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচিতে ব্যপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৭:১৫:৫৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২ অক্টোবর ২০২২
  • ৩৮৮ Time View

 

আনোয়ার হোসেন আরিফ, কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধিঃ

কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার রামখানা ইউনিয়নে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির তথ্য হালনাগাদ (ভেরিফাইড ডাটাবেজ প্রণয়ন কার্যক্রম) করার জন্য সুবিধাভোগীদের কাছ হতে ১৫০ টাকা করে আদায়ের অভিযোগ উঠেছে রামখানা ইউপি চেয়ারম্যান জালাল উদ্দিন এর বিরুদ্ধে। এতে করে তৃণমুল পর্যায়ে সরকারের এ প্রকল্প প্রশ্নের সম্মুখীন হয়ে পড়েছে। সরকার হতদরিদ্র সুবিধাভোগীদের কাছ থেকে কোন প্রকার টাকা না নেওয়ার জন্য ভেরিফাইড ডাটাবেজ প্রণয়নে ১৫ টাকা করে বরাদ্দ দিলেও উল্টো ইউনিয়ন পরিষদের ট্যাক্সের কথা বলে সুবিধাভোগীদের কাছ থেকেই টাকা আদায় করার অভিযোগ উঠেছে সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের বিরুদ্ধে।
উপজেলা খাদ্য অফিস সূত্রে জানা যায়, শেখ হাসিনার বাংলাদেশ ক্ষুধা হবে নিরুদ্দেশ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির নাগেশ্বরী উপজেলার রামখানা ইউনিয়নে মোট ২ হাজার ৪ শত ৯৫ জন অসহায় হতদরিদ্র মানুষদের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়। বছরে ৫ মাস ১০ টাকা কেজি দরে সুবিধাভোগীরা ৩০ কেজি করে চাল দেওয়া হয়। চলতি বছরের ১৩ জুন খাদ্য অধিদপ্তর থেকে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির সুবিধাভোগীদের ডাটাবেজ প্রণয়নের জন্য স্ব স্ব দপ্তরে প্রত্যেক সুবিধাভোগীদের অনলাইন বাবদ ১৫ টাকা করে ব্যয় ধরে চিঠি দেওয়া হয়। সে অনুয়ায়ী খাদ্য দপ্তর প্রতিটি ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারের ইউডিসিদের প্রশিক্ষণ প্রদান করেন।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, নাগেশ্বরী উপজেলার ১ নং রামখানা ইউনিয়নের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির সুবিধাভোগীদের স্বাক্ষর ও স্বাক্ষরবিহীন ট্যাক্স রশিদ হাতে ধরিয়ে দিয়ে ১৫০ টাকা করে নেওয়া হয়েছে। ঐ ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের তালিকায় থাকা ৬২ নং কার্ডধারী রোজিনা বেগমের স্বামী শাহানুর রহমান বলেন, সংশ্লিষ্ট ইউপি সদস্য মোশাররফ হোসেন আমার কাছে কার্ড বাবদ ২০০০ টাকা দাবি করে। আর আমি ঐ ২ হাজার টাকা না দেওয়ায় আমার কার্ড টি কেটে অন্য জনকে দেয়। সাহিদা বেগম বলেন, আমার কাছ হতে চেয়ারম্যান ১৫০ টাকা নিয়েছে।
এসময় পল্লী চিকিৎসক আব্দুস ছাত্তার বলেন, ভূরুঙ্গামারী উপজেলার আন্ধারীঝাড় ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জাবেদ আলী মন্ডলের পরামর্শে রাতে তার চাতালে বসে কমপক্ষে ৬০/৭০ জন অসহায় ব্যক্তির কার্ড কেটে নতুন করে ধনী ব্যক্তিদের ভোটার আইডি দিয়ে অনলাইন করে তালিকায় নাম নিয়ে আসে। সেই দৃশ্য গোপন ক্যামেরায় ধারণ করা রয়েছে।সুবিধাভোগিদের কাছে অর্থ চাওয়ার বিষয়ে ইউপি সদস্য মোশাররফ হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বিষয় টি অস্বীকার করে বলেন, আর কারো কাছে টাকা চাইলাম না শুধু তার কাছেই টাকা চাইলাম।
এবিষয়ে ১ নং রামখানা ইউপি চেয়ারম্যান জালাল উদ্দিনের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, আমরা পরিষদের সিদ্ধান্ত মোতাবেক ট্যাক্সের রশিদের মাধ্যমে ১৫০ টাকা করে পরিষদের ট্যাক্স আদায় করেছি এবং কিছু নাম পরিবর্তন করা হয়েছে এগুলো আমরা জরুরি মিটিংয়ের মাধ্যমে আগামী ৭ দিনের মধ্যে গরীব অসহায় ব্যক্তিদের কর্তনকৃত কার্ড গুলো ঠিক করে দিব।
উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) আবদুল আহাদ এর কাছে জানার জন্য একাধিক বার তার মোবাইল ফোনে কল দিলেও কল রিসিভ করা হয় নি।
এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফারজানা জাহান জানান, আমি ট্রেইনিংয়ে ছিলাম বিষয় টি আমার জানা নেই তবে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির সুবিধাভোগীদের কাছ থেকে যদি কোন প্রকার অর্থ নিয়ে থাকে তাহলে আমাকে অভিযোগ দিলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

আলোচিত

বোয়ালমারীতে চার বছর কর্মস্থলে না গিয়েও বেতন ভাতা নিচ্ছে উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ঝুমা !

কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীতে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচিতে ব্যপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।

Update Time : ০৭:১৫:৫৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২ অক্টোবর ২০২২

 

আনোয়ার হোসেন আরিফ, কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধিঃ

কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার রামখানা ইউনিয়নে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির তথ্য হালনাগাদ (ভেরিফাইড ডাটাবেজ প্রণয়ন কার্যক্রম) করার জন্য সুবিধাভোগীদের কাছ হতে ১৫০ টাকা করে আদায়ের অভিযোগ উঠেছে রামখানা ইউপি চেয়ারম্যান জালাল উদ্দিন এর বিরুদ্ধে। এতে করে তৃণমুল পর্যায়ে সরকারের এ প্রকল্প প্রশ্নের সম্মুখীন হয়ে পড়েছে। সরকার হতদরিদ্র সুবিধাভোগীদের কাছ থেকে কোন প্রকার টাকা না নেওয়ার জন্য ভেরিফাইড ডাটাবেজ প্রণয়নে ১৫ টাকা করে বরাদ্দ দিলেও উল্টো ইউনিয়ন পরিষদের ট্যাক্সের কথা বলে সুবিধাভোগীদের কাছ থেকেই টাকা আদায় করার অভিযোগ উঠেছে সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের বিরুদ্ধে।
উপজেলা খাদ্য অফিস সূত্রে জানা যায়, শেখ হাসিনার বাংলাদেশ ক্ষুধা হবে নিরুদ্দেশ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির নাগেশ্বরী উপজেলার রামখানা ইউনিয়নে মোট ২ হাজার ৪ শত ৯৫ জন অসহায় হতদরিদ্র মানুষদের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়। বছরে ৫ মাস ১০ টাকা কেজি দরে সুবিধাভোগীরা ৩০ কেজি করে চাল দেওয়া হয়। চলতি বছরের ১৩ জুন খাদ্য অধিদপ্তর থেকে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির সুবিধাভোগীদের ডাটাবেজ প্রণয়নের জন্য স্ব স্ব দপ্তরে প্রত্যেক সুবিধাভোগীদের অনলাইন বাবদ ১৫ টাকা করে ব্যয় ধরে চিঠি দেওয়া হয়। সে অনুয়ায়ী খাদ্য দপ্তর প্রতিটি ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারের ইউডিসিদের প্রশিক্ষণ প্রদান করেন।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, নাগেশ্বরী উপজেলার ১ নং রামখানা ইউনিয়নের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির সুবিধাভোগীদের স্বাক্ষর ও স্বাক্ষরবিহীন ট্যাক্স রশিদ হাতে ধরিয়ে দিয়ে ১৫০ টাকা করে নেওয়া হয়েছে। ঐ ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের তালিকায় থাকা ৬২ নং কার্ডধারী রোজিনা বেগমের স্বামী শাহানুর রহমান বলেন, সংশ্লিষ্ট ইউপি সদস্য মোশাররফ হোসেন আমার কাছে কার্ড বাবদ ২০০০ টাকা দাবি করে। আর আমি ঐ ২ হাজার টাকা না দেওয়ায় আমার কার্ড টি কেটে অন্য জনকে দেয়। সাহিদা বেগম বলেন, আমার কাছ হতে চেয়ারম্যান ১৫০ টাকা নিয়েছে।
এসময় পল্লী চিকিৎসক আব্দুস ছাত্তার বলেন, ভূরুঙ্গামারী উপজেলার আন্ধারীঝাড় ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জাবেদ আলী মন্ডলের পরামর্শে রাতে তার চাতালে বসে কমপক্ষে ৬০/৭০ জন অসহায় ব্যক্তির কার্ড কেটে নতুন করে ধনী ব্যক্তিদের ভোটার আইডি দিয়ে অনলাইন করে তালিকায় নাম নিয়ে আসে। সেই দৃশ্য গোপন ক্যামেরায় ধারণ করা রয়েছে।সুবিধাভোগিদের কাছে অর্থ চাওয়ার বিষয়ে ইউপি সদস্য মোশাররফ হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বিষয় টি অস্বীকার করে বলেন, আর কারো কাছে টাকা চাইলাম না শুধু তার কাছেই টাকা চাইলাম।
এবিষয়ে ১ নং রামখানা ইউপি চেয়ারম্যান জালাল উদ্দিনের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, আমরা পরিষদের সিদ্ধান্ত মোতাবেক ট্যাক্সের রশিদের মাধ্যমে ১৫০ টাকা করে পরিষদের ট্যাক্স আদায় করেছি এবং কিছু নাম পরিবর্তন করা হয়েছে এগুলো আমরা জরুরি মিটিংয়ের মাধ্যমে আগামী ৭ দিনের মধ্যে গরীব অসহায় ব্যক্তিদের কর্তনকৃত কার্ড গুলো ঠিক করে দিব।
উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) আবদুল আহাদ এর কাছে জানার জন্য একাধিক বার তার মোবাইল ফোনে কল দিলেও কল রিসিভ করা হয় নি।
এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফারজানা জাহান জানান, আমি ট্রেইনিংয়ে ছিলাম বিষয় টি আমার জানা নেই তবে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির সুবিধাভোগীদের কাছ থেকে যদি কোন প্রকার অর্থ নিয়ে থাকে তাহলে আমাকে অভিযোগ দিলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।