Dhaka ০১:৫৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ফেনীতে নামাজ পড়ালেন মক্কা শরীফের ইমাম।

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৭:১৮:২৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ৮ জানুয়ারী ২০২৩
  • ৬৩৪ Time View
ফেনীতে নামাজ পড়ালেন মক্কা শরীফের ইমাম।
আবুল হাসনাত রিন্টু, ফেনী প্রতিনিধি –
ফেনীর দাগনভূঞায় দারুল উলুম মহিউচ্ছুন্নাহ মাদরাসার ৯ম আন্তর্জাতিক ইসলামি সম্মেলনে জুমার নামাজে খুতবা দেন ও ইমামতি করেন পবিত্র মক্কা শরীফের মসজিদে রেফায়ীর খতিব শায়েখ মুতাসিম বিল্লাহ রাফাত। শুক্রবার (৬ জানুয়ারি) এ জুমার নামাজে অংশ নেন অর্ধ লক্ষাধিক মুসল্লি। জুমার নামাজে খুতবায় পবিত্র মক্কা শরীফের মসজিদে রেফায়ীর খতিব শায়েখ মুতাসিম বিল্লাহ রা’ফাত মুসলিম উম্মাহর শান্তি কামনা করে দোয়া করেন।
৫ ও ৬ জানুয়ারি দুই দিনব্যাপী ইসলামি মহাসম্মেলনে রঘুনাথপুর দারুল উলুম মহিউচ্ছুন্নাহ মাদরাসার মুহতামিম ও এনটিভি লন্ডনের উপস্থাপক মাওলানা সালাহ উদ্দিন জাহাঙ্গীরের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন আন্তর্জাতিক সংস্থা বাংলাদেশের মহাসচিব শায়েখ সাদ সাইফুল্লাহ মাদানী।
প্রধান পরিচালক আবু সুফিয়ানের সঞ্চালনায় সম্মেলনে অতিথি ছিলেন পুলিশের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক আলহাজ মো. মাহবুব হোসেন, জেলা প্রশাসক আবু সেলিম মাহমুদ-উল হাসান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দ্বীন মোহাম্মদ, দাগনভূঞা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাহিদা আক্তার তানিয়া, দাগনভূঞা থানার ওসি হাসান ইমাম, এডভোকেট এম. শাহজাহান সাজু।
শীতে শ্বাসকষ্টের সমস্যা বাড়ার কারণ ও প্রতিরোধের উপায়-অধ্যাপক ডাঃ সাহেদুল ইসলাম ভূঁইয়া কাওসার,
বিএমএ সভাপতি ,ফেনী।
শীতের শুরুতেই শ্বাসকষ্টের নানা ‍উপসর্গ দেখা দিতে পারে। নাক বন্ধভাব, সর্দি, চোখে চুলকানি ও চোখ থেকে জল পড়া, বুকে চাপ চাপ বোধ, কাশি, হাঁচি, দ্রুত শ্বাস-প্রশ্বাস ইত্যাদি উপসর্গ শ্বাসকষ্টের উপসর্গ হিসেবে বলা হয়। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, শ্বাসকষ্ট নিজে কোনো রোগ নয়। এটি অন্যান্য রোগের লক্ষণ হিসেবে দেখা দেয়। শীতকালে দুটি কারণে আক্রান্ত হয় বেশি। তাপমাত্রার পরিবর্তনের কারণে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বা ইমিউন সিস্টেম দুর্বল হয়ে পড়ে। একই সঙ্গে পরিবেশের শুষ্কতার কারণে বাতাসে জলীয়বাষ্পের হার বা আর্দ্রতা কমে যায়। এ কারণে জীবাণু সহজেই শ্বাস-প্রশ্বাসের সঙ্গে ফুসফুসের ভিতরে প্রবেশ করে। কিন্তু শরীর থেকে তা সহজে বের হয় না। তখন জীবাণুরা বংশ বিস্তার করে ও শ্বাসতন্ত্র আক্রমণ করে।
সাধারণভাবে ফুসফুসের অভ্যন্তরের এক রকমের তরল নিঃসৃত হয়, যা ব্রঙ্কিয়াল নিঃসরণ বলা হয়। এই তরলের সাহায্যে শ্বাসতন্ত্রের অভ্যন্তরে থাকা সিলিয়ারি কোষ শ্বাসের মাধ্যমে ফুসফুসে ঢুকে পড়া ধুলাবালি ও জীবাণুকে বের করে দেয়। কিন্তু বাতাসের আর্দ্রতা কমে যাওয়ার কারণে শ্বাসতন্ত্রেও শুষ্কভাব তৈরি হয়। আবার এই সময় পানি কম খাওয়া হয় তাই বঙ্কিয়াল নিঃসরণ কমে যায়। শ্বাসতন্ত্রে শ্বাসকষ্ট-সহ বিভিন্ন রকমের রোগের সৃষ্টি হয়। আবার যাদের আগে থেকেই শ্বাককষ্টের সমস্যা আছে তাদের ঠিক একই কারণে রোগের প্রকোপ বাড়ে। দেখা যায়, এমনিতে যারা সারা বছর শ্বাসকষ্টের সমস্যায় ভোগে না, তাদেরও কাউকে কাউকে শীতকাল ও শুষ্ক মরসুমে ইনহেলার নিতে হয়।
শীতকালে বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ অনেকটা কমে যায়। এর ফলে ধুলার পরিমাণ বেড়ে যায়। এই সময় বায়ুদূষণের পরিমাণও অনেক বেড়ে যায়। ধুলা ও দূষণের ফলে ফুসফুস আক্রান্ত হয় যা শ্বাসকষ্টের সবচেয়ে বড় কারণ। ফুসফুসের অভ্যন্তরের এক রকমের তরল নিঃসৃত হয়, যাকে ব্রঙ্কিয়াল নিঃসরণ বলা হয়। এই তরলের সাহায্যে শ্বাসতন্ত্রের অভ্যন্তরে থাকা সিলিয়ারি কোষ শ্বাসের মাধ্যমে ফুসফুসে ঢুকে পড়া ধুলাবালি ও জীবাণুকে বের করে দেয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, বাতাসের আর্দ্রতা কমে যাওয়ার কারণে শ্বাসতন্ত্রেও শুষ্কভাব তৈরি হয়। আবার এই সময় পানি কম খাওয়া হয় তাই ব্রঙ্কিয়াল নিঃসরণ কমে যায়। শ্বাসতন্ত্রে শ্বাসকষ্ট-সহ বিভিন্ন রকমের রোগের সৃষ্টি হয়। আবার আগে থেকেই শ্বাককষ্টের সমস্যা থেকে থাকলে একই কারণে রোগের প্রকোপ বেড়ে যায়। অনেককেই দেখা যায়, এমনিতে সারা বছর শ্বাসকষ্টের সমস্যায় না ভুগলেও শীতকাল ও শুষ্ক মৌসুমে ইনহেলার নিতে হয়।
শ্বাসকষ্ট হলে যা মাথায় রাখবেন:-
👉শ্বাসকষ্ট যদি দীর্ঘদিন ধরে হতে থাকে, তা সাধারণত ব্রঙ্কাইটিস, টিবি বা যক্ষ্মা, অ্যাজমা, অ্যানিমিয়া বা রক্তশূন্যতার কারণে হয়। তাই দীর্ঘদিনের শ্বাসকষ্ট যদি থাকে, তা যদি অল্প পরিমাণেও হয়, তবু ডাক্তার দেখিয়ে চিকিৎসা নেয়া উচিত।
👉 শৈশবে বা বয়ঃসন্ধিকালের আগে থেকে যদি শ্বাসকষ্টের ইতিহাস থাকে, তা সাধারণত অ্যাজমা বা হাঁপানির জন্য হয়। এ ধরনের রোগীরা বয়স বেশি হলে তীব্র ধরনের অ্যাজমায় আক্রান্তের ঝুঁকিতে থাকে।
👉 সাধারণত অ্যাজমা বা হাঁপানিজনিত শ্বাসকষ্ট রাতে বা ভোরে বেশি হয়। আবার কাশির মতো শ্বাসতন্ত্রের কিছু অসুখের প্রকোপও রাতে বাড়ে।
👉 শ্বাসকষ্টের সঙ্গে যদি জ্বর থাকে, বুকে ব্যথা হয়, শ্বাস নিতে শোঁ শোঁ শব্দ হয়, তা সাধারণত নিউমোনিয়ার মতো ফুসফুসের মারাত্মক জটিলতার জন্য হয়। এ ধরনের লক্ষণ প্রকাশ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা করানো উচিত।
👉 কিডনি-সংক্রান্ত জটিলতা আছে এমন কোন ব্যক্তির যদি হঠাৎ করে শ্বাসকষ্টের সমস্যা শুরু হয় তাহলে অবশ্যই সংশ্লিষ্ট ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। কারণ কিডনি জটিলতায় অনেকের রক্তে এসিডের মাত্রা বেড়ে গিয়ে শ্বাসকষ্টসহ প্রাণঘাতি সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে।
👉 বাড়ির বাইরে বের হওয়ার আগে অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার করুন। বিশেষ করে যাদের শ্বাসের সমস্যা রয়েছে, তারা এই সময়ে মাস্ক ব্যবহার করলে এই সমস্যা কিছুটা কমতে পারে।
* এই সময় ঘরের ভিতরও পরিষ্কার রাখা উচিত। না হলে ঘরের ধুলাও শ্বাসকষ্টের কারণ হয়ে দাঁড়াবে।
👉 শীতকালে নিয়মিত ময়শ্চারাইজার মাখলে ত্বকের শুষ্কতা কমবে। ফলে ধুলার পরিমাণও কিছুটা কমবে। শ্বাসকষ্টও বাড়বে না।
👉 এই সময় অবশ্যই ধূমপানের অভ্যাস ত্যাগ করতে হবে। যাঁদের শ্বাসকষ্টের সমস্যা আছে, তাঁরা যদি শীতে ধূমপান করেন, তাঁদের ফুসফুসের উপর চাপ পড়ে। তাই ধূমপানের অভ্যাস এই সময়ে ছাড়তে হবেই।
যক্ষ্মার চিকিৎসা:-
যক্ষ্মার চিকিৎসার একমাত্র উপায় হলো টিকা এবং ঔষধ । অন্য কোন ধরনের ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের তুলনায় এই রোগের চিকিৎসায় বেশি সময় লাগে। সক্রিয় যক্ষ্মায় আক্রান্ত হলে রোগীকে কমপক্ষে ছয় থেকে নয় মাস পর্যন্ত অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হয়। যদি বমি বমি বমি ভাব , ক্ষুধা হ্রাস, ত্বক হলুদ রঙের হয়ে যায় সেই ক্ষেত্রে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ঔষধ সেবন করতে হবে।
সুপ্ত টিবির জন্য তিনটি চিকিৎসার বিকল্প রয়েছে:
১. আইসোনিয়াজিড – এই অ্যান্টিবায়োটিক ৯ মাসের জন্য নির্ধারিত হয়।
২. রিফাম্পিন: এই ঔষধের কোর্স ৪ মাসের।
৩.আইসোনিয়াজিড এবং রাইফাপেন্টিন: এই দুটি ঔষধ সক্রিয় টিবির জন্য ৬-৯ মাসের জন্য নির্ধারিত হয়।
এছাড়াও চারটি সাধারণ ঔষধের মধ্যে রয়েছে:
১.ইথাম্বুটল
২.আইসোনিয়াজিড
৩.পাইরাজিনামাইড
৪.রিফাম্পিন
ডাক্তার দ্বারা নির্ধারিত ঔষধের সম্পূর্ণ কোর্স সম্পন্ন করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যদি কোন ব্যক্তি অল্প দিনেই চিকিৎসা বন্ধ করে দেয় তাহলে টিবির ব্যাকটেরিয়াগুলো স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক বিপদ ডেকে আনতে পারে। তাই সঠিক ভাবে যক্ষ্মার চিকিৎসা করা উচিত।
Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

আলোচিত

বোয়ালমারীতে চার বছর কর্মস্থলে না গিয়েও বেতন ভাতা নিচ্ছে উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ঝুমা !

ফেনীতে নামাজ পড়ালেন মক্কা শরীফের ইমাম।

Update Time : ০৭:১৮:২৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ৮ জানুয়ারী ২০২৩
ফেনীতে নামাজ পড়ালেন মক্কা শরীফের ইমাম।
আবুল হাসনাত রিন্টু, ফেনী প্রতিনিধি –
ফেনীর দাগনভূঞায় দারুল উলুম মহিউচ্ছুন্নাহ মাদরাসার ৯ম আন্তর্জাতিক ইসলামি সম্মেলনে জুমার নামাজে খুতবা দেন ও ইমামতি করেন পবিত্র মক্কা শরীফের মসজিদে রেফায়ীর খতিব শায়েখ মুতাসিম বিল্লাহ রাফাত। শুক্রবার (৬ জানুয়ারি) এ জুমার নামাজে অংশ নেন অর্ধ লক্ষাধিক মুসল্লি। জুমার নামাজে খুতবায় পবিত্র মক্কা শরীফের মসজিদে রেফায়ীর খতিব শায়েখ মুতাসিম বিল্লাহ রা’ফাত মুসলিম উম্মাহর শান্তি কামনা করে দোয়া করেন।
৫ ও ৬ জানুয়ারি দুই দিনব্যাপী ইসলামি মহাসম্মেলনে রঘুনাথপুর দারুল উলুম মহিউচ্ছুন্নাহ মাদরাসার মুহতামিম ও এনটিভি লন্ডনের উপস্থাপক মাওলানা সালাহ উদ্দিন জাহাঙ্গীরের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন আন্তর্জাতিক সংস্থা বাংলাদেশের মহাসচিব শায়েখ সাদ সাইফুল্লাহ মাদানী।
প্রধান পরিচালক আবু সুফিয়ানের সঞ্চালনায় সম্মেলনে অতিথি ছিলেন পুলিশের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক আলহাজ মো. মাহবুব হোসেন, জেলা প্রশাসক আবু সেলিম মাহমুদ-উল হাসান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দ্বীন মোহাম্মদ, দাগনভূঞা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাহিদা আক্তার তানিয়া, দাগনভূঞা থানার ওসি হাসান ইমাম, এডভোকেট এম. শাহজাহান সাজু।
শীতে শ্বাসকষ্টের সমস্যা বাড়ার কারণ ও প্রতিরোধের উপায়-অধ্যাপক ডাঃ সাহেদুল ইসলাম ভূঁইয়া কাওসার,
বিএমএ সভাপতি ,ফেনী।
শীতের শুরুতেই শ্বাসকষ্টের নানা ‍উপসর্গ দেখা দিতে পারে। নাক বন্ধভাব, সর্দি, চোখে চুলকানি ও চোখ থেকে জল পড়া, বুকে চাপ চাপ বোধ, কাশি, হাঁচি, দ্রুত শ্বাস-প্রশ্বাস ইত্যাদি উপসর্গ শ্বাসকষ্টের উপসর্গ হিসেবে বলা হয়। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, শ্বাসকষ্ট নিজে কোনো রোগ নয়। এটি অন্যান্য রোগের লক্ষণ হিসেবে দেখা দেয়। শীতকালে দুটি কারণে আক্রান্ত হয় বেশি। তাপমাত্রার পরিবর্তনের কারণে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বা ইমিউন সিস্টেম দুর্বল হয়ে পড়ে। একই সঙ্গে পরিবেশের শুষ্কতার কারণে বাতাসে জলীয়বাষ্পের হার বা আর্দ্রতা কমে যায়। এ কারণে জীবাণু সহজেই শ্বাস-প্রশ্বাসের সঙ্গে ফুসফুসের ভিতরে প্রবেশ করে। কিন্তু শরীর থেকে তা সহজে বের হয় না। তখন জীবাণুরা বংশ বিস্তার করে ও শ্বাসতন্ত্র আক্রমণ করে।
সাধারণভাবে ফুসফুসের অভ্যন্তরের এক রকমের তরল নিঃসৃত হয়, যা ব্রঙ্কিয়াল নিঃসরণ বলা হয়। এই তরলের সাহায্যে শ্বাসতন্ত্রের অভ্যন্তরে থাকা সিলিয়ারি কোষ শ্বাসের মাধ্যমে ফুসফুসে ঢুকে পড়া ধুলাবালি ও জীবাণুকে বের করে দেয়। কিন্তু বাতাসের আর্দ্রতা কমে যাওয়ার কারণে শ্বাসতন্ত্রেও শুষ্কভাব তৈরি হয়। আবার এই সময় পানি কম খাওয়া হয় তাই বঙ্কিয়াল নিঃসরণ কমে যায়। শ্বাসতন্ত্রে শ্বাসকষ্ট-সহ বিভিন্ন রকমের রোগের সৃষ্টি হয়। আবার যাদের আগে থেকেই শ্বাককষ্টের সমস্যা আছে তাদের ঠিক একই কারণে রোগের প্রকোপ বাড়ে। দেখা যায়, এমনিতে যারা সারা বছর শ্বাসকষ্টের সমস্যায় ভোগে না, তাদেরও কাউকে কাউকে শীতকাল ও শুষ্ক মরসুমে ইনহেলার নিতে হয়।
শীতকালে বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ অনেকটা কমে যায়। এর ফলে ধুলার পরিমাণ বেড়ে যায়। এই সময় বায়ুদূষণের পরিমাণও অনেক বেড়ে যায়। ধুলা ও দূষণের ফলে ফুসফুস আক্রান্ত হয় যা শ্বাসকষ্টের সবচেয়ে বড় কারণ। ফুসফুসের অভ্যন্তরের এক রকমের তরল নিঃসৃত হয়, যাকে ব্রঙ্কিয়াল নিঃসরণ বলা হয়। এই তরলের সাহায্যে শ্বাসতন্ত্রের অভ্যন্তরে থাকা সিলিয়ারি কোষ শ্বাসের মাধ্যমে ফুসফুসে ঢুকে পড়া ধুলাবালি ও জীবাণুকে বের করে দেয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, বাতাসের আর্দ্রতা কমে যাওয়ার কারণে শ্বাসতন্ত্রেও শুষ্কভাব তৈরি হয়। আবার এই সময় পানি কম খাওয়া হয় তাই ব্রঙ্কিয়াল নিঃসরণ কমে যায়। শ্বাসতন্ত্রে শ্বাসকষ্ট-সহ বিভিন্ন রকমের রোগের সৃষ্টি হয়। আবার আগে থেকেই শ্বাককষ্টের সমস্যা থেকে থাকলে একই কারণে রোগের প্রকোপ বেড়ে যায়। অনেককেই দেখা যায়, এমনিতে সারা বছর শ্বাসকষ্টের সমস্যায় না ভুগলেও শীতকাল ও শুষ্ক মৌসুমে ইনহেলার নিতে হয়।
শ্বাসকষ্ট হলে যা মাথায় রাখবেন:-
👉শ্বাসকষ্ট যদি দীর্ঘদিন ধরে হতে থাকে, তা সাধারণত ব্রঙ্কাইটিস, টিবি বা যক্ষ্মা, অ্যাজমা, অ্যানিমিয়া বা রক্তশূন্যতার কারণে হয়। তাই দীর্ঘদিনের শ্বাসকষ্ট যদি থাকে, তা যদি অল্প পরিমাণেও হয়, তবু ডাক্তার দেখিয়ে চিকিৎসা নেয়া উচিত।
👉 শৈশবে বা বয়ঃসন্ধিকালের আগে থেকে যদি শ্বাসকষ্টের ইতিহাস থাকে, তা সাধারণত অ্যাজমা বা হাঁপানির জন্য হয়। এ ধরনের রোগীরা বয়স বেশি হলে তীব্র ধরনের অ্যাজমায় আক্রান্তের ঝুঁকিতে থাকে।
👉 সাধারণত অ্যাজমা বা হাঁপানিজনিত শ্বাসকষ্ট রাতে বা ভোরে বেশি হয়। আবার কাশির মতো শ্বাসতন্ত্রের কিছু অসুখের প্রকোপও রাতে বাড়ে।
👉 শ্বাসকষ্টের সঙ্গে যদি জ্বর থাকে, বুকে ব্যথা হয়, শ্বাস নিতে শোঁ শোঁ শব্দ হয়, তা সাধারণত নিউমোনিয়ার মতো ফুসফুসের মারাত্মক জটিলতার জন্য হয়। এ ধরনের লক্ষণ প্রকাশ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা করানো উচিত।
👉 কিডনি-সংক্রান্ত জটিলতা আছে এমন কোন ব্যক্তির যদি হঠাৎ করে শ্বাসকষ্টের সমস্যা শুরু হয় তাহলে অবশ্যই সংশ্লিষ্ট ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। কারণ কিডনি জটিলতায় অনেকের রক্তে এসিডের মাত্রা বেড়ে গিয়ে শ্বাসকষ্টসহ প্রাণঘাতি সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে।
👉 বাড়ির বাইরে বের হওয়ার আগে অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার করুন। বিশেষ করে যাদের শ্বাসের সমস্যা রয়েছে, তারা এই সময়ে মাস্ক ব্যবহার করলে এই সমস্যা কিছুটা কমতে পারে।
* এই সময় ঘরের ভিতরও পরিষ্কার রাখা উচিত। না হলে ঘরের ধুলাও শ্বাসকষ্টের কারণ হয়ে দাঁড়াবে।
👉 শীতকালে নিয়মিত ময়শ্চারাইজার মাখলে ত্বকের শুষ্কতা কমবে। ফলে ধুলার পরিমাণও কিছুটা কমবে। শ্বাসকষ্টও বাড়বে না।
👉 এই সময় অবশ্যই ধূমপানের অভ্যাস ত্যাগ করতে হবে। যাঁদের শ্বাসকষ্টের সমস্যা আছে, তাঁরা যদি শীতে ধূমপান করেন, তাঁদের ফুসফুসের উপর চাপ পড়ে। তাই ধূমপানের অভ্যাস এই সময়ে ছাড়তে হবেই।
যক্ষ্মার চিকিৎসা:-
যক্ষ্মার চিকিৎসার একমাত্র উপায় হলো টিকা এবং ঔষধ । অন্য কোন ধরনের ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের তুলনায় এই রোগের চিকিৎসায় বেশি সময় লাগে। সক্রিয় যক্ষ্মায় আক্রান্ত হলে রোগীকে কমপক্ষে ছয় থেকে নয় মাস পর্যন্ত অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হয়। যদি বমি বমি বমি ভাব , ক্ষুধা হ্রাস, ত্বক হলুদ রঙের হয়ে যায় সেই ক্ষেত্রে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ঔষধ সেবন করতে হবে।
সুপ্ত টিবির জন্য তিনটি চিকিৎসার বিকল্প রয়েছে:
১. আইসোনিয়াজিড – এই অ্যান্টিবায়োটিক ৯ মাসের জন্য নির্ধারিত হয়।
২. রিফাম্পিন: এই ঔষধের কোর্স ৪ মাসের।
৩.আইসোনিয়াজিড এবং রাইফাপেন্টিন: এই দুটি ঔষধ সক্রিয় টিবির জন্য ৬-৯ মাসের জন্য নির্ধারিত হয়।
এছাড়াও চারটি সাধারণ ঔষধের মধ্যে রয়েছে:
১.ইথাম্বুটল
২.আইসোনিয়াজিড
৩.পাইরাজিনামাইড
৪.রিফাম্পিন
ডাক্তার দ্বারা নির্ধারিত ঔষধের সম্পূর্ণ কোর্স সম্পন্ন করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যদি কোন ব্যক্তি অল্প দিনেই চিকিৎসা বন্ধ করে দেয় তাহলে টিবির ব্যাকটেরিয়াগুলো স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক বিপদ ডেকে আনতে পারে। তাই সঠিক ভাবে যক্ষ্মার চিকিৎসা করা উচিত।