অপচিকিৎসায় চোখ নষ্ট; চিকিৎসকের বিচার দাবীতে সংবাদ সম্মেলন
মাহাবুবুল আলম সোহাগ, ময়মনসিংহঃ
অপচিকিৎসায় চোখের দৃষ্টি নষ্টের অভিযোগে চিকিৎসক প্রফেসর ডাঃ দীপক কুমার নাগের বিচার দাবীতে সংবাদ সম্মেলন করেছে ভুক্তভোগী চিকিৎসক মাহজাবিন হক। বুধবার দুপুরে নগরীর প্রেসক্লাব মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে চিকিৎসক দীপক কুমার নাগের বিরুদ্ধে লিখিত বক্তব্যে ডাঃ মাহজাবিন হক বলেন, আমি গত ১ জুন চোখের সমস্যা নিয়ে ঢাকাস্থ দীন মোহাম্মদ চক্ষু হাসপাতালে দেশের নামকরা রেটিনা স্পেশালিষ্ট প্রফেসর ডাঃ দীপক কুমার নাগের প্রাইভেট চেম্বারে সাক্ষাৎ করি। পরে তিনি রেটিনা পরীক্ষা করে ডান চোখে লেট্টিসি ও বাম চোখে ডব্লিউ ডব্লিউওপি সমস্যা আছে নির্ণয় করে অতি দ্রুত দুই চোখেই লেজার অপারেশন করতে বলে এবং ৫ জুনের মধ্যে অপারেশন না করলে যে কোন মূহুর্তে আমি অন্ধ হয়ে যেতে পারি। উনার কথায় রীতিমতো বাধ্য হয়ে ঐদিনই তিনি আমার ডান চোখে ৪৫ ও বাম চোখে লেজার প্রয়োগ করলেন। দীর্ঘ ২৫ মিনিট এক অবর্ণনীয় নরক যন্ত্রণা ভোগ করে আমি ভীষণ অসুস্থ হয়ে পড়ি। রাতে ডান চোখের যন্ত্রণায় ঘুমাতে পারিনি। সকালে সোজা তাকালে নিচের দিকে কিছুই দেখি না। একই সাথে যেদিকে তাকাই রাউন্ড পয়সার মত ব্লাকশেডো চোখের দৃষ্টিকে বাধাগ্রস্থ করে রাখছে। পরে পূর্ব নির্ধারিত NIOH এর বোর্ডের সামনে গিয়ে হাজির হলে। বোর্ডের সদস্যরা বলেন, লেজার প্রয়োগের মাত্রা ও সময়ের ব্যাপ্তিটা স্বাভাবিক মাত্রা থেকে অনেক বেশি হয়েছে। একই সাথে দুই চোখে লেজার প্রয়োগ করাটা চিকিৎসাশাস্ত্রে কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। তাছাড়া একচোখে ১৫ মিনিটের বেশি লেজার প্রয়োগ করাটা গ্রহণযোগ্য নয়। পরে আমি উন্নত চিকিৎসার জন্য থাইল্যান্ডের বামরুনগ্রাদ হাসপাতালে গিয়ে পরীক্ষা নিরিক্ষার করালে, সেখানকার চক্ষু বিশেষজ্ঞদের মতে, আমার ডান চোখেের প্রায় ৩৩% দৃষ্টি শক্তি স্থায়ীভাবে নষ্ট হয়ে গেছে, যা পৃথিবীর কোথাও কোন চিকিৎসায় আর ভালো হবে না। বাকী জীবন আমাকে ডান চোখের ৩৩% অন্ধত্ব নিয়ে বেঁচে থাকতে হবে। এই ঘটনার প্রতিকার চেয়ে আমার পরিবারের পক্ষ থেকে প্রফেসর ডাঃ দীপক কুমার নাগকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেছে। আমি চাই আমাদের দেশে ডাঃ দীপক কুমার নাগের মতো অর্থ লিপসু চিকিৎসককে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে চিকিৎসক সমাজের সুনাম অক্ষুণ্ণ রাখার পথ প্রশস্ত করা হোক।
এ-সময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসেন বাবুল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এমএ কুদ্দুস, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শওকত জাহান মুকুল, সাংগঠনিক সম্পাদক দীন ইসলাম ফখরুল, শিক্ষা ও মানবসম্পদ সম্পাদক অধ্যাপক তাসলিমা, মসিকের প্যানেল মেয়র-৩ সামীমা আক্তার, জেলা মহিলা পরিষদের সভাপতি মনিরা সুলতানা, জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট পীযূষ কান্তি সরকার, জেলা নাগরিক আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা ইঞ্জিনিয়ার নুরুল আমিন কালাম, মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি এডভোকেট রাখাল চন্দ্র সরকার, নাসিরাবাদ কলেজের অধ্যক্ষ আহমেদ শফি, জেলা মানবাধিকার কমিশনের সভাপতি এডভোকেট শিব্বির আহমেদ লিটন, চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সহসভাপতি শংকর সাহা, ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি অনুপম সাহা, নারী ফোরামের সভাপতি সৈয়দা সেলিমা আজাদ, জেলা যুব মহিলা লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক স্বপ্না খন্দকার, নারী উদ্যোক্তা আইনুন নাহারসহ প্রমূখ।