Dhaka ১০:৫০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

“আত্মহনন এক সামাজিক ব্যাধি”

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৭:০১:৩১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১২ অক্টোবর ২০২২
  • ৯৮৫ Time View

আত্মহনন এক সামাজিক ব্যাধি

মোঃ আজিজুল হক রতন সরকার।

ঘুম থেকে উঠে খবরের কাগজ খুলে বসলেই চোখ আটকে যায় “আত্মহত্যা” শিরোনামে।এ ঘটনা যেন এখন নিত্যকার বিষয়। নিম্নবিত্ত থেকে শুরু করে মধ্যবিত্ত এমনকী উচ্চবিত্তদের মাঝেও আত্মহত্যার প্রবণতা লক্ষণীয়। শিক্ষার্থীই থেকে শুরু করে বয়স্ক প্রাপ্তবয়স্ক সকলের মাঝেই আত্মহত্যা যেন মহামারীর রূপ নিয়েছে। করোনা মহামারীতে এই  সংখ্যা বাড়লেও করোনা পরবর্তীকালেও কমেনি এই শতকরা হিসাব।উল্টো যেন দিন দিন বেড়েই চলেছে ভয়ংকর এই প্রবণতা।পারিবারিক কলহ, প্রেমঘটিত জটিলতা, বেকারত্ব, নিঃসঙ্গতা, মানসিক চাপ, তীব্র বিষণ্নতা থেকে অনেকে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন। সমাজবিজ্ঞানীদের মতে, দেশে তরুণদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা বেশি। শিক্ষাজীবন শেষ করার পর চাকরি না পাওয়া, জীবনের প্রতি হতাশা, প্রেমে ব্যর্থতা, নারীদের ক্ষেত্রে ধর্ষণের শিকার হওয়ায় সামাজিক লজ্জা, বিয়ের পর যৌতুকের টাকার জোগান দিতে না পারা, সামাজিক নিরাপত্তার অভাব, চরম দারিদ্র্য-এরকম নানা বিষয়কে কেন্দ্র করে আত্মহত্যার ঘটনা ঘটছে।বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গবেষণার তথ্য অনুযায়ী, প্রতি বছর বিশ্বে আত্মহত্যা করে ৮ লাখ মানুষ। দৈনিক এ হার ২ হাজার ১৯১ এবং প্রতি লাখে ১৬ জন। গত ৫০ বছরে সারা বিশ্বে, বিশেষ করে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে আত্মহত্যার হার বেড়েছে ৬০ শতাংশ। এর মধ্যে বাংলাদেশে আত্মহত্যার প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে ২ দশমিক ৬ শতাংশ। প্রতি বছরই এ হার বৃদ্ধি পাচ্ছে। গণমাধ্যম সূত্রে প্রাপ্ত তথ্যানুসারে, বিশ্বে প্রতি ৪০ সেকেন্ডে একজন এবং বাংলাদেশে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৩৫ জন মানুষ আত্মহত্যা করছে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা যায়, বাংলাদেশে ৬ বছরে প্রায় ৭০ হাজার মানুষ আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) তথ্যমতে, ২০১৬ সালে বাংলাদেশে আত্মহত্যা করেছে ১০ হাজার ৭৪৯ জন। ২০১৭ ও ২০১৮ সালে দেশে আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে যথাক্রমে ১০ হাজার ২৫৬ ও ১১ হাজার। ২০১৯-২০ সময়কালে করোনার সময়ে বাংলাদেশে আত্মহত্যা করেছে ১৪ হাজার ৪৩৬ জন, যাদের মধ্যে ২০-৩৫ বয়সিরাই সবচেয়ে বেশি। স্বাভাবিক সময়ে মেয়েদের আত্মহত্যার প্রবণতা বেশি হলেও এ সময়ে মেয়েদের তুলনায় ছেলেদের আত্মহত্যার পরিমাণ ছিল তিন গুণ। ডিএমপি সূত্রে আরও জানা যায়, ২০২০ সালের এপ্রিল থেকে ২০২১ সালের ৩১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ঢাকায় আত্মহত্যাজনিত অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে ২ হাজার ১৬৬টি। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সূত্রে জানা যায়, ২০২১ সালে ১১ হাজারের বেশি মানুষ আত্মহত্যা করেছে।
পুলিশ সদর দপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, বাংলাদেশে প্রতি বছর গড়ে ১০ হাজার মানুষ শুধু ফাঁসিতে ঝুলে ও বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করে। এ ছাড়াও রয়েছে ঘুমের ওষুধ খাওয়া, ছাদ থেকে লাফ দিয়ে পড়া, রেল লাইনে ঝাঁপ দেওয়া ইত্যাদি। সংস্থাটির মতে, দেশের হাসপাতালগুলোর জরুরি বিভাগে যত রোগী ভর্তি হয়, তার সর্বোচ্চ ২০ ভাগ আত্মহত্যার চেষ্টা করে ব্যর্থ হওয়া লোকজন।সমাজবিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. নেহাল করিম মনে করেন আর্থিক ও সামাজিক বৈষম্য মানুষকে হতাশায় ফেলে দিচ্ছে৷ আর এই হতাশা থেকে আত্মহত্যার প্রবণতা বাড়ছে৷ এটা শুধু বাংলাদেশে নয় সারাবিশ্বের চিত্র৷ এর বাইরে ব্যক্তিগত ও পারিবারিক কারণেও মানুষ আত্মহত্যার  দিকে ধাবিত হচ্ছে৷ নিজেকে যখন কেউ অপ্রয়োজনীয় মনে করেন, জীবন অর্থহীন মনে করেন তখন আত্মঘাতী হন৷ তবে এইসব কারণের মূল উপাদান রাষ্ট্র ও সমাজেই বেশি৷

রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) বলছে, কোভিড অতিমারির সময় বাংলাদেশে পরিচালিত কয়েকটি গবেষণায় ৪৬ শতাংশের মধ্যে বিষন্নতা, ৩৩ শতাংশের মধ্যে দুশ্চিন্তার লক্ষণ পাওয়া গেছে৷
বাংলাদেশে এখন প্রতিদিন গড়ে ৩৫ জন মানুষ আত্মহত্যা করছেন৷ আর বাড়ছে শিক্ষার্থীদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা৷ এমনকি বিত্তবানেরাও আত্মহত্যা করছেন।চলতি বছরের প্রথম ৯ মাসে (জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর) ৪০৪ শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছে। যার মধ্যে নারী শিক্ষার্থী রয়েছে ২৪২ জন। বেসরকারি সংস্থা আঁচল ফাউন্ডেশনের ‘মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর একাডেমিক চাপের প্রভাব এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যার প্রবণতা’ শীর্ষক জরিপে এ তথ্য উঠে আসে। গতকাল শনিবার ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়।সম্মেলনে আরো বলা হয়েছে, এ বছরের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আত্মহত্যা করেছে ৪০৪ শিক্ষার্থী। এর মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৭ শিক্ষার্থী, স্কুলের ২১৯, মাদরাসার ৪৪ জন এবং কলেজ পড়ুয়া ৮৪ জন। আত্মহননকারীদের মধ্যে নারী শিক্ষার্থী ২৪২ জন এবং পুরুষ শিক্ষার্থী ১৬২ জন। শিক্ষার্থীদের ওপর একাডেমিক চাপ তাদের আত্মহত্যার পেছনে কতটুকু দায়ী এবং অন্যান্য কী কী কারণ জড়িত, তা জানার লক্ষ্যেই এ গবেষণা জরিপ পরিচালিত হয়।এ জরিপে আরো জানা যায় করোনা পরবর্তী সময়ে ১ হাজার ৬৪০ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ৪০ জন বা ২ দশমিক ৪৪ শতাংশ শিক্ষার্থী জানিয়েছেন, তারা আত্মহত্যার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছেন। আত্মহত্যার উপকরণ জোগাড় করেও শেষ মুহূর্তে পিছিয়ে এসেছেন বলে জানিয়েছেন ৪ দশমিক ৭৬ শতাংশ শিক্ষার্থী। করোনা পরবর্তী সময়ে আত্মহত্যা করার কথা মাথায় এসেছে ৩৪ দশমিক ১৫ শতাংশ শিক্ষার্থীর। বর্তমানে আত্মহত্যা যেন এক মানুষিক অসুখে পরিণত হচ্ছে।তবে আমরা চাইলেই এর প্রতিকার করতে পারি।মানুষ তখনই আত্মহননের পথ বেছে নেয় যখন সে অস্তিত্ব সংকটে ভোগে।আমরা আমাদের পরিবারের সকল সদস্যের পাশে বন্ধুর মত থাকতে পারি,তাদের খারাপ সময়ে তাদেরকে হেয় প্রতিপন্ন না করে তাদেরকে সাহস যোগাতে পারি। প্রত্যেক বাবা মার উচিত সন্তানের ব্যর্থতায় তাকে তিরষ্কার না করে উৎসাহ দেওয়া।করো মানুষিক অবস্থা নিয়ে হাসি ঠাট্টা না করা।আপনার একটি মসকরার কারণ হতে পারে একজনের মৃত্যু।আত্মহত্যা একটি প্রতিরোধযোগ্য বিষয়। সঠিক সময়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারলে অবশ্যই আত্মহত্যা ঠেকানো যায়। এ জন্য সবাইকে যার যার ক্ষেত্র থেকে একযোগে কাজ করে যেতে হবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

আলোচিত

বোয়ালমারীতে চার বছর কর্মস্থলে না গিয়েও বেতন ভাতা নিচ্ছে উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ঝুমা !

“আত্মহনন এক সামাজিক ব্যাধি”

Update Time : ০৭:০১:৩১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১২ অক্টোবর ২০২২

আত্মহনন এক সামাজিক ব্যাধি

মোঃ আজিজুল হক রতন সরকার।

ঘুম থেকে উঠে খবরের কাগজ খুলে বসলেই চোখ আটকে যায় “আত্মহত্যা” শিরোনামে।এ ঘটনা যেন এখন নিত্যকার বিষয়। নিম্নবিত্ত থেকে শুরু করে মধ্যবিত্ত এমনকী উচ্চবিত্তদের মাঝেও আত্মহত্যার প্রবণতা লক্ষণীয়। শিক্ষার্থীই থেকে শুরু করে বয়স্ক প্রাপ্তবয়স্ক সকলের মাঝেই আত্মহত্যা যেন মহামারীর রূপ নিয়েছে। করোনা মহামারীতে এই  সংখ্যা বাড়লেও করোনা পরবর্তীকালেও কমেনি এই শতকরা হিসাব।উল্টো যেন দিন দিন বেড়েই চলেছে ভয়ংকর এই প্রবণতা।পারিবারিক কলহ, প্রেমঘটিত জটিলতা, বেকারত্ব, নিঃসঙ্গতা, মানসিক চাপ, তীব্র বিষণ্নতা থেকে অনেকে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন। সমাজবিজ্ঞানীদের মতে, দেশে তরুণদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা বেশি। শিক্ষাজীবন শেষ করার পর চাকরি না পাওয়া, জীবনের প্রতি হতাশা, প্রেমে ব্যর্থতা, নারীদের ক্ষেত্রে ধর্ষণের শিকার হওয়ায় সামাজিক লজ্জা, বিয়ের পর যৌতুকের টাকার জোগান দিতে না পারা, সামাজিক নিরাপত্তার অভাব, চরম দারিদ্র্য-এরকম নানা বিষয়কে কেন্দ্র করে আত্মহত্যার ঘটনা ঘটছে।বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গবেষণার তথ্য অনুযায়ী, প্রতি বছর বিশ্বে আত্মহত্যা করে ৮ লাখ মানুষ। দৈনিক এ হার ২ হাজার ১৯১ এবং প্রতি লাখে ১৬ জন। গত ৫০ বছরে সারা বিশ্বে, বিশেষ করে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে আত্মহত্যার হার বেড়েছে ৬০ শতাংশ। এর মধ্যে বাংলাদেশে আত্মহত্যার প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে ২ দশমিক ৬ শতাংশ। প্রতি বছরই এ হার বৃদ্ধি পাচ্ছে। গণমাধ্যম সূত্রে প্রাপ্ত তথ্যানুসারে, বিশ্বে প্রতি ৪০ সেকেন্ডে একজন এবং বাংলাদেশে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৩৫ জন মানুষ আত্মহত্যা করছে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা যায়, বাংলাদেশে ৬ বছরে প্রায় ৭০ হাজার মানুষ আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) তথ্যমতে, ২০১৬ সালে বাংলাদেশে আত্মহত্যা করেছে ১০ হাজার ৭৪৯ জন। ২০১৭ ও ২০১৮ সালে দেশে আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে যথাক্রমে ১০ হাজার ২৫৬ ও ১১ হাজার। ২০১৯-২০ সময়কালে করোনার সময়ে বাংলাদেশে আত্মহত্যা করেছে ১৪ হাজার ৪৩৬ জন, যাদের মধ্যে ২০-৩৫ বয়সিরাই সবচেয়ে বেশি। স্বাভাবিক সময়ে মেয়েদের আত্মহত্যার প্রবণতা বেশি হলেও এ সময়ে মেয়েদের তুলনায় ছেলেদের আত্মহত্যার পরিমাণ ছিল তিন গুণ। ডিএমপি সূত্রে আরও জানা যায়, ২০২০ সালের এপ্রিল থেকে ২০২১ সালের ৩১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ঢাকায় আত্মহত্যাজনিত অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে ২ হাজার ১৬৬টি। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সূত্রে জানা যায়, ২০২১ সালে ১১ হাজারের বেশি মানুষ আত্মহত্যা করেছে।
পুলিশ সদর দপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, বাংলাদেশে প্রতি বছর গড়ে ১০ হাজার মানুষ শুধু ফাঁসিতে ঝুলে ও বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করে। এ ছাড়াও রয়েছে ঘুমের ওষুধ খাওয়া, ছাদ থেকে লাফ দিয়ে পড়া, রেল লাইনে ঝাঁপ দেওয়া ইত্যাদি। সংস্থাটির মতে, দেশের হাসপাতালগুলোর জরুরি বিভাগে যত রোগী ভর্তি হয়, তার সর্বোচ্চ ২০ ভাগ আত্মহত্যার চেষ্টা করে ব্যর্থ হওয়া লোকজন।সমাজবিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. নেহাল করিম মনে করেন আর্থিক ও সামাজিক বৈষম্য মানুষকে হতাশায় ফেলে দিচ্ছে৷ আর এই হতাশা থেকে আত্মহত্যার প্রবণতা বাড়ছে৷ এটা শুধু বাংলাদেশে নয় সারাবিশ্বের চিত্র৷ এর বাইরে ব্যক্তিগত ও পারিবারিক কারণেও মানুষ আত্মহত্যার  দিকে ধাবিত হচ্ছে৷ নিজেকে যখন কেউ অপ্রয়োজনীয় মনে করেন, জীবন অর্থহীন মনে করেন তখন আত্মঘাতী হন৷ তবে এইসব কারণের মূল উপাদান রাষ্ট্র ও সমাজেই বেশি৷

রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) বলছে, কোভিড অতিমারির সময় বাংলাদেশে পরিচালিত কয়েকটি গবেষণায় ৪৬ শতাংশের মধ্যে বিষন্নতা, ৩৩ শতাংশের মধ্যে দুশ্চিন্তার লক্ষণ পাওয়া গেছে৷
বাংলাদেশে এখন প্রতিদিন গড়ে ৩৫ জন মানুষ আত্মহত্যা করছেন৷ আর বাড়ছে শিক্ষার্থীদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা৷ এমনকি বিত্তবানেরাও আত্মহত্যা করছেন।চলতি বছরের প্রথম ৯ মাসে (জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর) ৪০৪ শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছে। যার মধ্যে নারী শিক্ষার্থী রয়েছে ২৪২ জন। বেসরকারি সংস্থা আঁচল ফাউন্ডেশনের ‘মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর একাডেমিক চাপের প্রভাব এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যার প্রবণতা’ শীর্ষক জরিপে এ তথ্য উঠে আসে। গতকাল শনিবার ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়।সম্মেলনে আরো বলা হয়েছে, এ বছরের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আত্মহত্যা করেছে ৪০৪ শিক্ষার্থী। এর মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৭ শিক্ষার্থী, স্কুলের ২১৯, মাদরাসার ৪৪ জন এবং কলেজ পড়ুয়া ৮৪ জন। আত্মহননকারীদের মধ্যে নারী শিক্ষার্থী ২৪২ জন এবং পুরুষ শিক্ষার্থী ১৬২ জন। শিক্ষার্থীদের ওপর একাডেমিক চাপ তাদের আত্মহত্যার পেছনে কতটুকু দায়ী এবং অন্যান্য কী কী কারণ জড়িত, তা জানার লক্ষ্যেই এ গবেষণা জরিপ পরিচালিত হয়।এ জরিপে আরো জানা যায় করোনা পরবর্তী সময়ে ১ হাজার ৬৪০ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ৪০ জন বা ২ দশমিক ৪৪ শতাংশ শিক্ষার্থী জানিয়েছেন, তারা আত্মহত্যার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছেন। আত্মহত্যার উপকরণ জোগাড় করেও শেষ মুহূর্তে পিছিয়ে এসেছেন বলে জানিয়েছেন ৪ দশমিক ৭৬ শতাংশ শিক্ষার্থী। করোনা পরবর্তী সময়ে আত্মহত্যা করার কথা মাথায় এসেছে ৩৪ দশমিক ১৫ শতাংশ শিক্ষার্থীর। বর্তমানে আত্মহত্যা যেন এক মানুষিক অসুখে পরিণত হচ্ছে।তবে আমরা চাইলেই এর প্রতিকার করতে পারি।মানুষ তখনই আত্মহননের পথ বেছে নেয় যখন সে অস্তিত্ব সংকটে ভোগে।আমরা আমাদের পরিবারের সকল সদস্যের পাশে বন্ধুর মত থাকতে পারি,তাদের খারাপ সময়ে তাদেরকে হেয় প্রতিপন্ন না করে তাদেরকে সাহস যোগাতে পারি। প্রত্যেক বাবা মার উচিত সন্তানের ব্যর্থতায় তাকে তিরষ্কার না করে উৎসাহ দেওয়া।করো মানুষিক অবস্থা নিয়ে হাসি ঠাট্টা না করা।আপনার একটি মসকরার কারণ হতে পারে একজনের মৃত্যু।আত্মহত্যা একটি প্রতিরোধযোগ্য বিষয়। সঠিক সময়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারলে অবশ্যই আত্মহত্যা ঠেকানো যায়। এ জন্য সবাইকে যার যার ক্ষেত্র থেকে একযোগে কাজ করে যেতে হবে।