Dhaka ০৮:৫৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

খুলনার কয়রায় বরাদ্দের বেশিরভাগ টাকা লোপাট হয়েছে।

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৬:৪২:২৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৩
  • ৫৭৯ Time View
খুলনার কয়রায় বরাদ্দের বেশিরভাগ টাকা লোপাট হয়েছে।
মোঃ শামীম হোসেন – খুলনা –
খুলনার কয়রা উপজেলায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) ১৮টি স্থানে বাঁধ মেরামত কাজের বেশিরভাগই শেষ হয়েছে বরাদ্দের অর্ধেকেরও কম টাকায়। কিছু স্থানে নামমাত্র কাজ করে শেষ দেখানো হয়েছে। আবার অপ্রয়োজনীয় স্থানেও প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে। এসব কাজের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের দাবি, তারা পাউবোর দেওয়া নকশা ও প্রাক্কলন অনুসরণ করে কাজ করেছে। স্থানীয় মানুষের অভিযোগ, ঝুঁকিপূর্ণ ও ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ প্রকল্প তালিকায় না রেখে অপেক্ষাকৃত কম ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ তালিকায় রেখে নকশা প্রস্তুত করা হয়েছে। বরাদ্দের অর্থ আত্মসাতের উদ্দেশ্যে আগে থেকেই যোগসাজশে প্রাক্কলন ও নকশায় এমন ‘ঘাপলা’ করেছেন সংশ্নিষ্টরা। যে কারণে এত কম টাকায় কাজ শেষ করেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো। পাউবো সূত্রে জানা গেছে, ২০২১-২২ এবং চলতি অর্থবছরে উপজেলার দুটি পোল্ডারে জরুরি ভিত্তিতে বাঁধ মেরামতে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতির (ডিপিএম) আওতায় ১৮টি স্থান নির্ধারণ করা হয়। প্রথমে এসব স্থানে পাউবোর দায়িত্বরত প্রকৌশলীরা কাজের প্রাক্কলন ও নকশা প্রস্তুত করেন। সেই অনুযায়ী ৪ কোটি ৮৩ লাখ ৬২ হাজার টাকা বরাদ্দ নির্ধারণ করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে দরপত্র ছাড়াই কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয়। এর মধ্যে দুটি পোল্ডারের ১২টি স্থানের কাজ দেওয়া হয়েছে যশোর জেলার কেশবপুরের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তানিয়া এন্টারপ্রাইজের মালিক আব্দুল মতিনকে। বাকি ছয়টি স্থানের মধ্যে চারটি স্থানীয় ঠিকাদার মোজাফ্ফর হোসেন এবং অন্য দুটি স্থানের কাজ করেছেন সিরাজউদ্দৌলা ও খলিলুর রহমান নামের দুই ঠিকাদার। চোরামুখা এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, চারটি স্থানে ১ হাজার ২০ মিটার বাঁধে রিং-ডাইক ও অস্থায়ী ঢাল সংরক্ষণ কাজ শেষ হয়েছে। ১ কোটি ১৬ লাখ ২২ হাজার টাকা বরাদ্দের ওই কাজ মাত্র ২০ লাখ টাকায় শেষ করেছেন ঠিকাদার। ওই চারটি কাজের স্থানের দুটিতে মাটির কাজই হয়নি। কাজের ঠিকাদার ও স্থানীয় ইউপি সদস্য মোজাফ্ফর হোসেন দাবি করেন, পাউবোর ডিজাইন অনুযায়ী কাজ করা হয়েছে। এত কম টাকায় কাজ শেষ করার বিষয়ে তিনি পাউবোকে দোষারোপ করে বলেন, ‘তারা (পাউবো) তো সব কাজ তাদের পছন্দের ঠিকাদারকে দিয়ে করিয়েছে। আমি মাত্র চারটি কাজ করে হাত-পা গুটিয়ে বসে আছি। সব ঘাপলা তো ওই ঠিকাদারের (আব্দুল মতিন) পরামর্শে হয়েছে। উত্তর বেদকাশী ইউনিয়নের হরিহরপুর এলাকায় দেখা গেছে, বাঁধের ঢালে সিমেন্টের ব্লকের ওপর কিছু জিও ব্যাগ সাজিয়ে রেখে কাজ শেষ দেখানো হয়েছে। সেখানে উপস্থিত ওই গ্রামের বাসিন্দা চারু মণ্ডল বলেন, ‘এখানে কাজ করার কোনো প্রয়োজনই ছিল না। টাকা লুটপাট করতে নামসর্বস্ব কাজটি করা হয়েছে।’ খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মূল ঠিকাদারের হয়ে কাজটি করেছেন অহিদুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি। দক্ষিণ বেদকাশী ইউনিয়নের মেদেরচর এলাকায় ৪০০ মিটার বাঁধের মাটির কাজও অসমাপ্ত। স্থানীয় ইউপি সদস্য দিদারুল ইসলাম জানান, ওই কাজের দায়িত্বে ছিলেন অহিদুল ইসলাম। তিনি শ্রমিক দিয়ে মূল বাঁধের দুই পাশের মাটি ছেঁটে ওপরে তুলে বাঁধ উঁচু করার চেষ্টা করছিলেন। নিয়ম অনুযায়ী দু’পাশের ঢালে মাটি ভরাট করার পর বাঁধ উঁচু করার কথা। এ বিষয়ে কথা বলতে ঠিকাদার আব্দুল মতিনের মোবাইল ফোনে একাধিকবার চেষ্টা করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। পরে খুদে বার্তা দিলেও সাড়া দেননি। সাব ঠিকাদার অহিদুল ইসলাম বলেন, নকশা অনুযায়ী কাজ করছিলেন কিন্তু তা এলাকার মানুষের পছন্দ হয়নি। তাই আপাতত কাজ বন্ধ আছে। কয়রা সদর ইউনিয়নের হরিণখোলা এলাকায় ১৩০ মিটার রিং-ডাইক নির্মাণকাজের ঠিকাদার শেখ সিরাজউদ্দৌলা লিংকন অভিযোগ করেন, তাঁর কাজটিতে ২৭ লাখ ৪১ হাজার টাকা বরাদ্দ হয়েছে। পাউবোর প্রাক্কলন ও নকশা অনুযায়ী কাজ করে বরাদ্দের অর্ধেকেরও বেশি টাকা খরচ হয়েছে। অথচ পাশের গোবরা ও গাতিরঘেরি এলাকায় ৫৯ লাখ ৮১ হাজার টাকা বরাদ্দের কাজ দুটি মাত্র ১০ লাখ টাকায় শেষ হয়েছে। জানা যায়, গোবরা ও গাতিরঘেরি এলাকার কাজ দুটিরও ঠিকাদার আব্দুল মতিন। তাঁর হয়ে এলাকার সব কাজ দেখাশোনা করেন সাতক্ষীরার শ্যামনগরের পাতাখালী গ্রামের অহিদুল ইসলাম। কয়রা উপজেলার দুটি পোল্ডারের ১২টি স্থানের কাজ তিনিই করেছেন। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, অধিকাংশ স্থানে মূল বাঁধের হিসাব ধরে প্রাক্কলন ও নকশা প্রস্তুত করা হয়েছে। ফলে ঠিকাদাররা পুরান বাঁধের ওপর যৎসামান্য মাটি দিয়ে এর ঢাল ছেঁটে সেখানে জিও ব্যাগ স্থাপন করেছেন। দেখলে মনে হবে বাঁধের কাজ নতুন করা হয়েছে। উত্তর বেদকাশী ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য গণেশ মণ্ডলের অভিযোগ, তাঁর বাড়ির পাশে শাকবাড়িয়া ও গাতিরঘেরি এলাকার তিনটি স্থানে নিম্নমানের কাজ হয়েছে। ঠিকাদারের লোকজন দুটি খননযন্ত্র দিয়ে ঢালের মাটি কেটে বাঁধ উঁচু করেছে। নিয়ম অনুযায়ী একশ মিটার দূর থেকে মাটি এনে বাঁধের ঢাল ও উচ্চতা বাড়ানোর কথা। কিন্তু খরচ বাঁচাতে তারা দায়সারা কাজ করেছে।
তিনি বলেন, ‘শ্রমিকদের দেওয়া তথ্য এবং আমার অভিজ্ঞতা অনুযায়ী ৭৬ লাখ ৩০ হাজার টাকা বরাদ্দের ওই তিনটি স্থানের কাজ মাত্র ১৫ লাখ টাকায় শেষ করা হয়েছে। অনুসন্ধানে জানা গেছে, কাজের দায়িত্বরত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে প্রথমে বরাদ্দের অর্ধেক দামে সাব কন্ট্রাক্ট নেওয়া হয়। পরে স্থানীয় শ্রমিক সরদারের কাছে অর্ধেক দামে কাজ বিক্রি করে দেন সাব কন্ট্রাক্টর। শ্রমিক সরদাররা ওই টাকার মধ্যে কাজ শেষ করেও লাভবান হন। পাউবোর সাবেক এক প্রকৌশলী নকশা ও প্রাক্কলন তৈরিতে আর্থিক মারপ্যাঁচের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, কিছু কর্মকর্তা নিজেদের স্বার্থে ঠিকাদারের সঙ্গে যোগসাজশে এমনটি করে থাকেন। এতে ঠিকাদাররা অপেক্ষাকৃত কম টাকায় কাজ শেষ করতে পারেন। ফলে এসব কাজের ব্যয় বাড়লেও সন্তোষজনক হয় না।
কয়রা উন্নয়ন সংগ্রাম ও সমন্বয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক ইমতিয়াজ উদ্দীন বলেন, দরপত্র ছাড়াই পাউবোর কিছু নির্ধারিত ঠিকাদারকে এসব কাজ দেওয়া হয়। তাঁরা কর্মকর্তাদের সঙ্গে আগেই ‘যোগাযোগ’ করে নকশা ও প্রাক্কলন প্রস্তুত করিয়ে নেন। উভয়ের লাভের আশায় বেশিরভাগ ক্ষেত্রে অপ্রয়োজনীয় স্থানে এসব প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়। যে কারণে বরাদ্দের বেশিরভাগ টাকা লোপাট হচ্ছে। পাউবোর উপবিভাগীয় প্রকৌশলী সুমন শিকদারের ভাষ্য- আগের অর্থবছরের কাজগুলোতে প্রাক্কলন ও নকশায় ত্রুটি থাকতে পারে। চলমান অর্থবছরের কাজে ওই সমস্যা নেই। তাঁরা চেষ্টা করছেন আগের ‘ধারা’ থেকে বেরিয়ে আসতে। এখন যেভাবে নকশা ও প্রাক্কলন তৈরি হবে, তা বরাদ্দের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই করা হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
রূপসায় সাংবাদিক এর জমিতে জোর পূর্বক দখল ও ঘের কাটা, বাধা দিলে হুমকির অভিযোগ পাওয়া গেছে।
আজিজুল ইসলাম, খুলনা –
খুলনা জেলা,রূপসা উপজেলার ৫ নং ঘাটভোগ ইউনিয়নের ডোবা গ্রামের অসিম বালা ও মহিম বালা পিতা মৃত: সুশেন বালা গোয়াড়া গ্রামের মোল্লা জাহাঙ্গীর আলমের বসত বিটা সংলগ্নে বিলেম জমিতে জোরপূর্বক তারা ঘের কাটছে। তবে দুঃখের বিষয় হলো অত্র আদালতে-খুলনা- ডোবা মৌজা যাহার নং ২১ ও ২৫ দাগে মামলা দায়ের করা রয়েছে।
মামলা চলা কালিন অবস্থায় অসিম বালা ও মহিম বালা,পিতা  মৃত: সুশেন বালার ছেলে জোর পূর্বক জমিতে আজ সোমবার ১৩ই ফেব্রুয়ারী সকাল থেকে লোক জন নিয়ে তারা ঘের কাটছে, বাধা দিলে তারা মোল্লা জাহাঙ্গীর আলম ও তার পরিবারকে হুমকি ও মারধর করতে আসার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
মোল্লা জাহাঙ্গীর আলম,তিনি একজন সাংবাদিক কর্মী ও বাংলাদেশ প্রেস ক্লাব রুপসা উপজেলা শাখা কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, রাজনৈতিক একজন আওয়ামী লীগ কর্মী,চলমান মেম্বার পদপ্রার্থী এবং একজন সমাজ সেবক হিসাবে সমাজে পরিচিত তিনি।
Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

আলোচিত

বোয়ালমারীতে চার বছর কর্মস্থলে না গিয়েও বেতন ভাতা নিচ্ছে উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ঝুমা !

খুলনার কয়রায় বরাদ্দের বেশিরভাগ টাকা লোপাট হয়েছে।

Update Time : ০৬:৪২:২৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৩
খুলনার কয়রায় বরাদ্দের বেশিরভাগ টাকা লোপাট হয়েছে।
মোঃ শামীম হোসেন – খুলনা –
খুলনার কয়রা উপজেলায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) ১৮টি স্থানে বাঁধ মেরামত কাজের বেশিরভাগই শেষ হয়েছে বরাদ্দের অর্ধেকেরও কম টাকায়। কিছু স্থানে নামমাত্র কাজ করে শেষ দেখানো হয়েছে। আবার অপ্রয়োজনীয় স্থানেও প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে। এসব কাজের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের দাবি, তারা পাউবোর দেওয়া নকশা ও প্রাক্কলন অনুসরণ করে কাজ করেছে। স্থানীয় মানুষের অভিযোগ, ঝুঁকিপূর্ণ ও ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ প্রকল্প তালিকায় না রেখে অপেক্ষাকৃত কম ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ তালিকায় রেখে নকশা প্রস্তুত করা হয়েছে। বরাদ্দের অর্থ আত্মসাতের উদ্দেশ্যে আগে থেকেই যোগসাজশে প্রাক্কলন ও নকশায় এমন ‘ঘাপলা’ করেছেন সংশ্নিষ্টরা। যে কারণে এত কম টাকায় কাজ শেষ করেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো। পাউবো সূত্রে জানা গেছে, ২০২১-২২ এবং চলতি অর্থবছরে উপজেলার দুটি পোল্ডারে জরুরি ভিত্তিতে বাঁধ মেরামতে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতির (ডিপিএম) আওতায় ১৮টি স্থান নির্ধারণ করা হয়। প্রথমে এসব স্থানে পাউবোর দায়িত্বরত প্রকৌশলীরা কাজের প্রাক্কলন ও নকশা প্রস্তুত করেন। সেই অনুযায়ী ৪ কোটি ৮৩ লাখ ৬২ হাজার টাকা বরাদ্দ নির্ধারণ করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে দরপত্র ছাড়াই কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয়। এর মধ্যে দুটি পোল্ডারের ১২টি স্থানের কাজ দেওয়া হয়েছে যশোর জেলার কেশবপুরের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তানিয়া এন্টারপ্রাইজের মালিক আব্দুল মতিনকে। বাকি ছয়টি স্থানের মধ্যে চারটি স্থানীয় ঠিকাদার মোজাফ্ফর হোসেন এবং অন্য দুটি স্থানের কাজ করেছেন সিরাজউদ্দৌলা ও খলিলুর রহমান নামের দুই ঠিকাদার। চোরামুখা এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, চারটি স্থানে ১ হাজার ২০ মিটার বাঁধে রিং-ডাইক ও অস্থায়ী ঢাল সংরক্ষণ কাজ শেষ হয়েছে। ১ কোটি ১৬ লাখ ২২ হাজার টাকা বরাদ্দের ওই কাজ মাত্র ২০ লাখ টাকায় শেষ করেছেন ঠিকাদার। ওই চারটি কাজের স্থানের দুটিতে মাটির কাজই হয়নি। কাজের ঠিকাদার ও স্থানীয় ইউপি সদস্য মোজাফ্ফর হোসেন দাবি করেন, পাউবোর ডিজাইন অনুযায়ী কাজ করা হয়েছে। এত কম টাকায় কাজ শেষ করার বিষয়ে তিনি পাউবোকে দোষারোপ করে বলেন, ‘তারা (পাউবো) তো সব কাজ তাদের পছন্দের ঠিকাদারকে দিয়ে করিয়েছে। আমি মাত্র চারটি কাজ করে হাত-পা গুটিয়ে বসে আছি। সব ঘাপলা তো ওই ঠিকাদারের (আব্দুল মতিন) পরামর্শে হয়েছে। উত্তর বেদকাশী ইউনিয়নের হরিহরপুর এলাকায় দেখা গেছে, বাঁধের ঢালে সিমেন্টের ব্লকের ওপর কিছু জিও ব্যাগ সাজিয়ে রেখে কাজ শেষ দেখানো হয়েছে। সেখানে উপস্থিত ওই গ্রামের বাসিন্দা চারু মণ্ডল বলেন, ‘এখানে কাজ করার কোনো প্রয়োজনই ছিল না। টাকা লুটপাট করতে নামসর্বস্ব কাজটি করা হয়েছে।’ খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মূল ঠিকাদারের হয়ে কাজটি করেছেন অহিদুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি। দক্ষিণ বেদকাশী ইউনিয়নের মেদেরচর এলাকায় ৪০০ মিটার বাঁধের মাটির কাজও অসমাপ্ত। স্থানীয় ইউপি সদস্য দিদারুল ইসলাম জানান, ওই কাজের দায়িত্বে ছিলেন অহিদুল ইসলাম। তিনি শ্রমিক দিয়ে মূল বাঁধের দুই পাশের মাটি ছেঁটে ওপরে তুলে বাঁধ উঁচু করার চেষ্টা করছিলেন। নিয়ম অনুযায়ী দু’পাশের ঢালে মাটি ভরাট করার পর বাঁধ উঁচু করার কথা। এ বিষয়ে কথা বলতে ঠিকাদার আব্দুল মতিনের মোবাইল ফোনে একাধিকবার চেষ্টা করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। পরে খুদে বার্তা দিলেও সাড়া দেননি। সাব ঠিকাদার অহিদুল ইসলাম বলেন, নকশা অনুযায়ী কাজ করছিলেন কিন্তু তা এলাকার মানুষের পছন্দ হয়নি। তাই আপাতত কাজ বন্ধ আছে। কয়রা সদর ইউনিয়নের হরিণখোলা এলাকায় ১৩০ মিটার রিং-ডাইক নির্মাণকাজের ঠিকাদার শেখ সিরাজউদ্দৌলা লিংকন অভিযোগ করেন, তাঁর কাজটিতে ২৭ লাখ ৪১ হাজার টাকা বরাদ্দ হয়েছে। পাউবোর প্রাক্কলন ও নকশা অনুযায়ী কাজ করে বরাদ্দের অর্ধেকেরও বেশি টাকা খরচ হয়েছে। অথচ পাশের গোবরা ও গাতিরঘেরি এলাকায় ৫৯ লাখ ৮১ হাজার টাকা বরাদ্দের কাজ দুটি মাত্র ১০ লাখ টাকায় শেষ হয়েছে। জানা যায়, গোবরা ও গাতিরঘেরি এলাকার কাজ দুটিরও ঠিকাদার আব্দুল মতিন। তাঁর হয়ে এলাকার সব কাজ দেখাশোনা করেন সাতক্ষীরার শ্যামনগরের পাতাখালী গ্রামের অহিদুল ইসলাম। কয়রা উপজেলার দুটি পোল্ডারের ১২টি স্থানের কাজ তিনিই করেছেন। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, অধিকাংশ স্থানে মূল বাঁধের হিসাব ধরে প্রাক্কলন ও নকশা প্রস্তুত করা হয়েছে। ফলে ঠিকাদাররা পুরান বাঁধের ওপর যৎসামান্য মাটি দিয়ে এর ঢাল ছেঁটে সেখানে জিও ব্যাগ স্থাপন করেছেন। দেখলে মনে হবে বাঁধের কাজ নতুন করা হয়েছে। উত্তর বেদকাশী ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য গণেশ মণ্ডলের অভিযোগ, তাঁর বাড়ির পাশে শাকবাড়িয়া ও গাতিরঘেরি এলাকার তিনটি স্থানে নিম্নমানের কাজ হয়েছে। ঠিকাদারের লোকজন দুটি খননযন্ত্র দিয়ে ঢালের মাটি কেটে বাঁধ উঁচু করেছে। নিয়ম অনুযায়ী একশ মিটার দূর থেকে মাটি এনে বাঁধের ঢাল ও উচ্চতা বাড়ানোর কথা। কিন্তু খরচ বাঁচাতে তারা দায়সারা কাজ করেছে।
তিনি বলেন, ‘শ্রমিকদের দেওয়া তথ্য এবং আমার অভিজ্ঞতা অনুযায়ী ৭৬ লাখ ৩০ হাজার টাকা বরাদ্দের ওই তিনটি স্থানের কাজ মাত্র ১৫ লাখ টাকায় শেষ করা হয়েছে। অনুসন্ধানে জানা গেছে, কাজের দায়িত্বরত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে প্রথমে বরাদ্দের অর্ধেক দামে সাব কন্ট্রাক্ট নেওয়া হয়। পরে স্থানীয় শ্রমিক সরদারের কাছে অর্ধেক দামে কাজ বিক্রি করে দেন সাব কন্ট্রাক্টর। শ্রমিক সরদাররা ওই টাকার মধ্যে কাজ শেষ করেও লাভবান হন। পাউবোর সাবেক এক প্রকৌশলী নকশা ও প্রাক্কলন তৈরিতে আর্থিক মারপ্যাঁচের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, কিছু কর্মকর্তা নিজেদের স্বার্থে ঠিকাদারের সঙ্গে যোগসাজশে এমনটি করে থাকেন। এতে ঠিকাদাররা অপেক্ষাকৃত কম টাকায় কাজ শেষ করতে পারেন। ফলে এসব কাজের ব্যয় বাড়লেও সন্তোষজনক হয় না।
কয়রা উন্নয়ন সংগ্রাম ও সমন্বয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক ইমতিয়াজ উদ্দীন বলেন, দরপত্র ছাড়াই পাউবোর কিছু নির্ধারিত ঠিকাদারকে এসব কাজ দেওয়া হয়। তাঁরা কর্মকর্তাদের সঙ্গে আগেই ‘যোগাযোগ’ করে নকশা ও প্রাক্কলন প্রস্তুত করিয়ে নেন। উভয়ের লাভের আশায় বেশিরভাগ ক্ষেত্রে অপ্রয়োজনীয় স্থানে এসব প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়। যে কারণে বরাদ্দের বেশিরভাগ টাকা লোপাট হচ্ছে। পাউবোর উপবিভাগীয় প্রকৌশলী সুমন শিকদারের ভাষ্য- আগের অর্থবছরের কাজগুলোতে প্রাক্কলন ও নকশায় ত্রুটি থাকতে পারে। চলমান অর্থবছরের কাজে ওই সমস্যা নেই। তাঁরা চেষ্টা করছেন আগের ‘ধারা’ থেকে বেরিয়ে আসতে। এখন যেভাবে নকশা ও প্রাক্কলন তৈরি হবে, তা বরাদ্দের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই করা হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
রূপসায় সাংবাদিক এর জমিতে জোর পূর্বক দখল ও ঘের কাটা, বাধা দিলে হুমকির অভিযোগ পাওয়া গেছে।
আজিজুল ইসলাম, খুলনা –
খুলনা জেলা,রূপসা উপজেলার ৫ নং ঘাটভোগ ইউনিয়নের ডোবা গ্রামের অসিম বালা ও মহিম বালা পিতা মৃত: সুশেন বালা গোয়াড়া গ্রামের মোল্লা জাহাঙ্গীর আলমের বসত বিটা সংলগ্নে বিলেম জমিতে জোরপূর্বক তারা ঘের কাটছে। তবে দুঃখের বিষয় হলো অত্র আদালতে-খুলনা- ডোবা মৌজা যাহার নং ২১ ও ২৫ দাগে মামলা দায়ের করা রয়েছে।
মামলা চলা কালিন অবস্থায় অসিম বালা ও মহিম বালা,পিতা  মৃত: সুশেন বালার ছেলে জোর পূর্বক জমিতে আজ সোমবার ১৩ই ফেব্রুয়ারী সকাল থেকে লোক জন নিয়ে তারা ঘের কাটছে, বাধা দিলে তারা মোল্লা জাহাঙ্গীর আলম ও তার পরিবারকে হুমকি ও মারধর করতে আসার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
মোল্লা জাহাঙ্গীর আলম,তিনি একজন সাংবাদিক কর্মী ও বাংলাদেশ প্রেস ক্লাব রুপসা উপজেলা শাখা কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, রাজনৈতিক একজন আওয়ামী লীগ কর্মী,চলমান মেম্বার পদপ্রার্থী এবং একজন সমাজ সেবক হিসাবে সমাজে পরিচিত তিনি।