আলীকদম-পোয়ামুহুরী সড়ক নির্মাণের ফলে ; বান্দরবান পর্যটনে অপার সম্ভাবনা বেড়েছে।
আবুবকর ছিদ্দীক বান্দরবান জেলা প্রতিনিধি:
চারিদিকে সবুজ অরণ্যে ঘেরা পার্বত্য জেলা বান্দরবান। প্রকৃতি এই অপরূপ সৌন্দর্যের কারণে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের কাছে ব্যাপক আকৃষ্ট করে তুলেছে এই জেলাটি। এক সময় যোগাযোগ স্থাপনের মাধ্যম বিশেষ করে বান্দরবানে সীমান্তবর্তী সড়কে আলীকদম-পোয়ামুহুরী যোগাযোগ ব্যবস্থাও ছিল অতি দুর্বল। সম্প্রতি আলীকদম-জালানিপাড়া-কুরুকপাতা পোয়ামুহুরী সড়ক নির্মাণের ফলে অপরিসীম সম্ভাবনা জেগেছে।
এছাড়াও শিক্ষা সুবিধা পাশাপাশি স্থাপনা অপর্যাপ্ততার কারণে আলীকদম উপজেলায় জালানি পাড়া- কুরুকপাতা ও পোয়ামুহুরী সড়কটি ছিল স্থানীয়দের কাছে অতি গুরুত্বপূর্ণ। দীর্ঘদিন সড়কটি না হওয়ার আগে সেসব এলাকাগুলোতে যাতায়াতে একমাত্র যোগাযোগ মাধ্যম ছিল নৌ-পথ। এসব দুর্গম এলাকাগুলোতে যেতে সময় ব্যয় করতে হতো ১ থেকে ২ দিন। অপ্রতুলতার কারণে সবচেয়ে বড় সমস্যা শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও যাতায়াত সুবিধা থেকে পিছিয়ে ছিল। আলীকদম-জালানি পাড়া-কুরুকপাতা-পোয়ামুহুরী সড়ক নির্মাণ হওয়ায় সেই চিত্র পাল্টে গিয়ে ওই এলাকা জীবনযাত্রা মান উন্নতি দিকে ধাপিত হবে আশা করছেন স্থানীয়রা। এছাড়া পাহাড়ে বুক চিড়ে এঁকেবেঁকে বয়ে চলা এই সড়কটি গুরুত্বপূর্ণ স্থানের ৪টি ভিউ পয়েন্ট নির্মাণের ফলে সম্ভাবণা জেগেছে পর্যটনের। পর্যটনকে কেন্দ্র করে প্রসারিত হবে এ অঞ্চলের অর্থনীতিও।
জানা গেছে, ২০১৭ সালে ১৪ ফেব্রুয়ারি আলীকদম- জালানি পাড়া- কুরুকপাতা ও পোয়ামুহুরী সড়ক প্রকল্পটি একনেকে পাশ হয়। সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের অধীনে সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তর তত্ত্বাধানের প্রকল্পটি কাজ দ্রুত সম্পাদনের জন্য প্রকল্পটির বাস্তবায়নের সেনাবাহিনী উপর অর্পিত হয়। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কোর অব ইঞ্জিনিয়ার্সের ৩৪ ইসিবি অধীনে ১৬ ইঞ্জিনিয়ার কনষ্ট্রাকশন ব্যাটালিয়নের অক্লান্ত পরিশ্রমের মাধ্যমে প্রকল্পটি নির্ধারিত সময়ের পূর্বেই প্রকল্পের প্রায় ৩৫ কোটি কম খরচে ৪৭৪ কোটি ৪০ লাখ টাকার ব্যায়ের সকল কাজের গুণগত মান বজায় রেখে সম্পন্ন করা হয়।
প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, ৪৭৪কোটি ৪০ লাখ টাকার ব্যয়ে নির্মিত প্রকল্পটিতে রয়েছে ৩৭ দশমিক ৫ কিলোমিটার কার্পেটিং রাস্তা, ১০টি ব্রিজ, ১১টি কালভার্ট, ৪টি ভিউ পয়েন্ট নির্মাণ করা হয়। রাস্তার আনুষাঙ্গিক করণ হিসেবে ক্রস ড্রেন, সাইট ড্রেন, রিটেইনিং ওয়াল, আর্থ ওয়াটার ড্যাম, রোড সাইড সহ নির্মাণ করা হয়। এই রাস্তা নির্মাণের ফলে অত্র এলাকার জনগনের আর্থ সামাজিক ও উন্নয়ন সাধিত হবে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার সবচেয়ে দূর্গম ৪নং কুরুকপাতা ইউনিয়নে জনগোষ্ঠীর বসবাসের জনসংখ্যা প্রায় সাড়ে ১১ হাজার পরিবার। জালানিপাড়া-কুরুকপাতা-পোয়ামুহু রী এই সড়কের দুর্গম এলাকার পাহাড়ি জনপদে অন্যান্য সম্প্রদায়ে লোকজন বসবাস করলেও সংখ্যাগরিষ্ঠ দিক দিয়ে বেশিরভাগ ম্রো জনগোষ্ঠীর। ওই এলাকা সবাই ছিল জুম চাষ মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন।
আরও জানা গেছে, আলীকদম উপজেলার মাথাপিছু আয় জাতীয় আয় হতে শতকরা ৩০ ভাগ কম ছিল। শিক্ষা সুবিধা ও স্থাপনার অপর্যাপ্ততার কারণে আলীকদমের দক্ষিণে বসবাসরত উপজাতীয় জনগোষ্ঠীর স্বাক্ষরতার হার খুবই কম। ক্লিনিক, হাসপাতাল ও ডাক্তারের অপ্রতুলতার কারণে এ জনপদের মানুষ স্বাস্থ্যঝুঁকিতে ছিল। কুরুকপাতা ইউনিয়নের সাথে উপজেলা সদরের যোগাযোগ ব্যবস্থা ছিল খুবই নাজুক। নদীপথ ছিল একমাত্র যোগাযোগ মাধ্যম। পাশাপাশি দুর্গম অঞ্চলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এবং নিরাপত্তা অপারেশন কার্যক্রম পরিচালনায় এ সড়ক নির্মাণ ছিল অতি জরুরি। শুধু তাই নয় দুর্গমতার কারণে ওই এলাকার উৎপাদিত ফসল এক সময় নষ্ট হয়ে যেত। ফলে কৃষক তাদের ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত পড়তে হতো। কিন্ত এখন খুব কম সময়েই কৃষি পণ্য সহজে বহন করে নিয়ে যাচ্ছে বাজারে। সময়মত পৌঁছে যাওয়াতে কৃষকরা পাচ্ছে নায্য মূল্যে দাম ও। সড়কটি নির্মাণের ফলে সেসব দুর্গম এলাকার বসবাসরত পাহাড়ির জনগোষ্ঠীর জীবনে লেগেছে আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের জোয়ার। যোগাযোগ ব্যবস্থা তৈরি হওয়ার ফলে স্থানীয় ফল-ফলাদি অনায়াসে পৌঁছে যাচ্ছে শহরে।
ওই এলাকা জনম জয় ত্রিপুরা, চামরুই ম্রো, পেনরিং ম্রো সহ কয়েকজন বাসিন্দারা বলেন, সড়কটি না হওয়ার আগে সব কিছু থেকে আমরা বঞ্ছিত ছিলাম। এখন এই সড়কটি হওয়ার পর আমাদের অনেক উপকৃত হয়েছে। এই সড়কের মাধ্যমে যেমন ব্যবসা-বাণিজ্যের চিত্র পাল্টে যাবে। পাশাপাশি দৃষ্টিনন্দন এই সড়কটি ভিউ পয়েন্ট দেখতে বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পর্যটকের আনাগোনা বাড়বে। যার মাধ্যমে এই এলাকার মানুষের অর্থনৈতিক উন্নতি হবে।
আবুবকর ছিদ্দীক
বান্দরবান জেলা প্রতিনিধি
ফোন: 01625-173276
Thanks for sharing. I read many of your blog posts, cool, your blog is very good.
I don’t think the title of your article matches the content lol. Just kidding, mainly because I had some doubts after reading the article. https://accounts.binance.com/zh-CN/register?ref=VDVEQ78S