তানোরে সেচ মটর জবরদখল, উদ্ধারে এমপির হস্তক্ষেপ কামনা ।
তানোর, (রাজশাহ) প্রতিনিধিঃ
রাজশাহীর তানোরে জমিসহ সেচ মটর বিক্রির পর বহিরাগত ভাড়াটিয়াদের নিয়ে ফিল্মি স্টাইলে জবর দখল করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় প্রতিপক্ষের নির্যাতনের শিকার যুবক উপজেলা হাসপাতালে প্রায় সপ্তাহ ধরে চিকিৎসা নিয়েছেন। কিন্ত্ত নির্যাতনের শিকার যুবক এহেসান আলীর (১৮) পিতা ওয়ার্ড যুবলীগ সভাপতি সাফিউল ইসলাম বাদি হয়ে থানায় মামলা করেন। কিন্ত্ত জামিনে বেরিয়ে এসে তারা ফের এহেসান আলীর পরিবারকে নানাভাবে ভয়ভীতি ও হুমকি দিচ্ছেন।
স্থানীয়রা জানান, উপজেলার তালন্দ ইউপির জেল নম্বর ১৪৯ আড়াদিঘি মৌজার, আরএস খতিয়ান নম্বর ১২৬ ও দাগ নম্বর ৬১, জমির পরিমাণ ৫ শতাংশ শ্রেণী ধানি। আড়াদীঘি গ্রামের বাসিন্দা বিএনপির সক্রিয় কর্মী আব্দুস সোবহানের পুত্র আইনুল হক ওই জমিতে (সেচ পাম্প) মটর স্থাপন করেছেন। কিন্ত্ত আইনুল গুরুত্বর অসুস্থ হয়ে পড়লে তার উন্নত চিকিৎসার জন্য জমিসহ সেচ মটরটি বিক্রি করে দেয়া হয়। আড়াদিঘি গ্রামের মৃত আয়ুব আলীর পুত্র শাফিউল ইসলাম ৫ লাখ টাকায় জমিসহ সেচ মটর রেজিষ্ট্রি দলিলের মাধ্যমে ক্রয় করে শান্তিপূর্ণভাবে ভোগদখল শুরু করে আসছেন। বিগত ২০২১ সালের ১৯ ডিসেম্বর তানোর সাব-রেজিষ্ট্রার কার্যালয়ে দলিল সম্পাদন হয় যাহার দলিল নম্বর ৫৪৫৭/২০২১। কিন্ত্ত বিগত ২০২২ সালের ২৩ মার্চ চিকিৎসাধীন অবস্থায় আইনুল হকের মৃত্যু হয়। এদিকে আইনুলের মৃত্যুর পর তার স্ত্রী জাল দলিল দাবি করে আদালতে মামলা ও সেচ মটর জোরপুর্বক দখলে নিতে মরিয়া হয়ে উঠে। এখন প্রশ্ন হলো দলিল জাল হলে সেটা আদালতের বিষয় এখানে তারা পেশী শক্তি প্রদর্শন করে সেচ মটরের দখল নিতে পারেন না। অন্যদিকে আদালত দলিল যাচাই করে দলিল রেজিষ্ট্রি ও আইনুল হকের স্বাক্ষর সঠিক বলে রায় দিয়েছেন। কিন্ত্ত আদালতের আদেশ অমান্য করে এখানো শাফিউল ইসলামের ক্রয়কৃত সেচপাম্প পেশীশক্তির জোরে জবরদখল করে রেখেছেন মাইনুল ইসলাম দিগর। ভুক্তভোগী শাফিউল এবিষয়ে স্থানীয় সাংসদের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। একাধিক গ্রামবাসি বলেন, শাফিউল ইসলাম তার শশুরের কাছে থেকে টাকা নিয়ে ওই সেচ মটর কিনেছেন এটা সত্যি কথা এবং গ্রামের সবাই ঘটনা জানেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক গ্রামবাসী জানান, ইউপি নির্বাচনে সাফিউল ইসলাম নৌকার প্রার্থীর পক্ষে ভোট করেছে, তবে স্বতন্ত্র প্রার্থী নাজিমুদ্দিন বাবু বিজয়ী হয়েছে। তারা বলেন, এর প্রতিশোধ নিতে নাজিমুদ্দিন বাবু নেপথ্যে মদদ দিয়ে শাফিউল ইসলামের ক্রয়কৃত সেচ মটর জোরপুর্বক দখল করিয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিগত ২০২২ সালের ৪ ডিসেম্বর রোববার ইউপি চেয়ারম্যান নাজিমুদ্দিন বাবুর নেপথ্যে মদদে প্রয়াত আইনুলের ভাই মাইনুল ইসলাম বহিরাগত ভাড়াটিয়া বাহিনী নিয়ে দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ফিল্মি-স্টাইলে হামলা করে সেচ মটর জবরদখল করে। তাদের হামলায় শাফিউল ইসলাম ও তার পুত্র এহেসান আলী (১৮) আহত হয়। তবে এহেসানের অবস্থা গুরুত্বর হওয়ায় সে উপজেলা হাসপাতালে প্রায় সপ্তাহ ধরে
চিকিৎসা নিয়েছেন। এদিকে সেচ মটর জবরদখলের পর সেখানে টিনের ঘর করে পাহারা বসিয়েছে মাইনুল। অথচ নায্যেমুল্য ক্রয় করা মটর ফেরত পেতে শাফিউল প্রশাসনের দ্বারে ঘুরছে।এবিষয়ে প্রয়াত আইনুল হকের স্ত্রী রশিদা বেওয়া জানান, তার স্বামী সেচপাম্পটি নির্ধারিত সময়ের জন্য ৫ লাখ টাকায় শাফিউলের কাছে বন্ধক দিয়েছিলেন, স্বামীর মৃত্যুর পর বন্ধকের টাকা চাইলে উক্ত টাকার বিনিময়ে রুপালী ব্যাংক তানোর শাখার একটি ৫ লাখ টাকার চেক দেন শাফিউল ইসলাম,তবে সেই অ্যাকাউন্টে টাকা না থাকায় পুনরায় তার কাছে টাকা চাইলে,সে বলে তার স্বামীর সেচপাম্প ( মটর) তিনি ক্রয় করে নিয়েছেন। এবিষয়ে শাফিউল ইসলাম বলেন,আইনুল হকের কাছে থেকে
বৈধভাবে জমিসহ সেচপাম্প ক্রয় ও শান্তিপূর্ণ ভাবে ভোগদখল করে আসছিলেন। তিনি বলেন, ২০২২ সালের ৪ ডিসেম্বর রোববার আইনুলের ভাই মাইনুল ইসলাম বহিরাগত সন্ত্রাসীদের নিয়ে তাদের মারপিট করে সেচপাম্প জবরদখল করেছে। এবিষয়ে জানতে চাইলে তালন্দ ইউপি চেয়ারম্যান নাজিমুদ্দিন বাবু অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, এঘটনার সঙ্গে তার কোনো সম্পৃক্ততা নাই। তিনি বলেন, প্রয়াত আইনুল ইসলামের কাছে থেকে শাফিউল ইসলামের সেচপাম্প কেনার ঘটনা সত্য।#
তানোর প্রতিনিধি