কলমিরচরে গুলিবিদ্ধের ঘটনায় চেয়ারম্যান রিপনসহ ২২জনের বিরুদ্ধে মামলা, গ্রেফতার ২
আবুল হাসনাত রিন্টু, ফেনী প্রতিনিধি,
ফেনী- সোনাগাজীতে ফেনী নদী ও কলমিরচরে বালি তোলার জেরে চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের বারইয়ারহাট পৌরসভার মেয়র খোকনসহ ৩ জন গুলিবিদ্ধেরর ঘটনায় ফেনীর ফাজিলপুর ইউপি চেয়ারম্যান মজিবুল হক রিপনকে প্রধান আসামি করে ২২জনের বিরুদ্ধে সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা দায়ের হয়েছে। মেয়র খোকনের পক্ষে মিজানুর রহমান বাদী হয়ে ১২ জনের নাম সহ আরো অজ্ঞাতনামা ৮-১০জনকে আসামি করে শনিবার রাতের প্রথম প্রহরে এ মামলা দায়ের করেন। একই সময় পুলিশ অভিযান চালিয়ে আমিরাবাদ ইউনিয়নের চরসোনাপুর গ্রামের মিন্টুর ছেলে শাকিল (২৮) ও সামছুল হক বাচ্ছুর ছেলে নূর আলম (৩০) কে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠিয়েছে।
মামলার আসামিরা হলেন, ফেনী সদর উপজেলার ফাজিলপুর ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আ.লীগের সভাপতি মজিবুল হক রিপন, ফাজিলপুর গ্রামের খায়ের আহমদের ছেলে মো. বেলাল প্রকাশ কিলার বেলাল, ফাজিলপুর গ্রামের মো. মেশকাত প্রকাশ সুটার মেশকাত, আমিরাবাদের গুচ্ছ গ্রামের মো. মানিকের ছেলে সাইদুল, সোনাপুর-বাদামতলী গ্রামের সামছুল হক বাচ্ছুর ছেলে নূর হোসেন হোনা মিয়া, ফাজিলপুরের কলাতলী গ্রামের নূর মোহাম্মদের ছেলে মো. পলাশ প্রকাশ ডিস পলাশ, নৈরাদপুর গ্রামের রিজেল প্রকাশ সুটার রিজেল, সোনাপুর-বাদামতলী গ্রামের মিন্টুর ছেলে শাকিল, পূবালী গ্রামের মো. সেলিমের ছেলে রাহুল, নৈরাদপুর গ্রামের মিজানের ছেলে মো. মাসুদউদ্দিন , ফাজিলপুর পূবালী গ্রামের নূরুল করিমের ছেলে মো. মোহসিন অপু ও একই গ্রামের মঞ্জুরুল করিম রিদান।
মামলায় তিনি উল্লেখ করেন, মিরসরাই উপজেলার করের হাটের হাবিলদার বাসা এলাকায় পিজিসিবি নিয়ন্ত্রণাধীন একটি পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন সেন্টারে বালি ভরাটের জন্য ফেনী নদীর জোরারগঞ্জ থানাধীন ওসমানপুর এলাকায় বালি উত্তোলন করে আসছেন। প্রধান আসামি ফাজিলপুর ইউপি চেয়ারম্যান মজিবুল হক রিপন সহ বিবাদীরা বালি উত্তোলনে নিয়োজিত শ্রমিকদের কাছে চাঁদা দাবি করে আসছে। তিনি ব্যবসায়ীক অংশিদার মেয়র খোকন কে বিষয়টি অবহিত করেন। বিষয়টি নিয়ে বিঘ্নতা সৃষ্টি না করার লক্ষ্যে মেয়র খোকন সহ ইঞ্জিন চালিত একটি নৌকা করে ঘটনাস্থলে যাওয়ার পথে সোনাগাজীর ফেনী নদীর কলমির চর অংশের জনৈক শাহ আলমের মৎস্য খামার সংলগ্ন স্থানে শুক্রবার (১৪ অক্টোবর) সকাল ১১টায় ফাজিলপুর ইউপি চেয়ারম্যান রিপনের নির্দেশে বিবাদীরা এলোপাথাড়ি গুলি বর্ষণ করে। এতে বারইয়ারহাট পৌরসভার মেয়র ও বারইয়ার হাট পৌর আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম খোকন (৪৮), হিঙ্গুলী ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ নেতা অশোক সেন (৪২) ও ওছমানপুর ইউনিয়ন যুবলীগ কর্মী শহীদ খান দুখু (৩৫) গুলিবিদ্ধ হন। এ সময় তাদের কাছে থাকা আড়াই লাখ টাকা মূল্যের ৪টি মোবাইল ফোন লুটে নেয় সন্ত্রাসীরা। স্থানীয়রা তাদেরকে উদ্ধার করে মিরসরাই উপজেলার মস্তাননগর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
উল্লেখ্য; দীর্ঘ দিন যাবৎ ফেনী ও মীরসরাই এলাকার দুটি গ্রুপ ফেনী নদীর বিভিন্ন স্পট ও কলমিরচর নামক স্থান থেকে ভ্রাম্যমান ড্রেজার দিয়ে বালি তুলে অর্ধশতাধিক বোট দিয়ে বালি লুটে করে যাচ্ছেন। গত কয়েক দিন যাবৎ মিরসরাই উপজেলার বারইয়ার হাট পৌর মেয়র রেজাউল করিম খোকন ও ফেনীর ফাজিলপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রেজাউল করিম খোকন ও তাদের সমর্থকের মধ্যে প্রকাশ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। ১৩ অক্টোবর বৃহস্পতিবার রাতে মেয়র খোকনের লোকজন বালি তুলতে গেলে রিপন চেয়ারম্যানের লোকজন দুটি বালিবাহী বোট আটকে রাখে। শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে আরেকটি বোট যোগে মেয়র খোকন তার অনুসারীদের নিয়ে বোট দুটি ছাড়িয়ে আনতে গেলে আরেকটি বোটে থাকা রিপন চেয়ারম্যানের ১৫-২০জন সশস্ত্র অনুসারী এলোপাথাড়ি গুলি করলে বারইয়ার পৌর মেয়রসহ তার তিন অনুসারী গুলিবিদ্ধ হন।
সোনাগাজী মডেল থানার ওসি মুহাম্মদ খালেদ হোসেন দাইয়্যান মামলা রুজুর সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, দুই আসামিকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
আবুল হাসনাত রিন্টু,
০১৬১২৯৩৬৩১৭