তারাগঞ্জ প্রতিনিধি :
রংপুরের তারাগঞ্জে জমি কেনাবেচা সংক্রান্ত পূর্ব বিরোধের জেরে নিজ বাড়ির সামনে একা পেয়ে বৃদ্ধকে মারধর ও বৃদ্ধের ভ্রাম্যমাণ ঝালমুড়ির দোকান ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল সকাল আনুমানিক ১০টার দিকে উপজেলার সয়ার ইউনিয়নের দামোদরপুর সরকারপাড়া গ্রামে বৃদ্ধের উপর ওই হামলার ঘটনা ঘটে। এতে গুরুতর আহত হয়ে তারাগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছে হামলার শিকার বৃদ্ধ। এঘটনায় বৃদ্ধের ছেলে আজিজুল ইসলাম বাদী হয়ে তারাগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ করলেও মামলা নথিভুক্ত হয়নি বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, রবিবার সকালে দামোদরপুর সরকারপাড়া গ্রামের মৃত মোহাম্মদ শেখের পুত্র বদিউর জামান ওরফে বদি (৬০) তার চার্জার ভ্যানে ভ্রাম্যমাণ ঝালমুড়ির দোকান নিয়ে বাজারে যাওয়ার পথে একই গ্রামের মৃত মজদ দালালের পুত্র আদম আলীর বাড়ির সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় অতর্কিত হামলার শিকার হন। এসময় পূর্ব বিরোধের জেরে বাড়ির সামনে বদিকে একা পেয়ে আদম আলীর পুত্র সোহাগ মিয়া (৩২), আদম আলী (৬৫), আদম আলীর স্ত্রী ফেরদৌসী বেগম (৫৫), আদম আলীর দুই মেয়ে মৌসুমী বেগম (৩০) ও সোহাগী বেগম (৩৫) বদিকে বাড়ির সামনে রাস্তায় আটক করে মারধরের পর তার ভ্রাম্যমাণ ঝালমুড়ির দোকানটি ছিনতাই করে নেয়। মারধরের শিকার হয়ে বদি প্রাণ বাচাতে বাড়িতে পালিয়ে গেলে পিছনে সোহাগ ও আদম ধাওয়া দিয়ে বদির বাড়িতে যায়। তাদের পিছনে আদম আলীর স্ত্রী ও দুই কন্যাও বদির বাড়িতে গিয়ে স্বপরিবারে বদির বাড়িতে হামলা চালায়। এসময় ঘরের সোকেসের গ্লাস ভেঙ্গে নগদ ৬০ হাজার টাকা লুট করে নিয়ে যায় বলেও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে। অভিযোগ সূত্রে আরো জানা যায়, আদম ও তার পরিবারের লোকজন তাদের বিক্রি করা ও বদির কেনা একটি আবাদী জমিতেও লাগানো হলুদ গাছ ও আম গাছের চারা উপরে ফেলে। বাধা দিতে গেলে মারধরের শিকার হন বদি ও তার পরিবারের লোকজন। এরই এক পর্যায়ে আদম আলী বদির মাথায় ধারালো কোদাল দিয়ে আঘাত করলে বদির মাথা ফেটে যায়। এলাকাবাসীর সহযোগিতায় পরিবারের লোকজন বদিকে উদ্ধার করে তারাগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে দায়িত্বরত চিকিৎসক বদির কেটে যাওয়া মাথায় ১০টি সেলাই দিয়ে পুরুষ ওয়ার্ডে ভর্তি করিয়েছেন বলে অভিযোগে বলা হয়েছে।
সরেজমিনে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেছে, বদির আবাদী জমিতে লাগানো হলুদ ক্ষেতে হলুদের গাছ উপরে ফেলা হয়েছে। সেখানে লাগানো ৫টি আম গাছের চারা, ১টি জাম ও ১টি জলপাই গাছের চারা উপরে ফেলা হয়েছে। সেখানে উপস্থিত স্থানীয় দুলালী বেগম (২৮), ইলিয়াস কাজী (৬০), সোহেল (৩৫)সহ বেশ কয়েকজন বলেন, কালকে রাস্তায় আটকিয়ে বদির গাড়িসহ দোকানটা কারি নেয় আদম ও তার পরিবারের লোকজন। পরে বদির বাড়িতে আসি তাদের মারধর করে। আবাদী জমিতেও ক্ষতি করে। রাতের আধারে কোন এক সময় বদির গাড়িসহ দোকানটা আবার বাড়ির গেট ভাঙ্গি ভিতরে রাখি গেইছে। কিন্তু দোকানের সউক মালামাল লুট করি নিছে।
এবিষয়ে জানতে আদম আলীর বাড়িতে গেলে আদমের দেখা পাওয়া যায়নি। তবে তার ছেলে সোহাগের দেখা হলে মারধরের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই ছোট বিষয়ে সাংবাদিক আসার কোন প্রয়োজন ছিল না। গ্রামের সাংবাদিকরা কিভাবে নিউজ করে তা আমার জানা আছে বলে তিনি বাড়ির ভিতরে চলে যান।
তারাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত অফিসার ইনচার্জ মোস্তাফিজার রহমান বলেন, আমি অফিসের বাইরে আছি। বেশ কয়েকটি অভিযোগ আমার কাছে আছে। অভিযোগের কপি না দেখলে কিছু বলতে পারছি না।