Dhaka ০৩:০১ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঠাকুরগাঁওয়ে মারধরে অসুস্থ হয়ে পড়ল ইয়াসমিন আক্তার নামে এক ছাত্রীকে

  • Reporter Name
  • Update Time : ১০:৪৯:৫৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ অগাস্ট ২০২৩
  • ১১২ Time View

জসীমউদ্দীন ইতি ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধিঃ

হালকা অভিযোগে সপ্তম শ্রেণির সব শিক্ষার্থীদের দুই দফা মারধর করেন
ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার ধনতলা ইসলামিয়া মাদরাসার অতিথি শিক্ষক
আনারুল ইসলাম।
এ মারধরে অসুস্থ হয়ে পড়লে ইয়াসমিন আক্তার নামে এক ছাত্রীকে বালিয়াডাঙ্গী
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২২ আগস্ট) দুপুর ২টার দিকে উপজেলার ধনতলা ইসলামিয়া মাদরাসায় এ ঘটনা ঘটে।
আহত শিক্ষার্থী ইয়াসমিন আক্তার জানায়, দুপুরে আমরা ১৪ জন ক্লাসে ছিলাম।
তখন অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা চেঁচামেচি করছিল। আনারুল স্যার আমাদের
মনে করে লাঠি নিয়ে এসে সবাইকে পেটানো শুরু করেন। বিষয়টি আমরা পরে
মাদরাসার প্রধানকে জানালে তিনি সমাধান করে দেওয়ার আশ্বাস দেন। কিন্তু
মাদরাসা প্রধানের কাছে নালিশ করার কারণে দ্বিতীয়বার এসে লাঠি দিয়ে পেটালে
শুর করেন আনারুল স্যার। এসময় আমিসহ তিনজন অজ্ঞান হয়ে পড়ি।
আহত শিক্ষার্থীর বাবা ইসলাম উদ্দীন বলেন, লাহিড়ী বাজারে পল্লিচিকিৎসকের
কাছে আমার মেয়েসহ বাকিদের চিকিৎসা দিতে নিয়ে আসেন মাদরাসার কয়েকজন
শিক্ষক। বিষয়টি দেখার পর কাছে গেলে আমার মেয়ে ঘটনা জানায়। পরে তার
শারীরিক অবস্থা খারাপ হওয়ায় হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছি। আমি বিষয়টি ইউএনও
এবং এসিল্যান্ডকে জানিয়েছি। তারা ব্যবস্থা নিতে চেয়েছেন।
সপ্তম শ্রেণির আরেক শিক্ষার্থী জাহিরুল ইসলাম বলে, পড়া না হলে মারবে
শিক্ষক। কিন্তু এখানে কোনো কারণ ছাড়াই সবাইকে দুইবার মারধর করেছে। এতে সব
শিক্ষার্থীরা আতঙ্কে আছে। আমরা বিষয়টি পরিবারকে জানিয়েছি।
এদিকে, ওই ঘটনার পর থেকে অতিথি শিক্ষক আনারুল ইসলাম মোবাইল ফোন বন্ধ
রেখেছেন। মঙ্গলবার বাড়িতে গিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি। বুধবার সকালে মাদরাসায়
গেলে তিনি আসেননি বলে জানান অন্য শিক্ষকরা।
এছাড়া, গতকালের পর থেকে এখন পর্যন্ত মাদরাসার সুপার আমিরুল ইসলামকে
মোবাইল ফোনে পাওয়া যায়নি। তার বাড়িতে গেলে বাইরে আছেন বলে জানান স্ত্রী।
বুধবার সকাল ১০টা পর্যন্ত তিনি মাদরাসায় আসেনি।
হাসপাতালে ভর্তি থাকা ছাত্রী বুধবার সকালে জানায়, মঙ্গলবার রাত ১০টার
দিকে মাদরাসা সুপারসহ অন্য শিক্ষকরা তাকে হাসপাতাল থেকে বাড়িতে নিয়ে
যাওয়ার জন্য এসেছিলেন। তবে স্বজনরা তাকে যেতে দেননি।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোশারফ হোসেন বলেন, শিক্ষার্থীদের লাঠি
দিয়ে মারধরের কোনো সুযোগ নেই। এটি করে থাকলে অন্যায় করেছেন। আমরা খোঁজ
নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবো।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বিপুল কুমার বলেন, বিয়ষটি মৌখিকভাবে
জানিয়েছেন অভিভাবকরা। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয়
ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া ওই মাদরাসা পরিদর্শনে যাবেন বলেও জানান তিনি।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

আলোচিত

বোয়ালমারীতে চার বছর কর্মস্থলে না গিয়েও বেতন ভাতা নিচ্ছে উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ঝুমা !

ঠাকুরগাঁওয়ে মারধরে অসুস্থ হয়ে পড়ল ইয়াসমিন আক্তার নামে এক ছাত্রীকে

Update Time : ১০:৪৯:৫৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ অগাস্ট ২০২৩

জসীমউদ্দীন ইতি ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধিঃ

হালকা অভিযোগে সপ্তম শ্রেণির সব শিক্ষার্থীদের দুই দফা মারধর করেন
ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার ধনতলা ইসলামিয়া মাদরাসার অতিথি শিক্ষক
আনারুল ইসলাম।
এ মারধরে অসুস্থ হয়ে পড়লে ইয়াসমিন আক্তার নামে এক ছাত্রীকে বালিয়াডাঙ্গী
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২২ আগস্ট) দুপুর ২টার দিকে উপজেলার ধনতলা ইসলামিয়া মাদরাসায় এ ঘটনা ঘটে।
আহত শিক্ষার্থী ইয়াসমিন আক্তার জানায়, দুপুরে আমরা ১৪ জন ক্লাসে ছিলাম।
তখন অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা চেঁচামেচি করছিল। আনারুল স্যার আমাদের
মনে করে লাঠি নিয়ে এসে সবাইকে পেটানো শুরু করেন। বিষয়টি আমরা পরে
মাদরাসার প্রধানকে জানালে তিনি সমাধান করে দেওয়ার আশ্বাস দেন। কিন্তু
মাদরাসা প্রধানের কাছে নালিশ করার কারণে দ্বিতীয়বার এসে লাঠি দিয়ে পেটালে
শুর করেন আনারুল স্যার। এসময় আমিসহ তিনজন অজ্ঞান হয়ে পড়ি।
আহত শিক্ষার্থীর বাবা ইসলাম উদ্দীন বলেন, লাহিড়ী বাজারে পল্লিচিকিৎসকের
কাছে আমার মেয়েসহ বাকিদের চিকিৎসা দিতে নিয়ে আসেন মাদরাসার কয়েকজন
শিক্ষক। বিষয়টি দেখার পর কাছে গেলে আমার মেয়ে ঘটনা জানায়। পরে তার
শারীরিক অবস্থা খারাপ হওয়ায় হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছি। আমি বিষয়টি ইউএনও
এবং এসিল্যান্ডকে জানিয়েছি। তারা ব্যবস্থা নিতে চেয়েছেন।
সপ্তম শ্রেণির আরেক শিক্ষার্থী জাহিরুল ইসলাম বলে, পড়া না হলে মারবে
শিক্ষক। কিন্তু এখানে কোনো কারণ ছাড়াই সবাইকে দুইবার মারধর করেছে। এতে সব
শিক্ষার্থীরা আতঙ্কে আছে। আমরা বিষয়টি পরিবারকে জানিয়েছি।
এদিকে, ওই ঘটনার পর থেকে অতিথি শিক্ষক আনারুল ইসলাম মোবাইল ফোন বন্ধ
রেখেছেন। মঙ্গলবার বাড়িতে গিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি। বুধবার সকালে মাদরাসায়
গেলে তিনি আসেননি বলে জানান অন্য শিক্ষকরা।
এছাড়া, গতকালের পর থেকে এখন পর্যন্ত মাদরাসার সুপার আমিরুল ইসলামকে
মোবাইল ফোনে পাওয়া যায়নি। তার বাড়িতে গেলে বাইরে আছেন বলে জানান স্ত্রী।
বুধবার সকাল ১০টা পর্যন্ত তিনি মাদরাসায় আসেনি।
হাসপাতালে ভর্তি থাকা ছাত্রী বুধবার সকালে জানায়, মঙ্গলবার রাত ১০টার
দিকে মাদরাসা সুপারসহ অন্য শিক্ষকরা তাকে হাসপাতাল থেকে বাড়িতে নিয়ে
যাওয়ার জন্য এসেছিলেন। তবে স্বজনরা তাকে যেতে দেননি।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোশারফ হোসেন বলেন, শিক্ষার্থীদের লাঠি
দিয়ে মারধরের কোনো সুযোগ নেই। এটি করে থাকলে অন্যায় করেছেন। আমরা খোঁজ
নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবো।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বিপুল কুমার বলেন, বিয়ষটি মৌখিকভাবে
জানিয়েছেন অভিভাবকরা। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয়
ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া ওই মাদরাসা পরিদর্শনে যাবেন বলেও জানান তিনি।