শফিকুল ইসলাম সোহাগ, খানসামা (দিনাজপুর) প্রতিনিধি,
আসছে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। শরতের নির্মল নীল আকাশ, প্রকৃতির সবুজের সমরোহে সাদা কাশফুল, শিউলির মনভোলানো সুগন্ধ, ঢাকের বাদ্য আর প্রতিমা তৈরিতে কারিগর ব্যস্ততা জানান দিচ্ছে দেবী দূর্গার আগমনী বার্তা। আগামী ২০ অক্টোবর শুক্রবার মহাষষ্ঠির মধ্যে দিয়ে শুরু হবে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব সারদীয় দূর্গাপূজা। সারাদেশের মত প্রতিমার কাজ শুরু করেছেন দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার মৃৎশিল্পীরা।
এ উৎসবকে ঘিরে দেবী দুর্গাকে বরণ করে নিতে পাশাপাশি চলছে মন্ডপ সাজানোর কাজ। এখন শারদীয় মেতে উঠার অপেক্ষায় হিন্দু সম্প্রাদায়েরা। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের শাস্ত্রমতে এবার দেবীদুর্গা ঘোটকে আগমন করে পালকিতে চড়ে কৈলাশে ফিরে যাবেন।
আর এই উৎসবকে কেন্দ্র করে প্রতিমা শিল্পীরা কল্পনায় দেবী দুর্গার অনিন্দ্যসুন্দর রূপ দিতে রাতভর চলছে প্রতিমা তৈরির কাজ। নিখুঁত হাতের কারুকার্য দিয়ে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত তৈরি করছেন প্রতিমা। পূজার দিন ঘনিয়ে না আসলেও, ব্যস্ত হয়ে পড়ছেন প্রতিমা তৈরিকারী শিল্পীরা।
খানসামা উপজেলার বিভিন্ন মন্ডপে গিয়ে দেখা যায়, মন্ডপে মন্ডপে চলছে ব্যাপক প্রস্ততি, যদিও অনেক মন্ডপে এখনো শুরু হয়নি প্রতিমা তৈরির কাজ। প্রথম পযার্য়ে প্রস্তুতি হিসেবে মন্ডপ গুলোতে দূর্গা প্রতিমার মাটির কাজ শুরু করেছে। শেষ পর্যায়ে মূর্তিতে রং তুলির আঁচড়ের কাজ চলবে। অন্য দিকে সাজসজ্জা, আলোকসজ্জা,প্যান্ডেল তৈরি ও ডেকারেশনসহ অন্যান্য কাজগুলি ধীরে ধীরে এগিয়ে চলছে। দুর্গা প্রতিমা ছাড়াও মন্ডপের জন্য তৈরি করা হচ্ছে লক্ষ্ণী, সরস্বতী, কার্তিক, গণেশ, অসুর, সিংহ, মহিষ, পেঁচা, হাঁস, সর্পসহ প্রায় ১২টি প্রতিমা।
প্রতিমা তৈরির কারিগর সবুজ চন্দ্র সেন বলেন, ‘আমি ৮ বছর ধরে প্রতিমা ব্যানার কাজ করছি। এ বছর ৫টি প্রতিমার অর্ডার পেয়েছি। এখন দ্বিমাটির ফিনিশিংয়ের কাজ করছি এরপর রংয়ের কাজ করব। যদিও এখনো সময় আছে শারদীয় দূর্গাপূজা শুরু হতে। সময় ঘনিয়ে আসলে আমাদের কাজের চাপ অনেকটাই বেড়ে যাবে, যার কারনে সারাদিন কাজ করছি। আমি প্রতিমা তৈরির প্রকার ভেদে ২০ হাজার থেকে ৪০ হজার টাকা মজুরি পাই। তবে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস পত্রের দাম বৃদ্ধি হওয়ার প্রতিমা তৈরিতেও খরচ বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে তেমন একটা লাভ হবেনা।’
খানসামা উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি ধীমান দাস বলেন, ‘গতবার উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের ১৪৮টি মন্ডপে দূর্গা পূজা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও উপো রানী হত্যার রহস্য উদঘাটন না হওয়ার প্রতিবাদে, উপজেলার টংগুয়া কুমারপাড়া মন্ডপে পূজা বর্জন করেছেন ঐ এলাকার মানুষজন। এজন্য ১৪৭ টি মন্ডপে দূর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এবারো তারা প্রতিমা তৈরি করেনি। মনে হচ্ছে এবারো তারা পূজা করবে না, যদিও সময় আছে দেখা যাক শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত।’